৯ টা বেজে গেছে রাফছান এখন ঘুমাচ্ছে। তার মা তাকে একবার ডেকে গেছে কিন্তু এখন তার উঠার নামও নেই।
–রাফছান এই রাফছান উঠ বাবা, সকাল ৯ টা বেজে গেছে এখন কেউ ঘুমায়।
–আর একটু ঘুমাই মা ডিস্টার্ব করোনা প্লিজ।
–তুই না আজকে ভার্সিটিতে যাবি।
কথাটা কাঁনে যেতেই ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে রাফছান, আজকে তার ভার্সিটির প্রথম দিন
–আর একটু আগে ডাকবা না মা!
–আমিত সেই কখন থেকে তোকে ডেকে যাচ্ছি তোর তো উঠার নামও নেই, তারাতারি ফ্রেস হয়ে নাস্তা খেতে আয়।
— তুমি যাও আমি এখনি আসছি।
তারাতারি ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাসা থেকে ভার্সিটি বেশি দূর নয় হেটে গেলে ৫ মিনিট লাগে। ভার্সিটিতে পৌঁছে ক্যাম্পাস দিয়ে হাঁটছে ঠিক তখনি পেছন থেকে কারও ডাক শুনতে পেল…এইযে শুনছেন…পেছনে তাকিয়ে দেখে অপরিচিত একটা মেয়ে,
,
–জি আমাকে ডাকছেন?
–আপনার আসে পাসে কাউকে কি দেখতে পাচ্ছেন যে তাকে ডাকব?
–না, আসলে আপনি তো আমার পরিচিত নন তাই আমাকে ডেকেছেন কিনা একটু সন্দেহ ছিল। ডেকেছেন কেন বলুন?
–আসলে আমি ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছি তো কিছুই চিনি না তাই আপনাকে ডেকেছি।
–ও আচ্ছা, আমিও নতুন ভর্তি হয়েছি তবে বাসা কাছে হওয়ায় মোটামুটি চিনি।
–মানে একই ক্লাশের আমরা?
–হ্যা।
–কোন সাবজেক্ট আপনার?
–ফিন্যান্স। আপনার?
–আমাও তো ফিন্যান্স, ভালই হল দুজনার একই সাবজেক্ট এবং আলাপ ও হয়ে গেল।
–হ্যা তবে আপনার নামটা কিন্তু এখনো জানলাম না?
–আমি নীলা। এখানে আমার খালার বাসায় থেকে লেখাপরা করব। আাপনি?
–আমি রাফছান। আমাদের বাসা কাছেই এখান থেকে ৫ মিনিটের দূরত্ব। আচ্ছা চলুন ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।
–হ্যা চলুন।
,
সেদিন আর তাদের কথা হয়নি। রাফছান বুজতে পারে মেয়টা অনেক মিশুুক, সবার সাথে খুব সহজেই মিশতে পারে..দেখতেও অনেক সুন্দর।
,
পরদিন ভার্সিটিতে গিয়ে নীলাকে খোজে কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না। অবশেষে একটা গাছের নীচে দেখতে পেল। সাদা একটা ড্রেস পরেছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে নীলাকে। যেন একটা পরী আকাশ থেকে নেমে গাছের নীচে বসে আছে। রাফছান নীলার দিকে একমনে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে একটা মেয়ে এতটা সুন্দর হয় কিভাবে। নীলাকে তার ভাল লেগে যায় তখনি। এরই মধ্যে নীলা রাফছানকে দেখতে পায়…
,
–আরে আপনি কখন এলেন?
–এইত এই মাএ এসেছি?
–তা ওখানে বসে কি করছিলেন?
–কিছুনা এমনি দারিয়ে ছিলাম…আচ্ছা আমরা তো বন্ধু তাহলে আমরা একজন অন্যজনকে আপনি করে বলছি কেন!
–আচ্ছা এখন থেকে আমরা তুমি করে বলব।
.
এভাবে তাদের বন্ধুত্ব চলতে থাকে। রাফছান নীলাকে মনে মনে ভালবেসে যায় কিন্তু কখনো বলতে সাহস পায়নি। এভাবে একবছর কেটে যায়। এরমধ্যে নীলাও রাফছানকে ভালবেসে ফেলে। এখন দুজন দুজনকে ভালবাসলেও কেউ কাউকে বলতে পারে না। দুজনেই ভাবে যদি বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। তাই কেউ কাউকে বলতে পারে না।
,
তারা একে অপরকে ছারা এক মুহুর্ত চলতে পারে না। হঠাৎ একদিন নীলার জ্বর হয় তাই ভার্সিটিতে আসতে পারে না, ফোনটাও চার্জ না থাকায় অফ থাকে। এদিকে রাফছান নীলাকে ভার্সিটিতে না পেয়ে ফোন দেয়, ফোন অফ পেয়ে পাগলের মত হয়ে যায়, কি করবে ভেবে পায় না। নীলা তো কখন এমন করেনি ভার্সিটিতে না আসতে পারলে তাকে জানিয়ে দিত। কোনো বিপদ হলো নাতো। সে যেন আর কিছু ভাবতেই পারছে না। তারাতারি নীলাদের বাড়ির উদেশ্যে রওনা দেয়। বাড়িতে গিয়ে কলিং বেল টিপলে নীলার আন্টি দরজা খুলে।
–আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
–ওয়ালাইকুম ওয়াসালাম।
–আন্টি নীলা কই ও আজ ভার্সিটিতে যায় নাই কেন ওর ফোনটাও অফ ওর কি কিছু হইছে?(এক শ্বাশে কথাগুল বলে)
–আস্তে বাবা এত ব্যস্ত হওয়ার কিছু নাই…একটু জ্বর হয়েছিল তাই যায় নাই…এখন মোটামুটি সুস্হ আছে।
–আন্টি ও কই?
–পাশের রুমে আছে যাও।
রুমে গিয়ে দেখে নীলা শুয়ে আছে ওকে দেখেই উঠে বসে
— আরে রাফছান তুমি কখন এলে?
–তোমার জ্বর হয়েছে আমাকে বলনি কেন আর ফোন অফ ছিল কেন জানো আমি কতোটা চিন্তায় ছিলাম।
–ফোনে চার্জ ছিল না তাই বলতে পারিনি…আর আমার জন্য চিন্তা হলো কেন আমি তোমার কে শুনি?
–তুমি আমার কে সেটা নাহয় অন্য এককদিন বলব..আগে তুৃমি সুস্হ হও।
–আচ্ছা অপেক্ষায় থাকলাম।
,
কিছুদিন পর নীলা সুস্হ হয়ে যায়। রাফছান তার মনের কথা নীলাকে বলবে বলে একটা পার্কে আসতে বলে বিকাল ৫টায়। রাফছান একগাদা গোলাপ নিয়ে ৫টার আগেই পার্কে অপেক্ষা করতে থাকে। ঐতো নীলা আসছে। আজ নীলা একটা নীল শাড়ি পরেছে। নীল শাড়িতে তাকে যেন পরির মত লাগছে।রাফছান চোখই ফেরাতে পারছে না। নীলা সামনে আসতেই হাটু গেরে ফুলগুলো নীলার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে,,, নীলা আমি যানিনা ভালনাসার কথা কিভাবে বলতে হয়, তবে প্রথম যেদিন তোমাকে সাদা একটা ড্রেসে দেখেছিলাম সেদিনের পর থেকেই তোমাকে ভালবাসতে শুরু করও। এর পরর থেকে একটা দিন তোমায় না দেখলে হৃদয়ের মাঝে শূন্যতা অনুভব করতাম। আমার হৃদয়ের সমস্ত অস্তিত্ব জুরে শুধু তোমারি বসবাস। আমার সকল চিন্তা জুরে শুধু তুৃমিই থাক। যদি এগুলো ভালবাসা হয়ে থাকে তাহলে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি নীলা,,,, আই লাভ ইউ নীলা….
,
–নীলা হাতের ফুলগুলো নিয়ে, আমিও তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি রাফছান,,,,আই লাভ ইউ টু…..।
,
বন্ধুত্বর অবসান ঘটিয়ে শুরু হল আরেকটি নতুন ভালবাসার গল্প। ভাল থাকুক তারা, ভাল থাকুক তাদের ভালবাসা।
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক