পাশের বাসার একটা মেয়েকে অনেক কষ্ট করে ম্যানেজ করে আমার বাসায় নিয়ে গেলাম। তখন রাত ছিল প্রায় ৯ টা। ঐদিন আমার বাসায় কেউ ছিল না।
.
আমার আব্বু তো সরকারি চাকরী করে এবং থাকে যশোরে। তো ঐদিন সকালেই আম্মু এবং ছোটবোন যশোরে আব্বুর কাছে বেড়াতে গিয়েছিল। সো বাসা পুরাই ফাঁকা। সেই সুবাদে মেয়েটাকে বাসায় আনা খুব সহজ ছিল।
.
মেয়েটার নাম অরুণি। উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী সে। সব প্রেমিক-প্রেমিকা যেমন করে একজন অপরজনকে ভালোবাসে তেমনি অরুণিও আমাকে অনেক ভালোবাসতো।
.
আচ্ছা প্রেমিক-প্রেমিকা কেমন করে ভালোবাসে? ভালোবাসা তো ভালোবাসা; এর মধ্যে আবার এতো পার্থক্য কিসের? থাক এখানে ভালোবাসার ডেফিনিশন নিয়ে এগুতে চাই না।
.
তো অনেকদিন ধরেই অরুণিকে বিয়ের প্রপোজাল করব ভাবছি, কিন্তু পারছিলাম না। বিয়ের প্রপোজ করতে হলে তো রিং লাগবেই, কিন্তু আমি তো নাছোড়বান্দা রিং কিনে বাবার টাকা নষ্ট করবো না। আমাকে অবশ্য কিপ্টা বলে অনেকে ডাকে, আমি কিছু মনে করি না। সবাই সত্য কথাই বলে মনে হয়। আর সত্য বললে বোকার মতো রাগ করার কি দরকার? আমি কিপ্টা হতে পারি বাট বোকা না। 😀
.
তো সেইদিন রাতে আমি রুমে একাএকা বসে বসে টিভি দেখছিলাম। হটাৎ করেই মোবাইলের স্ক্রিনে অরুণির মোবাইল থেকে একটা ম্যাসেজ আসছে।
-কী কর তুমি?
-এই তো টিভি দেখছিলাম। তুমি কখন আসবা?
-আম্মু তো ঘুমায় নাই, কিভাবে আসি বলো?
-তোমার আম্মু না প্রতিদিন ৯ টা না হতেই ঘুমিয়ে যায়, আজ কি হলো? নাকি তুমি মিথ্যা বলতেছো?
-হুম মিথ্যা বলছি। আমার না ভয় করে!
-আরে বাবা ভয় কিসের আসো। আমি তো তোমায় ভালোবাসি নাকি? এতো ভয় করার কী আছে, তাড়াতাড়ি আসো।
-আচ্ছা আমি বের হচ্ছি, তুমি দরজা খুলে রাখ।
-আচ্ছা সাবধানে আসবে।
.
অরুণি প্রায় ৫ মিনিট পর আমার দরজায় এসে নক করল। আমার দরজা বলতে কী বুঝলেন? আমার আবার দরজা আসবে কোথা থেকে? আমার বাসার দরজা আরকি। তো যাইহোক আমি দরজা খুললাম। ওরে বাবা মেয়েতো নয় যেন চোরা বিড়াল। আমি দরজা খুলতেই বিড়ালের মতো দৌড়ে অরুণি ভিতরে চলে আসে। আমি দরজা লক করে অরুণিকে নিয়ে বসে বসে কিছু রোমান্সমাখা কথা বললাম এবং কথা শেষে আমি রুমের লাইট অফ করে দিলাম। লাইট অফ করতে দেখে অরুণি বলে,
-এই লাইট অফ করলে কেন?
-একটু চুপ কর না। দেখি তোমার বাম হাতটা দাও তো।
-বাম হাত কেন?
-আরে দাও না।
.
অরুণি অনেক আগ্রহ নিয়ে তার বাম হাত এগিয়ে দিল। সে ভেবেছিল দামী কোনো গিফ্ট দিব। অরুণি জানতো আমি কতটা কিপ্টে। কিন্তু তাও অনেক আশা করেই হাত পেতেছিল। অবশেষে কোনো গিফ্ট না দিয়েই আলতো করে আমি অরুণির হাত ধরলাম। বাম হাতে ধরে সোজা তাকে জানালার কাছে নিয়ে গেলাম। তারপর বললাম,
-এবার চোখ বন্ধ কর।
-আবার চোখ বন্ধ করতে হবে কেন?
-আরে বাবা চোখটা একটু বন্ধ করে দেখই না।
-না আমি পারবো না।
-মাত্র ৫ সেকেন্ড প্লিজ…?
-ওকে চোখ বন্ধ করলাম।
.
এই পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে আমি কাপড়টা একটু সরিয়ে নিলাম। জানালার কাপড় আরকি! 😀 তারপর বললাম,
-এবার চোখ খুল। দেখ তো আকাশের চাঁদটা কত সুন্দর!
.
অরুণি চোখ খুলে চাঁদ দেখে একটা কৃত্রিম হাসি দেয় এবং আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আমি ধীরেধীরে অরুণির বাম হাত ধরলাম এবং মুখে মুচকি হাসি নিয়ে বললাম,
-এই জ্যোৎস্না রাতের চাঁদটা কি আজকের মতো সারাজীবন আমার পাশে থাকবে?
.
অরুণি আমার ডান হাতে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বলে,
– হ্যাঁ থাকবে, তোমার পাশে না তোমার বুকে থাকবে।
.
খালি হাতে জ্যোৎস্নার আলো দেখিয়ে প্রপোজ করা যায় বুঝলেন? আমার মতো কিপ্টে হতে হবে তাহলেই পারবেন। :
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক