লকডাউনে বিয়ে

লকডাউনে বিয়ে

আমার বয়স মাএ ২৮। এমবিএ শেস করে সরকারী চাকরিতে ঠুকছে। বাসা থেকে ভাই -বোন, আব্বু -আম্মু বিয়েতে জোর করছে,আমার ও বিয়ে করার ইচ্ছা আছে,বিয়ের বয়স তো হয়ে গেছে,,,
কিন্তু সমস্যা তো একটাই,, সবাই তো অনুমান করতে পারছেন,,সমস্যাটি হলো করোনা,করোনা ভাইরাস!!

বাসার সবাই জোর করছে,কি করব কি করব ভেবে পাচ্ছি না,বন্ধু ♥কিবরিয়া♥ বলছে বুড়া তো হয়ে জাচ্ছিস, বিয়ে করে নে এবার,,বলবে না বলবে আব্বুর সামনে বলল,আমি লজ্জায় পড়ে গেলাম,বিয়ে না করে তো পারি না,,কিবরিয়া বলছে,দোস্ত বিয়া করে নে,,আমার মামা তো কাজি কোন টেনসোন নাই,,কি করি সবাই এতো চাপ দিচ্ছে,আমার দুই বন্ধবি বলছে দোস্ত বিয়ে করে নে,,তোর বিয়েতে কত কিছু করব ভেবে রাখছি,,চিন্তার শেস নাই,,আমারর তো সবাই চাপে ফেলে দিব,,রাগে রাগে বললাম মেয়ে খোজ বিয়া করব।।

সবাই তো খুব খুশি…..মেয়ে দেখা শুরু করল????
সবাই মিলে মেয়ে দেখা শুরু করল।আব্বু -আম্মু,বন্ধু- বান্ধবী,আত্মীয় -স্বজন,পাড়া- প্রতিবেশি আরো অনেকে এছাড়া ঘটক নিয়োগ দেওয়া হল,,ঘটক তো দেশ – বিদেশের মেয়ের লিস্ট নিয়ে চলে আসল।। সবার মেয়ে দেখার এলাহী কান্ড।আমি লজ্জায় বুঝতে পারছি না কোনটা পছন্দ করবো!!!!!!!

আমার খালাতো ভাই,♥ মোস্তাফিজুর ♥,আমার এক অনন্য বন্ধু,,সে আমার মেয়ে পছন্দ করতে অনেক সহযোগিতা করল,,শেস মেশ ৪ টা মেয়ে পছন্দ করলে যার মধ্যে একটাকে বাছাই করবে,,এবং আমার গলাই ঝুলিবে,, বুঝতেই পারছেন সবাই….
মেয়ে দেখতে যেতে হবে,, করোনার জন্য গাড়ি বন্ধ,,খুব বিপদ কি করি কি করি,,সিন্ধান্ত নিলাম,,বাইকে যাবো,,আমার ও আমার ভাইয়া এবং বন্ধুর বাইকে আমরা তিনজন মেয়ে দেখতে জাব,, সিদ্ধান্ত নিলাম।।

একদিনে ২ টা মেয়ে দেখবো….
প্রথম মেয়েরর নামঃ বিজরী আক্তার মৌ
দ্বিতীয় মেয়ের নামঃ সোহানা আক্তার বৃস্টি

পরের দিন বাকি ২ টা মেয়ে দেখবো…

তৃত্বীয় মেয়ের নামঃ আসিয়া আক্তার শান্তা
চতুর্থ মেয়ের নামঃ সাদিয়া তাবাচ্ছুম ছোহা

সময় মতো মেয়ে দেখতে রওনা দিলাম..প্রথম মেয়ের বাসাই পৌছালাম…..

সময় মতো মেয়ে দেখতে রওনা দিলাম..প্রথম মেয়ের বাসাই পৌছালাম…..
তারপর আমাদের আনেক আপ্যায়নের সাথে বাসার ভিতর নিয়ে গেল,, আমি তো একটু লজ্জা পাচ্ছিলাম,,ভাইয়া এবং কিবরিয়াই সব কথা বার্তা বলছিল,,
অনেক নাস্তা র আয়োজন করছিল,,

মেয়েকে ডাক দিল,, তখন আমার বুকটা ধুকবুক করছিল,,মেয়েটা দেখতে যে কেমন হবে,,
একটু পরে মেয়ে টি আসল,,দেখতে বেশ ভালো,,

নাম তো জানেন ই,,বিজরী আক্তার মৌ,,মৌ কে ভাইয়া একটি প্রশ্ন করল,,তোমার যদি তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে বিয়া হয় তুমি কি খুশি,,মেয়েটা কথাটা না বুঝেয় হ্যা করে দিল,, ভাইয়া ছিল খুব সেনসিটিভ,,কোন মেয়ে কেমন কথা বলেই বুঝে নেই,,তাইলে বুঝে নিলাম মেয়েটি প্রেম করে,,মৌ কে রিজেক্ট করা হলো…

দ্বিতীয় মেয়ে সোহানা আক্তার বৃস্টিকে দেখতে জাব
কিছুক্ষণ পর রওনা দিলাম,, তার পর বৃস্টির বাসাই পৌছালাম,,পৌছানোর সাথে সাথে ই বৃস্টি কি অবিসাশ্য তাই না বৃস্টি কে দেকতে এসে বৃস্টি শুরু,,সেখানোও অনেক আপ্যায়ন,, মেয়েটিকে আনা হল,,দেখতে বেশ কিন্ত মেয়েটির উুঁড়ু উুঁড়ু ভাব,,কিবরিয়া মেয়ে টিকে একটা গান শোনাতে বলল,কিবরিয়া ছিল,,গানের শিল্পী মেয়ের গলার গান গুনে বলতে পারে মেয়েরা কেমন,, মেয়েটি গান শুরু করল,,

কবে তুমি আসবে,,
কবে তুমি হাতে হাত রাখবে,,
কবে তুমি আসবে,
কবে তুমি হাতে হাত রাখবে,,
সেই আশাতে দিন কাটাতে মন শুধু চাই,,
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চাই,,
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চাই,,
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে যাই,,
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে… যাই,,
কবে তুমি আসবে,,
সেদিন তোমার সাথে যাব যে পালিয়ে…

গানটা শুনে বুঝলাম।।এই মেয়েটাও আমার ভাগ্যে নাই

তৃতীয় মেয়েকে এবং চতুর্থ মেয়ে কাল দেখতে যাব,,ভাইয়ার বন্ধু ♥সুমন♥যাবে তার মেয়ে দেখতে যাওয়ার অনেক শক,,,শক কেন জানেন,,তার এখনো বিয়ে হয়নি,,বয়স তো অনেক হইছে বুড়া ভাম বলে সবাই,,সে মেয়ে দেখতে যাই যদি শালীদের পছন্দ হয়…

তারপরের দিন বের হলাম আসিয়া আক্তার শান্তার বাসাই যাওয়ার উদ্দেশ্যে,,সেখানে পৌছালাম,,মেয়েটাকে দেকতে তেমন ভালো না,,তাই চলে আসলাম,,মনের ভিতর যেন ধুক ধুক করছিল,,একটা মেয়েও পছন্দ হয় না,,
সর্বশেস সাদিয়া তাবাচ্ছুম আরবির বাসাই গেলাম,,
সেখানে সুন্দর ভাবে আপ্যায়ন করল আরাবি র পরিবারের আলাপ-ব্যবহারে মন ভরে গেল আমাদের,মেয়েটিকে দেখতে চালাম,কিন্তু মেয়ের আম্মু বলল মেয়ে সবার সামনে আসে না মেয়ে পর্দা করে,, আমরা বললাম একজনকে অন্তত্য দেখতে দেন, মেয়ের আম্মু বলল তাহলে তোমার বন্ধুকে নিয়ে জাচ্ছি সে দেখে আসবে, কিবরিয়া দেখতে গেল, দেখে এসে বলল মেয়াটা অপুরূপ সুন্দর.. সুন্দর নম্র ভদ্র কথা,, আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম শুনে…না দেখেই বলে দিলাম আমার পছন্দ।।।

বিয়ের দিন ঠিক করা হল……
বিয়া ঠিক হলো সোমবার।।আজ শনিবার বাসাই আয়োজনের ধুম পড়ে গেছে,,সবাই আয়োজনে ব্যাস্ত,,আমার দিকে কোন খেয়াল নাই,,কাল আমার গায়ে হলুদ,,জাক জমক ভাবে গায়ে হলুদ হলো,,সবাইকে বিয়ে উপলক্ষে মিস্টি মুখ করানো হলো,,বিয়ের দিন তো কাল করোনার সমস্যা কি করা যায়,,ভোরে বেলা আমার ২ টা মাইক্রো ও একটা প্রাইভেট নিয়ে বিয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,,১১ টার মধ্যে পৌছে গেলাম,,সেখানে খুব সুন্দর আয়োজন,, সুন্দর গেইট করছে সেইটের সামনে,,দাড়িয়ে আছে কয়েক জন,,চিনিনা কাওকে,, সরবত খেতে দিল একটি মেয়ে,,খাওয়ার পর এবার টাকা দাবি করছে,,ছোট শালিকা,,ও ছোট শালাবাবুরা,,দিলাম ৩০০০/- টাকা সবাই খুশি,, গেইটের ফিতা কাটলাম তফনি পার্টি স্প্রে মেরে,,যা করল বলা মতো না,, ♥সুমন♥ তো মেয়ে খুচজে যদি তার একটা গতি হয়,,সে তার ধান্দায় আছে,আমার সাথে ভাইয়া,কিবরিয়া সব সময় আছে,, আমাকে আমার শশুর মশাই বিয়ের আসরে নিয়ে গেল,,কাজী সাহেব তো কিবরিয়ার মামা তাকে সাথে করেই আনছি,,কিছুক্ষণ পর বিয়া পড়ানো শুরু হল কাজী সাহেব কবুল পড়িয়ে মেয়ের সম্মতি নিতে গেল,,মেয়ের সম্মতিতে,,মেয়েকে কবুল পড়িয়ে বিয়ে সম্পন্ন হলো মোনাজতের সাথে।সবাই মিস্টি মুখ করলে,,খাওয়া দাওয়া শুরু হল,,শালিকারা হাত ধুইয়ে দিল ♦সুমনকে আমার চাচতো শালি হাত ধুইয়ে দিচ্ছিল সুমন তো চোখ ফিরাতে পারচ্ছিল না,,মনে হয় তার প্রেমে পড়ে গেছে♦তারপর হাত ধোয়ার পালা শেস হল এবার তো বিদায়ের পালা এইফাকে সুমন আমার ওই শালিকার সাথে পরিচয় করল নাম তার রোজা,, তার ফোন নাম্বারটাও নিল,,এবার মনে হয় সুমনের একটা হিল্লে হবে♦♦,,

এবার বিদায়ের পালা নতুন বৌ কে নিয়ে রওনা দিলাম বাসার উদ্দশ্যে বাসাই পৌছে গেলাম,, আম্মু তার বৌমাকে নামাল একটা অন্য ঘরে নিয়ে চেয়ারে আমাকে ও তার পুএ বধুকে বসাল,,দুধও মিস্টি খাওয়ালো কিছু মানুস দেখতে আসলো,,সবাই বাহবা জানালো,,সবাই বলতে বলতে জাচ্ছে খুব নম্র ভদ্র মেয়েকে বিয়ে করছে,,শুনে মনটা জুড়িয়ে গেল,,কিছু বন্ধুরা মিলে বাসর ঘর সাজিয়েছে,,নতুম বিয়ে,,তারপর বাসররাত মনের ভিতর যেন একটা অদ্ভুদ শিহরণ হচ্ছিল….
পুএবধুকে বাসর ঘরে নিয়ে গেল!
তারপর আসল সেই বিশেষ রাত!

আমার জিবনে আসল সেই বিশেস রাত!! আমি খুব উদবিগ্ন ছিলাম,,মনের ভিতর কেমন ভয় ভয় করছিল,,তেমন কেমন আনন্দিৎ লাকছিল..বন্ধুরা মিলে খুব সুন্দর করে বাসর সাজাইছে,,আমি এখন বন্ধু ও ভাইয়া দের সাথে আড্ডা দিচ্ছি ওই দিকে বোন রা তার নতুন ভাবির সাথে কি সব কথা বলছে,,বিয়ের রাতের কোন আমার experience নাই, বন্ধু কিবরিয়া আমার বাসর রাতের কিছু কথা বলল,,এবং বলল এই রাত আর কখনো পাবি না,,রাত টাকে কাজে লাগাবি দোস্ত,,আর সকালে গল্প করিস,,রাতে কি হল,,শেস মেস আমি বাসর ঘরে প্রবেশ করলাম খুব ভয় ভয় লাকছিল,মনে জোর নিয়ে ঘরে ঠুকলাম দরজা টা বন্ধ করে দিলাম,,লাইট টা অন করলাম,,বৌ দেখি ঘোমটা দিয়ে লাল বেনারসি শাড়ি পরে বিছানাই বসে আছে,, বৌয়ের মুখটা আমি দেখার জন্য খুব ব্যাকুল ছিলাম আমি,, বিছাই বসলাম,, বৌকে সালাম দিলাম,সে সালামের উওর দিল, এবং শুনল কেমন আছেন আপনি,,আমি উওরে বললাম আলহামদুলিল্লাহ ভালোয় আমি,,আমিও আপনি করেই বললাম আপনি কেমন আছেন,সে উওর আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি,,আপনার জন্য আম্মু দুধ রেখে গেছে নেন,,সে আমাকে দুধের গ্লাস হাতে দিয়ে বলল খেয়ে নেন..আমি খেয়ে নিলাম বৌ কে দেখে মনে হল সে খুব লজ্জা পাচ্ছে,,আমি বললাম তোমার মুখটা দেখাবে না আমার,সে উওরে বলল হুম, দেখবো না কেন আপনি তো আমার স্বামী..মায়ের পরে স্বামীর পায়ের নিচেই স্ত্রী র বেহেশত।আমি তার ঘোমটা উঠালাম,,ঘোমটা উঠিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম,,একটা মেয়ে কখনো এতো সুন্দর হতে পারি,, মনে হয় বেহেশত থেকে একটা পরী নেমে আসছে,,আমি একটু হতভাগ হয়ে গেলাম,,সে আমার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে,,সে বলে উঠল আপনি এমন ভাবে কি দেখছেন আমি বললাম আপনাকে,, সে বলল কেন??

উওরে আমি বলল,,তোমাকে পাওয়াটা আমার সৌভাগ্যের বিষয়..সত্যি আপনি খুব ভালো।। আপনাকে পেয়ে আমি ধন্য..সে উওরে বলল..আমি ও আপনাকে পেয়ে ধন্য আপনি ও খুব ভালো ও ভদ্র আপনাকে পেয়ে আমি খুব খুশি।।গল্প করতে করতে রাত ১২ টা বেজে গেল.. সে বলল আপনি আমার বড় আপনি কেন আমাকে আপনি করে কথা বলছেন,,আপনি আমার নাম ধরে ডাকতে পারেন,,আমি বললাম আমি নামধরে ডাকবো না তুমি করে ডাকতে পারি যদি আপনিও তুমি করে কথা বলো,, সে বলল ঠিক আছে.. আমি বললাম অনেক তো রাত হলো ঘুমাবা না,সে বলল তুমি ঘুমাবা না,,আমি বললাম আমাদের আজ একটা জিবনের বিশেস রাত রাতকে কিভাবে যে কাটাবো বুঝতে পারছি, জিবনের প্রথম বর এই রাতটা পেয়েছি তোমার জন্য,,সে বলল ঠিক বলছ তুমি,,লাইট তা জালানো আছে আমি লাইট টা বন্ধ করে দিলাম,,আমি বললাম,তুমি আমার জীবনের শ্রেস্ট পাওয়া, তোমাকে পেয়ে ধন্য আমি,,তার পর আমি তার কপালে চুম্বন করলাম,সে খুব ভয় ও লজ্জা পেল,,আমারা দুজন দুজনকে অনেক আদর করলাম তারপর কখন যে সকাল হয়ে গেল টের ই পেলাম না,,তারপর কটতে থাকে আমাদের বিবাহিত জীবন……..

আমার এই ছোট গল্পের এখানেই ইতি!!!!!!

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত