ফারহান। তুমি কোথায়?ঝুমুরের এমন প্রশ্নে আমি একটু অবাক হলাম।
আমি বললাম রাত দুইটার দিকে একটা মানুষ তার বাসায় ছাড়া কই থাকবে।না বলছি বাসায় থাকা ছাড়া তো অনেক জায়গায় থাকা যায় তাই না।আমি ঝুম এর কথা শুনে চমকে বললাম দুইটা বাজে আমার ঘুমোতে হবে।কাল সকালে আবার অফিস যেতে হবে। হঠাৎ ঝুম বলে উঠলো তুমি এখন আমার বাসার নিচে আসো তো।ঝুম কি বলছো এসব।এখন কি যাওয়া সম্ভব নাকি।
এবার ঝুম এর সেই চিরচেনা ডায়লগ।তুই আসবি নাকি আমি আসবো।অনেক জেদি মেয়েও যা বলে তাই করে।আমি ওরে ভালোভাবে জানি।তাই আর কথা না বাড়িয়ে বললাম আসতেছি।কিন্তু একটু দেরি হবে।ঝুম বলল তুই এখনই আসবি। আমি বললাম ঠিক আছে।ঝুম কে বল্লাম। তুমি কিছু খাবে। ঝুম কি বলছো তুমি।তুমি ঠিক আছো।ঝুম এর জবাব তোরে নিয়ে আসতে বলছি।তুই নিয়ে আসবি।আসলে ঝুম মিষ্টি খুবই অপছন্দ করে।
হটাৎ করে শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি।আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসতেছি।এবার ঝুমুর নরম কন্ঠে এই শোনো না।আজ না হয় থাক।আজ অনেক রাত হয়ে গেছে। মেয়েটি জেদি হলেও আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।আমি বললাম আমি এখনই আসতেছি। ঠিক আছে সাবধানে এসো।বাইরে অনেক শীত।
শীতের কাপড় নিয়ে বের হবে কিন্তু।আচ্ছা ঠিক আছে বাবা সবকিছু ঠিকঠাক করে আসবো।সবকিছু গুছিয়ে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করলাম। ঝুমদের বাসার দিকে রওনা দিলাম। ঝুমদের বাড়ি যেতে যেতে 30 মিনিট লাগবে। যেতে যেতে ঝুমকে নিয়ে কিছু বলি।বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে।আমার সাথে ইউনিভার্সিটি তে পরিচয় একই ক্লাসে পড়তাম।এরপর প্রথমে বন্ধু তারপর প্রেমের-সম্পর্ক।
দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করি বছর দুই আগে। এখন ঝুম তার বাবার বাড়ি গেছে।তাই আমার রওনা সেখানেই।যাই হোক আমি এখন ঝুম এর বাসার সামনে।গাড়ি দেখে দাড়োয়ান গেট খুলে দিল। ঝুম বলে রাখছে হয়তো।আমি গ্যারেজে গাড়ি পার্কিং করে নামতে পিছন থেকে চেঁচিয়ে উঠলো।আমি এমন কিছু জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
একটু ছোটদের মতো চেঁচিয়ে উঠলাম। এরপর দেখি এটা ঝুম এর কন্ঠ। ঝুম বল্ল তুমি কি ছোট হয়ে গেলে নাকি।এটুকুতে ভয় পেয়ে গেছো।আমার যে কি হচ্ছে সেটা আমি জানি।ঝুম এবার হাত ধরে বল্ল চলো।আমি বল্লাম কই।বল্ল কোথায় মানে,বাসায় চলো।তুমি কি পাগল হয়েছো ঝুম।এত রাতে বাসায় গেলে আব্বু আম্মু কি ভাববে বলতো।
ঝুম তো এবার শার্ট এর কলার ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে।আমি বললাম এই যাচ্ছি যাচ্ছি ।ঝুম হেসে বলছে,তুমি যাবে তোমার ঘাড়ে যাবে।আমি বল্লাম ঠিক আছে।কিন্তু আব্বু আম্মু কি বলবে। কী বলবে মানে।তাদের জামায় যখন ইচ্ছা তখন আসবে।এতে কি বলা বলির আছে। আমিও মনে মনে ভাবলাম অনেকদিন বউয়ের কাছে আসা হয় না।আজ যখন এসে তখন সুযোগটা কাজে লাগায়।বাসায় গিয়ে রুমে ঢুকে ঝুমকে জড়ায়ে ধরে খাঁটের উপর শুয়ে পরলাম।
কিন্তু ঝুম জলদি খাঁট থেকে উঠে একটা ধমক।এই পাগল আমার লাগবে না।আমি খাটের উপর পড়লে কখনো কারো লাগে লাগে।ঝুম বল্ল হুম লাগে।আমি একটু অবাক ঝুম কি বলছে এসব। ঝুম মাথা নিচু করে এমন একটি কথা বলল। আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না।জোরে চেচিয়ে উঠলাম।ঝুম জলদি এসে আমার মুখ চেপে ধরেছে।আমিও বুঝলাম বাড়িত আব্বু আম্মু আছে।ডাক্তার বলছে এখন থেকেই সাবধানে চলা ফেরা করতে বলছে।
আপনার হয়তো এতক্ষণে সব বুঝে গেছেন।আমার জীবনের সব থেকে বড় উপহার পেতে যাচ্ছি। ঝুম মাথা নিচু করে এমন একটি কথা বলল। আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না।জোরে চেচিয়ে উঠলাম।ঝুম জলদি এসে আমার মুখ চেপে ধরেছে।আমিও বুঝলাম বাড়িত আব্বু আম্মু আছে।ডাক্তার বলছে এখন থেকেই সাবধানে চলা ফেরা করতে বলছে।আপনার হয়তো এতক্ষণে সব বুঝে গেছেন।
আমার জীবনের সব থেকে বড় উপহার পেতে যাচ্ছি।আমি সন্তান এর বাবা হতে চলেছি।এর থেকে বড় উপহার আর কি হতে পারে।যাইহোক এরই মাঝে ঝুম এর বাবা মা চলে আসলো।আম্মু বল্ল,বাবা কখন আসলে।আমি বল্লাম এইতো এই মাত্রই পৌছালাম।এরপর মিষ্টির পেকেট থেকে মিষ্টি বের করে।আব্বু,আম্মু কে মিষ্টি খাওয়াল।এরপর আব্বু বল্ল,আচ্ছা বাবা শুয়ে পড়।কাল কথা হবে।
আব্বু আম্মু চলে যাবার পর।আমি ঝুমকে কোলে নিয়ে বাসার ছাদে চলে গেলাম।ছাদ এর চিলেকোঠায় একটি চাদরে এর ভিতর দুইজন আঁটোসাটো হয়ে বসে পড়লাম। এরপর দুজনে কত গল্প কত আড্ডা।আজ যেন সব খুশির দিন আমার।একটা সময় ঝুম বল্ল।আচ্ছা,আমাদের সন্তান দেখতে কেমন হবে।
এরপর আমি বল্লাম আমার সন্তান আমার মত হবে। এটা আবার না জানার কি আছে। এবার ঝুম চাদর থেকে বেড়িয়ে। কলার চেপে ধরে বল্ল।তোর মত হবে মানে।আমার সন্তান আমার মত হবে।একথা শুনার সাথে সাথে অট্টহাসিতে মেতে উঠলাম। দাম্পত্য জীবনের ভালবাসার গল্প মধুময় জীবনের টুকরো