মিমি চোখের মনি

আমার নাম অভি।আমি ঢাকায় থাকি।খুব অল্প বেতনের একটা চাকরি করি।আমি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।তাইতো লেখাপড়া করানোর জন্য একটু অল্প বেতনের চাকরি করতে হচ্ছে।তবে বর্তমান সময়ে ঢাকা শহর থাকতে কত খরচ হয় এটা কারো অজানা নয়।

আমি যে চাকরি করি ওইখান থেকে যে বেতন পায়।সেটা নিয়ে আমার চলতে কষ্ট হয়।তাইতো প্রতিদিন অফিস শেষ করে আমি একটা টিউশনি করি।আমার অফিস থেকে বেশি দূরে নয়।তাইতো অফিস শেষ করে। আমি একটি টিউশনি করি।

আমার অফিস থেকে বেশি দূরে নয়।তাই অফিস শেষ করে।একবারে টিউশনি করে বাসায় যায়।অনেক তো নিজের পরিচয় দিলাম।এবার যাকে নিয়ে আমার স্বপ্ন, যাকে নিয়ে আমি প্রতিদিনের কাজের অনুপ্রেরণা পাই তার পরিচয় করিয়ে দিই। এটা শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি বলতে আমি আমার ছাত্রের আপুকে অনেক ভালবাসতাম।সেও আমাকে ভালবাসতো।

আমার ছাত্রের নাম আকাশ।এবার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।অনেক দুষ্টু ছেলেটা।দুষ্টু ছেলে মেয়ে গুলো যে মেধাবী হয়।তার একটি প্রমান আকাশ।খুবই মেধাবী ছাত্র।আকাশরা দুই ভাইবোন।আকাশ এর বড় আপু আমার সমবয়সী।

খুবই লাজুক ভদ্র একটি মেয়ে।আমি আকাশের প্রায় তিন বছর যাবত পড়াই।প্রথমদিকে শুনেছিলাম যে আকাশের একটি বোন আছে।কিন্তু প্রথম ছয় মাসে তাকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। একদিন অফিস শেষ করার মনে মনে ভাবছি আজকে আকাশ এর পড়াবো না। অনেক ব্যস্ততার জন্য অনেক দিন কেনা হয়নি।তাই অফিস থেকে এক ঘন্টা আগে শেষ করার জন্য আবেদন করলাম।

আমি তেমন ছুটি চায় না।তাই আরকি দেওয়ার সাথে সাথে ছুটি পেয়ে গেলাম।অফিস থেকে বের হয়ে কিছু কেনাকাটা করে বাসায় চলে যাব।তখন আবার মনে হলো না আকাশ কে পড়াই আসি।শুধু শুধু পড়ানো বাদ দিয়ে কি লাভ।আকাশের পরিবারের সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল।

আকাশের বাবা-মা আমার খুব স্নেহ করে। তাই তাদের ভালোবাসাকে আমি অনেক সম্মান করি।আজ একটু বেশি গরম পরছে। এই গরমের ভেতর দৌড়াদৌড়ি করে প্রচন্ড ঘেমে গেছি।আকাশের বাড়ি পৌছয় কলিংবেল চাপতেই আন্টি এসে দরজা খুলে দিল।আমি সালাম দিয়ে বললাম।আন্টি কাজের বুয়া কোথায়? আপনি দরজা খুললেন,আন্টি বলল আজ ও ছুটি নিয়েছে বাবা।

তারপর বাবা তোমার একি অবস্থা। কিছু কেনাকাটা করে অবস্থা।আন্টি বল্ল আজ না আসলেই পাড়তে।আমি বল্লাম আন্টি সমস্যা নাই।আকাশ কোথায় আন্টি?আকাশ তো বাইরে গেছে।ওর এক বন্ধুর বাসায়।ওর বন্ধুর আজ জন্মদিন। তুমি বসো।আমি তোমার নাস্তা দিচ্ছি।তারপর আকাশ আসলে পড়াতে বসো। আন্টি আমাকে বসতে বলে ভেতরে চলে গেল। রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প কাহিনী চোখের মনি

কিছুক্ষণ পর একটি মেয়ে নাস্তার প্লেট হাতে করে আসতেছে।আমি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না।এটা কি একটা মেয়ে নাকি পরী।আমি তার দিকে কতক্ষণ চেয়ে আছি।আমি নিজেও জানিনা।হঠাৎ মেয়েটি আমাকে লক্ষ্য করে ডাক দিল।ভাইয়া নাস্তা খেয়ে নেন।আমি তখন আমার নিজের মধ্যে ফিরে এলাম।মেয়েটিকে মনে হল আমার সমবয়সী।তাই তুমি করে বললাম।

তুমিও বসো।একসাথে নাস্তা করে মেয়েটি বলল না ভাইয়া।আমি কিছু খাব না।আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে।আচ্ছা তুমি বস এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?মেয়েটির না করলো না করলো না।আমি মেয়েটিকে আমার চোখের আড়াল হতে দিতে চাইছিলাম না।কিছুক্ষণ কথা বলার পর জানতে পারলাম মেয়েটার নাম মিম। তারপরও অনেক কথা হল।কথা বলে বুঝতে পারলাম।মেয়েটি অনেক ফ্রেন্ডলি।এরপর মিম বল্ল,আকাশের পড়ালেখার কি অবস্থা।আমি বললাম অনেক মেধাবী এবার আল্লাহর রহমতে পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করবে।

এবার মিম বল্ল,দেখছেন কী পরিমান দুষ্ট হয়েছে।আপনি এসে বসে আছেন আর তার কোন খোঁজ নাই।এরপর আকাশ ফোন দিয়ে বলল আজ নাকি ওর বন্ধুর বাসায় থাকবে,রাতে আসবে না।তাই আমিও বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।দরজা বন্ধ করে দিল।আমিও বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে।ক্লান্ত শরীরে বিছানার উপর শুয়ে পরলাম।

মিমকে দেখার পর থেকেই মিমের ছবিটি আমার ভেতরে যেন কেমন করে আবদ্ধ হয়ে গেছে। মিমকে নিয়ে ভাবতে খুব ভাল লাগছে। এর আগে কোনদিন কোন মেয়েকে নিয়ে আমার এমনটি হয়নি।একটা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম।সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবছি। আর অফিসে যাবো না।যাবো কি যাবো না ভাবতে ভাবতেই আকাশের আম্মুর নাম্বার থেকে ফোন।ফোন রিসিভ কর আন্টিকে সালাম দিলাম।রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প কাহিনী চোখের মনি

আন্টি সালামের উত্তর দিয়ে বলল।আমাকে কয়েকদিনের জন্য ডাক্তার দেখাতে বিদেশ যেতে হচ্ছে।তুমি আকাশকে একটু ভালো করে দেখে পড়িও।আকাশ তো অনেক দুষ্টু আমি বললাম।কোন চিন্তা করবেন না আন্টি।আমি সব ঠিক করে নেব। এরপর ফোন কেটে অফিসের দিকে রওনা দিলাম।অফিস শেষ করে আকাশের পড়ানোর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

আকাশের বাসায় এসে কলিং বেল চাপতে। দরজা খুলে দিল।দ রজা ওপারে মিম দাড়িয়ে ।কাজের মেয়েটি থাকতে মিম দরজা খুলে দিল। আমি খুবই অবাক হলাম মীম আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল। ভাইয়া কেমন আছেন। আমি বললাম এইতো ভালো। তুমি কেমন আছো?মিম বল্ল এইতো ভালো। এরপর মিম আমাকে ভিতরে আসতে বলে।

আমি বাসার ভিতরে যেতেই। মিম বল্ল। ভাইয়া আজ কিন্তু আমাদের সাথে খাওয়া দাওয়া করে।তারপর বাসায় যাবেন।আমি বল্লাম ঠিক আছে।আকাশ এর পড়ানো শেষ করে।আকাশ এর বল্লাম।আমি তাহলে বাসার দিকে যায়।ভাইয়া কোথায় যাচ্ছেন।আজ আামাদের সাথে আপনাকে খাওয়া দাওয়া করতে হবে।আমি বল্লাম আজ না হয় থাক।অন্ন একদিন হবে।আকাশ কোন কথায় শুনলো না।এরই ভেতর মিম এসে হাজির।বল্ল ভাইয়া চলেন। বুঝতে আর বাকি রইলো না।এবার আকাশ বল্লাম চল যায়।

খাবার টেবিলে যেতেই আমি আকাশ থেকে পড়লাম।এত কিছুর আয়োজন।আমি মিমকে বল্লাম এত আয়োজন কেন?আকাশ বল্ল,ভাইয়া আপু এসব কিছুই আপনার জন্য আয়োজন করেছে।আমি একটু অবাক চোখেই মিম এর দিকে তাকালাম।মিম একটি হাসি দিয়ে আকাশ এর একটু ধমক দিয়ে বল্ল তোর এত কথা বলতে বলছি।

আমি আর আকাশ দেরি না করে খাবার টেবিলে বসে পড়লাম।মিম খাবার তুলে দিল প্লেটে।খাবার মুখে দিতেই বুঝলাম মিম এর রান্নার হাত খুবই ভালো।খাবারের প্রশংসা না করলেই না।মিমকে উদ্দেশ করে বল্লাম খুবুই ভালো হয়েছে।খাবারটি না খেলে জীবনে অনেক বড় একটি মিস করতাম।মিম আমার কথা শুনে বল্ল, না ভাইয়া আপনি একটু বাড়িয়ে বলছেন।আমি বল্লাম না। আমি একটু ও বাড়িয়ে বলছি না।

সত্যিই তুমি খুব সুন্দর রান্না করতে পারো।এভাবে খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।রপর মিম এর সাথে বসে একটু গল্প করলাম। এরপর মিমকে উদ্দেশ্য করে বল্লাম।আজকের মত উঠি তাহলে।মিম বল্ল আচ্ছা ঠিক আছে।চলেন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।এরপর মিম দরজা খুলে দিল।আমি মিমকে আবার ও ধন্যবাদ দিলাম।

এরপর আমি রওনা দিতে যাবো ঠিক ঐ সময়ে মিম আমাকে আাবার ডাকলো।আমি বল্লাম হুম বল্ল,কিছু বলবা।মিম বল্ল,ভাইয়া কিছু মনে না করলে আপনার নাম্বার পেতে পারি।আমি বল্লাম মিম তুমি এখনো ছোট আছে।এতে মনে করার কি আছে।তারপর মিমকে নাম্বার দিয়ে।আমি বাসার দিকে রওনা হলাম।বাসায় আাসার পর।মিম এর কথা বার বার মনে পরতে লাগলো।এরই ভেতর হটাৎ একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো।ফোনটা ধরতে মিমের কন্ঠ।

মিম শুনলো, কি করছেন এখন।আমি বল্লাম এইতো বসে বসে কিছু কথা নিয়ে ভাবতে ছিলাম।মিম বল্ল,ভাইয়া কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম।আমি বল্লাম আচ্ছা বলো।মিম এর প্রশ্ন,কি নিয়ে ভাবতে ছিলেন।আমি বল্লাম না।তেমন কিছু না এই এমনিতে বসে আছি আর কি।মিম বল্ল মিথ্যা বলবেন না।আমি কিন্তু জানি আপনি কি নিয়ে ভাব ছিলেন।তবে আমি যেটা নিয়ে ভাবছেন।সত্যি সে কিন্তু আপনাকে পছন্দ করে।

এটা বলেই ফোনটি কেটে দিল।আমি বাকরুদ্ধ।আমি যেটা ভাবছি সেটা মিম বুঝেফেলছে আর না বুঝলে পছন্দ করার কথা বলবে কেন? এরপর নিজে নিজে অনুভব করলাম যে।আমার মত মিম ও আমাকে ভালবাসে।যাইহোক এই ভাবে কিছু দিন যেতে লাগলো।এখন মিমদের বাসায় গেলে।মিম শুধু আমায় দেখে হাসে।এরই ভিতর মিম এর আম্মু,আব্বু বাসায় চলে আসলো।

কোন একদিন দুপুর বেলা মিম এর ফোন।আমি তখন অফিসে।ফোন ধরতে মিম বল্ল,কোথায় আছেন?আমি বল্লাম এইতো অফিসে।মিম বল্ল আচ্ছা আজ অফিস থেকে বের হয়ে দেখা করতে পারবেন?আমি বল্লাম আপনাদের বাসায় আকাশকে এমনিতে পড়াতে যাবো।তখন দেখা হবে।মিম বল্ল না বাসায় হব না।একটু বাইরে দেখা করতে হবে।আমি বল্লাম এটা জানলে আন্টি কি মনে করবে।মিম বল্ল,আম্মু কি আমার সাথে যাচ্ছে নাকি।

আমি বল্লাম তারপর ও।মিম বল্ল আমি কিছু জানি না।বিকাল পাঁচটায় লেক পার্কে আসেন।এরপরই ফোন কেটে দিল।আমি অফিস শেষ করে।ভাবতে ভাবতে চলেই গেলাম।মিম দেখি আমার আগেই সেখানে।এরপর আমি গিয়ে বল্লাম কিছু বলবা।বল্ল হুম,আমি বল্লাম বল,মিম বল্ল আপনি কিছু বল্লেন না কেন।আমি বল্লাম কি বলবো।মিম বল্ল আপনি যে আমাকে ভালবাসেন।আমি আকাশ থেকে পড়লাম।আমি তোমাকে এমন কিছু বলবো বলছি।মিম বল্ল,বলনে নি।কিন্তু আমি জানি।আমি বল্লাম এটা কখনো সম্ভব না।কোথায় আমি আর কোথায় তুৃমি।মিম বল্ল,আমি এত কিছু জানি না।

আমি বাসায় চলে যাচ্ছি।আপনি কাল কিন্তু জানাবেন।এইবলে মিম চলে গেল।আমি কত কি যে ভাবছি।আমি নিজেও জানি না। এরপর দিন মিমদের বাসায় পড়াতে গেলাম। আকাশকে পড়াতে যাবো ঠিক ঐ সময় আকাশ বল্ল ভাইয়া আম্মু আপনাকে দেখা করতে বলছে।আমি বল্লাম,আচ্ছা ঠিক আছে।তুমি পড় আমি দেখা করে আসি।

এরপর আন্টি রুমের বাইরে থেকে বল্লাম।ভেতরে আসবো আন্টি।আন্টি এক কথায় জবাব দিল।আরে ভেতরে আসো বাবা।দাড়িয়ে আছো কেন।আমি গিয়ে বল্লাম,আন্টি কিছু বলবেন।আন্টি বল্ল,অভি তোমার সাথে কিছু কথা বলতাম।আমি বল্লাম,জি বলেন আন্টি।আন্টি বল্ল আকাশ মিম তোমাকে অনেক পছন্দ করে।আর এমনিতে আমি এবং তোমার আঙ্কেল ও তোমার অনেক পছন্দ করে।তুমার যদি মত থাকে।আমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতে পারি।

এরপর আন্টি রুমের বাইরে থেকে বল্লাম।ভেতরে আসবো আন্টি।আন্টি এক কথায় জবাব দিল।আরে ভেতরে আসো বাবা।দাড়িয়ে আছো কেন।আমি গিয়ে বল্লাম,আন্টি কিছু বলবেন।আন্টি বল্ল,অভি তোমার সাথে কিছু কথা বলতাম।আমি বল্লাম,জি বলেন আন্টি।আন্টি বল্ল আকাশ মিম তোমাকে অনেক পছন্দ করে।আর এমনিতে আমি এবং তোমার আঙ্কেল ও তোমার অনেক পছন্দ করি।তোমার যদি মত থাকে।আমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতে পারি।

আমি নির্বাক ভাবে মাথা নিচু করে মাটির দিকে চেয়ে আছি।আন্টির ডাক দিয়ে বল্ল।অভি কিছু বলছো না যে।জি,আন্টি আমি বলছিলাম যে আমার পরিবার আপনাদের মত এত বড় নয়।সে জন্য এটা কি কোন ভাবে সম্ভব।আন্টি আমাকে দিকে তাকিয়ে বলে।অভি এগুলো আমি জানি।এত কিছু তোমার বুঝতে হবে না।তোমার বাবা মা এর সাথে আমি কথা বলব।

আমি ঠিক আছে বলেই।আন্টিকে বল্লাম,আমি তাহলে যায়।আকাশ বসে আছে।আন্টি বল্ল আচ্ছা ঠিক আছে। আকাশ এর পড়ানো শেষ করলাম।পড়ানো শেষ করে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হচ্ছি।ঠিক সেই মূহর্তে মিম সামনে আসলো।বল্ল স্যার কেমন দিলাম।আমি একটি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম।মিমকে আমি সত্যিই আপন করে পাবো।এটা ভাবতেই আমার কেমন লাগছে।সত্যি আজ নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত