গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি !!

আমি মনে হয় এক মাত্র মেয়ে, যে কিনা বিয়ের আগে, ডির্ভোস পেপারে সাইন করে দিতে হচ্ছে। আমার বিয়ে নিয়ে অনেক সপ্ন ছিলো, সেই সপ্নটা এমন ভাবে হবে বুঝতে পারিনি। নাউ তোমার চুক্তি পত্রে, সাইন করা হয়ে গেছে। হে দাও, এখানে যে, চুক্তি গুলো লেখা আছে সেইগুলো, মেনে তুমি আমাদের বাড়ীতে থাকতে হবে। আমি আপনার চুক্তির কাগজটা পড়ছি, সুতরাং আমাকে না বললে চলবে। জানি তুমি পড়ছো, তাও তোমাকে বলে রাখি, কারন তোমার তো আবার মনে থাকেনা। বাকি সব কিছু মনে না, থাকলেও এই চুক্তিটার কথা মনে থাকবে। তাই দয়া করে আপনি বিয়ের ব্যাবস্তা করেন।

আমি ঠিক আছে করছি, তবে তুমি এই চুক্তিটার কথা আমার পরিবারের কাওকে বলতে পারবেন না। এই কথা কাগজে ওল্লেখ নেই, তাই আমি সবাইকে জানাতে পারি, আবার নাও জানাতে পারি। জানি তুমি এই কথা বলবে, তাই এই কথাটা তোমাকে বলে দিলাম, আর যদি তুমি এই চুক্তির কথা কাওকে বলো। তাহলে তোমাকে গার দাক্কা দিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দিবো। কিন্ত একটা কথা আপনি মাথায় ডোকিয়ে রাখুন, যেই দিন এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সেই দিন আমি এক মুহূর্তের জন্য, আপনার জীবনে থাকবোনা। তবে আপনার কাছে আমার, একটা রিকুয়েস্ট আমার পরিবারের কোনো, ক্ষতি করবেনা। আপনি যা বলবেন তাই করবো আমি এই এক বছরে।

ঠিক আছে, কারো কোনো ক্ষতি করবোনা, ততদিন যতদিন তুমি এই চুক্তির কাগজটা মেনে চলবে। আপনি নিশচিত থাকুন, আমি এই চুক্তিটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। ঠিক আছে, আমার সাথে চলো? কোথায় যাবো, কে শুনে কার কথা। আমার হাত দরে টেনে নিয়ে এসে গাড়ীতে বসি দিলো, তারপর গাড়ীটা এমন জোরে ছারছে, ভয়ে আমার বোকের হার্ট বিড বেরে গেছে, আমি চুখ গুলো বন্ধ করে রাখছি, হঠাত দেখে গাড়ীটা আছতে আছতে চলছে। চুখ গুলো খোলে দেখি, ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে, তখনি আমার হার্ট বিড দ্বিগুণ হয়ে গেলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি, তারপর গাড়ীটা এসে একটা কাজি অফিসের। সামনে এসে থামিয়ে দ্বার করিয়েছে, আমাকে গাড়ীর ভীতর থেকে হাত দরে টেনে নিয়ে ভীতরে গেলো। তারপর কাজিকে অনেক টাকি দিয়ে আমাদের বিয়েটা পড়ালো, তবে একটা অবাক বিষয় সেইটা হলো, আমাদের বিয়ে হয়ছে কোনো প্রকার স্বাক্ষি ছারা। কাজি নিজের মত করে কয় জনের নাম দিয়ে দিয়েছে স্বাক্ষির যায়গায়। শুনো বাড়ীতে যদি কেও কিছু জিগ্যাসা করে? এমন তারা হুরা করে কেনো, বিয়ে করেছি? তাহলে তুমি কারো কোনো প্রশ্নের উত্তর দিবেনা। যা বলার আমি বলবো, বিশেষ করে আম্মু যদি তোমাকে কখনো কিছু জিগ্যাসা করে এই বিয়ের ব্যাপারে, তুমি কখনো কিছু বলবেনা।

ঠিক আছে কাওকে কিছু বলবোনা, কিন্তু এত তারা হুরা করে আমাকে কেনো বিয়েটা করছেন? একটু জানতে পারি? তোমাকে বিয়ে করার ছিলো, বিয়ে করেছি বাস, এই টুকু জেনে রেখো। এর বেশি কিছু জানতে যেওনা। আর আমার পরিবারের সবাই তোমাকে আগে থেকে চিনে। যদিও তুমি তাদের তোমার অবিনয় দিয়ে অনেক খুশি করে রেখেছো। এখন আর নতুন করে কিছু করতে হবেনা। কি বললেন আপনি? আমি ওনাদের সাথে অবিনয় করেছি? আপনার কি মনে হয় আমি অবিনেত্রী? যে যখন যা খুশি বলবে। তুমি একটু চুপ করে বসবে? নাকি গাড়ীর স্পীর্ড বারিয়ে দেবো?

না না, আপনি এইটা করবেন না? আমার অনেক ভয় লাগে গাড়ী জোরে চালালে। এই দেখুন ঠোটে আংঙ্গোল দিয়ে দিছি, আর একটা কথা বলবোনা।

ঠিক আছে, আর যদি একটা কথা বলো, তাহলে গাড়ীটার স্পীর্ড বারিয়ে দেবো। আমি আর কোনো কথা বলবোনা, কিছুক্ষন চুপ করে বসে আছি, একটা কথা বলছিনা, আমি আবার কথা না বলে থাকতে পারিনা, এবটু বক বক বেশি করি। আর খোব দুষ্ট টাইপের মেয়ে, বলতে গেলে
একদম বোকা আমি কিন্তু দুষ্টমিতে এক নাম্বার আমি।

গাড়ীটা এসে ওর বাসার সামনে থামিয়েছে, আমি এখন বাসার ভীতরে ডোকবো, ও আগে হেটে যাচ্ছে, আর আমি ওর পিচু পিচু, জানিনা আজ আমার কপালে কি আছে? আর বাসার ভীতরে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে? তবে আগে তো যাই?

বাসায় ডোকার পর আমার জন্য এমন সার্পাইজ রাখবে, আমি ভাবতে পারিনি, আমাকে মনে হয় এর আগে কেউ দেখেনি। এমন সব ব্যাবহার করতে থাকলো, সবাই শুধু আমাকে বলছে, সৌরভকে কেউ কিছু বলছেনা। কিন্তু দুস ত আমি একা
করিনি, করছে সৌরভও কিন্তু ওকে কেও একটা কথা বলছেনা। বরং সব দুস সৌরভের, অথচ সবাই আমাকে বলছে। তখনি,
সৌরভ:- হচ্ছেটা কি? এমন করছ কেন?
তোমরা সবাই চাইছো আমি বিয়ে করি, তাই বিয়ে করে ফেলছি।
তার জন্য এত কথা কিসের?
ভাই তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস তাইনা, আমাকে একবার বল হুট করে কেন বিয়েটা করলি?
এত তারা হুরা কর বিয়ে করার কি দরকার? আমাকে বলতি আমি ঐশীর সাথে তুকে বিয়ে দিতাম। (কথা গুলো সৌরভের বড় আপু বলছে)
সৌরভ:- তোরা সবাই বলছিস বিয়ে করতে আমি বিয়ে করছি। সুতুরাং তোরা এই ড্রামাটা বন্ধ কর। সৌরভের আম্মু আমার বাসায় কল করে বলে দিয়েছে অনেক আগে। আমাদের এই বিয়ের কথা, মনে হয় আব্বু আম্মু দুজনে আসছে। আজ আমার কপালে কি আছে আল্লাহ্ যানে।
আপু:- ঐশী তুমি একবার বলতে পারতে?
আমি তোমাকে কত বিশ্বাষ করতাম। আর তুমি কিনা এত বড় একটা অনন্যায় কাজ করতে পারলে? ভাই না হয় এসব কিছু মানেনা, কিন্তু তুমি ত সব মানো?
তাহলে এমনটা করলে কেন?
ও, কি বলবে? ওতো ইচ্ছে করে আমার হিরার টুকরা ছেলেটাকে ফাশিয়েছে। বড় লোক বাড়ীর বউ হবার লোভ সামলাতে পারেনি, দেখনা কতক্ষন দরে আমরা সবাই কিছু জিজ্ঞাসা করছি একটা কথার উত্তর দিচ্ছেনা। (এই কথা গুলো সৌরভের আম্মু বলছে)
সৌরভ:- আম্মু এখন কি তোমরা এখানে দ্বার করিয়ে রাখবে? নাকি রুমে যেতে দিবে? তখনি,,,
কি হয়ছে আমার মেয়ে কি করছে? কোথায় আমার মেয়ে? আম্মু আর আব্বু দুজনে এসেছে।
শ্বাশুড়ি:- এসেছেন তাহলে, বড় লোক বাড়ীর ছেলেকে কি ভাবে ফাশিয়ে বিয়ে করছে দেখেন আপনার মেয়ে।
আম্মু:- কি জাতা বলছেন আপনি? আমার মেয়ে একটু দুষ্টমি করে বেশি। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে এমনকাজ করবেনা। বলে আম্মু আমার দিকে
তাকিয়ে দেখে আমি কনে সেজে দ্বারিয়ে আছি সৌরভের সাথে। তখনি,,
আব্বু:- ঐশী, ওনি যা বলছে তা কি ঠিক?
কি হলো কথা বলছিসনা কেনো? বলে এক থাপ্পড় আমার গালে। আর আমি গিয়ে সৌরভের বুকের মাঝে পড়লাম। আমাকে সৌরভ ধরে নিছে, আর বলছে,,
সৌরভ:- আম্মু এবার তোমাদের ড্রামা গুলো বন্ধ কর? অনেক হয়ছে, এত দিন তোমরা আমাকে বিয়ে করানোর জন্য ওঠে পড়ে লেগেছো।
আর এখন কেনো এমন করছো? যা হবার তা হয়ে গেছে। এখন এই ড্রামা গুলো বন্ধ করো।
আপু:- ভাই তোর কাছে এইটা ড্রামা মনে হচ্ছে?
আমাদের কষ্ট দিয়ে কি পাইছোস তুই?
আমাদের কত সপ্ন ছিলো তোর বিয়ে নিয়ে আর তুই কিনা এমনটা করতে পারলি? তবে আজ তুই আমাদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোথাও যেতে পারবিনা।
সৌরভ:- ঠিক, আছে তুদের যা খুশি তা কর, আমি রুমে গেলাম। এই কথা বলে সৌরভ আমাকে একা রেখে রুমে চলে গেলো। আর তখনি সৌরভের আম্মু আমার আব্বু আম্মুকে জাতা বলছে, আর আমি দ্বারিয়ে দ্বারিয়ে কথা গুলো শুনছি।
তারপর আব্বু:- আজকের পর আমরা মনে করবো আমাদের ঐশী নামে কোনো মেয়ে ছিলনা।
আমি:- আব্বু তুমি এমন কথা বলনা, আমি মরে যাবো।
আম্মু:- তাহলে বল এই বিয়েটা করলি কেন?
এমন পালিয়ে বিয়ে করার কারনটা কি? তুই আমাদের কাছে সব বলিস, আর এই কথাটা বলিসনি? আমরা এখন সমাজের কাছে মুখ দেখাব কি করে? রাস্তায় বের
হলে সবাই যখন জিজ্ঞাসা করবে, আপনার মেয়ে নাকি পালিয়ে বিয়ে করছে? তখন কি উত্তর দেব? কি হলো চুপ করে দ্বারিয়ে আছিস কেন?
আপু:- প্লিজ ঐশী এভাবে চুপ করে থেকনা।

আমি কারো কোন কথার উত্তর দেয়নি, বিয়ের কারনটা আমি নিজে জানিনা কেন,
সৌরভ আমাকে এভাবে বিয়ে করছে? সবাই যে যার মত করে আমাকে যা পারছে তাই বলছে। প্রথমে আব্বু তারপর আম্মু এর পর এক এক করে সবাই চলে গেছে। আমি নিছে দ্বারিয়ে আছি একা, কিছুক্ষন পড়ে সৌরভের রুমে গেলাম,অবশ্য রুমটা
আমি আগে চিনি, গিয়ে দেখি সৌরভ খাঠের উপড় বসে লেপটপ চালাচ্ছে। আমি কাছে যেতেই আমার হাতে একটা বালিশ আর চাদর ধরিয়ে দিলো।

আমি:- এই গুলো দিয়ে আমি কি করব? আর আমি একা ঘুমাতে পারিনা। একা ঘুমালে আমার অনেক ভয় লাগে।

সৌরভ:- একা না ঘুমাতে পারলে, আমি কি করব? তবে তুমি খাঠের উপড় শুইতে পারবেনা। তুমি ফ্লোরে ঘুমাবে, আর এই রুমটাতে থাকবে কিন্তু কোন দিন স্বামীর অধিকার ফেলাতে আসবেনা।

মাত্র কয় দিনের অতীথি মাত্র তুমি। সুতুরাং নিজের সিমা বজার রেখে চলবে।
আমি:- আমি জানি, এই রুমে আমি একজন অতীথি মাত্র। তবে আজ আপনার জন্য আমার যে ক্ষতি হয়ছে তার হিসাব আপনাকে একদিন দিতে হবে।
বলে আমি ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম, তবে একটা কথা আমি কিছুতে বুঝতেছিনা, সৌরভ আমাকে আজ হুট করে বিয়ে করছে কেন? এই কারনটা আমার জানতে হবে, যেবাবে হোক, কিন্তু জানবো কি করে? এই হার্টলেছ বিহিন লোকটার কাছ
থেকে?

একটা উপায় বাহির করতে হবে। তার আগে আমার পরিচয়টা একটু সংক্ষেপে আপনাদের দিয়ে দেই। আমি ঐশি আমার বাবা মা আর একটা ছোট ভাই আছে।
আমি সৌরভের অফিসে চাকরি করি প্রায় ছয় মাস, আমার পরিবারে আমি এক মাত্র ইনকাম করি।

আব্বুর হার্টের সমস্যা যার কারনে কোন কাজ করতে পারেনা। তবে সৌরভকে আমি চুক্তির বিয়েটা করতামনা, কিন্তু কেন করছি তা আর এখন বলতে পারছিনা, চোখে অনেক ঘুম তাই এখন একটু ঘুমায়। আর কখন ঘুমায় গেছি ঠিক মনে নই, সকালে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আর আমি চোখ মেলে দেখি আমি ফ্লোরে নেয়, কিন্তু খাঠের উপরও নয়, আরে আমাকে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত