মাথাটা ঝিম ঝিম করছে অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকালো নেভা,আস্তে আস্তে মাথা ঘুরিয়ে ঘরের ভেতরের অবস্থাটা বোঝার চেস্টা করলো ও।হঠাৎ দরজার কাছে শব্দে হকচকিয়ে গেলো, কেউ একজন খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে ওর দিকে।ভয়ে নেভার আত্মা শুকিয়ে যাওয়ার অবস্থা,খুব পিপাসা পাচ্ছে ওর চোখ দুটি বন্ধ হয়ে আসছে। ছায়ামানব এখন একদম ওর সামনে দারিয়ে আছে,ওর হাত দুটো খুব শক্ত করে চেয়ারের সাথে বাধা আছে।হাত ছারানোর বৃথা চেস্টা করলো ও।সামনের মানুষটা একটা চেয়ার টেনে ওর সামনে বসল।নেভা খুব জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে,পানির পিপাসা আরও বেরে যাচ্ছে,কি করবে বুঝতে পারছে নাহ। সামান্য কথা বলার মতো শক্তিটুকুও নেই ওর। নেভা বোঝার চেস্টা করছে সামনের মানুষটা ঠিক কি করতে চাইছে ওর সাথে। এবার জিজ্ঞেস করেই ফেললো,
কি চাই আপনার? এভাবে কিডন্যাপ করার মানে কি?
মৃদু হেসে একটা টর্চ জ্বালালো ধ্রুব। ধ্রুবের মুখটা দেখা মাত্রই মাথাটা ধপ করে জ্বল্বে উঠলো নেভার। প্রায় চিল্লিয়ে উঠলো ও,
“তোমার সাহস কি করে হয়? আমাকে বিয়ের আসর থেকে তুলে আনার”
অট্টহাসিতে ফেটে পরলো ধ্রুব।
“বাঘিনী তাহলে এতক্ষনে তার আসল রুপে ফিরে এসেছে,তা বিয়ের জন্যা এত্ত পাগল, চিন্তা করো না বিয়েটা তোমার আজই হচ্ছে, আমার সাথে😊😊”
“তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো নেভা,তোমার ভুল ধারনা ভুলেই জাও সেটাই বেটার,তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেন্টালিটির ছেলে কে বিয়ে করবো আমি? নেভার” ধ্রুব ওর কথার কোনো জবাব দিলো না,আলতো করে নেভার হাতের বাধন খুলতে লাগলো।নেভা পানির পিপাসার কথা ভুলেই গেছে,শারীরিক কোনো কস্ট আর এখন ও উপলব্ধি করতে পারছে নাহ।শুধু মনে হচ্ছে বুকের ভিতর কেউ একটা ভারী পাথর চাপা দিয়ে রেখেছে।নেভা ভাবতে লাগলো এই কি সেই ধ্রুব যার সাথে একটা দিন কথা না বললে ভালো লাগতো না,যে কিনা ছিলো ওর বেস্ট ফ্রেন্ড। ছোটবেলা থেকেই ওর হাসি-কান্না,ভয়,ভালোলাগা সবকিছু শেয়ার করতো ধ্রুবর সাথে।ওর কোন বিপদে সবার আগে পাশে এসে দারাতো ধ্রুব।আর আজ সেই ধ্রুবই কিনা ওর বড় বিপদ,তবে আজ কে বাচাবে ওকে?
হাতের বাধন সব খুলে উঠে দারালো ধ্রুব, এক গ্লাস পানি এনে নেভার দিকে বারিয়ে দিল।নেভা খুব আস্তে করে গ্লাসটা ওর হাত থেকে নিয়ে,বেশ শব্দ করে মেঝেতে ফেলে দেয়।ধ্রুব চুপচাপ সরে গিয়ে জগ থেকে এক চুমুক পানি তার মুখে নিলো।তারপর নেভার কাছে গিয়ে একা হাত দিয়ে ওর দুই হাত শক্ত করে বেকিয়ে পিছনের দিকে ধরলো, অন্যা হাত দিয়ে ওর নাকটা চেপে ধরলো। নেভা নিশ্বাস নেওয়ার জন্য মুখটা একটু হা করলেই সাথে সাথে ধ্রুব ওর মুখটা নেভার মুখের সাথে লাগিয়ে দেয়।ধ্রুব ওর হাতটা নেভার নাক থেকে ছারিয়ে চুলের পিছনের দিকটা খুব শক্ত করে ধরলো। এম্নিতেই অনেক ক্লান্ত ছিলো নেভা,তাই ওর ছটফটানিতে তেমন কোনো একটা কাজ হয়নি।এবার ধ্রুব নেভাকে ছেরে দিয়ে পকেটে দুই হাত দিয়ে দারিয়ে মিটিমিটি হাসছে।নেভা শুধু হাপাচ্ছে,শক্ত করে টেবিল টা খামচে ধরে বললো “তো তো তোমার সাহস কি করে হয়,আমি আমি ছারবো না তোমাকে” ধ্রুব মৃদু হেসে জবাব দিলো “তোমার মতো মেয়েকে সারা জীবন ধরে রাখার কোনো ইচ্ছা আমারও নেই,তবে এতো তারাতারি ছারছিও না তোমাকে,আর জোর করে কিভাবে কি করতে হয় সেটা আমি ভালোই জানি,আর তার নমুনাও তুমি দেখেছো নিশ্চয়ই, ” ওর প্রত্যেকটা কথায় নেভার শরীর জ্বলে যাচ্ছে।”আমি বাসায় জাবো ধ্রুব, রাইট নাউ”
“যাবে ওয়েট করো কাজি আসছে বিয়েটা আগে শেষ হোক,তুমিতো সেজেই আছো আমার কোনো ইচ্ছে নেই অবশ্য এই সো কল্ড বিয়েতে শেরওয়ানি পরার”
“আমি এই বিয়ে করবো নাহ” বেশ ঝাজালো কন্ঠে উত্তর দিলো নেভা।”কি বললা তুমি? আবার বলো” কথা বলতে বলতে ধ্রুব নেভার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে…..