আমার ক্রাশ বর !!

এই তুই বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলিস না কেনো রে,,,
সারাজীবন কি আমাদের ঘাড়ে বসে খাবি।

অনু :তোমাদের ঘাড়ে বসে তো খায় না??? 😒
আমি খাবার খায় তো চেয়ার টেবিলে বসে।😁

অনুর মা : তুই টেবিলে খাঁ আর ঘাড়ে বসে খাঁ একি কথা,,,তুই বিয়ের জন্য রাজি কবে হবি তাই আগে বল দেখি এবার???

অনু :সাত সকালে খেতে বসে কি শুরু করছো??
সেই ইন্টারে পড়ার সময় থেকে বিয়ে বিয়ে শুরু করছো,,, এতো তাড়া কিসের তোমাদের??
অনুর মা :তুই এখন আর ছোট পিচ্চি নাই,,
সবাই তোর বিয়ের কথা বলে,,,
তুই বড় হয়ে গেছিস,,
আর মেয়েরা বড় হলে বিয়ে দিতে হয়,,
তারা পরের বাড়ি যাবে এটাই নিয়ম।

অনু : না কি আমি তোমার আপন মেয়ে না,,,
সৎ মেয়ের মতো ব্যবহার করো কেনো?

অনুর মা :সৎ মেয়ের মতো ব্যবহার করি,,,
তাও তো মুখ ফুটে একবার ও বলেন না,,
মা জননী বিয়ে করতে চায় আমি,,,??

অনু :তাই বলে কুরবানি দিতে চাও এতো তাড়াতাড়ি বুঝি??এতো বোঝা ভাবো আমাকে ??
আমার বাপের টাকা কম পড়ছে কি??

অনুর মা :এ কোন ধরনের কথা,,,
টাকা পয়সা সব আছে,,
শুধু একটা মেয়ে জামাই লাগবে।
মেয়ে বড় হলে সব বাবা মা মেয়ে বিয়ে দিতে চায় কেউ কুরবানি করতে চায় না ,,,
মেয়ে হয়ে জন্ম নিলে তাকে পরের
বাড়ি যেতেই হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

অনু :তুমি আমার মা না হয়ে যদি আমি তোমার মা হইতাম,,, তাহলে দেখতে কখনো আমার মেয়ের আমি সাথে এমন খারাপ
ব্যবহার কখনো করতাম না।

অনুর মা :থাক খান সাহেবের কন্যা
আমাকে আলু পাম দিতে হবে না।

অনু :এইতো,, ভাল কথা আজ কাল কার মহিলারা শুনতে পারে না,,,এটাই সমস্যা।

অনুর মা :থাক আমার এতো ভাল হবার দরকার নাই,,,বিয়ে করতে হবে এ বছর এটা ফাইনাল।

অনু : বল্লেই হলো তাই না,,,মগেরমুল্লুক।
তোমাদের চোখে শুধু এই আমরা
অবলা মেয়েরাই পরি তাই না।

অনুর মা :মেয়েরা বিয়ে করে সংসারী
হবে এটাই নিয়ম।তাতে সমস্যা কি???

অনু :তাহলে আজ থেকে এ নিয়ম বদলে দাও,,,
নতুন নিয়ম করো।।

অনুর মা :আসছেন মহারাণী ভিক্টোরীয় তার জন্য সমাজের মানুষ নিয়ম বদলে দিবে।😏

অনু :এই আরিয়াত খান অনুর জন্য সব নিয়ম বদলে যাবে।

তাই বলে ড্রয়িংরুমে গিয়ে বড় ভাইয়ের
হাত ধরে গরুর মতো টানতে টানতে
মায়ের সামনে এনে বলে,,,

এর লেখা পড়া শেষ হয়েগেছে,,,
বাবার কোম্পানিতে জয়েন করছে,,,
ছেলের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে,,,
তার বিয়ে না দিয়ে,,,
শুধু আমার বিয়ে নিয়ে পরে আছো কেনো।।।
এই তোমাদের সোসাইটির লোকের চোখ গুলা শুধু মেয়েদের চোখে দেখে কেন,,,

ঘরে যে বিয়ে উপযুক্ত ছেলেরাও
আছে তা তাদের চোখে পড়ে না।
মেয়ে মানুষ হারে বজ্জাত হয়,,,
নাহলে আজ পর্যন্ত কোনো পুরুষ মানুষ কে তো বলতে শুনি নাই আপনার মেয়ে কে এতো পড়াতে হবে না,,,
বড় হয়ে গেছে বিয়ে দিবেন কবে,,,
এ সময় চলে গেছে আর ভাল ছেলে পাবেন না।।
সব বজ্জাত মহিলা গুলা সমাজ টা একে বারে দূষিত করে দিচ্ছে,,,
ওদের জ্বালায় ছোট থেকে এই কথা সেই কথা শুনে বড় হতে হয় কেন রে বাপু তোদের কোন ক্ষেতে আগুন দিছি।।
তাদের ছেলেরা বড় হয়ছে,,,
বিয়ে দিবে ডাইরেক্ট বলবে,,
এতো ইনিয়ে বিনিয়ে কেনো বলে।।
যতোসব বিয়ের জন্য ছেলেদের কেন যে নাস্তানাবুদ করে না,,
ছেলেদের ও বলা উচিৎ ওদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে হবে।😾😾

অনুর ভাই আর মা দুজন দুজনার চেহারার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।

অনুর মা :(:( আল্লাহ মেয়েটা আমার পাগল হয়ে গেছে কে করবে এই পাগাল ছাগল বিয়ে,,শেষে কি চিরকুমারী থাকবে মেয়েটা। মনে মনে)

আবির (অনুর ভাই) :এই তুই আমার বোন তো না অন্য কেউ রে ??😑😑

অনু :কেনো ভাইয়া কোনো সন্দেহ আছে??😈

আবির :নিজের ঝামেলা কিভাবে বড় ভাইয়ের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চায়ছিস??

অনু :ঝামেলা কেনো হবে?? তোমার বিয়ের ঘটকালি করি,,,

আবির :আমি বিয়ে করবো তোকে বলছি একবার ও?? তাহলে এতো আগ বাড়িয়ে আমাকে বিপদে কেনো ফেলতে চায়ছিস??

অনু :বিপদ কোথায়,,, ভাইয়া তোমার ও বিয়ের বয়স হয়েগেছে,,,তাই সবাই কে চোখ খুঁলে তোমাকে দেখতে বলছি।
যাতে তুমি ও একটু কষ্ট ভোগ করো।
বিয়ের ভেজালের মজা বোঝো।

আবির :মা এ শিউর কোনো রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা মেয়ে আমার আপন বোন হলে এমন কথা বলতো না,,আচ্ছা মা আমি অফিসে গেলাম,,তোমরা যা খুশি করো এবার।
আবির চলে যায়…

অনুর মা : এসব কি কথা রে,,,
তোর ভাই সবে মাএ জয়েনিং করছে,,
দুই তিন বছর তো লাগবে ওর নিজেকে গুছিয়ে নিতে,, তারপর না হয় ও বিয়ের কথা ভাবা যাবে।।

অনু : এই লাইনে আসছো,,,
আমি ভার্সিটি তে পড়ছি আমাকেও
সেটেল হতে দাও তারপর না হয়
বিয়ের কথা ভাবা যাবে।

অনুর মা :হয় বিয়ে করবি না হয় জব করবি,,,
যে কোনো একটা পথ বেঁছে নিতে হবে।

অনু :কে শোনে তোমার কথা।😏😏

আজারে সকাল বেলা মুড টা খারাপ করে দিলো যতো সব।
রাগে গজগজ করতে করতে ভার্সিটি যাবার জন্য ব্যাগটা কাধে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।

ভার্সিটি তে,,,,,

রিমা বসে চকলেট খাচ্ছিল,,,(অনুর বান্ধবী)
অনু এসে চকলেট টা কেড়ে নিয়ে খেতে শুরু করে।

রিমা কিছু বলবে তার আগে অনুর চেহারা দেখে বুঝে যায় খুব রেগে আছে,,,
এখন কিছু বলা মানে নিজের কবর খোঁদায় করা।

রিমা :ও মনু তোমার কি হয়ছে গো,,,
এভাবে চকলেট খাচ্ছ যে??

অনু :একটু রাগী ভাবে রিমার দিকে তাকিয়ে থাকে।

রিমা :মনু তোর চোখ দেখে ভয় লাগে আমার,,, প্লিজ এমনে ভাবে তাকাবি না 😩😩

অনু :কিছু না বলে রিমা কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দেয়।

রিমা :অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে,, আস্তে করে বলে কি হয়ছে অনু এবার তো বলবি না কি??

অনু :রিমার ওড়না দিয়ে নিজের নাক টা মুছে নেয়।

রিমা :কুত্তী কোনেকার বলতে পারতি টিশ্যু দিতাম
ওড়না নষ্ট করছিস কিসের জন্য😤

অনু :পানি মুছছি অন্য কিছু করি নাই,,চুপ থাক বেদ্দপ মাইয়া মনডা এমনি খারাপ আছে।।

রিমা :আমার বিড়াল আমাকেই মিউমিউ বলে।

অনু :আমি বিড়াল না তোর কুটি কালের বান্ধবী।

রিমা :এইটা আমার ভুল,,,তুই আমার বান্ধবী।

অনু :আজারে গীত বাদ দে,,,কাজের কথায় মন দে।

রিমা :কি কাজের কথা বল দেখি।

অনু :আজ আবার মায়ে আমার বিয়ের কথা বলছেরে রিমা।,,,

রিমা :আন্টি ভাল কথা বলছে রে মনু,,,
তুই বিয়েটা করে নে না,,,
আমি আমার বেষ্টুর বিয়ের দাওয়া খাবো 😁

অনু :তোর দাঁত ভাঙ্গে দিমু আমি বেদ্দপ মাইয়া।

রিমা :আচ্ছা বল কি হয়ছে,,,
দাঁত ভাঙ্গনের দরকার নাই,,,
দাঁত ভাঙ্গা দাওয়া রিমা খাবে না,,,
তুই খা তোর বিয়ে😏

অনু :বান্ধবী রে তুই তো জানিস আমি সেই দশ বছর আগে এক পোলার উপর ক্রাশ খাইছিলাম,,,
আমার সেই পোলাকেই লাগবে আমি এ জীবনে অন্য কাউরে বিয়ে করবো না,,,
ঐ ছেলে ছাড়া।তারে খুঁজে নিয়ে আয় রে বান্ধবী।

রিমা :আল্লাহ যে কোন কুক্ষণে ঐ পোলার সাথে তোর দেখা করাইছিল কে জানে,,,সে পোলা কই থাকে বাপের নাম কি,,,কিছুই জানিস না,,এতো বছরে বিয়ে করে নিছে না কি তাও জানিস না।।

অনু :নাম জানি তো রাজ😍

রিমা : হো ঐ নাম নিয়ে তসবি পাঠ করবি,,পাররে মালা বানিয়ে গলায় পড়বি।

অনু :রাজ যদি বিয়ে করে থাকে তাতেও আমার সমস্যা নাই,,,
আমি সতীনের সংসার করতেও রাজী আছি।।।ওর দশ পোলার সৎ মা ও হতে রাজী আছি😁

রিমা : না তোর বাড়াবাড়ি বেশী হয়ে যাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে এ জীবনে তোর বিয়ে হবে না।

অনু :না হলেও চলবে,,, শুধু রাজ কে পেলেই চলবে আমার।

রিমা :এবার তোর বাড়ির মানুষ কে বলবো তাদের মেয়ে বিয়ে তে না কেনো বলে,,তারা এ কথা জানলে তোরে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিবে।

অনু :শয়তান ছেমড়ি তোর সাহস তো কম না আজকে তোরে খাইছি আমি দাড়া বান্দনি।

রিমা : ব্যাগ হাতে ভৌঁ দৌড় দিচ্ছে,,,জানে অনু এখন হাতের কাছে যদি পায় তাহলে মনের সুখে পিটাবে।

রিমার পেছনে পেছনে অনু দৌড়ানি দিচ্ছে ।।
দৌড় দিতে দিতে অনেক দূরে চলে আসে ,,
রিমা হঠাৎ রাস্তার মাঝে চলে যায়।
অনু রাস্তার পাশে হাঁপাতে থাকে।
এমন সময় একটা গাড়ি চলে আসে ফুল স্পিডে,,,
হঠাৎ রিমার পেছনে গাড়ি দেখে অনু চিৎকার দেয়…..

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত