তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা
একটা চাকরির খুব দরকার শুনলাম MRI কোম্পানিতে ইন্টার্ভিউ চলছে..আজই শেষ তারিখ দেরী না করে সকাল ৮:০০ চলে গেলাম ইন্টার্ভিউ দিতে ওয়েটিং রুমে অনেক্ষন বসে থাকার পর আমার ডাক পড়লো
লোকটি : মিস ফারিয়া প্রভা কে?
আমি : জ্বী আমি।
লোকটি : আপনাকে স্যার ডাকে চলুন আমার সাথে
আমি : জ্বী চলুন
কেবিনে গিয়ে দেখি ম্যানেজার একটা স্টাফ এর সাথে কথা বলছে অন্য পাশ ফিরে আমি গিয়ে বললাম..
আমি : may i come in sir?
ম্যানেজার : yes ( বলেই দরজার দিকে তাকালেন,,,চিরচেনা মুখ দেখে আমি থমকে গেলাম,,,এ তো কেউ নয় ফারহান,,,,আমার প্রাক্তন,,,যাকে আমি এখনো ভালোবাসি কিন্তু..)আর কিছু ভাবার আগেই ফারহান বলে উঠলো
ফারহান : প্লিজ বসুন মিস ফারিয়া
আমি : স্যার জবটা আমার খুব দরকার
ফারহান : CV সহ সব কাগজ জমা দেন,,আপনাকে পরে জানানো হবে।
আমি কিছু বলতে যাবো তখনি দেখি একটা একটা মেয়ে ফারহানের কেবিনে এসেই
…hey farhan how are you? (বলে হাগ করলো)
ফারহান : well nishu..you look so pretty
নিশু : thanks farhan,,you look aslo handsome 😘
ওদের এইসব লুতুপুতু আমার মোটেও ভালো লাগলো না,,হয়তো ওর প্রেমিকা বা বউ তাই বলে এমন করতে হবে এহ ঢং (মনে মনে)
নিশু আমার দিকে তাকিয়ে,,এটা কে ফারহান
ফারহান : জব এর জন্য ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছে
নিশু : ওহ,, এখনো শেষ হয়নি?
ফারহান : শেষ
ফারহান : মিস ফারিয়া আপনি এখনো বসে আছেন কেনো কিছু বলবেন?
আমি : না আসলে কিছু না (বলেই উঠেই আবার পিছন ফিরে
আমি : ফারহান একটা কথা বলবো,,এটা কি তোমার প্রেমিকা নাকি বউ?
নিশু : এই মেয়ে তুমি তোমার ফারহানের নাম ধরে ডাকছো কেন?
আর ফারহান ও তোমার নাম জানে কি করে আজই তো আসলো ইন্টার্ভিউ দিতে তুমি ওকে চিনো?
ফারহান : না নিশু আমি ওকে কিভাবে চিনব আজই দেখলাম,,
আমি : sorry বলেই বেরিয়ে গেলাম কেবিন থেকে
ফারহান : নিশু যাও এই ফাইলটা গুলো ঠিক আছে কিনা দেখো গিয়ে,,
নিশু : yeah sure (বলে চলে গেলো)
ফারহান : কফিল কফিল,, এদিকে এসো
কফিল : জ্বী স্যার ,, বলেন
ফারহান : একটু আগে যে মেয়েটা আসলো তার সম্পূর্ণ ডিটেলস আমার চাই,, আর তার জবটা কনফার্ম করে দাও let’s go..
কফিল : yes sir…
২ ঘন্টা পর
কফিল : স্যার আসবো?
ফারহান : come..
কফিল : স্যার মেয়েটার নাম ফারিয়া প্রভা,,,বিয়ে হয়নি একটা হোস্টেলে থেকে পড়া লিখা করে আর..
ফারহান : enough… thanks যেতে পারো
কফিল : জ্বী স্যার
ফারহান : মিস ফারিয়া তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসতাম,,কেন আমাকে ছেড়ে চলে গিয়ে ছিলে,,, আমার কি টাকা কম ছিলো নাকি আমার ভালোবাসায় কমতি ছিলো,,, এখন তুমি নিজেই আমার কাছে আবার ফিরে আসবে মিস ফারিয়া just wait and see
অন্যদিকে,,
ফারহানের কথা শুনে খুব কষ্ট হলো সে আমাকে চিনে না,,, ঘৃনায় হয়তো আমার চেহারাও ভুলে গেছে আমি তাকে বেইমানির পরিচয় দিয়েছি কিন্তু আমার যে কিছু করার ছিলো না ,,, চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো
সন্ধ্যায় অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো দুই তিন বার বাজার পর রিসিভ করলাম তখনি…
অন্যদিকে,,
ফারহানের কথা শুনে খুব কষ্ট হলো সে আমাকে চিনে না,,, ঘৃনায় হয়তো আমার চেহারাও ভুলে গেছে আমি তাকে বেইমানির পরিচয় দিয়েছি কিন্তু আমার যে কিছু করার ছিলো না ,,, চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো
সন্ধ্যায় ফোন এর রিং বেজেই যাচ্ছে একটু পর রিসিভ করলাম..
আমি : আসসালামু আলাইকুম কে বলছেন?
ওপাশ থেকে : আপনি কি মিস ফারিয়া প্রভা বলছেন
আমি : জ্বী
ওপাশ থেকে : congratulations… MRI কোম্পানিতে আপনার জব কনফার্ম,,ফারহান স্যার এর পিএ আপনি..
আমি : thank you,,(এক্সাইটেড হয়) কবে থেকে জয়েন করতে হবে?
ওপাশ থেকে : কাল থেকেই জয়েন করতে হবে,, আপনি কাল সকাল ৮:০০ অফিসে উপস্থিত থাকবেন,,বাই
আমি : জ্বী ঠিক আছে।
জবটা পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে 😍,,কিন্তু ফারহানকে প্রতি দিন দেখলে তো তার মায়ায় পড়ে যাবো,,,,জবটা ছেড়ে দেওয়াটাও পসিবল না😫😫
আচ্ছা ফারহান কি তার বউকে খুব ভালোবাসে
,,,আমাকে কি সত্যি ভুলে গেছে নাকি নতুন করে আর আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক তৈরি করতে চায় না,,,সত্যিটা বলে যদি ওর কাছে ক্ষমা চাই আমাকে ক্ষমা করবে তো,,,এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম,,
ঘুম ভাঙলো সকাল ৭:৩০ এ তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা না করেই একটা শাড়ি পরে বের হলাম,, রাস্তায় জ্যাম পড়ায় ১০ মিনিট লেট হয়ে গেছে,,,
উফফ আজকে প্রথম দিনই মনে হয় জব চলে যাবে (ভাবতে ভাবতে অফিসে চলে এলাম)
অফিসে ডুকার সাথে সাথে একটা লোক এসে বলে,,
কফিল : হাই আমি কফিল তুমিই ফারিয়া right?
আমি : হুম,,
কফিল : এতো লেট করে আসছো কেন,,আসো স্যার তোমাকে ডাকে ভিতরে??
আমি : হুম চলুন (বলে কফিল এর পিছনে যেতে লাগলাম,, খুব ভয় করছে যদি জবটা চলে যায়)
কেবিনে গিয়ে কফিল বললো
কফিল : আসবো স্যার?
ফারহান : yes come ( ল্যাপটপ এ কাজ করতে করতে বললো)
কফিল : স্যার মিস ফারিয়া আসছেন?
ফারহান : প্রথম দিনই ১০ মিনিট লেট বাকি দিন গুলো তো পড়েই আছে,,, এভাবে চললে জব করা যাবে না মিস ফারিয়া(কাজ করতে করতে)
কফিল তুমি যাও এখন,,,
কফিল : জ্বী স্যার
ফারহান : মিস ফারিয়া বসুন আপনি,,
আমি : জ্বী স্যার,,থ্যাংকস(বসে বসলাম)
নিশু কিছু না বলেই ফারহানের কেবিনে ডুকে বললো..
নিশু : good morning,, farhan
ফারহান : morning nishu
নিশু : ফারহান ওর কি জব কনফার্ম হয়ে গেছে(আমার দিকে তাকিয়ে)
ফারহান : হুম নিশু ও আজ থেকে আমার পিএ
নিশু: what farhan?? তাহলে আমি কি?? আমার পোস্ট আমি ছেড়ে দিবো না তুমি ওকে অন্য জায়গায় পোস্ট কর?(রেগে)
ফারহান : বস কে আমি না তুমি,,,আমি যা বলছি শুনেছো না now go 🤬🤬🤬🤬(রেগে)
নিশু রেগে চলে গেলো কেবিন থেকে
ফারহান : মিস ফারিয়া ফাইল গুলো কমপ্লিট করে দিন,,, জ্বী স্যার( বলেই ফাইল নিয়ে উঠে কেবিন থেকে বের হবো তখনি)
ফারহান : আপনাকে আমি কোথাও যেতে বলেছি আমার সামনে বসে সব ফাইল চেক করুন,,
আমি : কিন্তু স্যার..
ফারহান : কোন কিন্তু নয় এখানে বসেই কাজ করুন ওকে😡(আজ এক বছর পর তোমায় এতো কাছ পেলাম,, দূরে দূরে থাকতে দেই কি করে my jaaan.. মনে মনে)
আমি ফাইল গুলো দেখছিলাম তখন দেখি তেলাপোকাটা মনের সুখে ফোন টিপছে আর মুচকি মুচকি হাসছে,, মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকিয়ে দেখছে ,,,মনে হয় মোবাইলে কোন মাইয়ার লগে ইটিসপিটস করে শালা,, বান্দর,,তুমি আমার কথা হয়তো ভুলেই গেছো, আমি যে অসম্পূর্ণতা ভুগছি,, তোমার কাছে থাকাটা পসিবল ছিলো না আমার 😞😞 এইসব ভাবছি আর তার মায়াভরা চোখের দিকে তাকিয়ে আছি তখনি ফারহান বলে উঠলো
তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা
ফারহান : আমি এতোটাও সুন্দর না যে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে,,সুন্দর হলে কেও আমাকে ছেড়ে চলে যেতো না,,, 😐😐😐(গম্ভীর ভাবে)
আমি : ফারহান বিশ্বাস করো..
ফারহান : বেঈমানকে বিশ্বাস করা যায় না।যারা টাকাকে ভালোবাসে অন্যের অনুভুতির কোন মূল্য দেয় না..
আমি : সত্যি বলতে আমি…(আর কিছু বললাম না)
ফারহান : আমার জন্য কফি নিয়ে আসুন?
আমি : আমি কেন,, কফি আনতে যাবো
ফারহান : কারণ আপনি আমার পিএ আমি যা বলবো তা শুনতে হবে,, let’s go(😡😡)
আমি : ওকে(বলে বিরক্তি নিয়ে কেবিন থেকে বের হতেই একটা লোকের সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলাম
সাথে সাথে লোকটাকে,,, ইতর,, বিলাই,,গাধা,,প্লাস্টিক চোখে দেখেন না উগান্ডা থেকে আমদানি হইছে মনে হয় বলেই উঠতে যাবো তখনি লোকটা হাত বাড়িয়ে দিলো আমি তার হাত ধরে উঠবো তখনি ফারহান এসে আমাকে আমার হাত ধরে উঠিয়ে দিলো,,, আর বললো আমি ডাকা ছাড়া আমার কেবিনে আসবেন না ওকে (রেগে বললো)
আর লোকটা….