ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 !

ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 !

ক্লাবে বসে একের পর এক ড্রিংক করছে প্রভাত। রাগে সে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেও তো সব ঠিক ছিল। বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো। কিন্তু ঐ মেয়েটা এসে সব নষ্ট করে দিল।
মেয়েটার সাহস কি করে হয় প্রভাত চৌধূরী কে এভাবে হুমকি দেওয়ার!

***কিছুক্ষণ আগে***

প্রভাত তার নতুন প্রজেক্ট কনফার্ম করতে পেরে একটা পার্টির আয়োজন করে। তার অফিসের সমস্ত স্টাফরা এসেছে। মেয়ে স্টাফ গুলো খুব বেশিই মেকআপ করেছে। কারণ তাঁদের সবার একটাই ইচ্ছা বিজনেসম্যান প্রভাত চৌধূরীকে বিয়ে করার। শুধু যে টাকার লোভ তাও নয় প্রভাত চৌধূরী ইয়াং হ্যান্ডস্যাম একটা ছেলে। যে কোনো মেয়েই প্রথম দেখাতে ক্রাশ খাবে।
প্রভাত আজ একটা ব্ল্যাক স্যুট পড়েছে তার ফুল ড্রেস আপ ব্ল্যাক। চুল গুলো স্পাইক করা মেয়েরা যেন তার গায়ে এসে পড়ছে। কিন্তু সে কোনো মেয়েকেই পাত্তা দেয় না।

পার্টিতে অনেক গুলো মেয়েই এসেছিল আর যেই কোম্পানীর সাথে ডিল ফাইনাল হলো সেই কোম্পানীর এমডি আর তার ছোট মেয়ে তারা হাসান ও এসেছিল। যে কিনা খুব সুন্দর অনেক ছেলের নজর আজ তারার উপর রেড কালার গাউনটা যেন তার ফর্সা শরীরটারই অপেক্ষায় ছিল এটাই তার যোগ্য স্থান। তার একটা অন্যরকম গ্ল্যামার আছে বলতেই হয়। সবার সাথে সাথে প্রভাতের চোখটাও তারার উপর। এই মেয়ে টা কে জানার জন্য উতলা হয়ে উচেছে সে।

তারা একটা চেয়ারে বসে তার ফ্রেন্ডদের সাথে গল্প করছে। তখনিই পেছন থেকে কেউ তাকে ডাক দিল।
পেছন ফিরে দেখলো একটা সুন্দর সুদর্শন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে। তারার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল

—-হেলো! আমি আকাশ,, আকাশ চৌধূরী।

—-আমি তারা হাসান।(হাত মিলিয়ে)

—-আপনি কে মানে এই অফিসের কোনো স্টাফ মনে হচ্ছেনা তো।

—-আমি আসলে KH কোম্পানীর এমডি কায়েস হাসানের ছোট মেয়ে।

—–ওহ। তাহলে আপনাদের কোম্পানীর সাথে আদের কোম্পানীর ডিল ফাইনাল হয়েছে।

—–আপনি!

—–হুম আমি চৌধূরী গ্রুফ অব ইন্ড্রাস্টিজের মালিক আরমান চৌধূরীর ছোট ছেলে।

—‘ওহ।

—-হুম। আচ্ছা আপনি কিছু নিচ্ছেন না যে কোল্ড ড্রিংকস, জুস বা অন্যকিছু!

—-আমি মদ খাই না।

—- না আসলে মানে আমি ঐভাবে বলতে

—–না থাক আর কিছু বলা লাগবেনা। আমি বুঝতে পেরেছি এখানে কম বেশি সবাই খায় তাই জিজ্ঞেস করাটা স্বাভাবিক।

—-I Like It…

—- মানে?

—-আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি কোল্ড ড্রিংকস নিয়ে আসছি।

—-ওকে।

আকাশ ঐখান থেকে চলে গেল। এতক্ষণ প্রভাত দাঁড়িয়ে সব দেখছিল আর শুনছিল। তার ভাইয়ের এইসব আদিখ্যেতা একদম ভালো লাগেনা ওর কাছে। প্রভাতের যখনিই কিছু পছন্দ হয় আকাশ তা নিয়ে যায় তাই প্রভাত এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। সে এই মেয়েকে ছাড়বেনা সে এই মেয়েকে নিজের করেই রাখবে কারণ প্রভাত প্রথম দেখাতেই তারাকে পছন্দ করে ফেলে।

প্রভাত সব ঠিকঠাক করে নেয় তারার সামনে যাবে বলে কথা। প্রভাতকে দেখলে মেয়েরা প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খায় এই মেয়েটাও তাদের মধ্যেই পড়ে ধরা যায়।

তারা দূরে একটা টেবিলে বসে ছিল। তখন প্রভাত যায় ঐখানে গিয়েই তারার কাধে হাত দেয়। তারা চমকে গিয়ে পেছন ফিরে। তারপর রক্তচক্ষু নিয়ে প্রভাতের দিকে তাঁকায়। প্রভাত কিছুটা বিরক্ত হলো এতে। মেয়েটা একটু বেশিই ভাব ধরে নিয়েছে। যা প্রভাতের মোটেও ভালো লাগেনি।

তারা প্রভাতকে বলতে লাগলো

—-হেই ইউ আমাকে টাচ্ করার সাহস হয় কি করে?

—-মানে! টাচ্ করার জিনিস টাচ্ করবোনা তো কি করবো?(ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি)

—- হোয়াট!

—–ইয়েস। তোমার মতো বিউটিফুল লেডি থাকলে কি কেউ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে!

তারার এবার সহ্য হলো না ঠাস করে একটা থাপ্পর দিল প্রভাতকে। প্রভাতের চোখ দুটো রাগে লাল হয়ে গেছে। তারা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে লাগলো

—-লম্পট কোথাকার। এখানে এসে এসব লুচ্চামি করা হচ্ছে? আপনাদের মতো কিছু ফালতু ছেলের জন্য আজ এই নারীরা এত অবহেলিত হচ্ছে। আপনার বাসায় মা বোন নেই?

—–এই মুখ সামলে কথা বলো।

—–না। ছি এইজন্যই এইসব পার্টিতে আমি আসতে চাইনা। যত্তসব ফালতু লোক।

আরো অনেক কিছু বলে সেখান থেকে চলে যেতে নিল। প্রভাত তারাকে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিল। আর তারার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল কিন্তু সে তারার ঠোঁটের উপর রাগ ঝারছে। তারার ঠোঁট রীতিমতো কামরানো হচ্ছে। তারা অনেক চেষ্টা করছে নিজেকে ছাড়াবার কিন্তু পারছেনা। কিছুক্ষণ পর প্রভাত ওকে ছেড়ে দিয়ে বলে

—– আমার গায়ে হাত তোলার শাস্তি ছিল এটা নেক্সট টাইম এমন কিছু করলে এর থেকেও খারাপ কিছু হয়ে যাবে।

—-আজ যা কিছু হলো তার জন্য আপনাকে পস্তাতে হবে।

—-তা নাহয় দেখাই যাবে কে পস্তাবে আর কে বিজয়ের হাঁসি দিবে।

প্রভাত সেখান থেকে চলে আসলো আর তারা কান্না করে দিল কিন্তু কষ্টে নয় রাগে। আর কিছু না বলে পার্টি থেকে বেড়িয়ে এলো এই লোকটাকে এত সহজে ও ছাড়বেনা। আজকে ওর সাথে এমন করার জন্য তাকে সে অনেক বড় শাস্তি দিবে।

***বর্তমানে***

—-স্যার ঐ মেয়েটার এড্রেস পেয়েছি। আমাদের কোম্পানীর সাথে যেই কোম্পানীর ডিল ফাইনাল হয়েছে সে ঐ কোম্পানীর এমডির ছোট মেয়ে। তারা হাসান।

—-তারা! (বাঁকা হেসে)

—–জ্বি স্যার।

—-আচ্ছা তুমি যাও আমার গাড়ি বের করতে বলো আমি আসছি।

—-ওকে স্যার।
প্রভাতের সেক্রেটারি জামিল সেখান থেকে চলে গেলে প্রভাত একটা ডেভিল স্মাইল দিয়ে বলে

—–মিস তারা আমি তোমার লাইফ টা আমার অস্তিত্বে ভরিয়ে দিব। তখন তোমার রাগ জেদ ইগো কোথায় যাবে তা আমিও দেখতে চাই।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত