১লা জানুয়ারি রাত ১২টায় ঘরে ঢুকতেই নাকে একটা অদ্ভুত গন্ধ লাগল হঠাৎ বিছানার দিকে চোখ যেতেই কি যেন নড়ছে তারপর দেখি আমার দিকে আস্তে আস্তে ধেয়ে আসছে।
— কে? কে আমার বিছানায়? কে?(আমি)
ওওমআআ ভূউউত ভূউউউ…..(কথা আটকে গেল)
একটা ঠান্ডা হাত আমার মুখ চিপে ধরেছে। আমাকে কথা বলতে দিচ্ছে না, সমস্ত শরীর কাপছে, এটাই বুঝি আমার শেষ মুহূর্ত, নাহ্ আর পারছি না নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা দেখতেছি, আর কিছু মনে করতে পারতেছি না
কিছুক্ষন পর ঠান্ডা পানির ঝাপটা এসে পরল আমার মুখে, এটা মনে হয় স্বর্গের পানি, চোখটা হাল্কা খুলতেই দেখতে পেলাম আমার মুখের সামনে অলংকার বেষ্টিত ধবধবা একটা আপ্সিরী মুখ, এটা মনে হয় স্বর্গীয় হুর। যাক ভালোই হলো অকালে ভূতের হাতে মরে স্বর্গেই চলে এলাম।
— এই একটু উঠে বস(কোন নারীর সুমধুর কন্ঠস্বরশুনে উঠে বসলাম)
হঠাৎ খেয়াল করলাম এতো আমার নিজেরই রুম, তবে বিছানাটা বাহারী সুগন্ধি ফুলে সাজানো। তারই গন্ধ ছড়িয়ে পরছে ঘরে। আর আমার সামনে একটা মেয়ে হাতে গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
— নেও একটু পানি খাও (মেয়েটি)
— এই আপনি। কে? এত রাতে আমার ঘরে কি করছেন আর আমাকে তুমি করে বলতেছ কেন?
— আমি কে? মানে?(অবাক হয়ে)
আর তোমাকে তুমি করে বলব না তো কি করে সমন্ধন করব??
— আ আ আমি আপনাকে চিনি না। আমি একটা শান্তশিষ্ট অবলা ছেলে।আর এত রাতে আপনার মতো যুবতী মেয়ে আমার ঘরে ঢুকে থাকে তাহলে লোকে কি বলবে?
— তুমি কি ভয় পাচ্ছ,আর এখন এটা আমারও ঘর।
— আমি ভয় পাব কেন। প্লিজ আামকে ছেড়ে দেন আমার মান সন্মান প্লাস্টিক করিয়েন না, আমি জাতির ভবিষ্যত!!
— মানে?
–আরে আপনি জানেন না আজকের শিশু আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যত..
— তুমি শিশু..! বাহ্..তুমি…
— আপনি কি চান আমার কাছে? প্লিজ আমাকে একটু দয়া করেন….!!!!
— যা চাইব তাই দেবে?
— হ্যা আবশ্যই দেব, তাও আমাকে রক্ষা করেন,,
— একটা ভালো দেখে মাকাল বাশ দিতে পারবে?
— বাঁশ! এত রাতে বাঁশ কই পাব?
— বাইরেই আছে।
— তো বাশ দিয়ে কি করবেন?
— তোমার মাথায় বারি দিয়ে বিলুপ্ত স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনব। বাংলা সিনেমায় শিখেছি কিভাবে স্মৃতিশক্তি আনতে হয়।
— আপনি কিন্তু আমাকে অপমান করতেছেন। আমার স্মৃতিশক্তি ঠিকই আছে..
–ঠিক থাকলে কি নিজের বিয়ে করা বউ কে কেউ না চিনে?
— বউ…(একটু ভাবলাম)
— কি হল..
— না কিছু না ও হ্যা মনে পরছে, সরি ভুলেই গেসলাম যে আমি আর জিবিত নেই এখন আমি বিবাহিত।
–হুম,,, এখন তো তুমি করে বল (আহাল্লাদি সুরে)
— আচ্চা তুমি কি সত্যই আমার বউ। না মানে তুমি মানুষ না জ্বিন ভুত?
–আমি জ্বিন ভুত হতে যাব কেন?
আমাকে দেকে কি ভুত মনে হয়?
— না মানে কিছুক্ষন আগে তাহলে ওটা কে ছিল..
— কোনটা? ( ভ্রু কুচকে)
— ঐযে কিছক্ষন আগে আমার মুখ চিপে ধরেছিল।
— ওওও আমিই ধরেছিলাম
— তুমি..!
— হুম, মা বলেছে স্বমী বাসরঘরে ঢুকলে প্রথমে সালাম করতে হয়, তাই যেই তোমাকে সালাম করার জন্য বিছানা ছেড়ে নামতেই তুমি চিল্লায় উঠলে কেন? ভাগ্যিস ঠিক সময় ধরছিলাম নইলে কেউ শুনতে পেলে যে কি হত আজ!
— ওহ্, তাহলে তোমাকে দেখেই ভয় পাইসি।
–আমাকে দেখে (অবাক হয়ে)
— মুখের মধ্যে যতগুলো আটা ময়দা সুজি লাগাইস, তো এত রাতে যে কেউ এ অবস্থা দেখলে পটল তুলবে। ভাগ্যিস প্রাণে মরি নাই।
— এই যে মিস্টার এটা আটা ময়দা না, এটাকে বলে মেকাপ..
— ঐ একই কথা।
— জী না জামাই মশাই, তবে সত্য কথা বলতে কি জানো এই মেকাপ করা আমারো পছন্দের না। বিয়ের জন্য নাকি মেকাপ করতেই হবে তাই করেছি একটু..
— অ্যা…. এটা একটু!!
ওকে তাও যাক বাবা আমার টাকা তাহলে বাঁচবে, বউ এর মেকাপের পিছনে টাকা ঢালতে হবে না.. (আস্তে আস্তে বললাম)
— কিছু বললে..!
–না না কিছু বলি নাই, আচ্ছা তোমার নাম কি?
— কিহ্ বিয়ে করেছ, বউ এর নাম জানো না,, কাজী যখন বিয়ে পড়াচ্ছিল তখন মনোযোগ কই ছিল,,
(আশেপাশে যতগুলো সুন্দরি রমনী ঘিরে রেখেছিল, এ দিকে নজর না দিয়ে অন্য দিকে মনোযোগ দেয়ার সময় কই, সুযোগ তো সবসময় আসে না, তাই সুযোগে সৎ ব্যবহার করেছি)
— কি হল কি ভাবছ..!(বউ)
–না মানে তখন তো শুনেছিই কিন্তু তোমার মুখে খুব শুন্তে ইচ্ছা করতেছে.. প্লিজ একটু বলো না গো..
–ওহ্! পাপিয়া। নওরীন মুনতাহা পাপিয়া।
— আলহামদুলিল্লাহ অনেক সুন্দর নাম। আর হ্যা আমি রাহাত..
— আমি জানি..
–আচ্ছা আমি কিন্তু তোমাকে নওরীন বলেই ডাকবো..
— আচ্ছা ইস্পেসাল মানুষ তো ইস্পেসাল নামে ডাকবেই..
–হুম..( নিজে প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে, মনটা বলতেছে বউটারে একটু জড়ায় ধরি)
–আচ্চা জামাইমশাই তোমাকে আমি কি বলে ডাকব..?
— কেন? আমার কি সুন্দর একটা নাম আছে রাজিবুল হক রাহাত। রাহাত বলেই ডাকবা।
–উমম নাহ্, বিয়ের পর স্বামীর নাম ধরে বলার চেয়ে অন্য কিছু বলে ডাকাই শ্রেয়, এতে স্বামীর সন্মান অক্ষুন্য থাকে।
— অ… তাহলে জামাইবাবু ই বলিও।
— উমম, অন্য কিছু ভাবতে হবে,,
— আচ্ছা,, তবে এই দেখ আমি কিন্তু বিয়ে করতে চাই নি। আমাকে…
–what!! বিয়ে করতে চাওনি মানে! আমাকে কি তোমার পছন্দ হয় নি..? ( ভাঙ্গা কন্ঠে)
— না না সেটা না
(বাপ রে মেয়ের তাহলে আমাকে ভালোই পছন্দ হয়েছে, নইলে বিয়ে করতে চাই নাই শুনেই কন্ঠ ভেঙ্গে গেল!! তাছাড়া আমাকে পছন্দ না করে যাবে কই?, এর আগে আমকে দেখে যে কত মেয়ে……. থাক নিজের প্রশংসা নিজে না করি 😎)
— তাহলে..(বউ)
–আসলে পরিবার আর বন্ধরা মিলে আমার মতো একটা মাছুম বাচ্চাকে বিয়ের পিড়িতে বসাইছে..
— মছুম বাচ্চা….!!
— হুম এই তো দুদিন আগেই DANNO দুধ দিয়ে ফিডার খাওয়া ছাড়লাম, তো আমি মাসুম বাচ্চা নয় তো কি…!
— দুদিন পরেই একটা ফুটফুটে মাসুম বাচ্চার বাবা হবা, আর এখন নিজেকে মাসুম বাচ্চা বলতেছ।
–কিহ্ ৩১০ দিন মানে ১০ মাস ১০ দিনের কাজ তুমি ২ দিনেই করে ফেলবা…!! এত তারাতাড়ি Google থেকে download করবা?
–যাহ্..( লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে)
— হা হা দুই দিনে বাপ বানাইতে স্বয়ং #কলিকাতা হারবাল ও অক্ষমতার পরিচয় দিবে,,,,
— তুমি চুপ করো তো, ( লজ্জায় মুখ লাল করে ফেলেছে)
–কেন গো বউ??
–ওটা তো কথার কথা ছিল…
— ওওও তাই বুঝি,,, হুম বুঝি তো.. চলো বউ আমার যে তর সইছে না, শুভ কাজে দেরি করতে……
কথা শেষ না করতেই একজোড়া নরম উষ্ঞ ঠোঁটেরর স্পর্শে কথা আটকে গেল।
এর পরেই ঘটে গেল যুগান্তকারী ইতিহাস।
অবিবাহিত কেউ এই ইতিহাস জানতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না..
.
(ভুল ত্রুটি মর্জনিয়, কেমন হয়েছে জানাবেন)
.
.
ওওও.. বউ কথা কও..
কবে হইমু পোলার বাপ কানে কানে কইয়া দাও😜😜
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক