এক টুকরো ভালবাসা

এক টুকরো ভালবাসা

হাঠাৎ করেই ভালোবাসা চলে আসে অনিকের জীবনে,,
সে ঢাকা ভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজি ডিপারটমেন্টের ছাত্র। খুব দুষ্ট প্রকৃতির হলেও ক্লাসের সময় খুব মনযোগী থাকে। ক্লাসের সবাই ওকে ভালো করেই চিনে। ওর একটা ভালো গুন আছে ও সবাইকে অনেক হাসাতে পারে যেটা সবাই পারে না। মাত্র একমাস হল ওদের ক্লাস শুরু হয়েছে। সবাই অনিককে ভালোভাবে চিনলেও ও সবাইকে এখনও ভালোভাবে চিনে না। টি এস সি তে আড্ডার পর সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরছিল অনিক। বাহিরে অনেক বৃষ্টি। বাসে বসে আছে অনিক। কিছুদুর যেতে না যেতেই অনিক খেয়াল করল ওর পাশে একটি মেয়ে বসে আছে। বৃষ্টিতে প্রায় ভিজে গেছে মেয়েটা। মেয়েটার দিকে তাকাতেই অনিক দেখলো মেয়েটি ওর ক্লাসমেট। ওর নাম মীম। বাসের ভিতর এক লোক রুমাল বিক্রি করছিল। অনিক একটা রুমাল কিনে মীমকে দিয়ে বলে ভালোভাবে মাথাটা মুছে নিতে। মীম অবাক হয়ে ওর দিকে তাকায়। রুমালটা নিয়ে অনিককে ধন্যবাদ জানায় মীম। অনিক মেয়েদের সাথে তেমন একটা কথা বলতো না। মীমকে চিনলেও ক্লাসে ওর সাথে কথা বলা হয়নি অনিকের। বাসেও তেমন কথা হয়নি ওদের। কিছুক্ষণ পর বাস থামতেই অনিককে বিদায় দিয়ে বাস থেকে নেমে যায় মীম।
পরদিন সকালে ক্লাসের ফাকে অনিকের পাশে এসে বসে মীম। ওদের মধ্যে অনেক কথা হয়। রাতের ঘটনারর জন্য আবার অনিককে ধন্যবাদ দেয় মীম। তারপর অনিকের ফেসবুক আইডি নেয় মীম। এভাবেই শুরু হয় ওদের বন্ধুত্ব। তারপর থেকে মীমের বেশিরভাগ সময় কাটতো অনিকের সাথে চ্যাট করে। সারা রাত দুজনের চ্যাট হতো। ক্লাসেও ওরা একসাথে বসতো। অনিকের ছোট খাটো দুষ্টুমি, সবাইকে হাসানো, এগুলো ওর খুব ভালো লাগতো। ক্লাসের পর ওরা একসাথে ঘুরতে যেত। কখনাও টি এস সি,কখনো কার্জন হল,কখনও বা শহিদ মিনারে। এভাবেই কেটে যায় কয়েক মাস,শুরু হয় পরীক্ষা। দুজন ভালোভাবে পড়াশুনা করে। এক মাসের মধ্যে রেজাল্ট দেয়। অনিক ১ম হয়। মীম ও ভালো করে।এরপর থেকে কোন টপিক না বুঝলে অনিককে ফোন দিতো মীম। এভাবেই শুরু হল ওদের ফোন আলাপ। যখন মীমের মন খারাপ থাকতো অনিক ফোন করে ওকে হাসাতো। ধিরে ধিরে ওদের দুজনের প্রতি দুজনের ভালো লাগা সৃষ্টি হয়। কিন্তু কেউ কাউকে কিছুই বলে না। মীমের সাথে যখনই অনিকের দেখা হত তখনই অনিক ওকে চকলেট দিত। কারণ মীম একদিন অনিককে বলছিল চকলেট ওর অনেক প্রিয়। তাই অনিক প্রতিবার চকলেট দিত এভাবে অনেকদিন চলার পর অনিক ভাবে এবার মীমকে ওর ভালোবাসার কথা বলবে। তাই সে মীমকে ফোন দেয়। কিন্তু ফোন বন্ধ পায় অনিক। তারপর আরও কয়েকবার ফোন করে অনিক কিন্তু প্রতিবারই ফোন বন্ধ পায় অনিক। অনিক ভাবে পরদিন ক্লাসে সব বলবে অনিক কিন্তু পরদিনও ক্লাসে আসে না মীম। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ক্লাসে আসে না মীম। ফোন ও যথারীতি বন্ধ। এদিকে অনিকের মন ছটফট করতে থাকে। মীমের বন্ধুদের কাছ থেকে ওর ঠিকানা নিয়ে মীমের বাসায় যায় অনিক। ওদের বাসায় কাজের মেয়ে ছাড়া আর কেউ ছিল না। মীমের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সে বললো ও এক সপ্তাহ ধরে হসপিটালে ভরতি। একটা মারাত্মক বাস দুর্ঘটনায় ওর এক পা পজ্ঞু হয়ে গেছে। মুখে প্রচন্ড আঘাত পাওয়ায় চেহারা নস্ট হয়ে গেছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই অনিক হসপিটালে যায় এবং দেখে বেডে শুয়ে আছে মীম। ঘুমিয়ে আছে সে। মীমকে এই অবস্থায় দেখে মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পরে অনিকের। মিমের পাশেই অনেকক্ষণ বসে ছিল। মীম চোখ খুলে দেখে অনিক ওর পাশে বসে আছে। কিছু যেন বলতে চায় ওর নি:স্পাপ চোখ দুটো। দুজনের চোখেই পানি কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না। হুট করে মীমকে প্রপোজ করে বসে অনিক। মীম অবাক হয় এবং বলে দেখ আমি এখন পজ্ঞু। আমি তোমার জীবনে বোঝা ছাড়া আর কিছুই হতে পারবো না আমাকে ভুলে যাও। অনিক রেগে যায় এবং বলে আমি তোমার শরীরকে না তোমাকে ভালোবাসি। তুমি যেমনই হও আমি তোমার সাথে বাকি জীবন পার করতে চাই এই কথা বলে মীমের হাত আকড়ে ধরে অনিক। মীম কথাটা শুনে কেঁদে ফেলে এবং ভালোবাসি তোমাকে এই বলে শক্ত করে ধরে থাকে মিম…

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত