ঘুম থেকে উঠে দেখি বাসায় কেউ নেই,সবাই কোথায় গেল সেটাই চিন্তার ব্যাপার আমাকে একা রুমের মধ্যে রেখে সবাই কি উগান্ডায় চলে গেল।সকালে উঠে প্রতিদিন আমি চা খাই সরি পান করি কিন্তু আজ যেহেতু কেউ বাসায় নেই অর্থাৎ আমাকেই চা বানাতে হবে তবে চিন্তার কোন কারণ নেই আমি চা মোটামুটি ভালই বানাই,বাসায় কারেন্ট এর হিটার আছে সো সমস্যা হবেনা।চুলায় কেটলি বসিয়ে আমি কিছু দূরে বসে বসে কলা খাচ্ছি আর চুলার পাশের ডাস্টবিনে কলার খোসা ফেলছি হঠাৎ একটা খোসা ডাস্টবিনে না গিয়ে কেটলির ভিতর বাস্কেট বলের মত ঢুকে গেল যত দ্রুত কলার খোসা ঢুকল তার থেকে দ্বিগুণ হারে দৌড়ে আমি এসে কেটলি থেকে খোসা বের করার চেষ্টায় লেগে গেলাম।ততক্ষণে সেটা প্রায় মোটামুটি গলে গেছে,চা পাতার চা না হয়ে সেটা হয়ে গেছে কলা চা।আমি আবার অসল প্রকৃতির তাই নতুন করে আবার চা না বানিয়ে সেটাই খেতে লাগলাম কিছুটা কলা কলা স্বাদ আমিই মনে হয় প্রথম এই চা আবিষ্কার করেছি,এজন্য নিজেকে কিছুটা গর্বিতও মনে করছি।
.
হঠাৎ আঁখি(ছোট বোন)এসে রান্না ঘরে ঢুকল।
-ভাইয়া তুই একা একা চা খাচ্ছিস আমাকে দে।(আঁখি)
-অবশ্যই,নে তুইও খেতে থাক।আচ্ছা এবার বল আম্মু কোথায় আর তুই কোথায় ছিলি?
-আন্টি অসুস্থ তাই আম্মু তকে ঘুমে রেখেই চলে গেছেন।আমি রুপা আপুদের বাসায় গিয়েছিলাম,আচ্ছা তর চাতে এইরকম স্বাদ কেন??
-নতুন আবিষ্কারের চা তো তাই।
-মানে।
-মানে বুঝতে হবেনা চুপচাপ খেয়ে পড়তে যা সামনে এক্সাম।
-হুহ যাচ্ছি যাচ্ছি নিজে পড়ার নামে নাই শুধু আমার পড়া নিয়ে ব্যাস্ত।
-তুই বর্তমানে যে ক্লাসে পড়ছিস আমি ওইক্লাসে থাকতে কতটা ব্রিলিয়ান্ট ছিলাম জানিস?আমার রুল ১ ছিল স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করতেন।
-হয়েছে হয়েছে নিজের প্রশংসা নিজে আর করতে হবেনা।
-তর এইরকম একটা ভাই আছে অথছ তুই প্রশংসা করছিস না,তাই নিজের প্রশংসা নিজে করতে বাধ্য হচ্ছি।
.
হালকা নাস্তা করে বাহিরে এসে দেখি গেইটের সামনে রুপা,এই মেয়েটা আমাকে একদম সহ্য করতে পারেনা এর পিছনে অবশ্যই কারণ রয়েছে আজ পর্যন্ত ওর কোন কথার সঠিক জবাব আমি দিতে পারিনি।আমি রুপার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বললাম,
-আরে রুপা যে,
-হুম আমিই।
-আজ তো তোমাকে একদম পরী পরী লাগছে।
-থ্যানকু।
-তবে আফসুস পৃথিবীতে কোন জ্বিন নাই যে তোমাকে বিয়ে করবে।
-ফাজলামি করছেন?
-না যা সত্য তাই বললাম পরীদের তো বিএফ বা হাজবেন্ড জ্বিনই হওয়ার কথা,কি বল তুমি?
-আপনি বেশি বকেন কোথায় যেন যাবেন যান।
-আমি তো কোথাও যাব না।
-ও আচ্ছা তাহলে আমিই যাই।
-অবশ্যই,অবশ্যই তবে এই মাত্র আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমিও যাব।
-কোথায় যাবেন?
-কেন বাসার ভিতর যাব।
-দূর যেখানে ইচ্ছা সেখানে যান।
-রেগে যাচ্ছো কেন?
-আপনার উপর রাগ করার কোন মানেই হয় না।।
.
অতঃপর পরীর আমার সাথে রাগ করে চলে গেল খুব সম্ভব বিএফ অথবা জ্বিনের সাথে দেখা করতে গিয়েছে।আমিও ভদ্র ছেলের মত বাসায় ঢুকে গেলাম।আঁখি পড়ছে আমি পাশে গিয়ে বললাম,
-দেখ তুই আমার একটা মাত্র বোন ঠিক করে পড়শোনা কর আব্বু তকে নিয়ে জাগ্রত অবস্থায় কত যে স্বপ্ন দেখছেন তকে সেগুলা পূরণ করতে হবে।
-তকে নিয়েও তো দেখছেন?
-আমাকে দিয়ে সেগুলা পূরণ হবেনা কারণ পড়াশোনা আমার দ্বারা আর সম্ভব না।
-মানে,
-মানে টানে কিছু নাই তুই পড়ে যা তকে নিয়ে আমাদের কত আশা দরকার হলে সিনেমার মান্না,শাকিব খান,বাপ্পারাজ,জসিম এর মত রিকশা,ঠেলাগাড়ি চালিয়ে তকে আমি পড়িয়ে যাব।
-তুই রিকশা,ঠেলাগাড়ি চালাবি কেন?
-না মানে পড়ার খরচ যোগাতে।
-আব্বু আজ বাসায় আসুক তিনাকে বলব তিনার ছেলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ঠেলাগাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
-তুই এত বেশি বুঝস ক্যান,ঠিকমত পড়তে থাক।
-তুই পড়াশোনা করছ না কেন?
-জন্মের সময় আমার মুখে মধু না দিয়ে যদি অ,আ,ক,খ একটা কাগজে লিখে পানিতে চুবিয়ে সেই পানি আমার মুখে দিতেন তাহলে হয়ত পড়াশোনায় মনোযোগী হতাম।
-উফফ অসহ্য আমার মনে হচ্ছে তুই অনার্স পাস করবিনা।
-আমারও মনে হচ্ছেরে।
-আব্বুকে ব্যাপারটা জানানো প্রয়োজন।।
-খবরদার আব্বুকে কিছুই বলবিনা নইলে এখন আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাব আর ভূত এসে তকে খেয়ে ফেলবে।
-ভয় দেখাচ্ছিস,আমি কিন্তু ভয় পাই না।
-অকে আমি যাই তাহলে।
-আমি কিন্তু আব্বু কি ফোন দিয়ে বলে দিব।
-আচ্ছা বলতে হবেনা পড়তে থাক।
.
ছাদে উঠে ঠাস্কি খেলাম পরী দেখি এখানে বসে হাওয়া খাচ্ছে তারমানে উনি জ্বিনের সাথে দেখা করতে যান নাই।পরীর দিকে তাকিয়ে অবাক হওয়ার ভঙ্গি করে বললাম,
-তুমি এইখানে দেখি!
-এখানে আসা কি নিষেধ।
-সেটা অবশ্য না কারণ বাসাটা তো আমাদের নিজস্ব না।
-হুম তা এতক্ষন কি করছিলেন?
-ছোটবোন কে উপদেশ দিচ্ছিলাম যাতে ভাল করে পড়ে।
-আপনারও তো সামনে এক্সাম আপনি পড়েন না কেন?
-এক্সাম সামনে থাকলেই যে পড়তে হবে এমন তো কথা না,আর ব্যাটা ফাজিল এক্সাম দৌড়াইয়া আমার সামনে চলে আসছে কত বড় বেয়াদব।
-এক্সাম সামনে থাকলে পড়তে হয়না।
-সেটা ব্যাক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে।
-আমার কি মনে হচ্ছে জানেন আপনার মাথায় সমস্যা আছে শুধু সমস্যা না মহা সমস্যা মাঝে মাঝে মনে হয় আপনি একজন পাগল টাইপ মানুষ তবে শান্ত শিষ্ট ফাজিল মার্কা পাগল।
-ওরে বাহ আমার সম্পর্কে তোমার এত অভিযোগ শুনে খুশি হলাম।
-খুশি হওয়ার কি?
-তুমি আমাকে পছন্দ কর বলেই আমার সম্পর্কে এত গুলি অভিযোগ করলে যাতে আমি শুধরে যাই,যদি অপছন্দ করতে তাহলে এই গুলা বলতে না কারণ আমার পরিবর্তনে তোমার কিছু যায় আসত না সো আমাকে কেউ পছন্দ করে সেটা জেনে খুশি হলাম।
-হুহ আমার তো আর কাজ নেই যে আপনাকে পছন্দ করব।
-তাহলে আমার পরিবর্তন নিয়ে তোমার এত মাথা ব্যাথা কেন?
-আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই আপনার যে ভাবে ইচ্ছে সেইভাবে চলুন আমি গেলাম বাই।
.
বালিকা ছাদ হতে চলে গেলেন আমি ছাদে দাঁড়িয়ে নিচের রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ এক ব্যাক্তি রাস্তায় আছাড় খেয়ে পরলেন খুব সম্ভব তিনার পায়ের সাথে ছোট একটুকরা ইটের সংঘর্ষের ফলে তিনি আছাড় টা খেলেন তবে সেজন্য থাকে তেমন দুঃখিত লাগল না।বেচারার পকেটে যে ২হালি ডিম ছিল সেগুলা ভেঙ্গে ওইখানে ভর্তা হয়ে গেছে বেচারা পকেট থেকে ডিম গুলা বের করে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।হয়ত মনে মনে ভাবছে বাড়িতে যে জঙ্গি বউ টা আছে আজ না তাকে কুচিকুচি করে ফেলে।আমিও বেচারার উদাস দৃষ্টি থেকে ভাবছি আমার কপালেও হয়ত এইরকম একটা জঙ্গি বউ জুটতে পারে।
ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি কবে যে বিয়ে হবে,দিনের পর দিন যাচ্ছে,মাসের পর মাস,বছরের পর বছর,জিনিস পত্রের দাম বেড়ে বেড়ে বাজারে আগুন ধরে গেছে।এখন যদি বিয়ে না করি তাহলে হয়ত দেখা যাবে বিয়ের অনুষ্টানে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপার টা বাতিল করতে হবে নইলে বাপের সব সম্পত্তি পেয়াজ কিনার পিছনেই চলে যাবে।
-বাহ রয়েছেন দেখছি আপনি আমি তো ভেবেছিলাম চলে গেছেন।
পিছনে ঘুরে দেখি রুপা দুহাতে দুটা চায়ের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
-না যাইনি ভাবছি ব্যাটা পেয়াজের জন্য মনে হয় বিয়েটা হবেনা।
-পেয়াজের জন্য হবেনা কেন?
রুপা আমার দিকে একটা চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিল আমি কাপ হাতে নিয়ে বললাম,
-যে হারে পেয়াজের দাম বাড়ছে বিয়েতে তো মানুষদের খাওয়াতে হবে সেখানে গরুর মাংসে যে পরিমাণ পেয়াজ লাগবে সেটার দাম আমার বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়া লাগবে।
-হাহা ফাজলামি করছো,তবে আপনি মানুষ ভাল শুধু একটু ফান টান কর এই আরকি।
-তা তোমার জ্বীন বয়ফ্রেন্ড আছে যেহেতু তুমি পরী।
-আমি মোটেই পরী না,তবে পরী হলে ভাল হত উড়ে বেড়ানো যেত।
-এত উড়ার যখন শখ তাহলে একটা হেলিকপ্টার কিনে ফেললে কেমন হয় ডানা লাগিয়ে তো উড়া যাবেনা,হেলিকপ্টারে নাহয় বসে সেই শখ মিটাবে কি বল?
-বড্ড বেশি বকছেন,আমি এখন চলে যাব কাপ দিন।
-চা খাওয়া শেষ হলেই দিয়ে দিব ততক্ষণ দাঁড়িয়ে গল্প কর।
-আপনার সাথে গল্প করতে এখন ভাল লাগছেনা,আমি চলে যাচ্ছি পরে কাপ দিয়েন।
-তোমার কাপ কি আমি পকেটে নিয়ে ঘুরব যে পরে দেখা হলে দিব।
-আপনাকে চা এনে খাওয়ানো ভুল হয়েছে।
-অবশ্যই ভুল করেছ,ভুল যখন করে ফেলেছো কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে সেটার প্রায়শ্চিত্ত করে যাও।
.
রুপা চায়ের কাপ না নিয়েই চলে গেল,আমিও নিচে নেমে আসলাম।চায়ের কাপ কিন্তু ছাদে রেখে আসছি।নিচে নেমে দেখি আঁখি(ছোট বোন) গভীর মনযোগ দিয়ে গেইম খেলছে ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যানস,এট্যাক দিয়ে আরেক ব্যাটার ভিলেজ তছনছ করে দিচ্ছে।আমি দিলাম আমার ফোন থেকে ফোন সাথে সাথে গেইমের ১২টা বেজে গেল।আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকাল মনে মনে হয়ত বলছে,”তুই আমার বড় ভাই না হলে তরে আমি জিন্দা কুচিকুচি করে ফেলতাম”।আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
-ফোন দিলি কেন?
-আমি তো আম্মুর ফোনে দিছিলাম এখন দেখি ফোন তর কাছে।
-তুই আমার কাছে দেখেও ফোন দিছিস।
-ভাল করছি পড়া বাদ দিয়া গেইম কি রে,তুই জানছ আমার কি রেজাল্ট আসছিল ssc তে আমারে নিয়া তখন স্কুলে তোলপাড় শুরু হইছিল।
-জানি কি তোলপাড় হইছিল ইসলাম শিক্ষায় ফেইল করে রেকর্ড করছিলি।
-খামুশ,আমি অল্পের জন্য এ+ মিস করলেও আমি ছিলাম বহু প্রতিভার অধিকারী স্টুডেন্ট।
-জানি জানি কিসের অধিকারী এই জন্যই রুপা আপু সেইদিন বলছি।
-কি বলছিল?
-আঁখি তোমার ভাইরে একটু বেশি করে হরলিক্স খাওয়াইও ওর মেধার বিকাশ হচ্ছেনা।
-এত বড় অপমান তুই জানছ আমি যদি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তাম আজ তাহলে এতদিনে আইনস্টাইন বল আর নিউটন বল সবার রেকর্ড ভেঙ্গে নিজের নাম উপরে নিয়ে আসতাম।
-ক্রিকেট খেলা পাইছো যে রেকর্ড ভেঙ্গে দিবা।তাছাড়া ক্রিকেট ও তো ভাল খেলতে পার না,প্রথম ম্যাচে ০ রানে স্টাম্প আউট হইছিলা সবই জানি।
-তুই আমার বইন হইয়া এটা বলতে পারলি প্রথম ম্যাচে ০ করা দেখলি কিন্তু পরের ম্যাচে ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটা দেখলিনা।
.
আঁখির সাথে মারামারি করার পর্যায়ের মাঝেই আম্মু এসে পরলেন আমাদের দিকে কড়া ধমক দিয়ে বললেন,এত বড় হইছিস তবুও এসব কি?বাচ্চা কি এখনো রয়েছিস যে মারামারি শুরু করলি।ফাহিম তুই একটু এইদিকে আয় তো তর সাথে কথা আছে।আমি আম্মুর পিছে পিছে তিনার রুমে গেলাম।আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে কড়া সুরে বললেন,
-তুই মিতারে কোন নাম্বার থেকে ফোন করে রাত-বিরাতে বিরক্ত করছ।
-এইটা কি বল আম্মু আমার মত ভদ্র পোলা এইসব করবে তুমি বিলিভ করলা।
-তর দ্বারা সবই সম্ভব।তুই নাকি মিতার মার ফোনেও ফোন দিয়া বলছস,”আন্টি আপনার মেয়ের তো স্বভাব ভাল না,রাস্তায় ছেলে দেখলেই শিষ দেয়,মাঝে মাঝে একা কোন ছেলে দেখলে চোখ মেরে হাসি ঠাট্টা করে।”
-নাউজুবিল্লা আম্মু এসব কি বল!আমার দ্বারা এসব কি সম্ভব।
-যদি শুনি গোপন নাম্বার থেকে এসব আর করছিস তাহলে তরে সোজা বাসা থেকে লাত্তি মেরে বের করে দিব।
.
মিতা হচ্ছে আমার খালার ননদের মেয়ে দেখতে সুন্দরী হলে কি হবে মেয়ের তেজ বর্তমান বাজারের পেয়াজের থেকেও বেশি। তাই গোপন নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে মাঝে মধ্যে পেয়াজের ঝাজ দেখি কতটুকু আছে।রুপার সাথে ইদানিং দেখা হচ্ছেনা আজ ৩দিন হল ছাদে যাইনি।ছাদে না যাওয়ার পিছনে কারণ হল আমি বাসায় ছিলাম না টানা ৩দিন ফ্রেন্ডের বাসায় ছিলাম।আজ যখন বাসায় এসে বিকালে ছাদে গেলাম তখন দেখি রুপা দাঁড়িয়ে আছে পরনে সবুজ রং এর ড্রেস।এই মেয়ে সব রং এর ড্রেসেই সুন্দর লাগে যেন রুপকথার আসমানের পরী।রুপার কাছে গিয়ে বললাম,
-চায়ের কাপ পেয়েছিলা।
-আপনি কোথায় ছিলেন?
-খুঁজছিলে নাকি।
-না তবে…
-তবে মিস করছিলে এই তো।
-কিছুটা।
-কিছুটা নাকি অনেকটা।
-সেটা জেনে কাজ নেই,কোথায় ছিলেন?
-বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলাম আসতেই দিল না।
-আমাকে কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনার বান্ধবী আছে তাদের বাসায় আপনি থাকেন যেন এসব শুনে আমি রেগে আগুন হয়ে যাই গল্প উপন্যাসের নায়িকাদের মত।
-যদি বলি হ্যাঁ।
-তাহলে বলব ভুল পথে এগুচ্ছেন কারণ আপনি কোথায় ছিলেন আমি জানি আপনার ছোট বোনের কাছ থেকে জেনেছি।
-আচ্ছা আমি যদি তোমাকে হঠাৎ করে বলি,”মিস পরী সারা জীবনের জন্য তোমার জ্বীন হয়ে থাকতে চাই”।তাহলে প্রপোজের স্টাইল টা কি খুব বাজে হয়ে যাবে।
-হুম খুব বাজে হবে তবে কিছু বাজের মধ্যেও আনন্দ থাকে।
-তাহলে তোমার হাতটি ধরতে পারি যেহেতু প্রপোজের পর্বটা শেষ।
-পারেন তবে এখন না আমি আসছি আপনি থাকবেন কিন্তু….
.
রুপা আমাকে রেখেই হেঁটে হেঁটে ছাদের সিড়ির কাছে চলে গেল।আমি তাকিয়ে নিজের অজান্তেই বললাম,বালিকা তোমার শুধু একজোড়া ডানার প্রয়োজন তাহলে রুপকথার পরীর সুন্দর্যকেও তুমি হার মানিয়ে ফেলবে।রুপা কিছুক্ষন পর ফিরে এসেছিল হাতে বিশাল আকারের মগ নিয়ে সেখানে গরম কফি,মনে হচ্ছে বিয়েটা এবার করতেই হবে সে পেয়াজের দাম যতই হউক।