অফিসে বসে মনোযোগ সহকারে কাজ করছি… হটাৎ ফোনের স্কিনে “শাকচুন্নি calling…”
যখনই ফোন দেবে ঝাড়বে, এখন আবার কি বলবে কে জানে? ভয়ে ভয়ে রিসিব করলাম,
> হা..হ্যালো (আমি)
> ওই, ফোন ধরতে এতক্ষন লাগে? (শাকচুন্নি / মেঘা / আমার একমাত্র বৌ)
> কাজ করছিলাম তো
> তোমার কাজ আমি বুঝিনা?
> মানে?
> মানে কিছু না, ৭টার আগে বাসায় আসবা
> Ok, চেষ্টা করবো
> ওই চেষ্টা করতে বলিনি, আসতে বলেছি
> আচ্ছা ঠিক আছে
জানি বেশি কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, তাই ওর সাথে সায় দিলাম ৷ রাগ কাকে বলে, এই মেয়েটার সাথে থাকলে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায় ৷
:
অফিসের কাজ শেষ করতে করতে ১০টা বেজে গেল ৷ বাসায় পৌছলাম ১১টায় ৷ কলিংবেল চাপতেই মা এসে দরজা খুলল,
> কিরে, এত দেরি হলো তোর? (মা)
> অফিসে কাজের চাপ ছিল (আমি)
> আজকেও এত কাজ নিতে হলো?
> আজকে কি?
> কি মানে? তুই জানিস না?
> বুঝতে পারছি না
> আজ মেঘা জন্মদিন তুই জানিস না?
> ওহ শিট, ব্যাগটা ধরো
মায়ের হাতে ব্যাগটা দিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম ৷ একটা কেক, ওর প্রিয় একবক্স ডেইরিমিল্ক, একটা গোলাপ আর একটা মোমবাতি নিয়ে আসলাম ৷ রুমে গিয়ে দেখি মেঘা রুমে নেই ৷ অনেক খুজে শেষে ছাদে গিয়ে পেলাম ৷ হাতে সময় আছে ৩০ মিনিট…
ছাদের এককোণে দাড়িয়ে আছে ৷ পাশে গিয়ে বুঝলাম কাঁদছে ৷ আস্তে করে কাধে হাত রাখলাম, সরিয়ে দিল ৷ এবার ওর সামনে কানধরে বসে পড়লাম, এটাই ওর রাগ ভাঙানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় ৷
> Sorry…. (আমি)
> (নিশ্চুপ)
> Promise, আর কখনো কিছু ভুলে যাব না
> যে কথা রাখতে পারবে না, তা না দেওয়াই ভাল (মেঘা)
> মনে রাখার একটা উপায় বের করেছি
> কি?
> বলছি, তার আগে…….
কেক আর মোমবাতিটা বের করলাম, বাতিটা জ্বালিয়ে দিলাম ৷ বউটার মুখে হালকা হাসি ফুটেছে ৷ তারপর ছোট একটা বার্থডে পার্টি শেষ করে মেঘা বলল,
> এবার বলো
> কি?
> মনে রাখার কি উপায়?
আমি ফোনের ক্যালেন্ডারটা বের করে বললাম,
> রিমাইন্ডারের মাধ্যমে, তুমি তারিখগুলো বলোতো…
> বাব্বা, তোমার তো হেব্বি বুদ্ধি
> দেখতে হবে তো, কার জামাই
কথাটা শুনেই হেসে উঠলো মেঘা ৷ ভুবন ভোলানো হাসি ৷ আমি এবার গোলাপটা দিয়ে প্রথম দিনের মত করে প্রপোজ করলাম,
মেঘা ফুলটা নিয়ে মুচকি হেসে বলল,
> আরও একটা জিনিস বাকি আছে
> কি?
> একটা ডেইরিমিল্ক
> ইস, এটাই তো আনিনি
মেঘার মনটা খারাপ হয়ে গেল বুঝলাম ৷ তারপর ডেইরিমিল্কের বক্সটা ওর সামনে ধরতেই একবস্তা বিস্ময় নিয়ে বলল,
> এত্তগুলে?
> হুম
> কে খাবে?
> তুমি আর আমার বাবু
> বাবু মানে?
> তোমার রিপোর্ট পেয়ে তোমার ডাক্তার আপা ফোন করেছিল
> কি বলল?
> বলল পরিবারের জনসংখ্যা বাড়বে
মেঘা একটু লজ্জা পেল, আমি ওকে বুকে টেনে নিলাম ৷ মেঘাও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আমায় ৷
:
ভালবাসার মানুষগুলো ভালবাসা ছাড়া আর কিছু চায় না ৷ হাজার হাজার টাকায় তাকে সেই খুশি দিতে পারে না যা ১০টাকার এক ডেইরিমিল্ক পারে, যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভালবাসার গিফ্টগুলো পারে, যা বিশেষ দিনগুলোতে হাতটা ধরে উপহার ছাড়াই শুধু মুখের উইশ করাতে দিতে পারে ৷
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক