মেয়েদের সাইকোলজি বোঝার জন্য আমি দুইটা ফেক আইডি খুললাম। একটা আইডিতে আমি অত্যান্ত ভদ্র। আরেকটা আইডিতে আমি অত্যান্ত ছ্যাঁচড়া। দুইটা আইডি থেকেই একটা সুন্দরী সিঙ্গেল মেয়েকে ফ্রেন্ডরিকুয়েস্ট পাঠালাম। দুইটা আইডির উদ্দেশ্যই এক। মেয়েটাকে পটানো। ভদ্র আইডির চ্যাট :
– হাই
– হাই
– কেমন আছেন ?
– ভালো। আপনি ?
– ভালো। কি করেন ?
– কিছু না। আপনি ?
– বই পড়ছিলাম।
– ও। পড়ুন তাহলে। ছ্যাঁচড়া আইডির চ্যাট :
– ডু ইউ হ্যাভ এ ম্যাপ ?
– কেন ? ম্যাপ দিয়ে কি হবে ?
– কারন আমি আপনার মায়াবী চোখে হারিয়ে গেছি। লোকেশনটা খুঁজে নিজেকে উদ্ধার করবো।
– ফ্লার্ট করছেন?
– বাহ। বিউটি উইথ ব্রেন।
– মানে ?
– মানে উত্তর সঠিক। এমন সুন্দরী মেয়েকে দেখলে সাধু সন্নাসীরাও ফ্লার্টিং করতো।
– উফ। বাড়িয়ে বলছেন।
– ট্রাস্ট মি। এক বিন্দুও বাড়িয়ে বলছি না।
– কি করেন আপনি ?
– জুম করছি আপতত। অসাধারণ।
– হোয়াট ? কি জুম করছেন ?
– এই দেখুন আপনার স্ক্রীনশট। আপনার হাসি দেখছিলাম।
– উফফউ ! আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি করেন ?
– কিছু করছি না। আইস্ক্রিম নিয়ে আসবো ?
– বেশি বেশি হচ্ছে না ? আর আমি আইসক্রিম খাই না।
– ফুচকা ? চটপটি ? ঝালমুড়ি? হাওয়াই মিঠাই ?
– ফুচকা। তবে মাঝেমধ্যে। বাসা থেকে নিষেধ। বাহিরের খাওয়ার খাওয়া।
– বাসায় তো কতকিছুই নিষেধ করে। এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে সেটা বের করে দিতে হয়।
– তাই ?
– হাহাহাহা। আজ তাহলে আসি।
– কোথায় যান ? শুনেন ? এবার ভদ্র আইডির চ্যাট :
– আচ্ছা, আপনি বই পড়েন ?
– পড়ি।
– কার বই?
– সাইন্সের বই।
– সাইন্স ফিকশন ?
– আরে না। একাডেমিক।
– ওহ।
– জানেন, আপনি অনেক সুন্দর।
– জানি।
– ( যে জানে সে সুন্দরী, তারে ভদ্ররা আর কিছু বলতে পারে না) তিনদিন পর ছ্যাঁচড়া আইডি থেকে :
– হ্যালো, এটা কি ২৪৪১১৩৯ ?
– না।
– প্লিজ দিন না একটু। বলবো তাকে, চাকরিটা আমি পাই নি, এবার তুমি সম্পর্কটায় কবুল বলতে পারো।
– হিহিহি। চাকরি খুঁজতেছিলেন নাকি ?
– বলা যায়।
– হলো না কেন ?
– প্রশ্ন করলো তোমার বাসার ছাঁদ থেকে একটা ডাব ছুঁড়লে, সেটা কতদিনে গিয়ে মঙ্গল গ্রহে পৌছাবে ?
– হিহিহিহি। কি বললেন উত্তরে ?
– ডাবের সাথে আপনাকেও ছুঁড়ে মারি। মহাকাশটা ঘুরে এলেন।
– হিহিহি। সবখানে এমন মজা করে বেড়ান? তারপর কি হলো ?
– ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে বল্লো। ধাক্কা দিতেই পড়ে গেলাম খাট থেকে। পরে মনে হলো স্বপ্ন দেখছিলাম।
– হিহিহি।
– আপনার হাসি খুব মিস্টি তাই না ? জীবনের ১২ আনা বৃথা মনে হচ্ছে।
– কেন বলুন তো ?
– এত মিস্টি হাসি কাছ থেকে দেখতে পারছি না। বৃথা হবে না ?
– উফফ ! সারাক্ষন ফ্লার্টিং না করলে হয় না ?
– জানেন, এক মহাপুরুষ কি বলেছেন ?
– জানি না। কি বলেছেন ?
– জগতে সত্যি কথার দাম নাই। আজ তাহলে আসি।
– এই শুনেন..
– কি ?
– আপনি এমন হুটহাট আসেন আর যান কেন ?
– জগতে কোন কিছুই স্থায়ী না। তবে কেউ যদি খুব করে চায়, আমি থাকি। তাহলে আমি যাবো না। রয়ে যাবো। চিরকাল।
– হুম
– হুমমমম
– হুমমমমমমম
– হুমমমমমমমমমমমমমমমমমম
– হুম
– হার মানলেন ?
– হ্যাঁ। ডিনার করেছেন ?
– করবো না
– কেন ? সম্মানে পেট ভরে গেছে।
– সম্মান ? কিসের ?
– এই যে আপনি আপনি করে ডাকছো।
– আপনি করেই তো ডাকতাম। আপনিও ডাকতেন। ও হো ! আপনি তুমি ডাকলেন ?
– ডাকবো না ?
– উমমম…
– উমমমম?
– ডাকো।
– খুব খিদা লাগছে। যাই এখন। তুমিও খাও।
– আমার কিন্তু খেতে বেশিক্ষন লাগে না।
– আচ্ছা এবার ভদ্র আইডির চ্যাট :
– ব্যস্ত ?
– হুম। খাচ্ছি।
– এত জলদি ?
– খেয়ে রিপলাই দেই ?
– ও আচ্ছা। হ্যাঁ। ঠিকআছে।
– (সীন) এক সপ্তাহ পর ছ্যাঁচড়া আইডির চ্যাট :
– মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়। বেঁচে থাকলে ইলিশ মাছ খায়। তারপর গলায় কাঁটা আটকিয়ে হাসপাতালে যায়।
– কাঁটা আঁটকাইছিলো ?
– হ্যাঁ। ঐদিনই।
– ওহ। আমি ভাবলাম আমাকে ভুলে গেছ।
– ভুলিনি। আসলে খেতে খেতে তোমার ছবি দেখছিলাম। তখনই ঘটলো অঘটন। আর অমনি আব্বা মোবাইলটা নিয়ে নিলো। আজই দিলো ফেরৎ।
– উফফ। এত কেয়ারলেস কেন তুমি ?
– আমি কেয়ারলেস ? তোমায় দেখা বুঝি আমার দোষ।
– চুপ…
– আচ্ছা।
– কি করো ?
– গান শুনতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আমার মোবাইলে গান নেই। নেটও নেই বেশি যে ইউটিউবে গিয়ে শুনবো।
– এত ঢং করো তুমি ! আমি গাইতে পারি না।
– হুম।
– গান শুনে পরে আর কথাই বলবা না। সত্যি বলছি।
– তেমন অবস্থা হলে, আমি থামিয়ে দিবো।
– শুনাবো না, যাও।
– শুরুই তো করলে না। নাম্বারটা ?
– ০১6*****%#*+ ভদ্র আইডির চ্যাটের সময় হইলো –
– আগের মেসেজ সীন ! থাক। আর মেসেজ দিবো না। ৫ দিন পর ছ্যাঁচড়া আইডির চ্যাট :
– নীল শাড়ি পরে আসবা বাবু।
– নীল শাড়ি তো নেই।
– আমার পকেট খালি। নাহলে এখনই কিনে পাঠিয়ে দিতাম।
– উফ! তোমার দিতে হবে না বাবু। আমি ম্যানেজ করে নিবো।
– বিকাল ৫ টা, বটতলা।
– মনে আছে আমার।
– লাভউউউ