—-এই যে আপনাকে বলছি (মেয়ে)
_জ্বী বলুন (আমি)
_আপনার সমস্যাটা কি শুনি
_কৈ আমার তো কোন সমস্যা নাই
_আপনার সমস্যা নাইতো আপনি আমার বিস্কিট খাচ্ছেন কেন? তাইতো বলছি আমার গুনা বিস্কিট কোথায় যাচ্ছে? চোর কোথাকার
_আরে মেয়ে কই কি আমার বিস্কিট আর আমারে বলে কিনা চোর (মনে মনে বলছি)
_কারো কোন কিছু খেলে যে অনুমতি নিয়ে খেতে হয় সেটা জানেন না আপনি?না আপনাকে কেউ শেখায় নি এটা।
.
আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে চলে গেল।
কি ঝগড়াটে মেয়েরে বাবা আমার জিনিস নিয়ে আমারে ঝাড়ি মেরে চলে গেল, সাথে আবার চোর বলেও গেল। আমার চোদ্দগুষ্টিততে কেউ যেটা বলেনি সেটা এই মেয়েটা এক দিনে বলে চলে গেল।
সে কথা আর না ভেবে কিছুক্ষন বসে থাকলাম আর আমার বন্ধু আসমাউল এর কথা ভাবছি যে তার সাথে অনেকদিন দেখা হয় নাই,দেখা হলে কি কি করব আমরা। আর কিছুক্ষন পর দেখি সময় হয়ে গেছে তাই সেখান থেকে কাউন্টারের দিকে, চলে এসে দেখি সবাই বাসে উঠে গেছে। সাথে ব্যাগ নিয়ে আমি হাসতে হাসতে বাসে উঠছি, কিন্তু সেই হাসি আর বেশিক্ষণ রইল না আমার। সামনে দেখি জানালার পশে আমার সিটে বসে আছে সেই ঝগড়াটে মেয়েটি। আমি তার কাছে গিয়ে বললাম এই যে শুনুন
_আমার দিকে তাকিয়ে বলে আপনি আবার এখানে কেন আর কি বলবেন বলেন (মেয়ে)
_কিছু বলতে চাই না আপনাকে শুধু একটা কথা বলতে চাই যে এই সিট টা আমার (আমি)
_ও তাই বলুন (নরম সুরে মেয়েটি বলল)
_হুম এখন সরে বসুন (আমি)
মেয়েটি সরে বসল আর আমি তার পাশে বসে পরলাম। এবার বাস চলতে শুরু করল আর আমি প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম। বস চলছে তার আপন গতিতে আর আমিতো সেই রকম ভ্রমন এর মজা নিতাছি। পাসে যে একটা মেয়ে বসে আছে সেটার দিকে কোন খেয়াল নাই। কি জন্য যেন আমার হাতটা ব্যাথা করতেছে বুঝছি না। পাশে দেখি বসে থাকা মেয়েটি আমায় চিমটি কাটছে। আরে আপনার সমস্যাটা কি চিমটি কাঁটছেন কেন? মেয়েের ঠোঁট যেন নড়ছে কিন্তু কিছু বুঝছি না। আরে আমার কানে যে হেডফোন আছে তাই। হেডফোন খুলে বললাম আপনি আমায় চিমটি কাটলেন কেন? মেয়েটি বলল কেটেছি বেশ করেছি। আরে পাগল নাকি আপনি যে চিমটি কাটবেন।
_কেন পাগল এ কি চিমটি কাঁটে নাকি?(মেয়ে)
_না তা না। কি বলেন? (আমি)
_আপনি হেডফোন দিয়েছিলেন অনেক ডেকেছি কিন্তু শুনতে পাননি তাই কেটেছি (মেয়ে)
_কি বলবেন বলেন (আমি)
_আমাকে দয়া করে জানালার পাশে আপনার সিটটা দিন (নরম গলায় বলল)
_আহারে এত ঝগড়া করার পর নিজের জন্য কত নরম করে বলছে,মন চাই থাবড়ায়া গাড়ি থেকে ফালায়া দি (মনে মনে বললাম আমি)
_কিছু বললেন নাকি? (মেয়ে)
_কি মেয়েরে বাবা শুনে নিল নাকি মনের কথা (আবার ও মনে মনে বললাম)
_কেন দিব আপনাকে? কত কষ্ট করে এই জানালার পাশে সিটটা নিয়েছি আর আপনি বলছেন আপনাকে দিয়ে দি? (আমি)
_না দিলে না দিন আমি যখন গাড়িতে কিছু করে দিব তখন বুঝবেন আপনি (মেয়ে)
_আমার আর বুঝতে বাকি রইল না কি বলতে চাই। মনটা না মানলেও দিতে হবে যদি বাসেয় করে দেয় তবে বসে থাকা যাবে না। তার পরও আমার তাকে অনেক আমার ভাল লেগেছে বলে কথা এই জন্য একটুতো সাহায্য করতে পারি নাকি.
আমি বললাম আসুন তাহলে। আসার আগেয় সব কাজ সেরে দিল সেখানে, মানে বুঝতেয় পারছেন। শরু হল আবার ঝগড়া আমাদের সেখানে আর সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এবার আমাদের ঝগড়া দেখে সুপারভাইজার চলে এসে মেয়েটির সাথে সাথে আমাকেও বকা দিল,অনেক বাজে কথাও বলছে। আমারতো রাগে মুখটা লাল হয়ে গেছে,মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখি মেয়েটিতো রাগে গজগজ করছে আমি তার মুখটা দেখে সব রাগ যেন কমে গেল। সাথে সাথে সজোরে একটা আওয়াজ হল। আমিতো ভাবলাম আমার গালে কিন্তু না, তাকিয়ে দেখি সুপারভাইজার গালে হাত দিয়ে। মানে আমায় মারে নাই। বাজে কথা বলার জন্য চড়টা দিয়েছে বুঝলাম। সুপারভাইজার চলে গেল আর গাড়ি থামাতে বলল। আমরা সবাই নেমে কিছুক্ষন থেকে আবার উঠে পড়লাম। সেই সময়ে গাড়ি পরিষ্কার হয়ে গেছে। মেয়েটি আমার সিটে বসল আর আসি তার সিটে।
.
আমি এখনো মেয়েটির নাম জানি না। অনেকক্ষন দুজনে চুপ করে বসে আছি। মেয়েটি তার ব্যাগ খুলে কি যেন বের করল। চুপচাপ থাকতে থাকতে মেয়েটি বলল সরি। কিছু মনে করবেন না! আমি বললাম কেন কি জন্য সরি বললেন? মেয়েটি বলল আসলে আমি আপনাকে চোর বলেছি অনেক আজেবাজে কথা বলেছি সে জন্য। আসলে আমি ভূল করে আমার ব্যাগ এ বিস্কিট রেখে আপনাকে অনেক কথা বলেছি আপনার বিস্কিট খেয়ে। আর আপনিওতো কিছু বললেন না। আমাকে ক্ষমা করে দিন
.
আসলে আপনিতো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে একায় কথা শুনিয়ে চলে এলেন। আর যায় হোক তা এখন বাদ দিয়ে দিন। মেয়েটি বলল তাহলেতো আমরা বন্ধু হতে পারি তাহলে বুঝব ক্ষমা করে দিয়েছেন। আচ্ছা বন্ধু হতে পারি আর আমি সে রকম কিছু মনে করি নি তো কি জন্য ক্ষমা।
_আমার নাম নূপুর। আপনার?
মেয়েটির নামটা ভালই আর আমার নামটা পছন্দের।
_আমার নাম নীল।
_কোথায় যাচ্ছেন আপনি?(নূপুর)
_আমি চাঁপাই যাচ্ছি। আপনি? (আমি)
_আমিওতো সেখানেয়। আর তুমি করে বলেন এখনতো আমরা বন্ধু (নূপুর)
_ওকে, আমি রানীহাটি যাব আর তুমি (আমি)
_আমি……(নূপুর)
অনেক কথা হলো আমাদের। আর সুপারভাইজারতো গালে হাত দিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তার রাগি মুখটা, তার মায়াবী চোখ, তার হাসি টা, তার কথা বলার ধরন দেখে আমি সত্যি প্রেমে পড়ে গেছি।
এর পর নাম্বার আদান প্রদান হলো অনেক কথায় হলো । কথা বলতে বলতে কখন যে চলে এসেছি বুঝতে পারিনি দুজনে।
এসে দুজন চলে গেলাম দুই দিকে। বলা হল না আমার সেই না বলা ভালবাসার কথা।
______________সমাপ্ত।__________