আমি আহমেদ আরিফ। আম্মু-আব্বু-ভাইয়া-ভাবী নিয়ে আমাদের সংসার।
আম্মু-ভাবী সারাদিন তাদের কাজ নিয়ে বিজি। আব্বু-ভাইয়া তাদের অফিসের কাজ নিয়ে বিজি আর আমি খাই-ঘুমাই-ঘুরাই আর মাঝে মাঝে কলেজে গিয়ে নিজের মুখখানা বন্দু-টিচারদের দেখিয়ে আসি। (আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি)
আসলে আমার পরিবারের সবাই আমাকে অনেক ভালবাসে কারন আমি সবার ছোট তাই আমি আদরে আদরে বাদর হয়ে গেছি মাঝে মাঝে আব্বু এইটা বলে। আর ভাবী-ভাইয়া আমাকে খুব ভালবাসে যা লাগবে ভাবী-ভাইয়া বললেই দিয়ে দিবে। আমার কোনো বোন নেই তাই আমি ভাবী কে আমার বোন ভাবী।
ভাইয়া-ভাবীর বিয়ে হলো ৮ মাস।
–
সকালে ঘুমিয়ে আছি ভাবী এসেই বললো
ভাবী-আরিফ উঠ এখনো ঘুমিয়ে আছিস তোকে বাস স্টেশন যেতে হবে আমার ২টা কাজিন আসবে তাড়াতাড়ি উঠ ওদের আনতে যাবি ভাই।
আমি-ভাবী আমি পারবোনা আমি ঘুমাবো আর ওরা একা আসতে পারেনা আর ভাইয়া কে পাঠাও
ভাবী-আরে তোর ভাইয়া আর বাবা অফিসে চলে গেছেন তাই তোকে বলছি আর ওরা আজ প্রথম আসছে আমার বাড়ি চিনেনা তাই তোকে বলছি যেতে উঠবি নাকি পানি ডেলে দিবো ?
আমি-আচ্ছা ভাবী উঠছি তুমি যাও
ভাবী-তাড়াতাড়ি কর ওরা চলে আসবে আমি নাস্তা দিচ্ছি টেবিলে আয় ফ্রেশ হয়ে
আমি-আচ্ছা যাও আসছি।
–
নাস্তা করে বের হয়ে গেলাম বাইক নিয়ে স্টেশনের দিকে।
(ভাবী তার কাজিনের নামবার দিলো কল করলাম)
আমি-জি ভাইয়া আপনারা এসে গেছেন?
ভাবীর কাজিন-জি এইতো আমরা কাউন্টারে আছি আপনি এখানে চলে আসেন।
গেলাম কাউন্টারের দিকে গিয়ে দেখি একটা ছেলে আর একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে(মনে হয় এরা হবে কিন্তু আমি বাইক নিয়ে আসলাম ওরা যাবে বাইকে নাকি গাড়ি দেখতে হবে কি জানি কল করলাম দিলাম ওনাকে . হুম সিউর হলাম এরাই এগিয়ে গেলাম)
আমি-হাই আমি আরিফ ভাবীর দেবর আমাকে ভাবী পাঠিয়েছেন আপনাদের নিয়ে যেতে
ওনি- ও আপু পাঠিয়ছে হাই আমি আবির আর ও আমার বোন সামিহা আমরা আপুর খালাতো ভাই-বোন।
আমি-ও আচ্ছা আবির ভাইয়া আমিতো বাইক নিয়ে এসেছে আপনাদের জন্য গাড়ি ঠিক করে নিয়ে আসি?
আবির ভাই-আরে না আমরাতো বাইকে যেতে পারবো নো প্রব্লেম
(তারপর বাইক চালু করলাম)
আমি-সামিহা ঠিক করে ধরো
সামিহা-আচ্ছা ভাইয়া
(আবির ভাইয়ের সাথে একটু একটু কথা হচ্ছে আর লুকিং গ্লাসে দেখছি সামিহা কে সব দিক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে কয়েকবার আমাকে দেখে ফেলছে ওরে যে লুকিং গ্লাসে দেখছি আমি)
বাড়ি ফিরলাম ভাবী এসেই জড়িয়ে ধরলো সামিহা।
ওদের কে পেয়ে ভাবী খুব খুশি হলো। (শুনলাম সামিহা কিছুদিন থাকবে এখানে আর আবির ভাইয়া কাল চলে যাবে)
ভাবী ওদের নিয়ে গল্প শুরু করছে আমি আমার রুমে চলে এলাম।
–
রুমে কিছু সময় রেস্ট নিয়ে গেলাম রান্না ঘরে দেখলাম আম্মু আর ভাবী রান্না করছে
আমি-কি ভাবী ওদের পেয়ে আমায় ভুলে গেলে নাকি?
ভাবী-আরে না ওদের সাথে অনেক দিন পর দেখা তাই আর তোকে ভুলে যাবো কেন ফাযিল
আমি-আচ্ছা ভাবী তোমার বিয়েতে আবির ভাই কে মনে হয় দেখেছি কিন্তু সামিহা কে দেখতে পেলাম না কেন?
ভাবী-ওর HSC পরীক্ষা ছিলো তাই আসতে পারেনি বিয়েতে
আমি-ও আচ্ছা তাই ওরা এখন কোথাই ভাবী।
ভাবী-সামিহা আমার রুমে রেস্ট নিচ্ছে আর আবির গেস্ট রুমে সুয়ে আছে মনে হয়।
আম্মু-এই আরিফ এতো কথা বলছিস কেন তুই যা এখন বৌমাকে রান্না করতে দে যা
আমি-কি রান্না হচ্ছে আজ আম্মু
আম্মু-যখন খেতে বসবি দেখবি
(চলে এলাম এখান থেকে)
দুপুরে সবাই খেতে বসলাম আব্বু আর ভাইয়া অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসছে। আব্বু ওদের সবার কথা জিজ্ঞেস করলেন আবির ভাই উত্তর দিলো ভাল আছে। আর সামিহা ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। আর মাঝে মাঝে আমি সামিহার দিকে তাকিয়ে দেখছি ওকে আমার ভালো লেগে গেছে।
আমি খাওয়া শেষে রুমে চলে এলাম এসে পিসি অন করলাম।
একটু পর দেখলাম সামিহা আমার রুমে আসলো(আমি মনে মনে অনেক খুশি)
সামিহা-আসতে পারি আরিফ ভাইয়া
আমি-আরে আসো সামিহা
সামিহা-কি করেন?
আমি-এইতো বসে গান শুনছি
সামিহা-ও আপনার রুম অনেক সুন্দর ভাইয়া
আমি-ও তাই আসলে ভাবী আমার রুম সব সময় ঘুচিয়ে রাখেন
সামিহা-ও আচ্ছা। আপনি কিশে পরেন ভাইয়া?
আমি-আমাকে তুমি করেই বলবে কেমন আর আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি আর তুমি?
সামিহা- আচ্ছা আমি অনার্স ১ম বর্ষ কলেজ অফ তাই ঘুরতে আসলাম আপুর বাসায়।
আমি-ও খুব ভালো
ভাবী-কি হচ্ছে এখানে
সামিহা-কিছুনা আপু আরিফ ভাইয়া কি করে এসব জানলাম আর কি
ভাবী-ও আচ্ছা
(আমরা ৩ জন মিলে অনেক আড্ডা দিলাম)
–
পরদিন আবির ভাই চলে গেলেন আবার আসবেন সামিহা কে নিতে।
এভাবে কয়েকদিন চলে গেলো।
আর আমি মনে হয় সামিহা কে ভালবেসে ফেলছি কিন্তু ভয়ে বলতে পারছিনা। যদি ভাবী-ভাইয়া কে বলে দেয় সামিহা।
‘
একদিন সন্ধায় আমি ভাইয়া-ভাবী আর সামিহা ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছি এক পর্যায়ে ভাবী সামিহা কে বললো একটা গান গাইতে সামিহা নাকি খুব সুন্দর গান গায়।
তারপর অনেক জোরাজুরিতে সামিহা গান গাইলো।
কি বলবো অসাধারন গান গায় সামিহা। সবাই হাত তালি দিলাম। আর আমি দেখলাম সামিহা মাঝে মাঝে আমার দিকে চেয়ে চেয়ে কি যেনো দেখছিলো আমি বুঝলাম না নাকি সামিহা ও আমাকে ভালবাসে।
ডিসিশন ফাইনাল করলাম সামিহা কে আমার ভাললাগার কথা বলেই দিবো। যা হয় হবে ভাবী-ভাইয়া অনেক ভালবাসে আশা করি কিছু বলবেনা ওরা।
তারপর ঠিক করলাম কিছু প্লে কার্ডে লিখে ছাদে সামিহা কে প্রপোজ করবো।
–
পরদিন সন্ধায় সব কিছু রেডি করে সামিহা কে বললাম একটু ছাদে আসতে
সামিহা-কেন ডাকলে আরিফ ভাই
আমি-কিছু কথা ছিলো সামিহা
সামিহা- হুম বলো
তারপর একটার পর একটা প্লে কার্ড দেখাতে লাগলাম
*আমি তোমাকে ভালবাসি সামিহা*
*প্রথম যেদিন দেখি সেইদিন থেকেই সামিহা*
*ভয়ে বলতে পারেনি কিন্তু আজ বলে দিলাম সাহস করে*
*একটা বুরি মহিলার ছবি দেখিয়ে এমন হয়ে গেলে ও আমি তোমায় ভালবাসবো কখনো ছেড়ে যাবো না সামিহা*
*সামিহা আমাকে ভালবাসবে সামিহা প্লিজ*
এই প্লে কার্ড দেখালাম সামিহা কে
সে এসব দেখে হাসছে।
আমার কাছে এসে বললো
সামিহা-আমিও তোমাকে ভালবাসি তুমি বুঝোনা গাধা তোমার দিকে তাকাই। তোমার রুমে মাঝে মাঝে উকি দেই সেটা তুমি বুঝোনা গাধা।
আমি-ও তাই তাইলে বললে না কেনো তুমি
সামিহা-বাহ রে মেয়েরা আগে বলে নাকি?
আমি-অকে বাবা আই লাভ ইউ সামিহা
সামিহা-আই লাভ ইউ টু আরিফ ভাইয়া
আমি-এখনো আমাকে ভাইয়া বলবে
সামিহা-হা হা হা হা
(আমাকে জড়িয়ে ধরে হাসতে লাগলো পরে দুজনে এক সাথে হাসতে লাগলাম)
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক