রোমান্টিক ভালোবাসা

রোমান্টিক ভালোবাসা

— এই যে মিস্টার শুনুন।
— জ্বী আমাকে বলছেন?
— হ্যাঁ আপনাকেই বলছি। আপনি আমাকে ফলো করেন কেন?
— কই না তো,আমি আপনাকে ফলো করিনা।
— না আপনি আমাকেই ফলো করেন। বেশ কিছুদিন ধরে দেখতেছি আপনি আমাকে ফলো করছেন।

— না আমি আপনাকে ফলো করি না।
— তাহলে প্রতিদিন এই সময়টা তে এখানে কেন আসেন?
— এমনিতেই আসি প্রকৃতি দেখতে। এখানের আবহাওয়াটাও দারুন।
— বাহ! খুব ভালো মিথ্যা কথা সাজাতে পারেন তো! তা প্রকৃতি দেখতে আসলে প্রকৃতির দিকে তাকান। আমার দিকে তাকান কেন? না মানে প্রকৃতি থেকে আপনি আরো সুন্দর। তাই হয়তো চোখ গুলো বার বার আপনার দিকেই চলে যায়।

— এই আপনার মতলব টা কি বলেন তো।
— কই আমার তো কোন মতলব নেই।
— উফ! আপনাকে দেখলে আমার বিরক্ত লাগে। অসভ্যর মত আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন কেন? আপনি আর এখানে আসবেন না। ঠিক আছে?

— জ্বী আচ্ছা আর আসবো না…

কথাটা বলেই নীরব সেখান থেকে চলে আসে। আর অরিন স্কুল এর দিকে চলে যায়। অরিন এবার এস এস সি পরীক্ষা দিবে। অসম্ভব সুন্দরী একটা মেয়ে। মায়াবি চেহারা। চোখ গুলো এতোটাই সুন্দর যে, যে কেউ দেখলেই ওর চোখের মাঝে হারিয়ে যাবে অরিনদের পাশের গ্রামের ছেলে নীরব। শহরে থেকে পড়ালেখা করে। খুব শান্তশ্লীষ্ট এবং অনেকটা বোকা টাইপেরছেলে নীরব প্রায় ১ মাস আগে অরিন কে প্রথম দেখে নীরব। প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায় তার। এই ১ মাস ধরে নীরব লুকিয়ে লুকিয়ে অরিন কে দেখতো।

অরিন এর স্কুলে যাওয়ারপথে প্রতিদিন্ই এসে দাড়িয়ে থাকতো অরিনকে দেখারজন্য। তবে কখনো অরিন এরসাথে কথা বলার সাহস পায়নি। অরিন বেশ কিছুদিন ধরে এটা খেয়ালকরছিল।অরিন বুঝতে পারলো নীরবতাকে পছন্দ করে। কিন্তু অরিন এর এসব প্রেম ভালবাসার প্রতি আকর্ষন নেই। তাই ওই দিন অরিন নিজেইনীরবের সাথে কথা বললো এবং নীরব কে বকা-ঝকা করলো। নীরব বোকা টাইপের ছেলে, মুখ ফুটে তাই কিছুই বলতে পারেনি। শুধু হ্যাঁ বলে সেখান থেকে চলে আসে পর দিন অরিন স্কুলে যাওয়ার পথে নীরব কে আর দেখলো না। এর পর দিন্ও নীরব আসলো না। এভাবে ৩-৪ দিনকেটে গেল।অরিন এর আজ কেমন জানি খারাপ লেগে উঠলো।

প্রতিদিন এই পথে স্কুলে যাওয়ার সময় নীরব কে সে দেখতো। কিন্তু আজ ৩-৪ দিন পথটা তে নীরব কে না দেখে অরিন এর কাছে কেমন জানি শুণ্য শুণ্য লাগলো। এবার মনে মনে সে নীরব কে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু এর পরদিন্ও নীরব আসলো না। অরিন এবার নিজেকেই দোষ দিতে লাগলো। নিজের প্রতি নিজের্ই রাগ হচ্ছে তার। ওই দিন নীরব কে এতো কথা না বললেও পারতো সে। এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেল। কিন্তু অরিন নীরব এর দেখা পেল না এক সপ্তাহ পর অরিন স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎই ঠিক আগের জায়গায় নীরব কে দেখতে পেল সে। নীরব খুব ভয়ের দৃষ্টিতে অরিন এর দিকে তাকিয়ে আছে। অরিন নীরব এর কাছে গেল এবং বলতে লাগলো…

— এই যে মিস্টার!
— জ্বী আমি নীরব।
— ও আচ্ছা। আপনার নাম তাহলে নীরব। আপনি এতো দিন কোথায় ছিলেন? আসেন নাই যে?
— না মানে আপনিই তো বারন করছিলেন আসতে।
— হুম আমি বারন করছি তাই বলে আপনি আসবেন না?
— আসলে আপনিই তো বলছেন আমাকে নাকি আপনার বিরক্ত লাগে। আর আমি আপনার বিরক্তের কারন হতে চাই না। তাই ইচ্ছে করলেও আসিনি।

— না আপনি কাল থেকে আবার প্রতিদিন আসবেন।
— মানে?
— মানে কিছু না।

আসতে বলছি আসবেন কথাটা বলেই অরিন স্কুলের দিকে চলে যায়। আর নীরব হতভম্বহয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবতে থাকে, অরিন কেন তাকে আবার আসতে বললো। তাহলে অরিন্ও কি তার প্রতি দুর্বল? কথা গুল ভাবতে ভাবতে ওখান থেকে চলে আসে নীরব। ওইদিন রাতে নীরব এর একটুও ঘুম হয়নি। সারা রাত শুধু অরিন কেই ভেবেছে সে এর পরদিন আবার ওই জায়গায় অরিন এর সাথে দেখা হয় নীরব এর। এবার নীরব্ই অরিন এর সাথে কথা বলছে…

— হ্যালো কেমন আছেন?
— হুম ভালো। আপনি কেমন আছেন?
— ভালো।
— আচ্ছা নীরবআপনি কি আমাকে ভালবাসেন?
— হুম বাসি।
— তাহলে বলেন নাই কেন?
— ভয়ে ছিলাম।
— ভালবাসি বলতে ভয় করলে ভালবাসছেন কেন?
— জানিনা। অনেকবার বলতে চেয়েও বলতে পারিনি।
— এখনো কি বলতে ভয় করছে?
— না এখন অনেকটা সাহস পাচ্ছি।
— তাহলে বলুন।

— হুম। আমি আপনাকে!
— এই শুনুন।
— কি!
— ‘আপনি’ করেই কি বলবেন?
— ‘তুমি’ করে বলবো?
— হুমম।
— আমি তোমাকে ভালবাসি। ‘আই লাভ ইউ’
— ‘লাভ ইউ টু’. হাতটা একটু ধরবে?
— হুম।
— চলো আজ সারা দিন ঘুরবো।
— মানে? তুমি স্কুলে যাবেনা?
— না আজ ক্লাস করবো না।
— ওকে চলো। এর পর থেকে শুরু হল নীরব এবং অরিন এর মিষ্টি মধুর ভালবাসার সম্পর্ক।।।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত