স্বপ্নকনা থেকে বউ

স্বপ্নকনা থেকে বউ

—–আমি নিলয়। একটা ছোট্ট জব করি। আর এখন আমি পরে পরে ঘুমোচ্ছি। আরে সকাল বেলা ঘুমাবো না তো কি করবো?
আর তখনই,,,
– নিলয় উঠ।
– উমমমম,, ইরা চাই।
– উঠবি কিনা!
– মা ইরা চাই।
– ওই হারামজাদা উঠ।
– ইরা দাও।
– ইরাকে বিয়ে করলেই তো পারিস, আমার কাছে চাস ক্যান?
– ইরা চাই।
( জল ঢেলে দিল)

– কে কে?
– ইরা নিবি না, ধর ইরা দিলাম।
– ধুরর মোড টাই নষ্ট করে দিলে। ইরাকে নিয়ে সপ্ন দেখছিলাম।
– বউ করে ঘরে এনে দুজনে সপ্ন দ্যাখ যা।
– ওতো রাজি হয়না।
– তোর মতো বান্দর পোলার কাছে ইরা ক্যা আর কোনো মেয়েই আসবো না।
– মা তুমি এটা বলতে পারলে?
– যেটা সত্যি সেটা কইছি,, এবার অফিস যা।
– আচ্ছা যাচ্ছি, যত্তোসব।

তারপর উঠে ফ্রেস হতে গেলাম। ইরা হচ্ছে আমাদের পাশের বাসার ফাজিল মেয়েটা। এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ারে পরে। আর আমি ওকে হেব্বী লাভ করি, কিন্তু ও আমার দাতে দড়ি দিয়ে ঘুরাইতেছে।
সবসময় আমার সামনে নাচানাচি করে কিন্তু যখন ফুল নিয়ে ওরে দিতে যাই তখনই ষাড়ের মতো তেড়ে আসে।

কি করা যায় এখন ওকে নিয়ে??? এসব ভাবতে ভাবতে ওয়াশ রুম থেকে এসে খেতে বসলাম।
খাওয়া শেষে এখন অফিসের জন্য রওনা হবো। তাই বাসার বাইরে গিয়ে নিত্য দিনের মতো আবার ইরাদের বাসার সামনে দাড়ালাম ওকে দেখার জন্য।

এটা আমার প্রতিদিনের অভ্যাস। সেই ৬ মাস আগে ওকে দেখে প্রেমে পড়ছিলাম। সেই ৬ মাস ধরে আমি প্রতিদিন ওকে দেখার জন্য অফিস যাওয়ার সময় দশ মিনিট করে দাড়িয়ে থাকি।

আমরাই এখানে আগে থাকতাম। আর ওরা আসছে ৬মাস ২ দিন ধরে। ২ দিন আমি ছিলাম না, অফিসের কাজে বাইরে গেছিলাম। ২দিন পর এসে যেই ইরাকে দেখলাম আর তখনই গড়াইতে গড়াইতে ওর প্রেমে পড়লাম।

মেয়েটা এতো ফরসা না হলেও চোখ দুটি ছিলো মায়াবী। আর যখন মোটা ফ্রেমের চশমা পড়তো তখন চশমার আড়াল থেকে গোলগোল দুটি মায়া ঘেরা চোখ উকি মারতো তখন আরও কিউট লাগতো এই মেয়েটাকে।

আমি গিয়ে দাড়ালাম, ৪ মিনিট হয়ে গেল এখনো কেন বেলকুনিতে আসছে না। ৬ মিনিট পার হওয়ার পর দেখি দাত ব্রাশ করতে করতে আসলো। কি মেয়েরে এটা, সকাল ৭টা বাজে, আমি অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছি আর মহারাণী কেবল দাত
ব্রাশ করে।
– শুভ সকাল ইরা,
– হুম।
– রাত কেমন কাটলো?
– মানে?
– ভালো না খারাপ?
– রাত আবার ভালো কেমন খারাপ কেমন?
– আমার কথা তুমি রাতে ভাবলে ভালো নয়তো খারাপ।
– ওহ্,,, খারাপ কাটছে।
– ধ্যাত, কবে আমার কথা ভাববে শুনি!!
– কোনো দিনই না।
– কেন?
– জানি না।
– তোমার নাম্বার টা দাও তো।
– না।
– আচ্ছা, না দিলা কিন্তু তোমার ফেসবুক আইডি কিন্তু আছে।
– আজকে ব্লক খাবেন।
– হাহাহা, তুমি চিনবে না সেটা, ফেইক আইডি।
– আপনি একটা চোর।
– কেন?
– আপনি সাইবার অপরাধী তাই।
– কি অপরাধ করছি।
– ফেইক আইডি দিয়ে আমার লিস্টে ঢুকেছেন।
– হিহিহি।
– হইছে এবার অফিস যান, দেরী হয়ে গেল।
– আচ্ছা যাচ্ছি। আর আজকে একটু ভাইবো।
– যত্তোসব।
– এহেম এহেম।

আজকের মতো এটুকু বলেই বিদায় হলাম। প্রতিদিন ওকে বিরক্ত করা আর ওর বকা শুনা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রতিদিন এভাবে ওর সাথে কথা বলার জন্য দাড়িয়ে থাকি। তবে ভালই লাগে ওর বকা শুনতে। নিজের ভালবাসার মানুষের বকা শুনতে কার না ভালো লাগে?

সারাদিন অফিসে কাজ করলাম। আজ অফিস ছুটি দিল বিকেল ৫টায় আজ একটু আগেই ছুটি দিল। অন্য দিন আরও পরে দেয়। তাই ভাবলাম একটা গোলাপ ফুল নিয়ে যাই ইরার জন্য। দোকানে গিয়ে ফুল কিনে রিকশায় উঠে বসলাম। তারপর বাসার সামনে এসে নামলাম।

ওদের বাসার সামনে গিয়ে দেখি, ঝাল পরী আজ নিচে নেমে ছোট ছোট কিসের যেন চারাগাছ ওগুলোয় পানি দিচ্ছে।
– হাই, ইরা।
– আআআআ
– কি হলো?
– আপনি?
– তো কে থাকবে?
– হটাৎ এসে পিছে থেকে ডাক দিলেন কেন?
– ভয় পাইছো?
– একটু।
– আসো ছুয়ে দেই।
– ফাজিল, আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন তো ঘুসি দিয়ে দাত উড়াইয়া দিমু।
– একটু রোমান্টিক মোডে আসো না প্লিজ।
সবসময় মেজাজ দেখাও।
– আপনার মতো বাঁদরের সাথে আমি রোমান্টিক হবো? কখনো না।
– আমি বাদর?
– পুরোটাই।
– এই নাও তোমার জন্য ফুল আনছিলাম।

হাতে দিয়ে রাগ দেখিয়ে চলে আসলাম। হুহ, আমি কি এমন করছি যে বাদর হয়ে গেলাম?? আমার পেছনে তো আর ল্যাজ নাই, যে আমি বাদর হবো??

আমার রুমে ঢুকে হাসি আর থামাতে পারলাম না।
হিহিহি
হাহাহা হোহোহো,, আমার বাদর হাহাহা,, আমি সত্যিই বাদর,,, ওর সাথে রাগ দেখিয়ে চলে আসলাম। আমার রাগ দেখানোটা একদম একটা ট্রেইলার মাত্র। ইরা এখনো আমার বাঁদরামির কিচ্ছু দেখে নাই। আজ দেখবো কি করি।

সন্ধ্যা বেলায় ওদের বাসায় গেলাম,, দেখি ও ওর ঘরে বসে পড়ছে। তাই ওর কাছে আর গেলাম না।
– আন্টি কি করেন?
– নিলয় বাবা তুমি?
– কেন আন্টি, আমি কি আসতে পারি না?
– কি যে বলো,, তুমি আমার বাসায় যখন ইচ্ছে তখন আসবা,,, তুমি তো আমার ছেলের মতো।
– ( কেন বলেন না তুমি আমার জামাইয়ের মতো)
আচ্ছা আন্টি ইরার ফোন কই?
– কেন বাবা?
– আমার ফোনে যেন কি হইছে কল ঢুকে না, এখন ঠিক করলাম, কল দিয়ে দেখি যায় কিনা?
– দাড়াও আনছি।
– আন্টি আন্টি আর ওকে বলবেন না আমি ওর ফোন চাইছি।
– আচ্ছা।

একটু পর ইরার ফোন নিয়ে আসলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আন্টি। টুপ করে নাম্বার টা নিয়ে নিলাম।
– এখন আসি আন্টি।
– কি বলো এ সব?
– কেন?
– না খেয়ে যেতে দিব না, বস এখানে।
– ইরা রাগ করবো না তো?
– ও রাগ করবো কেন?
– করতেও পারে।
– তুমি বসো তো আগে।
বসে পড়লাম, ডাইনিং টেবিলে।

হেব্বী মজা করে রাতের ডিনার করতে লাগলাম।
একটু পর দেখি টুকটুকি আসলো।
– এই এই আপনি এখানে কেন!
– কেন? তাতে কি হইছে!
– আবার বলে তাতে কি হইছে? আর খাবার দিছে
কে আপনাকে?
– আমার হবু শ্বাশুড়ী মা।
– চুপ একদম চুপ, বেহায়া বাদর, কোথাকার।
– আম্মুওওওওও থুক্কু থুক্কু আন্টিইইইইই।
– কি হইছে বাবা চিল্লাও ক্যান?
– দেখছেন আপনার মেয়ে আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে।
– ইরা ওকে কি বলছিস?
– কই কিছু না তো।
নিলয় বাবা তুমি খাও।

O M G আমার শ্বাশুড়ী টা এতো ভালো আমার বউটা এমন করে ক্যা রে। ধুরর, শ্বাশুড়ীটার যদি বয়স আরেকটু কম থাকতো তাইলে এইটারে বিয়ে করতাম।
ছিঃছিঃ নিলয় এগুলো কি কস তুই) হটাৎ আমার আত্মাটা এই কথা কইয়া উঠলো।

তারপর খাওয়া শেষ করে বাসায় চলে আসলাম।
এসেই রুমে গিয়ে খুশিতে কতখন নাচানাচি করলাম। মা দেইখ্যা কয় আমার পোলা পাগল হইয়া গেছে। আমি সত্যিই খুশিতে পাগল হইয়া গেছি। আজকের বুদ্ধিটা এর আগে কেন যে আইলো না।
( কথায় আছে না, চোর পালাইলে বুদ্ধি বাড়ে)
ইরার অপমান খাইয়া আমার বুদ্ধির ডিব্বা খুইলা গেছে।

১০টার সময় কল দিলাম ইরাকে।
– হ্যালো।
– হ্যালো।
– কি করো ইরা?
– আপনি কে?
– তোমার বর।
– কি বলছেন এগুলো, আপনি কে? কাকে চান?
– আমি তোমার বর আর আমি তোমাকে চাই।
– দেখুন পরিচয় দিন নয়তো ফোন রাখলাম।
– এ বাবা, ৬ মাস ধরে একটা বাদর তোমার পেছনে ঘুরছে এতো সহজে ভুলে গেলে।
– আপনি??
– ইয়েস।
– ফোন দিছেন কেন?
– আমার বউয়ের সাথে প্রেমআলাপ করবো তাই।
– বউ কে?
– তুমি

টুট
কল কেটে দিছে, আবার দিলাম।
– হ্যালো।
– আবার দিছেন কেন?
– কাটলে কেন?
– আমার ইচ্ছা,
– কল দিমু সেটা আমার ইচ্ছা।
– আর হ্যাঁ, মি: বাদর, আমি আপনার আইডি চিনে নিএছি,
আপনার আইডি চেক করেন।
– আচ্ছা দেখছি।

কলটি কেটে দিয়ে ফেসবুকে লগইন করলাম।
গিয়ে দেখি পাজি টা আমারে ট্যাগ দিয়ে ইয়া বড় এক গল্প লিখে ফেলেছে।
কিন্তু ওটা পড়ে আমার নাক কান দিয়ে লাল ধোঁয়া বেরুতে লাগলো।

পুরো পোস্টে আমার নামে বদনাম করা। গালিগালাজ তো আছেই। কুওা হনুমান বিলাই, কানে ধরাইছে।
আর কতকিছু।
এবার সত্যি সত্যি খুব রাগ হলো। সেবার তো এমনি ফাজলামো করে রাগ দেখাইছিলাম, আজ সত্যিই খুব রাগ হলো।

আমার ৪০০০ ফ্রেন্ড ছিলো লিস্টে, সবাই দেখে ফেলেছে। আমার মান সম্মান সব শেষ। তবুও নিজে থেকেই খুব রাগ হলো।

ভালবাসবে না নাই বাসলে,, এমনি বাইরে তো সবসময় বকাঝকা,, অপমান, কুওা বাদর বলে অপমান করই আজ ফেসবুকে সবার সামনে,,, সবাই কমেন্টে কি না কি বলছে,, আমার এলাকার ফ্রেন্ড ছিলো বেশি।
তারপর অফিসের সবাই ছিলো আমার লিস্টে। তারা সবাই কমেন্ট করছে। কে এটা তোমার সাথে কি সম্পর্ক। তোমাকে বকলো কেন? তুমি কি কিছু খারাপ কাজ করছিলা?

আমি এখন কাল কি করে ওনাদের সামনে গিয়ে মুখ দেখাবো। ওরা কি থেকে কি ভাবছে কে জানে। আমি তো এখন লজ্জায় ওনাদের সামনেই যেতে পারবো না।
তবুও ভাবলাম কাল অফিসে যাব, যা হওয়ার হবে। সবাই যা জানতে চাইবে তাই বলবো।

সকাল হলে প্রতিদিনের মতো ফ্রেস হয়ে খেয়ে নিয়ে অফিসে চললাম।
আজকে শুধু একটা অভ্যাস ঘুরিয়ে ফেলছি আর সব ঠিকই আছে। আজকে আর ইরাদের বেলকুনি কেন, আসার সময় ওদের বাসার দিকেই তাকাই নাই।
যত্তোসব।

অফিসে যাওয়া মাত্র সবাই ধরলো, কে ওটা? আর আমাকেই বা কেন ওমন পোস্টে ট্যাগ দিল।
আমিও বললাম, ওকে চিনি না,, কোনো এক ফেইক আইডি হবে হয়তো,,, ফাজলামো করে আমাকে এমন ট্যাগ করছে। এখন ট্যাগ ডিলিট দিছি তার সাথে ও আইডিও ব্লক দিছি।
একথা বলে তবুও কোনো মতে কেটে পড়লাম।
ভাগ্য ভালো কেউ বুঝতে পারে নাই ওটা ইরা নামের পাজি মেয়েটার আইডি।

অফিস ছুটির পর অফিসের বাইরে আসতেই এক বাচ্চা ছেলে কতগুলো ফুল নিয়ে ঘিরে ধরলো।
– ভাইয়া ফুল নিবেন।
– না।
– নেন না ভাইয়া।
– কার জন্য নিব?
– আপনার প্রিয় মানুষটার জন্য নিবেন।
– নাই রে কেউ। একজনকে ভালবাসতাম সে ভালবাসে না।
– ওহ্, তে যাইগা।
– তোর কাছে টাকা আছে।
– না।
– এই পাঁচশো টাকা রাখ।
– এতো টাকা দিয়ে কি করুম।
– তোর যা ইচ্ছা তাই কর।
– ফুল তো নিলেন না টাকা দিলেন কেন?
– কিছু ভালো খাবার খা হোটেলে গিয়ে যা।
– ভাইয়া আপনি অনেক ভালো।
– ধুরর, আমি তো বাদর।
– কি যে বলেন।
– হইছে যা।

ওকে বিদায় দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখি ইরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
কি ব্যপার? আজ ও আমার অফিসের সামনে কি করে।
কি ভেবে আবার এখানে আসছে। আর কেনই বা আসছে???
নিশ্চয় আবার কোনো অপমান করার ফন্দি আছে।

কিন্তু আজ পাজিটা শাড়ি পরে আসছে, খুব সুন্দর লাগছে। কিন্তু আমি ওতোটা না ভেবে পাশ কাটিয়ে রাস্তায় আসলাম। এসে একটা রিক্সায় উঠলাম।
রিক্সায় উঠতেই আবার কোথা থেকে যেন ঝড়ের মতো এসে আমার পাশে বসলো।

আমার খুব ভয় হতে লাগলো। এমন করছে কেন?
আবার কি করতে চায়। কোনো দিন আমাকে ওর কাছে যেতে দেয়নি আর আজ নিজে থেকে এসে এক রিক্সায় আমার পাশে বসছে।
আমি একটু বিপরীত দিকে চেপে বসলাম যাতে ওর সাথে ছোঁয়া না লাগে।

সারা রাস্তা আসলো একটা কথাও বলিনি। দরকার কিসের, আমার দরকার নাই ভাব জমানোর। ভালবাসতে পারবে
না, শুধু অপমান করতে পারবে। ৬ মাস শুধু শুধু ঘুরছি ওর পেছনে।

রিক্সা থেকে নেমে আমার ভাড়া টা দিয়ে চলে আসতে লাগলাম।
– এইযে মিঃ আমার ভাড়া কে দিবে?
– আপনার ভাড়া আপনি দিন।
– বাব্বা, এখন আপনি হয়ে গেলাম। কিন্তু ভাড়াটা আপনিও দিবেন।
– আচ্ছা দিচ্ছি।

ওর ভাড়া দিয়ে দৌড়ে চলে আসলাম, আমার বাসায়।
তাহলে ভাড়া নেই বলে আমার সাথে আসা, হুহ। দেখা যাবে পরে। রাতে বসে বসে একটা উপন্যাস পড়ছিলাম, তখনই মোবাইল বেজে উঠলো,,, দেখি ওই পাজিটার নাম্বার থেকে কল,,,
ফোন বন্ধ করে দিলাম,,, যত্তোসব,, এখন আসছে ভাব জমাতে।

তিনদিন হয়ে গেল আমি আমার মতো আছি।
সেখানে খুশি সেখানে যাই, এখন আর বেলকুনির নিচে দাড়িয়ে অপেক্ষা করি না কারও জন্য।
(লাভ নিলয়, দাড়িয়ে থেকে লাভ নেই,, ভালবাসা তোর কপালে নেই)

৪ দিনের দিন আজ অফিস বন্ধ, শান্তি মতো ঘুমোচ্ছি।
– নিলয় উঠ তাড়াতাড়ি।
– যাও তো এখন ঘুমাতে দাও।
– উঠ বলছি।
– আজকে তো অফিস নেই, ঘুমাতে দাও।
– অফিস নেই তাতে কি হইছে? আজ তোর বিয়ে।
– কিইইইই?? ( লাফ দিয়ে ওঠে বসলাম)
– হুম।
– কখন কবে কার সাথে?
– এখন আজ ইরার সাথে।
– আমি ওকে বিয়ে করবো না।
– তুই করবি না তোর বাবা করবো।
– কিইইইই,,, হা হা হা হি হি হি হো হো হো।
– হাসছ কেন?
– বাবা বিয়ে করবে?
– চুপ হারামজাদা,,,, একটু আকটু কথায় কথায় ভুল হয়ই।
– ও আমাকে ভালবাসে না, ওকে বিয়ে করবো কেন?
– বিয়ে হলেই বুঝবি।
– হুম।

অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিয়েটা হয়েই গেল।
বাসর ঘরে ঢুকবো কিনা, এটা নিয়ে টেনশনে পড়লাম।
শেষমেষ ভয় আর বিরক্ত নিয়ে ঢুকেই পড়লাম।
– এতখন লাগে আসতে?
– মানে!!!
– কটা বাজে হ্যাঁ, এতখন কই ছিলা?
– তাতে তোমার কি?
– ভুলে যেওনা আমি তোমার বউ।
– বউ ( খাটের পাশে বসলাম)
– হুম।
– এখন বিয়ে করার মানে কি?
– এ কয়দিন বেলকুনিতে যাওনি কেন?
– কার জন্য যাব?
– আমার জন্য।
– তোমার জন্য কেন যাব?
– ভালবাসো তাই যাবে।
– তুমি তো বাসো না।
– আরেক বার ওকথা বললে এখনো তাড়িয়ে দিব, বাদর কোথাকার (কাছে এসে বুকে পরে কান্না শুরু করলো)
– ছাড়ো,
– না।
– কেন?
– এমনি।
– তাহলে এতদিন নাটক করার কি ছিলো?
– তুমি জানো তোমাকে দেখার জন্য প্রতিদিন বেলকুনিতে আসতাম।
– তাহলে এতো ঢংগীদের মতো ঢংগ দেখাতে কেন?
– বাদরটার বাঁদরামি দেখার জন্য।
– শেষে বাঁদরের গলায় ঝুলে পড়লে?
– হুম।
– আর হ্যাঁ, বাদর বলবে না, বর বলবে।
– আচ্ছা।
– তাহলে এখন শুরু করি??
– মানে!!!!! কি বলো এগুলো লজ্জা করে না।
– এখন বাঁদরামি শুরু করবো হিহিহি।
– বাদর কোথাকার।
– বাতি নিভিয়ে দাও।
আচ্ছা দিচ্ছি, তারপর ঘুমাবে কিন্তু?
– একি তাইলে বাঁদরামি করবে কে?
– করা লাগবো না আজ। আজকে তোমাকে পাইছি, আজ সারারাত তোমার বুকে উপর মাথা রেখে ঘুমাবো।
– আচ্ছা, গুড নাইট।
– হুম, গুড নাইট।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত