বিয়ে কর……………
বিয়ে কর…………………..
বিয়ে কর…………….
রোজ একই কথা শুনতে আর ভালো লাগে না। কেন যে এই বিয়ে পাগলীর পাল্লায় পড়েছিলাম সেটা এখনো জানি না।
জানি না এখন কোন জগতে আছি এই পাগলীটা কে বিয়ে করার পর থেকে।আজ এই দিনটার জন্য আমার পাগলী টা কি না করল। এই পাগলীর কাজ কর্মের কথা ভাবলে এখনো আমার লজ্জায় গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়।কী পাগলামী টা নাই করল এই বিয়ের জন্য।
হঠাৎ একদিন সকালে ফোনের ঐ পাশ থেকে মেয়ে কন্ঠে
হ্যালো,হ্যালো,হ্যালো,ওই হ্যালো।
হুম,কে বলছেন?(ঘুমের মাঝেই বললাম আমি)
এক দিনেই ভুলেই গেলে?
ও তুমি,সরি ঘুমাচ্ছিলাম।
তাতো ঘুমাবাই, কন্ঠই তো বলে দিচ্ছে তুমি মঙ্গল গ্রহে আছো।
হুম,আমাকে দশ মিনিট সময় দাও আমি বিশ মিনিটে ফ্রেশ হয়ে আসি।
দশ মিনিট তো দূরের কথা এক সেকেন্ডেও না উঠো এখনি।
আসলে শীতের সকালে উঠতে তো একটু দেরি হবেই।শীতের সকালের ঘুম কি শান্তি লাগে উঠতেই মন চায় না।
তুমি কী উঠবে? (একটু রেগে)
ও,ও,ও,কে মহারানী।
প্রায় সকালে ও ডাকতে থাকে কারন আমি একটু বেশীই ঘুমায়।ও আসল কথায় তো বলা হয়নি,যেই পাগলীটার কথা বলছি সে আমার হবু বউ নিশা।
আর আমি নাঈম। নিশার সাথে আমার পারিবারিক ভাবেই বিয়ে ঠিক হয়েছে।
হঠাৎ একদিন সকালে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ৪৯ বার মিসড কল।সকাল ৫টা বাজে তাই ঘুমটা একটু বেশীই ধরেছে।ফোন টা রেখে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
কিছুহ্মন পর মনে হলো কেউ আমাকে টানছে।হ্মনিকের জন্য টানাটানি থেমে গেলো হয়তো তুলতে পারিনি তাই। তারপর হঠাৎ বৃষ্টি হলো আমার উপর,চোখ মেলে দেখি……
তু,তু,তুমি এখানে?
কেনো অন্য কেউ আসার কথা ছিলো নাকি।
অন্য কেউ আসার কথা থাকবে কেনো,আজব তো।
বিয়ের আগেই শশুর বাড়ীতে,মানুষ জন কি ভাববে।
যা ভাবার ভাবুক,তাতে আমার বয়েই গেলো।
শুনো পাগলামী করো না,বিয়ের আগে শশুর বাড়ীতে আসা ঠিক না।
কেন এর আগে বুঝি কখনো আসেনি বুঝি।
হুম আসছো তবে এখনকার কথা ভিন্ন।
আসলে নিশা আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে।এর আগে যাতায়াত ছিলো আমাদের বাসায়।বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে এখন আসে না।কিন্তু এ কোন পাগলীর পাল্লায় পড়লাম, কথা নাই বার্তা নাই হুট করে বাসায়। বাবা-মা যে কী ভাববে,মরে যায় মরে যায় কী লজ্জা।এই মাইয়ার তো দেখি কোন লজ্জা সরম নাই।লজ্জার মাথা খাইছে এই মাইয়া দেখি।আসলে লজ্জা ও খাইছে নাকি লজ্জা ওরে খাইছে সেটাই ভাববার বিষয়।
ঐ কি ভাবছো?(নিশা)
নাহ কিছু না। (আমি)
ফোন ধরোনি কেন,তাই তো আসছি।
সরি।কেনো?
ফোন ধরতে পারিনি তাই।
কানের ডাক্তার দেখাও।
কেনো?
কান ঠিক আছে নাকি দেখবে।
ওকে।
কী ওকে?
তুমি না বললে কানের ডাক্তার দেখাতে তাই যাচ্ছি দেখাতে।
ওই আমি বললাম বলেই চলে যাবা?
তাহলে কী করবো?
বিয়ের তারিখটা এগিয়ে নিয়ে আসবা।
মানে কী?
হুম…তোমাকে আর এভাবে একা রাখা যাবে না।
এটা কিভাবে সম্ভব?
সম্ভব কী অসম্ভব সেটা আমি জানি না।
তোমার শরীর ঠিক আছে?
জি আমার শরীর, সুগার সব ঠিক আছে।
তুমি ডায়াবেটিস রোগী নাকি?
মানে?
এইমাত্র না বললে সুগার ঠিক আছে।
শুনো ঐটা কথার প্রেহ্মিতে বলছি।যা বললাম তাই করো।বিয়ে টা এগিয়ে নিয়ে আসো।বিকালে বাহিরে আসবা সেখানে কথা হবে।
আচ্ছা।
এমন বিয়ে পাগলী মেয়ে আমার বাপের জন্মেও দেখিনি।নিশা কী সত্যি পাগলী নাকি এখন আমার সত্যিই সন্দেহ হচ্ছে।বিয়ে ঠিক ছিলো একমাস পনের দিন পরে,আজ মাত্র আট দিন হলো।এই আটদিনে আমার অবস্থা এই হাল,সারাজীবন থাকুম কেমনে এই পাগলীর লগে।
বিকালে বাহিরে গেলার বিয়ে পাগলীর সাথে কথা বলতে।
বাসায় বলছো? (নিশা)
না আসলে,বলতে কেমন জানি লাগছিলো তাই লজ্জায় বলতে পারিনি।(আমি)
পুরুষ মানুষের কিসের লজ্জ শুনি?
তুমি পাগলী হইলা নাকি?
হ্যা তো কী হয়েছে,বিয়ে করবা না এই পাগলীটা কে।
হুম করবো তো।
তাহলে বসে আছো কেন?
কই যাবো?
নাঈম এবার কিন্তু মাথা খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।
হ্যাঁ আজ রাতেই বলবো।
শুনো বিয়ে ঠিক হয়েছে আজ আট দিন,এখনো একমাস সাত দিন বাকি,তার মধ্যে এক মাস বাদ,বাকি সাতদিনের মধ্যে বিয়ে ঠিক করবা।
ওকে….
মনে থাকবে তো?
হুম খুব মনে থাকবে আমার এই বিয়ে পাগলীর কথা।
একমাস বাদ দিয়ে মাত্র পনেরো দিনের মাথায় ওকে বিয়ে করলাম।শুধুমাত্র আমার এই বিয়ে পাগলী নিশার জোড়াজুড়িতে।বাড়ীতে কথাটা বলার পরেই সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করে দিলো।
ভাবি তো বলেই ফেলল, কী আদরের দেবর আর বুঝি সহ্য হয় না।সেদিন যে কী লজ্জা পেয়েছিলাম।
বাসর রাতের পর প্রথম সকাল আজ।আমার পাগলী টা ঘুমাচ্ছে।চোখের কাজল গুলো লেপ্টে গেছে এতে ওকে অনেক মায়াবতী লাগছে।আমি তাকিয়ে আছি ওর দিকে,যতই দেখছি ততই ওর প্রেমে পড়ছি।
ঐ,ঐ,ঐ কি দেখছো?
তোমাকে দেখি।
তাই?
হুম তাই,,,(দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললাম)
ওই কি করছো।আমার লজ্জা করছে।
না এখন আর তোমায় ছারবো না।
বিয়ে পাগলী মেয়ে।
ওই কি কইলে আমি বিয়ে পাগলী মেয়ে তুমি তো ডবল বিয়ে পাগল ছেলে।
এই ভাবে শুরু হয় হাজারো ভালোবাসার গল্প।