ভালবাসার মানুষকে দূর থেকে দেখার মজাই আলাদা। যারা দূর থেকে দেখে তারাই বুঝে। আমি জানিনা অন্য কারো কেমন লাগে। কিন্তু আমি যখন আমার প্রিয়তমার চোখটা দেখি তখন কলিজা নাড়াচাড়া করে। বুকের ভিতর ইলেক্ট্রিক গিটারের মত চিং চিং শব্দ হয়। এক অজানা ভয় লাগে কেন লাগে তা জানিনা। এই অনুভূতি অন্য কোন মেয়েকে বা অন্য কোন মেয়ের চোখ দেখলে হয়না। প্রিয়তমাকে এক নজর দেখতে আমার প্রানটা সারাক্ষণ বকপাখীর মত উড়াউড়ি করে। আর যদি হাসি দেয় তাহলে আমাকে আমিই খুঁজে পাইনা। তার মাঝে হারিয়ে যাই। ছেলেদের প্রাণে মারার জন্য মেয়েদের হাসিই যথেষ্ট। এই হাসির মাঝে কি এমন আছে তা আজও বুঝলাম না। আর আমি যার কথা বলছি তার মুখে সবসময় একধরণের মিষ্টি-লজ্জা হাসি লেগেই থাকে। অন্য কারো চোখে হয়ত মেয়েটা এত সুন্দরী না কিন্তু আমার কাছে পৃথিবীর সেরা রুপময়ী। তার হাসি-কান্না চোখ,নাক, চুল সবই আমার ভাল লাগে। আমার কাছে সে’ই আমার রবীন্দ্রনাথের নন্দিনী, জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন। সমরেশ মজুমদারের সুকন্যা। রানী এলিজাবেথ হোক আর ভিক্টোরিয়া। সে’ই আমার রাজকন্যা।
.
এইযে আমি প্রিয়তমা প্রিয়তমা করছি। সে জানেই না সে আমার প্রিয়তমা! কোনদিন সামনে গিয়ে কথা বলারও সাহস হয়নি। আর সাহস হলেও যাবনা। এই ডিজিটাল-আধুনিকতার যুগে আমি অনেকবার আমার পঁচা হাতের লেখনী দিয়ে চিঠি লিখেছি। কিন্তু চিঠিগুলো আর দেয়া হয়নি। সত্যি বলতে আমার ইচ্ছেও হয়না দিতে। কারণ আমি একটা ক্ষ্যাত ছেলে। আমি চাইনা আমার মত ছেলেকে সে ভালবাসুক দূরের কথা তাকে ভালবাসার প্রস্তাবটুকুও যেন না করে। তার মত এরকম ঐশ্বর্যময়ীর পাশে আমার মত কালো ছেলেকে মানাবেনা। এই ভালবাসার কথা কোন বন্ধুবান্ধবকেও বলিনি। বললে তারা হাসাহাসি করত। সারাদিনে একবার লুকিয়ে তাকে দেখা। কল্পনায় তাকে নিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো। এতেই আমি সুখী। আমি চাই শুধু সে সুখে থাকুক। তার মুখে যেন সারাজীবন সেই কলিজায় কাঁপুনি তুলা হাসিটা থাকুক।
_____ সিয়াম আহমেদ জয় || ২৯/০৭/২০১০ ||
.
রোজ রোজ একটা ছেলে পিছন পিছন লুকিয়ে আমাকে দেখে কিন্তু কেন? আমাকেই কেন দেখতে হবে? দেশে কি আর মেয়ে নেই? আমাকে যদি তার ভালই লাগে তাহলে তার বলার সাহস কেন নেই? সে কি আমাকে ভালবাসে সত্যিই? ছেলেটা কি আমাকে বিরক্ত করে? না সেটাও তো করেনা। এরকম ভীতু ছেলে আমার একদম পছন্দ না। যে তিনবছর ধরে আমাকে দেখেই যাচ্ছে। আরো দুই বছর লাগাবে আমার সাথে কথা বলতে। তারপর আরো তিন বছর লাগবে আমাকে আমাকে প্রপোজ করতে। ততদিনে আমি বুড়িই হয়ে যাব। মেজাজটা এমন খারাপ হয় না। আচ্ছা আমি ঐ ছেলেটার কথা ভাবছি কেন? ছেলেটা তো বলেনি আমাকে নিয়ে ভাব। তাহলে কেন ভাবছি? ভীতু ছেলেটা আমার মাথায় ঢুকল কিভাবে? নিজেই নিজের কাছে প্রশ্ন করছি অথচ উত্তরই জানা নেই। ছেলেটা অনেক খারাপ শুধুশুধু আমাকে ভাবায়, জ্বালায় হয়রানি করে। আমি জানি আমি নিজে কতটা সুন্দর। তবুও কেন বারবার আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চোখ নিজে দেখেই লজ্জা পাই?
.
যেদিন ছেলেটা আমাকে দেখতে আসেনা সেদিন আমার ছেলেটার প্রতি রাগ হয় কেন? মা বলেন রাগ আর অভিমান দুটোই আপন মানুষদের ক্ষেত্রে কাজ করে। আর পরদের জন্য শুধু মেজাজ খারাপ হয়। তাহলে সে কি আমার আপন মানুষ? ধুর আপন না ছাই ছেলেটা এখনও আমার সাথে কথাই বলেনি। আচ্ছা আমাকে কি ভয় পায়? না না ভয় পাবে কেন? আমি কি গুণ্ডী টাইপের মেয়ে নাকি? তাহলে কেন আমার সামনে আসেনা কেন? বান্ধবীদের কাছ থেকে আমার নাম্বারটা নিয়ে একটা মেসেজও তো দিতে পারে নাকি। না পারলে তো একটা চিঠিও দিতে পারে অন্য কাউকে দিয়ে। কিছুই পারেনা আবার প্রতিদিন দেখতে আসে। আচ্ছা আমি কি ছেলেটার কাছ থেকে প্রপোজ চাচ্ছি? ভালবাসা চাচ্ছি? কেন চাচ্ছি? ভালবেসে ফেললাম নাকি? হ্যাঁ সেটাই তো মনে হচ্ছে। হে প্রিয় আর অপেক্ষা করিওনা। মনকে আর মানাতে পারছিনা। তাড়াতাড়ি কাছে এসে ভালবাসি বলে ফেল।
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক