কিস

কিস

লিপ কিসের যন্ত্রণায় আমার জীবন অতিষ্ঠ। এই কিসটা আমার ঘেন্না লাগে, অথচ বিয়ের পর দেখা যাচ্ছে লিপ কিস বউয়ের ভীষণ পছন্দ। স্বামীকে নিয়ে ওর যতগুলো স্বপ্ন আছে তারমধ্যে লিপ কিস একটা। এদিকে ফিল্মে পর্যন্ত লিপ কিস দেখলে আমার বমি বমি ভাব হয়।

কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, এই লিপ কিসটা কোনো কালেই আমার পেছন ছাড়েনি। তখন আমি ইন্টারে পড়ি। একটা মেয়েকে আমার ভীষণ ভালো লেগে যায়, মেয়েটির নাম জাহেদা। রাতে ঘুমোতে গেলে আমি কোল বালিশ জড়িয়ে ধরে ওরে কল্পনা করি। কোল বালিশে চুমু দিয়ে কল্পনা করি মেয়েটির কপালে গালে গলায় চুমু দিচ্ছি। ওর বান্ধবী একটার সাথে আমার বেশ ভাব ছিলো।

তাকে বুঝিয়ে বললাম আমার অবস্থা, সে আমার পক্ষ থেকে জাহেদাকে প্রস্তাব দিলো। জাহেদা কিরকম জানি সাথে সাথে আমার প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করে ফেলল। সে অবশ্য গম্ভীর বা লাজুক মেয়ে নয়, ক্লাসে হৈহল্লা ওরাই করে বেড়ায়, খুব চঞ্চল একটা মেয়ে জাহেদা। যাইহোক, ওর সাথে আমার নাম্বার আদানপ্রদান হল৷ প্রতিদিন রাতে ফোনে প্রেমালাপ হয়। দু’জনের মধ্যকার লজ্জাবোধ খানিকটা কমে এসেছে। আমরা এখন সব ধরনের কথা বলি। জাহেদাকে একদিন আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ময়না পাখি, তুমি এত সহজে আমার প্রস্তাব গ্রহণ করলে কীভাবে?’ ওপাশ থেকে ফিক করে হাসির শব্দ এলো, তারপর বলল, ‘তোমাকে প্রথম থেকেই আমার ভীষণ ভালো লাগতো বাবু। বিশেষ করে তোমার ঠোঁট খুব মায়াবী।’ জাহেদার কথা শুনে আঁতকে উঠলাম, আমার ঠোঁট ওর প্রথম পছন্দ?

এরপর অনেকদিন কেটে যায়, আজকাল আমার খুব ইচ্ছে হয় জাহেদাকে জড়িয়ে ধরে গালে কপালে চুমু খাবো। একদিন সুযোগও হয়ে যায়। আমরা দু’জন দেখা করলাম কলেজের খানিক নির্জন একটা জায়গায়। জীবনে প্রথম কোনো মেয়েকে জড়িয়ে ধরবো ভাবতেই আমার ভেতরে কেমন তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে, জাহেদা আসতেই আমি ময়না পাখিটা আমার বলেই বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। জাহেদাও কেমন আবেশে আমাকে চেপে ধরেছে। তারপর আমি ওর কপালে গালে গলায় চুমু খেতে শুরু করেছি। হঠাৎ করে জাহেদা কেমন উত্তেজিত হয়ে গেলো। আমার ঘাড়ে ধরে টান দিয়ে সে দৈর্ঘ্য সময় নিয়ে লিপ কিস খাচ্ছে। একজনের ছ্যাপ আরেকজনের মুখে যাচ্ছে ভাবতেই আমার পেট কেমন জানি গুলিয়ে উঠলো। হঠাৎ লিপ কিস অবস্থায় আমি লক্ষ করলাম আমার বমি চলে আসছে, ধাক্কা দিয়ে জাহেদাকে যতটুকু পারি সরানোর চেষ্টা করেছি, তারপরও ওর মুখে আর বুকে বমি পড়ে যায়। কী একটা অস্বস্তির ব্যাপার ভাবুন তো! বেচারি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। টিস্যু দিয়ে মুছে খানিক্ষণ পর চলে গেলো। এরপর থেকে আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখেনি।

কিন্তু বিয়ের পর আমি একই বিপদে পড়ে গেলাম। বউ লিপ কিস দিতে চায়, আমি তাকে বুঝাই, ‘ সোনা বউটা আমার, লিপ কিস না সাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর, তুমি একটু চিন্তা করে দেখো একজন মানুষের ছ্যাপ আরেকজন চুষে খাচ্ছে, সেটাকে লিপ কিস বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ব্যাপারটা কী ভালো দেখায় বউ?’ বউ আমার যুক্তি খন্ডাতে চেষ্টা করে, সে পাল্টা যুক্তি দেয়, ‘বাবু কিছু কিছু ক্ষতি মেনে নিতে হয়, এই যে সিগারেট খাওয়া সাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে তুমি খাও কেন?’ ‘বউ তুমি কেন বুঝতে চাও না ব্যাপারটা তো ছ্যাপ!’

‘আমি কোনো কিছুই বুঝতে চাই না, স্বামীকে লিপ কিস না দিতে পারলে আমি আর কাকে দেব শুনি? এটা যে আমার একটা স্বপ্ন আমার একটা শখ৷ আর তোমার ঠোঁট আমায় ভীষণ টানে, কেমন মায়াবী ঠোঁট, তাকালেই কিস খেতে ইচ্ছে জাগে, তোমাকে লিপ কিস না দিয়ে মরে গেলে আমার মানবজনম বৃথা বাবু।’ ‘আচ্ছা বউ, তাহলে ছ্যাপ না লাগিয়ে ঠোঁটে হালকা করে চুমু দিয়ে দাও। বউ আচ্ছা বলেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। আমার শুধু অস্ফুটে শব্দ বের হচ্ছে ‘আরে আরে কী করছো, ছেড়ে দাও, ব ব বমি বমি আসছে….

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত