দশ বছর আগে বান্ধবীকে বলেছিলাম।
“ তোকে আমি বিয়ে করব। ”
বান্ধবী জবাবে বলেছিলো।
“ আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখছিস কোনদিন? আমার মতো এত সুন্দরী একটা মেয়ে তোর মতো কাল্লু ছেলের সাথে সংসার করবে ভাবলি কীভাবে? ”
আজকে দশ বছর পর।
সুন্দরীটার বিয়ে হয়ে গেছে। দুটো মেয়েও আছে তাঁর। সেদিন বাসে দেখা হয়েছিলো। তাঁদের দেখে বড়ই চমকে গিয়েছিলাম! কারণ তাঁর স্বামীসহ দুটো মেয়ে একেবারে আলকাতরার মতো কালো!
মেয়েদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো। আমি নেমে যাওয়ার আগে তাঁকে বলে এসেছিলাম।
“ তোর একটা মেয়েকে আমি পুত্রবধূ করব। ”
বান্ধবী জবাবে বললো।
“ অপমান করছিস? কালো কী আল্লাহ্ বানায়নি? ”
“ না। বুঝাতে চেয়েছি কোনো মা’ই তাঁর গর্ভে ইচ্ছে করে কালো শিশু ধারণ করে না! ”
বান্ধবীর স্বামীর মহিমাকীর্তন করতে আমি ভুলিনি!
“ মেয়েদের বাবাটা অনেক সুন্দর রে। সত্যিই দারুণ একটা বর পেয়েছিস। ”
বান্ধবীর চোখমুখ লাল হয়ে গেলো। অপমানিত হলো মনে হয়। তবে আমি মন থেকেই বলেছিলাম। লোকটা খুবই সরল মনের। কত সুন্দর করে মেয়ে দুটোর সাথে মজা করছে। আগলে রাখছে। জবাব দিলো।
“ হ্যাঁ, সুন্দর। অনেক সুন্দর। তুই বিয়ে করিসনি? ”
আমি মুচকি হাসলাম। সে বুঝে গেলো আমি বিয়ে করে ফেলেছি। কলেজে থাকতে সে খুব বুদ্ধিমতীই ছিলো।
“ দাওয়াত দিলি না যে! নাকি পালিয়ে বিয়ে করছিস? ”
তার চোখে চোখ রেখে বললাম।
“ পালিয়ে না। আর আমি তোর জ্বলেপুড়ে মরে যাওয়া দেখতে চাইনি। আল্লাহ্ এর কসম। সে এত অপরূপা। দেখে তুই একদম মরে যেতিস। মাথা ঘুরে পড়ে গেলে সেখানে একটা হৈহুল্যই পড়ে যেত না? ”
বান্ধবী বৌয়ের ছবি দেখতে চাইলো। আমি স্টেশনের কাছে এসে বললাম।
“ তোর রাতের ঘুমটা নষ্ট হয়ে যাক আমি চাই না! ”
বান্ধবী হাসলো। বয়স বেড়েছে। হাসির ঝলক কমেনি।
“ আমি যেমন তেমন মেয়েকে দেখে জ্বলব না। আচ্ছা দেখ ঐ মেয়েটার মতো তোর বৌ? সামনের সিটে শাড়ি পড়ে যে বসে আছে মেয়েটা? এত লম্বা লম্বা চুল আমি কমই দেখেছি! এমন হলে আমি ঠিকই জ্বলতাম! ”
এবার আমিও হাসলাম। কথার উত্তর দিলাম না। সেই লম্বা চুলের মেয়েটার হাত ধরে বাস থেকে নেমে গেলাম। বান্ধবী বাসের জানালা দিয়ে আমার দিকে চেয়ে বললো।
“ অসভ্যগিরি ছাড়লি না। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই হাত ধরতে মন চায়? আর এইযে আপু আপনিও কিছু বলছেন না যে? ”
মেয়েটা লজ্জা পেয়ে গেলো। গালগোল লাল হয়ে গেছে। চোখদুটো নিচু করে বললো।
“ বর হাত ধরবে না তো কে ধরবে আপু? ”
বান্ধবী জানালাটা টেনে দিলো কেন বুঝলাম না! টাটাও দিতে পারলাম না!
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক