পাত্রী দেখতে গিয়ে দেখি পাত্রীর ছোটবোন আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড। ব্রেকআপের আগে সে বলেছিলো আমি তার থেকে বেটার মেয়ে ডিজার্ভ করি।
এতক্ষন লজ্জা পাচ্ছিলাম। এক্সকে দেখার পর পাত্রীকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগলাম।
নাক, চোখ, ঠোঁট, হাসি সবই তো এক্সের কাছাকাছি। তাও ধরে নিলাম, বড় মেয়ে যেহেতু ছোটটার থেকে বেটারই হবে।
পাত্রী আমার পছন্দ হয়েছে। আমি পাত্রীর মা মানে আমার হবু শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বল্লাম।
– আম্মাজান, আমি তো পাত্রীর সাথে একটু আলাদা কথা বলতে চাই।
এক্সগার্লফ্রেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিলো। পাত্রীর মা ব্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালেন। তারপর কইলেন,
– পরাণডা জুড়ায়া গেল বাবা। মেয়েরে বিয়ের আগেই তুমি আমারে আম্মাজান ডাকলা ! লক্ষী পোলা।
– আম্মাজান! আমরা তো বংশীয় ঘরের ছেলে। এমনই আমরা।
– আহা। জীবন ধন্য বাবা। যাও। কথা বলো তোমরা।
আমি পাত্রীর সামনে বসে আছি। পাত্রী চোখ তুলে আমাকে বার দুয়েক দেখলো। তারপর মিন মিন করে বললো…
– এভাবে তাকাইবেন না। আমার লজ্জা লাগছে।
– আপনার ভয়েস অনেক মিস্টি।
– উমম..হুমমম।
– আমাকে পছন্দ হয়েছে ?
– হুমমম। আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি আমি !
খাইছে ! এক্সগার্লফ্রেন্ডের সাথে না দেখলেই হয়। আবেগী স্বরে জবাব দিলাম….
– আমিও তো দেখেছি।
– কোথায় বলুন তো ?
– স্বপ্নে।
– যান…
– থ্যাংক্স, জান ডাকার জন্য। এমনটা সাধারণত কেউ কখনো ডাকে না।
– এ্যাই! আমি কিন্তু ঐ জান…
– থাক থাক, আর লজ্জা পেতে হবে না। চলেন যাই।
মাথা ঘুরিয়ে দেখি, এক্সগার্লফ্রেন্
ড দৌড় দিলো পিছন থেকে। কি খচ্চর রে বাবা। এভাবে কেউ হবু স্বামী স্ত্রীর কথা শুনে…!
– তা কি সিদ্ধান্ত নিলা বাবা ?
– আম্মাজান যেহেতু ডেকেছি। চিরকালই ডাকতে চাই।
– আলহামদুলিল্লাহ।
এরপর বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হলো। বিয়েও হলো। বাসরঘরে আমি আর বউ বসে আছি। এ ও আসছে। আদি রসাত্মক জোক বলে আমাদের হাসাচ্ছে।
এরপরই এলো এক্সগার্লফ্রেন্ড, বউয়ের ছোট বোন। তার দিকে তাকিয়ে আমি একটা মুচকি হাসি দিলাম। বউকে বল্লাম, এ্যাই, তুমি কি কোন পোড়া গন্ধ টের পাচ্ছো ? বউ বললো, আমার শর্দি হইছে। কিছু টের পাচ্ছি না।
ব্যাপার না বউ। আমি টের পাচ্ছি। আমি এক্সকে বল্লাম, কেমন বোধ করছো ?
– হুহ
– মুখ ভেংচি দিচ্ছো কেন ? রাতে খাও নাই ?
– তা আপনার না ভাবলেও চলবে।
তাকে, জ্বালানোর জন্য বল্লাম। এক কাজ করো। আমাদের একটা ছবি তুলো তো। ফেসবুকে আপ দিবো।
ছবি তোলার পর বল্লাম।
– আমার মাথা ব্যথা করছে। ছবিটা একটু ফেসবুকে আপলোড দাও তো। ক্যাপশনে লিখবা –
“আমার শিশু বউয়ের সাথে ফার্স্ট সেল্পী”
– ও শিশু ? পাগল হইছেন ?
বউ একটা ধমক দিলো তারে। যেটা বলছে সেটা কর বেয়াদব। আজকেই তো বিয়ে হইছে। আমি তো শিশু বউই।
– ওরে ন্যাকারে।
– চুপ থাক।
আহা। জীবন ধন্য একেবারে। আমি আসলেই এক্সের থেকে বেটার পাইছি।