– প্রতিদিনই দেরিতে আসেন, অফিস টা কি আপনার শশুড় বাড়ি পেয়েছেন?
প্রতিদিনই এমন একটা নয় বরং অসংখ্য বকা খাওয়া আমার কপালে জোটে। ম্যাডামের থেকে। আসলে আমারই বা দোষ কি? যেই ছেলে প্রতিদিন সকালে ১০ টায় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস, সেই ছেলে কি কখনো? তাড়া তাড়ি অফিস আসতে পারে?
– কি হলো কথা বলছেন না কেন?
– হয়েছে কি ম্যাডাম ঘুম থেকে..
– বুঝতে পেরেছি বলতে হবেনা। এমন করলে জব টা ছেড়ে দিন।
– না ম্যাডাম না, তার থেকে ভাল আমি অফিসেই কাথা বালিশ নিয়ে ঘুমাবো, সবাই আসলে তাড়া তাড়ি জাগতে পারবো।
– আজিব মানুষ, এই আপনি যান তো।
– ম্যাডাম রাগ করেন ক্যারে?
– ওই আপনি কি মোশারফ করিম?
– না ম্যাডাম।
– তাহলে এই ভাবে মজা করলেন? কেন? যান তো খুব বিরক্ত লাগছে আপনাকে।
– জ্বি ম্যাডাম।
অফিসে প্রথম দিন এসেই বুঝে গিয়ে ছিলাম, এই অফিসে জম আছে। ঠিকই ধরেছিলাম। সেই জম টা হলো নীলান্জনা ম্যাডাম। ম্যাডামের নাম যতটা শান্ত সে ততোটা শান্ত নয়। বরং তার উল্টো সে। তাই মুহুর্তেই সবাই কে অশান্ত করে তুলতে পারে সে।
পরদিনের ঘটনা, আবার লেট করলাম। আজ কিন্তু তাড়া তাড়ি উঠেছিলাম। আসলে আজকে খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো তাই আর কি কোনো গাড়ি পাইনি আসার জন্য। প্রায় ভিজেই আসলাম। আজও অনেক গুলো ঝাড়ি খেলাম। প্রায়ই ভিজে গেছি, তাই পাশের সুন্দরী কলিগ, রিতা, সে আমার Frnd , তাই আমাকে তার ওড়না দিয়ে মুছে দিলো। কিন্তু অতঃপর
ম্যাডাম আবার তার কেবিনে ডাকলো।
– এই আপনাকে বসতে বলছি?
– না ভাবলাম বলবেন তাই।
– আর হুট করে এসে বসে পড়লেন কেন? কেবিন আসার আগে নক করতে হয় জানেন না?
– আমরা আমরাই তো তাই আরকি।
– উফ, বিরক্তিকর।
– জ্বি ম্যাডাম।
– অফিসে কি পেয়েছেন? এইখানে কি সিনেমা চলে? থিয়েটার পেয়েছেন?
– বুঝলাম না ম্যাডাম।
– আপনি বৃষ্টিতে ভিজবেন, আর অন্যজন আপনাকে ওড়না দিয়ে মুছে দিবে। শুনুন এইসব বাদ দিয়ে বরং কাজ করুন। যান এখন এখান থেকে।
উফ বুঝে গেছি আমি, এই অফিসে আমার আর কাজ করা হবেনা। জব টা হয়ত ছেড়েই দিতে হবে। এইভাবে কোনো মানুষ পারে? সারাদিন শুধু বকে। আমার মা ও তো আমাকে এতটা বকে না। মেজাজ টাই খারাপ।
– অালভি কি হইছে?
– আর বলোনা না রিতা, তুমি ওড়না দিয়ে মুছে দিছো তাই বকছে।
– আমার তো মনে হয় ম্যাডাম তোমার জম।
– হুম। আমার মনে হয় চাকরী টা করা হবেনা।
এরপর থেকে প্রতিদিন তাড়া তাড়ি আসার চেষ্টা করেও, একদিন এসেছি, কিন্তু সেদিন ম্যাডামই আসেনি। ধুর। ভালো ভাবে কাজ করতে লাগলাম। ভেবেছি বকা থেকে বোধ হয় বাচলাম। কিন্তু কারন অকারনেই বকে। ধুর এইভাবে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভবনা। কেবিনেও বকে, বাইরেও বকে। তাই দিলাম কচুর চাকরী টা ছেড়ে। *Neelanjona Mem Is Calling…* কিছুদিন ধরে অফিসে যাইনা। ছেড়ে দিয়েছি জব। তবুও জম আমার পিছু ছাড়ে না ক্যারে?
– হ্যালো?
– আপনার শরীর টা ভালো তো?
– জ্বি ম্যাডাম।
– জব টা ছাড়লেন কেন?
– আমার জন্য শুধু শুধু আপনাকে বিরক্ত হতে হয় তাই ভাবলাম, আপনাকে বিরক্ত নাই বা করলাম।
অতঃপর ফোনটি কেটে দিলো ম্যাডাম। একটু অবাকই হলাম। প্রতিদিন যেভাবে রেগে রেগে কথা বলত, অথচ আজ একটু নরম কন্ঠেই কথা বলেছে। তার এই রুপটা আজ প্রথম দেখলাম ও সরি শুনলাম। পরদিন আবার ফোন দিলো ম্যাডাম।
– আস্সালামু আলাইকুম। ম্যাম।
– ওয়ালাইকুম আস্সালাম।
– কেমন আছেন?
– জানিনা। অফিসে আসুন।
– কিন্তু ম্যাডাম জব টা তো…
– আপনি কে জব ছেড়ে দেয়ার? আমি বস, So আমি Decide করবো ওকে?
– না… মানে ম্যাডাম।
– অফিসে আসুন।
ম্যাডাম বোধ হয় আমাকে শেষ করেই ফেলবে। কি করতে যে জব টা নিয়েছিলাম আল্লাহই ভালো জানে। তাড়া তাড়ি ফ্রেস হয়ে চলে গেলাম অফিসে।
– আসবো ম্যাম?
– হুম, এখনে দাড়ান।
আমি গিয়ে তার পাশে দাড়ালাম। কিন্তু হটাৎ… উফ হয়ত এইটা কখনো ভাবিনি আমি, এমন টা হওয়ার ছিলোনা। কি ভাবছেন জড়িয়ে ধরেছে? হাহা হা নো, উঠে এসে আমাকে চড় মারলো। আমি তো রিতিমত দুনিয়াতে নাই।
– ম্যাম?
– কি ভাবো তুমি? নিজেকে কি ভাবো?
– ম্যাম আমি…
– চুপ, আমার সাথে দেখা না করে, চলে যাবার সাহস কি করে হয়েছিল তোমার?
ম্যাডামের মুখে তুমি শুনে একটু কেমন যেন হয়ে গেলাম। আসলে কেমন যেন হওয়ার কোনো কারন ছিল না। কারন ম্যাডাম আমার থেকেও বয়সে দুই বছরের বড়।
– সরি ম্যাডাম।
– যাও এখন কাজ করো, আমি যা বলবো তোমাকে শুনতে হবে
– জ্বি ম্যাডাম।
– তুমি কি বোকা? তুমি বোঝোনা? একটা মেয়ে তোমাকে রোজ শাষন করে, আর যখন তুমি চলে গেলে তখন কাকে শাষন করবে?
– জ্বি মানে ম্যাডাম।
আগে যেইটা হওয়ার কথা ছিলো সেটা পরেই হলো। ম্যাডাম কাছে এসে জড়িয়ে ধরলো, অনেকটা সময়। এরপর ঘুরে ফিরে সব কিছুর শেষে যা বলা হয় আরকি?
*আই লাভ ইউ* কিন্তু এই লাভ ইউ এর সাথে কিন্তু অন্য একটা কিছু পেয়েছি। সেটা হলো, ম্যাডামের লিপস্টিকের স্বাদ। মেয়েদের ঠোট Mybe মিষ্টি হয়, নাকি মেয়েরাই মিষ্টি হয়? নয়ত ম্যাডাম যখন কিস করলো তখন মিষ্টি মিষ্টি লাগলো ক্যারে??? নাহ আর একবার টেষ্ট করে দেখতে হবে তারপই বোঝা যাবে। তাহলে শেষ মেষ অফিস টা আমার শশুড় বাড়িই হলো..আর ম্যাডাম আমার জানপাখি..হাহাহা …