পুলিশের মেয়ের ভালোবাসা, পর্বঃ০১

পুলিশের মেয়ের ভালোবাসা, পর্বঃ০১

পর্বঃ০১

মনটা আজ খুব হালকা হালকা লাগছে।আজ ক্যাম্পাসে গিয়েই বন্ধুদের সাথে ধুমছে আড্ডা দিবো ভাবছি।

কিন্তু পরক্ষনে সেই কপাল আমার হলো না।কোথা থেকে যেন পুলিশ এসে হাজির হলো-
-এই তোর নাম মাহিন?
-আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম জ্বী স্যার।
-ঝিনাইদহ কে.সি কলেজে পড়িস?
-জ্বী স্যার।
-ইতিহাস ফাইনাল ইয়ারে ?
-জ্বী মানে।
কথা শেষ না হতেই পুলিশ আমাকে নিয়ে যেতে লাগলো।
-স্যার আমি কী করেছি?
-চল আমাদের সাথে।
-স্যার আমি কোন খুন করিনি।
-পাশ থেকে এক পুলিশ বলল-তোকে কখন বললাম তুই খুন করেছিস?
আমি মনে মনে ভাবলাম তাও ঠিক আমি তো কোন খুন করিনি।
-স্যার তাহলে আমি কোন ডাকাতি করিনি স্যার।
-পাশ থেকে আরেক পুলিশ বলল-ডাকাতির কথা কখন বলেছি আমরা।
সত্যি তো ডাকাতির কথাও তো বলেনি।
-স্যার নিশ্চয়ই তাহলে জঙ্গী ভেবে নিয়ে যাচ্ছেন।আমার এমন কোন রেকর্ড নেই আমার প্রতিবেশী ক্লাসমেটদের কাছে জেনে নিতে পারেন।
-এক পুলিশ আমাকে ধমক দিয়ে বলল-এখন যদি চুপ না করিস তাহলে এখানে….?
আমি আর কিছু বললাম না।মনে মনে ভাবছি গতকাল কী এমন করেছি যে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে।নাহহ তেমন তো কিছু করিনি,

ও হ্যাঁ রফিক চাচার দোকানের সামনে থেকে একশত টাকা পেয়ে ছিলাম।কিন্তু ঐ একশত টাকার কথা কিভাবে জানলো..
-স্যার ঐ একশত টাকা কী আপনার?
-কিসের একশত টাকা?
-নাহ স্যার কিছু না।
টাকাও যেহেতু স্যারের না তাহলে করেছি টা কী।
ও হ্যাঁ গতরাতে গোটা কয়েক মশা মেরেছি,কী বড় বড় মশা একদম হেলিকপ্টারের মত একেক টা।আমি এক পুলিশের হাত চেপে ধরে বললাম-
-স্যার আমি জীবনেও মশা মারবো না।মশা আমার সব রক্ত চুষে আমার শরীর সাদা করে দিলেও আমি মশা মারবো না।স্যার এবারের মত ছেড়ে দিন।

ও স্যার গাড়ী থেকে ঝাপ দিবো কিন্তু।
-এক পুলিশ বলল-হাত ছেড়ে সোজা হয়ে বস না হলে কিন্তু এখানেই রিমান্ড টানবো।
আমি ভয়ে একদম চুপষে গেলাম।
চুপচাপ গাড়ীর মধ্যে বসে আছি।
পুলিশ কে এত বার করে বললাম তবুও কোন কাজ হলো না।।এই পুলিশ কে আমার যত ভয়।না জানি কোন কেসে ফাসিয়ে দেয়।
.
এখন আমি থানার এস-আই এর সামনে দাঁড়িয়ে আছি উনি আমাকে ভাল করে দেখছেন।কে জানে কী দেখছে এতো।দেখা শেষে উনি এক হাবিলদার কে বললেন-এটাকে ভেতরে ঢোকাও ওর বাবা-মা আসলে তারপর ছাড়বো।বাবা-মার কথা শুনেই আমি স্যার কে অনুণয় করে বললাম-
-স্যার বাবা-মা জানতে পারলে সবাই হার্ট অ্যাটাক করবে তাদের কে জানানোর দরকার নেই।
-উনি ধমকের স্বরে বললেন-তুমি যা বলবে তাই শুনতে হবে নাকি আমাকে।চুপ করে বসো এখানে।
আমি আর কিছু বলার সাহশ করলাম না।চুপ করে বসে আছি এস-আই এর সামনে।এর কিছুক্ষন পরেই যা দেখলাম তা কল্পনাতেও ভাবিনি-
-স্যার আমি ওকে নিয়ে যেতে পারি।
-কে হয় উনি আপনার?
-আমার বয়ফ্রেন্ড।
এস-আই হাসতে হাসতে বলল-ঠিকআছে নিয়ে যান।
-এই চলো?
-হ্যাঁ মানে।
-যাবে নাকি এখানেই থাকবে?
-হ্যাঁ হ্যাঁ যাবো তো।
>আমি রূপন্তীর পিছু পিছু বের হয়ে আসলাম।ও হ্যাঁ আপনাদের তো বলতেই ভুলে গেছি রূপন্তী আমাকে নিতে এসেছে।

আমি থানায় আছি কিভাবে জানল।
মাথায় তো কিছু ঢুকছে না,তাছাড়া রূপন্তী বলা মাত্রই আমাকে ছেড়ে দিলো কেন মাথায় কেমন জানি সব ঘুরপাক খাচ্ছে।
.
এই মেয়েটাকেই গতকাল আমি প্রপোজ করেছি।সামনা সামনি করার সাহশ করে উঠতে পারিনি তাই মনের সব কথা

একটা চিঠিতে লিখে ওর বইয়ের মধ্যে রেখে এসেছিলাম।ভাবতেই পারছি না ও রাজি হয়ে গেছে,রাজি না হলে এভাবে

কেউ বাচাতে আসে।রূপন্তী আমার জুনিয়ার,একই বিভাবে তবে ও দ্বিতীয় বর্ষে আর আমি ফাইনাল ইয়ারে।

রূপন্তী কিছুদিন আগে আমার কাছে নোটস নিতে এসেছিলো-
-এই যে ভাইয়া শুনেন?
পিছনে তাকিয়ে দেখি রূপন্তী।আমি একটু ভাব নিয়ে বললাম-
-আমাকে বলছেন?
-জ্বী ভাইয়া আপনাকে বলছি।
-জ্বী বলুন?
-ভাইয়া আমার কিছু নোটস দরকার ছিলো।
কী শান্ত চাহনি মেয়েটার।চোখ গুলো কেমন বড় বড়, চোখের পলকও কেমন ধীরে ধীরে ফেলছে ।কী মায়াবী চেহারা এমনি এমনিতো সবাই পিছু ঘুরে না।
-এই যে ভাইয়া শুনছেন?
-ও হ্যাঁ কী যেনো বললে?
-ভাইয়া নোটস দরকার।
-আচ্ছা ঠিক আছে কাল নিয়ে আসবো।
-আচ্ছা ভাইয়া ধন্যবাদ।
আমি তো ভাবতেই পারছি না যেই মেয়ে কারো সাথে কখনো কথা বলে না সেই মেয়ে আমার কাছে নোটস নিতে এসেছে।

ভাল আর ভদ্র ছাত্র হিসেবে আমার বেশ শুনামও আছে ক্যাম্পাসে।
.
এর পর থেকেই ও নোটস নিতে আসতো আর আমি এভাবে সুযোগ পেয়ে আরো কাছাকাছি থেকে পিছু পিছু ঘুরতে লাগলাম।
এভাবে প্রায় একমাস ধরে ওর পিছু পিছু ঘুরছি,আমার থেকে কত স্মার্ট আর বড়লোকের ছেলে যে ঘুরেছে কাউকে পাত্তা দেয়নি।
.
রূপন্তী অনেকটা শান্ত প্রকৃতির একটা মেয়ে,কথা কম বলে, তেমন কারো সাথে মিশে না।প্রায় সময় একায় থাকে।

ক্যাম্পাসে সবাই তাকে ভাবওয়ালী বলে জানলেও আমার কাছে মেয়েটা কে অন্যরকম মনে হয়েছে।

এর পরেই গতকাল প্রপোজ করেছি চিঠিতে।এত সব স্মার্ট ছেলেদের রেখে আমাকে, আমি তো ভাবতেই পারছি না।

মনের মধ্যে কেমন কোকিল পাখি গান গায়তে শুরু করেছে।
-এই রিক্সা?
-এই রূপন্তী শুনো না?
-কী বলবে বলো?
রূপন্তী আমাকে তুমি করে বলছে আমি তো খেয়ালই করিনি।
-বলছিলাম যে..
কথা শেষ না হতেই রূপন্তী বলল-আগে রিক্সায় উঠো তারপর শুনছি।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত