আমার বুকের মধ্যে তুমি

আমার বুকের মধ্যে তুমি

কি করো টুনটুনি (আমি)

-এইতো,,তোমার কথা ভাবছি বাবুই(মালিহা)
-আমার কথা!!!! কি ভাবছো??
-ভাবছিলাম জীবনে আমি প্রেম টেম করবোনা। কিন্তু তোমার মতো একটা ফাজিল ছেলে,, আমাকে তোমার প্রেমে এভাবে ডুবাবে,সেটা কখন ভাবিনী।
-এই ফাজিল ছেলেটা তোমার জীবনে না আসলে,,তুমিতো প্রেমের আসল মজাটাই বুঝতেনা।
-হ্যাঁ,,,,,,এখনতো খুবি বুঝতেছি প্রেম করার আসল মজাটা কি!(মুখটা ভেঙিয়ে)
-আরো বুঝবা,,,,এই তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করতেছে। চলোনা কালকে আমরা দেখা করি?
-কালকে!!!!!! কোথায়??
-পার্কে
-পার্কে!!?? উমমমমমম,, অকে বাবুই।

একি!! ভাবছিলাম দেখা করতে রাজি হবেনা। কিন্তু এ তো একবার বলতেই রাজি হয়েগেছে। তারমানে ম্যাডাম প্রেমের আসল মজাটা বুঝতে পেরেছে।

-কালকে আসার সময় একটা কালো শাড়ি পড়েএসো।
-আমিতো ঠিক করে শাড়ি পড়তে পারিনা।
-কোনোভাবে পড়ে এসো। আর না পারলে হাতে করে নিয়ে এসো। আমি পড়িয়ে দিবো,,,হাহাহা।
-কি!!! বিয়ের আগেই এতোকিছু,,ফাজিল ছেলে।
-ফাজিল ছেলে নাকি ভালো ছেলে সেটা বিয়ের পরেই বুঝিয়ে দিবো। কালকে ঠিক১০টায় চলে এসো।

পরেরদিন…..

আমি মালিহার পছন্দের একটা নীল শার্ট পড়ে পার্কে বসে আছি। চারদিকে তাকাতেই দেখি জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে(কেউ কারো কাধে মাথা রেখে,,কেউ বুকে মাথা রেখে,,আবার কেউ কেউ ঝোপেড় আড়ালে কি যেন করতেছে)আমি আমার জোড়া পূরন করারঅপেক্ষায় আছি। কিন্তু কিছুতেই মেয়েটির আসার নাম গন্ধ নাই। অনেক্ষন পরে ম্যাডাম এসে উদয় হলো। আমার কাছে না এসে একটু দূরেই দাড়িয়ে গেল। ওয়াও!! ওকে আজ দেখতে অনেক সুইট লাগছে। আমার পছন্দের কালো শাড়ি পড়ে এসেছে। মাথার চুলগুলো খোলা থাকার কারনে,,হালকা মৃদু বাতাসে চুলগুলো ওর মুখে এসে পড়লো। মালিহা নিজের হাতেই মুখ থেকে চুলগুলো সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টিহাসি দিলো। আমিও তার হাসির প্রতিউত্তরে একটা ছাগলের মতো হাসি দিলাম।

-এ্যাই,,,তোমাকেনা আজ খুব সুন্দর লাগছে। (আমি)
-আমি এমনিতেই খুব সুন্দর।(মালিহা)
-হুমম,,,তা ঠিক। কিন্তু এই শাড়িটা তোমার সৌন্দর্য দিগুণ করে দিয়েছে।
-হিহিহি….

কথাগুলোর মধ্যে হঠাৎ আমার চোখ পড়লমালিহার পায়ের দিকে। শাড়িটার একপাশ নিচের দিকে নেমে আছে। আরেকপাশ উপরে উঠে আছে। আর শাড়ির কুচিটাও মাটির সাথে অনেক খানি লেগে আছে।

-বাহ্ তুমিতো খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়তে  পারো।
-কেন কি হয়েছে?
-একবার নিচের দিকে তাকিয়ে দেখো? মালিহা নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে-
-সেকি!! এরকম আবার কখন হলো। আমিতো বাসা  থেকে ঠিক করে পড়েই বের হয়েছি।
-তাতো দেখতেই পাচ্ছি। আর আসার সময়,, পথেরসবাইকে দেখিয়ে আসছো তুমি খুব সুন্দর শাড়ি পড়তে পারো,,,,হাহাহা।
-তুমি হাসছো?? আমিতো বলেছি আমি শাড়ি পড়তে পারিনা। শুধু তোমার কথাতেই পড়ে এসেছি।(একটু কেদো কেদো মুখে)
-আচ্ছা এবার এদিকে আসোতো।

তোমার শাড়িটা ঠিক করে দেই। যখনি মালিহা আমার দিকে আসতে লাগলো,,তখনি তার শাড়ির একপাশ জুতোর সাথে আটকে ঠাস করে ও মাটিতে পড়েগেল। এই যা গেছেরে!!!! বলে আমি দিলাম দৌড় ওর কাছে। মালিহার দুহাত টেনে ওকে উপরে তুল্লাম। চারদিকে তাকালাম,,যাক বাবা কেউ দেখেনি। তারপর পাসের একটা সিটে গিয়ে ওকে বসালাম। মালিহা লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো কথা বলছেনা। আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে,,ওর ডান হাতে খুব লেগেছে। ওর এ অবস্থা দেখে আমারও খুব খারাপ লাগছে। মেয়েটি বড্ড সহজ-সরল। আমাকে ও পাগলের মতো ভালোবাসে। তাইতো আমি যা বলি ও তাই করে।

-এই তোমারতো খুব লেগেছে।
-তাতে তোমার কি? তোমারতো খুব হাসার কথা। তুমি হাসতে থাকো।(এভার পুরাই কেঁদে দিলো)
-আমার টুনটুনি পাখিটার খুব লেগেছে।আর আমি বুঝি হাসবো??
-হ্যাঁ হাসো,,,যতো খুশি ততো.(মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে)
-রাগ করেছো বুঝি?? রাগটা কি আমার উপর নাকি শাড়িটার উপর??
-তোমার উপর। তুমিইতো শাড়ি পড়তে বলেছো।
-আচ্ছা বাবা,,আর শাড়ি পড়তে হবেনা।বিয়ের পরে আমিই তোমাকে প্রতিদিন শাড়ি পড়িয়ে দিবো। এই বলে একটা টান দিয়ে মালিহাকে জড়িয়ে ধরলাম।

-এই ছাড়ো বলছি,,সবাই দেখছে
-কেউ দেখছেনা। সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে। ঐ ঝোপটার দিকে একবার তাকাও?? মালিহা ঝোপটার দিকে তাকিয়ে-
-ছি!! কি অসভ্য ওরা। এই বলে মালিহা তার মুখটা আমার বুকের মধ্যে লুকিয়ে নিলো। আমিও তাকে আমার বুকে মধ্যে আগলে ধরে রাখলাম। আর সারাজীবন এভাবেই আগলে ধরে রাখতে চাই..

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত