—কিরে পেত্নী কি করো?(অভ্র)
:-কি বললি? আমি পেত্নী? (নীলা)
:-পেত্নীই তো। (অভ্র)
:-আরেক বার বলতো সাহস থাকলে(নীলা)
:-পেত্নী (অভ্র)
:-দাঁড়া আজ তোর খবর আছে।(নীলা)
:-কি করবি?(অভ্র)
:-কিছু না।(অভিমানী কন্ঠে)
:-রাগ করলি?(অভ্র)
:-না রাগের কি আছে(নীলা)
:-তাহলে চুপ হয়ে গেলি কেন?(অভ্র)
:-চল ওইদিকে যাই (নীলা)
:-আচ্ছা চল..(অভ্র)
অভ্র আর নীলা সেই ক্লাস নাইন থেকেই ভাল বন্ধু। কেউ কাউকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকরে পারে না।তাদের বন্ধুত্বটা এতটাই গভীর যে,কোন কিছুই সেটা ভাংতে পারবে না। নীলা খুব শান্ত একটা মেয়ে।কিন্তু খুব একটা শান্ত বলাও ঠিক না।যখন রাগ করে খবর হয়ে যায়। আর রাগ করলে নীলার রাগী মাখা মুখটা লাল হয়ে যায়। খুব ভাল লাগে অভ্রর। কিন্তু আজ রাগলো না।প্রথম পহ্না টা লক্ষ্যভ্রষ্ট তাই ২য় টা কাজে লাগবেই। কি সেটা? আসুন দেখা যাক কি হয় পরবর্তীতে……..
:-হুম বল(অভ্র)
:-কি বলবো?(নীলা)
:-আমি কি জানি? তুই কি বলবি?(অভ্র)
:-আচ্ছা তুই এত পাজী কেন?(নীলা)
:-কি আমি পাঁজী? দাড়া দেখাচ্ছি(নীলার চুলে একটান)
:-ওই হারামি,কুত্তা,বিলাই,গরু তোরে কতবার বলবো আমার চুলে হাত দিবি না। আর একবারদিলে খুন করে ফেলবো।(একশ্বাঃসে কথাগুলো বলে ফেললো নীলা)
:-সরি দোস্ত(অভ্র) (নীলা)
:-হুম রাগ করেছিস?(অভ্রর জানা আছে কিভাবে এই রাগকুমারীর রাগ ভাঙাতে হয়)
:-না রাগ করিনি (নীলা)
:-আচ্ছা এই নে(আইসক্রিম টা বাড়িয়ে দিলো নীলার দিকে)
:-ইস দোস্ত তুই কত্ত ভালোরে এতক্ষন দিলি না কেন?(নীলা)
:-এমনি..(নীলা কত খুশী। এই হাসিটা সারাজীবন পেতে চায় অভ্র,একদম বাচ্চাদের মত আইসক্রিম খাচ্ছিল)
:-ওই?(নীলা)
:-কি?(অভ্র)
:-হা করে কি দেখিস?(নীলা)
:-তোকে দেখি(অভ্র)
:-আচ্ছা?(নীলা)
:-হুম..(অভ্র)
:-চল উঠি(নীলা)
:-আচ্ছা।(অভ্র)
মেয়েটা চুল নিয়ে খুবই সচেতন কাউকে স্পর্শ করতে দেয়না যেখানে সেখানে তো টান দেওয়া আর ৩০২ ধারায় ফাঁসির রশি গলায় পরা একই কথা।
:-নীলা(অভ্র)
:-তোকে কিছু বলার ছিল(অভ্র)
:-হুম বল.(নীলা)
:-না মানে..
-:কি মানে মানে করো এখনো?(নীলা)
:-আমি তোকে আ মি ইই(অভ্র)
:-কি? তুই আমাকে কি?(নীলা)
:-না মানে তোর চুলে একটা টান মারি?(অভ্র) (ভালবাসার কথাটা আর বলা হলো না)
:-কি?আবার? তুই যা। আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ এখুনি।(নীলা)
:-কি?আচ্ছা বায়(অভ্র)
:-তোর বায় এর গুষ্টি কিলাই বাগ(নীলা)
:-ওকে ওকে।(চলে আসলো অভ্র)
রাত ১২:০২। বাহিরে খুব ঠান্ডা পড়েছে। মনটা খুব খারাপ নীলার সকালে অভ্রকে ওইভাবে না বকলেও পারতো। কিন্তু ও এক নাম্বারের বজ্জাৎ। আমাকে পেত্নী ডাকে আবার চুলেও টান দেয় কত্ত বড় সাহস। ক্রিং ক্রিং ক্রিং…স্ক্রিনে তাকাতেই অভ্রর ফোন।
:-হ্যালো অভ্র(নীলা)
:-না। আমি অভ্র না।(অভ্র)
:-তাহলে?(নীলা)
:-আমি একটা পেত।আমার পেত্নীর কাছে ফোন করেছি।আপনি কি আমার পেত্নী?(অভ্র)
:-ফাজলামি বাদ দে।(নীলা)
:-আচ্ছা দিলাম।কি করোছ এখন?(অভ্র)
:-কিছু না শীত তাই কম্বল গাঁয়ে দিয়ে শুয়ে আছি(নীলা)
:-তাই? নিচে আসবি?(অভ্র)
:-এখন?(নীলা)
:-হুম তোর ফেভারিট জিনিষ এনেছি।(অভ্র)
:-আচ্ছা দাঁড়া আসছি।(নীলা)
:-হুম..(অভ্র)
খুব ঠান্ডা লাগছে।জানিনা কি হবে? এর মধ্যেই পেত্নীর আগমন।
:-কই?আমার আইসক্রিম কোথায়?(নীলা)
:-আইসক্রিম কেন?(অভ্র)
:-এইতো বললি আমার ফেভারিট জিনিষ এনেছিস।
:-হুম।চল(অভ্র)
:-কোথায়?(নীলা)
:-আমাকে বিশ্বাস হয় না?(অভ্র)
:-হুম(নীলা)
:-চল।
:-আচ্ছা। এই শিশির ভেজা ঠান্ডার মাঝে একটু উঞ্চ ছোঁয়া। আহ।সারা জীবন এই দিনটাকে ভুলতে পারবে না অভ্র।
:-এই অনেক দূর তো আসলাম?(নীলা)
:-হ্যা তাইতো।(অভ্র)
:-আচ্ছা আমার মনে হয় সামনেইই পেয়ে যাবো।
:-মামা দুইটা আইসক্রিম দিন।
:-আচ্ছা। এই নেন..
:-হুম এই নেন টাকা।
:-চলো(নীলা)
:-আচ্ছা চলো..(অভ্র)
:-আচ্ছা আমাকে এত রাতে এভাবে বাহিরে এনে আইসক্রিম খাওয়ানোর মানে কি?(নীলা)
:-কিছুক্ষণ পরে বলবো(অভ্র)
:-আচ্ছা।বাসার সামনে তো আসলাম এখন বলো।
:-কয়টা বাঁজে?
:-০১:০২ বাঁজে (নীলা)
:-হ্যাপি বার্থডে নীলা(নীলা)
:-আ হ্যা আজ আমার বার্থডে আমার তো মনেই ছিল না।(নীলা)
:-এখন কিরকম অনুভূতি? (অভ্র)
:-সত্যি কখনো ভাবিনি কেউ এভাবে আমার বার্থডে সেলিব্রেট করবে।অনেক অনেক ধন্যবাদ।
:-হুম।এইটা তোর গিফট(অভ্র)
:-কি আছে?(নীলা)
:-খুলে দেখ(অভ্র)
:-নূপুর এ তো সেই নূপুর টা যেটা সেদিন আমি মার্কেট এ দেখেছিলাম।(নীলা)
:-হুম এটাই তোর গিফট(অভ্র)
:-গিফট কেউ এভাবে হাতে দেয়?(নীলা)
:-আচ্ছা এইদিকে দে..(অভ্র)
অতঃপর পরিয়ে দিলো নূপুর টা নীলাকে।
:-জানিষ এইটা পরে যখন তুই হাটবি পেত্নীর মত লাগবে তোকে(অভ্র)
:-তাই?(নীলা)
:-হুম(অভ্র)
:-আচ্ছা যাই (নীলা)
:-নীলা শোন?
:-কি?
:-আজ তোকে না বললে হয়ত আর কোনদিন বলতে পারবো না।আমি তোকে।ভালবাসি খুব ভালবাসি। (অভ্র)
:-কি?(নীলা)
:-হুম।আই লাভ ইউ(অভ্র)
:-আই লাভ ইউ টু(নীলা)
:-পেত্নী।
:-হুম আমি শুধু তোর পেত্নী।
:-হুম।
এভাবেই তাদের ভালবাসার সম্পর্ক।