গেট দিয়ে ঢুকতে যাব তখন ই পিঠে একটু ব্যাথা অনুভব করলাম। আরে ভাই এটা কোনো লাঠির আঘাত না, কেউ ধাক্কা দিল মনে হয় তাই পেছন ঘুরতেই আমি তো পুরাই থ ,,, কেননা, আমার পিছনে মেয়ের বেশে আস্ত একটা হলুদ পরী দাড়িয়ে আছে।
– এই যে দেখে শুনে চলতে পারেন না? কানা নাকি?(আমি)
– এই যে আপনি ভুল বলেন কেন হে আস্ত গাধা একটা। মেয়েরা কি কানা হয় নাকি গাধা। হলে তো কানি হবে।(মেয়েটা) [ওমা! মাইয়া তো দেখি উল্টা আমাকেই ঝাড়ি দেওয়া শুরু করল]
– আপনি পাগল নাকি হে? কোথা থেকে দৌড়ে আসলেন। ধাক্কা খাইলেন আবার ঝগড়া ও শুরু করলেন!
– আপনার কি কমন সেন্স বলতে কিছু নেই? মেয়েরা কি পাগল হয় নাকি? আস্ত একটা গাধা।
– ওই কথায় কথায় গাধা বলা টা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
– ওকে ওকে। আসলে আমি আপনাকে ইচ্ছা করে ধাক্কা দেই নি, কখন যে সামনে হনুমান এর মত চলে আসলেন নিজেই টের পাই নি হি হি হি।
– ওই মাইয়া, তোমার সমস্যা কি হ্যা? কথায় কথায় হনুমান, গাধা বলে যাচ্ছ।
– আচ্ছা সরি সরি কলেজ এ কি নতুন আসছেন?
– হুম, পারিবারিক সমস্যা থাকার কারনে ভর্তি হওয়ার ১ মাস পরে আসতে হল।
– ওহ তা কোন ইয়ার এ আপনি?
– ফাস্ট ইয়ার আপনি?
– আমি ও.
– আপনার নাম টা বললেন না?
– ও হ্যা আমি মাহি। বাসা কলেজ এর পাশেই।
– আমি সবুজ। কলেজ এ নতুন, পাশাপাশি এলাকায় ও নতুন। বাসা খুজতেছি, কোন বাসা পেলে সেখানে উঠবো। এখন বন্ধুর সাথে থাকি।
– আচ্ছা চলেন ক্লাসে যাই।
– ও হ্যা চলেন।
আজ প্রথম দিন কলেজে আসতে না আসতেইএরকম কিছু ঘটে গেল। আল্লায় জানে বাকি দিন গুলা কেমতে যায়। ক্লাস শেষ হওয়ায় ক্লাস থেকে বের হয়ে বন্ধুর বাসা উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করলাম এমন সময় পেছন থেকে কারোর ডাক…
– এই যে শুনুন।( মাহি)
– আরে আপনি? হুম বলুন। (আমি)
– আপনি তো বাসা খুজতেছেন তাই না?
– হুম।
– আমাদের বাসায় একটা রুম ভাড়া দেয়া হবে। আমার আব্বুর সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।
– আচ্ছা ওকে। আপনার ফোন নাম্বার টা দিতে পারবেন? (দেখি মেয়েটা পটে কি না)
– হুম তবে একটা শর্ত আছে।
– কি শর্ত? (একটু অবাক হয়ে)
– আমাকে তুমি করে বলতে হবে।
– আচ্ছা এই ব্যাপার! তাহলে দুজন দুজনকে তুমি করে বলবো ওক্কে?
– হুম, এই নাও ০১৭২৩৩৪৪**৯
– ওকে বাই।
– বাই। অতঃপর বন্ধুর বাসায় গেলাম।
– ইয়াহু আমি তো প্রেমে পইড়া গেছি মাম্মা (আমি)
– তো মাইয়াটা কেঠা রে দোস্ত (রাফি,আমার বন্ধু)
– আয় মাইয়ার বাসায় যামু।
অতঃপর বালিকার বাসায় গেলাম। ভাড়া টা ও কনফার্ম করলাম। শুধুমাত্র কাল যাওয়ার পালা। রাত ১১ টা। ভাবলাম বালিকাকে একটা কল দেই রিং হওয়ার সাথে সাথেই….
– হ্যালো (মাহি)
– হুম কেমন আছো? (আমি)
– ভালো, তুমি?
– ভালো। কিন্তু বুঝলে কিভাবে আমি কল দিয়েছি?
– মন বলে দিয়েছে এটা আপনিই হবেন।
– তো কি করতেছো?
– ছাদে বসে আছি, তুমি?
– শুয়ে আছি। কাল থেকে কিন্তু তোমার সাথে আমিও ছাদে আড্ডা দিব হুম।
– হুম, জানি।
– ওকে বাই। কাল কলেজে কথা হবে।
-বাই।
এ মা আমার ঘুম দেখি চইলা গেল। ও ঘুম কই গো তুমি? নাহ আজ মনে হয় আর ঘুম হবে না। সকালে কোলবালিশ নিয়ে গড়াগড়ি করতেছি তখন ই রাফি আমাকে ডাকা শুরু করল….
– কিরে সবুজ, কি শুরু করলি কোলবালিশ নিয়া?
– আরে দোস্ত বলিস না কি রোমান্টিক সিন। আমি আর মাহি উফফফ…
-শালা এইসব ন্যাকামো বাদ দে আর কলেজ যা।।। ভাগ
– ওক্কে মাম্মা।
কলেজ গেলাম। সারাদিন মাহির সাথে ঘুরলাম। ওইদিকে আমার সব কিছু মাহিদের ভাড়া করা রুম এ পাঠাই দিলাম। ভাবতে ও কস্ট লাগে, হবু শশুর বাড়িতে ভাড়া থাকতে হচ্ছে। কি আর করার পরিস্থিতির শিকার। সন্ধাবেলায় রুমে শুয়ে আছি, তখনি চা হাতে মাহির আগমন।
– কি ব্যাপার বিয়ের আগেই এতো কিছু?
– কিইইই….
– না কিছু না,,তো চা কি মনে করে
– খাবে তাই আনলাম। আব্বু বললো তাই দিয়ে গেলাম। নয়তো তাও পেতে না, হুহ
– সত্যি?
– হুম মাহি চলে যাচ্ছিলো তখন আবার ডাক দিলাম…
– মাহি!
– হুম.
– একটা কথা ছিল
– বলো।
– হায়হায় ভুইল্লা গেছি।
– হইছে আর ঢং করতে হবে না, আমি গেলাম।
বালিকা দেখি চইলাই গেলো। আজ যেভাবেই হোক বলতেই হবে, তাই বাসা থেকে বের হলাম ৩ টা গাধা ফুল আনার জন্য। আপনারা ভাবছেন গোলাপ থাকতে গাধা কেন? সময় হলেই বুঝতে পারবেন। এখন বলব না হি হি হি। মাহি ছাদে একা একা দাঁড়িয়ে আছে, আমি আস্তে আস্তে ওর পিছন গিয়ে দাড়ালাম…
– মাহি! (আমি)
-…..(চুপ)
– মাহিইইইই। (জোড়গলায়)
-……..(আবারো চুপ)
– কথা বলবা না যখন গেলাম।
– এতক্ষন কোথায় ছিলে?
– তোমার জন্য গিফট আনতে গেছিলাম।
– না, আমার গিফট লাগবে না।
– শোনো একটা কথা ছিল।
– এখন বলবে ভুলে গেছি তাই না???
– নাহ আজ বলবই বলবো.
– ওকে, কি বলবা বলো তো দেখিওর সামনে গিয়া হাটু গেড়ে বসলাম
– তুমি কি এই গাধা টার গাধী হবে? থাকবে কি সুখ-দুঃখে এই গাধাটার পাশে? একটু ভালোবাসবে কি এই গাধা টা কে? কথা দিলাম, এই গাধা টা শুধু তোমার গাধাই থেকে যাবে। আইলাবু মাহি।
– আইলাবু থু সবুজ ভাবিনি এতো তাড়াতাড়ি মেয়েটাকে আমার করে পাবো। এভাবেই শুরু হল আমাদের প্রেমের কাহিনী।
সমাপ্ত