রিফাত তুই তো জানিস অনি তোকে ভালোবাসে না তাহলেও কেন তুই ওর কথা ভাবিস? কেন রিফাত বল?
দেখ রিফাত অনির সাথে তোর বিয়ে হবার পরেও অই ছেলেকে ভুলে যায় নি, এখনও কথা বলে তোর ফোন থেকে তাহলে তুই তো পারিস তাকে নিষেধ করতে নাকি? (আবির)। দোস্ত বাদ দে, তুই তো জানিস আমি কখনও রিলেশন করি নি। কিন্তু আমি অনির প্রেমে পরে গেছি দোস্ত আমার কিছুই করার নেই। আমি যত টুকু পারি অনিকে সাহায্য করব।
অনি আর রিফাত দুই জন স্বামী স্ত্রী কিন্তু তারা এখনও বাসর করে নি। বিয়ের রাতে দুই জন বিভক্ত ছিলো। কারণ অনি একটা ছেলে কে অনেক ভালোবাসে। সেই ছেলেকে ৪ মাস পর অনি এই বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে চায়। এই সব কথা রিফাত কে বলছে। রিফাত প্রথমে রাজি ছিলো না, কেউ কি চায় নিজের বিয়ে করা বউ অন্য কারো সাথে পালিয়ে যাক? কেউ চায় না। তবে রিফাত অনির সুখটা খুঁজেছে তাই তার সুখ বিসর্জন দিয়ে হলেও অনির ইচ্ছা পূরন করবে। অনির সেই বয় ফ্রেন্ড ফোন করে এবং অনি তার সাথে কথা বলে, অনি কথা বলত আর রিফাতের বুকটা ফেটে যেত। এই ভাবেই কাটাচ্ছে তাদের মিথ্যা এই স্বপ্ন ময় সংসার। রিফাত অনিকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে। সকালে অনি বেলকনিতে দারিয়ে আছে। রিফাত যায় তার সাথে কথা বলতে,
= আপনার চুল গুলো অনেক সুন্দর।(রিফাত)।
= জানি (অনি)
= হ্যাঁ আপনি তো আবার অনেক কিছুই জানেন।
= আচ্ছা আপনি কি কখনো রিলেশন করেছেন?
= না, করি নি, ইচ্ছা ছিলো বিয়ে করে বউ এর সাথে রিলেশন করব কিন্তু হলো না।
= জানেন আপনাদের মত কিছু ছেলের জন্য রিলেশন কৃত মেয়েদের বিয়ে হয় আপনাদের মত লোকদের সাথে। এটা খুবই খারাপ।
= হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি।
= আপনার ফোনটা দেবেন?
= জ্বী এই নিন।
অনি অই ছেলের সাথে কথা বলে। একদিন অনি তার প্রিয় একটা জায়গায় বেড়াতে যেতে চায়, রিফাত বলে ঠিক আছে সমস্যা নেই নিয়ে যাব। অনির সব চেয়ে প্রিয় জায়গা রেলস্টেশন।
= জানেন আমাদের রিলেশন শুরু হয় কি ভাবে?(অনি)
= না, বলুন।
= আমরা কলেজ থেকে বেড়াতে যাচ্ছিলাম, আমি স্টেশনে ওই ছেলের সাথে ধাক্কা খাই, এই নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়, তার পর কি থেকে যে কি হয় গেলো আল্লাহ্ যানে।
= বাহ সুন্দর লাগলো। আচ্ছা চলুন ওই দিকটা দেখি?
= না আর ভালো লাগছে না, বাসায় যাবো চলুন।
= আচ্ছা ঠিক আছে চলুন।
এরি মধ্যে কেটে যায় চার মাস। অনি অপেক্ষা করে আছে সেই ছেলের জন্য, কখন কল দেবে। হঠাৎ করেই একটা কল আসে। অনি কল রিসিভ করে।
= হ্যালো, কে বলছেন?
= আমি আপনার বয় ফ্রেন্ড এর কাজিন, আপনাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য কল করছি।
= জ্বী বলুন কি বলবেন?
= আপনি আজ যার সাথে চলে যেতে চাইছেন সে অনেক মেয়েকেই এই ভাবে নিয়ে এসেছে এবং পরবর্তিতে তাদের এ কুল ও হারিয়েছে ওকুল ও হারিয়েছে, তাই বলছি প্লিজ আপনি সেই ভুলটা করবেন না। আপনার বিয়ে হয়েছে স্বামি কে নিয়ে সংসার করুন।
= আপনি কি করে জানলেন আমার বিয়ে হয়েছে? আর আপনি কি ভাবে জানেন এই সব কথা?
= আমি ওর কাজিন, আমি অর সাথেই থাকি, এই সব প্ল্যান আমার রুমে বসেই করে। আমার কথা ইচ্ছা করলে শুনবেন, না হলে নেই। রাখি ভালো থাকবেন আপু। রাখি বলেই কেটে দেয় অচেনা অজানা সেই কল দাতা। অনির মনে হাজারও প্রশ্ন কিন্তু কোনো উত্তর জানা নেই। কিছুক্ষণ পর অনির বয় ফ্রেন্ড কল করে সেই রেলস্টেশনে আসতে বলে, অনি রিফাত কে বলে রেলস্টেশনে যেতে।
= তোমার এতো ক্ষণ লাগলো?(বয় ফ্রেন্ড)
= হ্যাঁ, লেগেছে। কোনো প্রব্লেম?(অনি)
= না কোনো প্রব্লেম না।
= আচ্ছা বেশি কথা বলব না চলো তারা তারি।
= কোথায়? কোথায় যাবো?
= কেন? আমার কাজিনের বাসায়, তারাতারি চলো। তোমার সাথে উনি কেন অনি?
= এনাকে চিনতে পারছ না? ইনি আমার বিয়ে করা স্বামী, আর আমি তোমার সাথে যাবো না। তুমি চলে যেতে পারো,
= এই সব কি বলছ অনি?
= চলে যেতে বলছি প্রশ্ন করতে বলি নি, আসতে পারেন আপনি এখন, আমার সব বলা শেষ।
= কিন্তু এই রকম তো কথা ছিলো না অনি।
= চলে যান আমার সামনে থেকে, আমি আমার রিফাতকে বিয়ে করছি, আমি অনেক সুখি আছি, প্লিজ আপনি আর আমাকে কল দিয়েন না। এই বলেই রিফাত কে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে, আর বলে,
= রিফাত আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ(অনি)
= আমি জানি আমার বউ আমাকে ছাড়ে অন্য কারো সাথে যেতে পারবে না।(রিফাত)
= রিফাত আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি।
= আমিও তো বাসি অনি। প্রচন্ড ভালোবাসি।
= তাহলে বলো নি কেন আমায়? তুমি আমায় এতো ভালোবাসো??
= তুমি কেন বলো নি হুম?
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে চলো আজ থেকে আমাদের স্বামী-স্ত্রী জীবন শুরু। আচ্ছা ঠিক আছে। তারা তাদের জীবন টা শুরু করেছে। অনি বিরাট একটা ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। আপনারা দোআ করবেন ওদের জন্য, যেন সারা জীবন সুখেই থাকে, দুঃখ যে স্পরর্শ করতে না পারে