প্রতিটা ফোটায় প্রশান্তির ছোয়া!

প্রতিটা ফোটায় প্রশান্তির ছোয়া!

ফোন রিসিভ করেই বুঝতে পারলাম কোনো সমস্যা হয়েছে। কারণ শুভ্র কোনো কথা বলছে না। শুভ্র যখন ফোন করে কোনো কথা বলে না তখনই বুঝতে হবে something is wrong.
‘হ্যালো? হ্যালো শুভ্র??’
‘কি ‘
‘কি মানে? ফোন তো তুই করলি ‘
‘মিষ্টি …আদিবা আমার সাথে কথা বলছে না। ‘
‘তাতে কি। তোর flirt করার মেয়ের অভাব  আছে নাকি?’
‘নারে, আদিবা মেয়েটারে আসলেই আমার খুব পছন্দ। ‘
‘দুনিয়ার ৪৯% মেয়েরেই তোর খুব পছন্দ। তাতে কিছু আসে যায় না। ‘
‘ইশ …তুই আমার কথার অর্থ বুঝতেছিস না। I think I
love her!’
‘u think?’
‘no, I m sure!!’
‘কখন sure হইলি? মাত্র?’
‘তোরে না মাঝে মাঝে থাপরাইতে মন চায়।
‘হইছে যা যা আদিবারে propose কর গিয়া। সময়
নস্ট করতেছিস কেন ‘
‘okay bye’
‘শুভ্র শোন …’
আমার কথা শোনার আগেই শুভ্র ফোন কেটে দিল।বুকে ব্যাথা শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে আশেপাশের সব কিছু থেমে গেছে। আট বছর ধরে শুভ্রর প্রতি আমার
দুর্বলতাকে আমি ভালবাসায় পরিণত হতে দেইনি। তার কারন ছিল একটাই, শুভ্র জীবনে কোনো কিছু seriously নেয়নি। আজকে ওর কথা শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। তবে কি আমার ৮ বছরের বন্ধুত্বে আমি যা করতে পারিনি আদিবা তা ৩ মাসের মধ্যেই করে দেখালো??

আমি তো আমার বন্ধুত্বে কখনো ত্রুটি করিনি। শুভ্র যখনি কোনো বিপদে পরেছে, সাহায্য করেছি। মায়ের সাথে ঝগড়া করে ভাত না খেলে বুঝিয়েছি। রাতে দেরী করে বাড়ি ফিরলে বকাঝকা করেছি। কই …আদিবা তো এসব করেনি…

শুভ্র ফোন করেছে। রিসিভ করতেই হবে। ওকে কখনই বুঝতে দেয়া যাবে না যে কিছু হয়েছে।
‘হ্যালো মিষ্টি?’
‘হুম …’
‘শুনলাম আদিবা নাকি আমার উপর পুরাই ফিদা…ওর classmate দিপ বলল। আমার কি কপাল তাইনা??’
‘হ্যা শুভ্র, তোর কপাল খুব ভাল ‘
‘আচ্ছা রাখি , ঘুমা। ‘
ঘুম? কিভাবে ঘুমাব শুভ্র? তোমার একটা কথা মাথাটাকে এলোমেলো করে দিয়েছে।
আর তুমি আমাকে ঘুমাতে বলছ!
আমি আগে থেকেই জানতাম আদিবার সাথে relation হওয়ার পর আমার আর শুভ্রর সম্পর্কটা দুর্বল হয়ে যাবে। কারন ভালবাসার সংস্পর্শে এসে সবাই বন্ধুত্ব ভুলে যায়। শুভ্রর বেলায় ও তাই হল। ধিরে ধিরে contact কমতে থাকল। এক সময় বন্ধ হয়ে গেল। কয়েকদিন আগে যে শুভ্রর জীবনে এসেছে , কত সহজে সে আমার ৮ বছরের বন্ধুত্বকে শুভ্রর কাছে তুচ্ছ করল!

মাথার উপর বিশাল মেঘের স্তুপ নিয়ে ঘর থেকে বেরুলাম। আজ আমি বৃষ্টিতে ভিজব। ভিজব সেই জায়গায় গিয়ে যে জায়গাটা শুধু আমার আর শুভ্রর. যেখানে তৃতীয় কারো স্থান নেই। সেই বেঞ্চ, সেই কদম গাছ, সেই আমি। নেই শুধু শুভ্র। কদম গাছটাতে খোদাই করে মিশু লেখা। মিষ্টি+শুভ্র=মিশু।

চেনা জায়গাটাকেই আজ কত অচেনা লাগছে। খুব কান্না পাচ্ছে। আমার চোখের পানি আড়াল করার জন্যই বোধহয় ঝুম বৃষ্টি নামল। আশেপাশের সমস্ত কিছু
মিথ্যা মনে হচ্ছে। হাসির শব্দে ঘোর কাটল। গিয়ে দেখি শুভ্র আর আদিবা বৃষ্টিতে ভিজছে। দুজনের মুখেই ভালবাসার নতুন আভা ঝলমল করছে। ওদের কে পেছনে ফেলে সামনে এগুচ্ছি। প্রতিটা পদক্ষেপ ভারী মনে হচ্ছে। একবার মনে হল হৃদয়ের সকল কথা শুভ্র কে বলি। পরমুহুর্তেই সামলে নিলাম। তা আর হয়না। শুভ্র কখনই আমার ছিলনা। সামনে এগুচ্ছি…পেছনে শুভ্র …শুভ্রর স্মৃতি …আমাদের বন্ধুত্ব… আজকের বৃষ্টিটা কি সুন্দর! প্রতিটা ফোটায় প্রশান্তির ছোয়া!

‘if u love something
let it go…
if it comes back to u
its yours
if it doesn’t..
it never was…..’

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত