মৃত্তিকা একা ছাদে বসে আছে ভোর থেকে! রাত থেকে মন অনেক খারাপ।অনিক ব্রেক আপ করছে রাতে।ব্রেক আপ না বললেও চলে।কারন অনিক এখনও কিছু বলনি। তবে রাতে অনিকের কথা শুনে মৃত্তিকার মনে হয়েছে সে ব্রেক আপ চায়।অনিক ইংনোর করা শুরু করেছে মৃত্তিকাকে এটা খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে।হঠাত করে ছেলেটা এমন করছে কেনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না।ছেলটা অনেক ম্যাচিউড। এরকম অকারণে করে না।
মৃত্তিকা দিনের মধ্যে চৌদ্দ বার ঝগড়া করে আর অনিক প্রতিদিন সরি বলে ঠিক করে।কিন্তু হঠাত করে অনিকের ব্যাবহার মেনে নিতে পারছে না।মেয়েটা খুব
সেনসেটিভ। কাছের মানুষের কাছ থেকে ইংনোর সহ্য করতে পারে না।একা একা ছাদে বসে কেঁদেই যাচ্ছে।
যে মেয়েটা কাঁন্না করতে ভুলে গেছিলো সেই মেয়ে ঘন্টা খানেক ধরে কান্না করে যাচ্ছে! ছাদে এসেছিলো মরার জন্য।ভেবেছিলো পাঁচ তালা থেকে লাফ দিবে। বাদ সাধলো তার বন্ধু।বার বার ফোন দিচ্ছিলে না ধরে উপায় ছিলো না।ফোন না ধরলে মৃত্তিকার আম্মুর কাছে ফোন চলে যেতো।তাই রিসিভ করলো।অনেক জোরাজুরির পর নিজের সিন্ধান্ত থেকে সরে গেলো। রেলিং এর উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে আর কানে ইয়ারফোন গুঁজে বসে আসে। তাদের পরিচয় ফেসবুকের মাধ্যমে।আর পাঁচটা রিলেশনের চাইতে একদম আলাদা। আর পাঁচটা সম্পকের মতো নোংরামি ছিলো না।দিনে একবার কথা বললেই চলে যেতো।তেমন কোন আবদারও ছিলো না।মৃত্তিকার কোন ছবি পযন্ত দেখে নি।এমনকি অনিক চায়ও নি। ভালোবেসেছে শুধু মৃত্তিকার মনকে। ছয় মাস পূরণ হলো আজ।অথচ অনিক এমন করছে।
মৃত্তিকা ভেবেছিলো এইবারও সে অনিককে বলবে, “বলতো আমাদের রিলেশনের কয় মাস হলো? “আর অনিক মিষ্টি করে বলবে, “তুমি বলো! “কিন্তু অনিক তো কথা বলতেই চাচ্ছে না! “কলেজের সময় হয়ে গেছে, নিচে আয় মা।”মৃত্তিকার আম্মু নিচ থেকে বললো। কলেজে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না।কিন্তু বাসার মধ্যে কান্না কাটি করার কোন মানে হয় না।আম্মু সন্দেহ করবে তাই ভেবে কলেজের রওনা দিলো মেয়েটা। অন্যদিনের মতো ক্লাসে মনোযোগ নেই মৃত্তিকার। বার বার ফোন দেখছে হয়তো অনিক ফোন করবে।এই ভেবে। কিন্তু না ফোন স্কিনে কোন মিসকল, কল নেই। হঠাত করে অনিকের ফোন!
-“হ্যালো, কি হইছে তোমার খুলে বলবা তো নাকি? এমন করতেছো কেনো? ”
-“ওই, তুমি কই? কলেজের কোথায়? ”
-“আমি কোথায় তুমি জেনে কি করবে? তুমি তো ঢাকায়! ”
-“যেইটা বলছি সেইটা বলো।কোথায়? ”
-“নিচতালায়।কমন রুমে ”
-“কি রং এর জামা পড়ে আছো? ”
-“আজিব তো।কেনো,? ”
-“বলো ”
-“বেগুনি ”
-“ওকে।পাঁচ মিনিট ওয়েট করো।” বলেই অনিক ফোনটা রেখে দেয়। পাঁচ মিনিট পর…..
মৃত্তিকা হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। অনিক ওর সামনে।স্বপ্ন দেখছে কিনা বুঝতে পারছে না।অনিক চিমটি কাটলে বুঝতে পারে না বাস্তবেই আছে।বলদটা হেসেই যাচ্ছে।মৃত্তিকার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ওর হাসি দেখে।। সামনে থেকে চলে যায়! হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে মৃত্তিকার।
-মিমু, তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চাচ্ছিলাম তাই বলি নাই।প্রতিবার আমাদের রিলেশনের কয় মাস হলো তুমি আমাকে বলো এইবার আমি তোমাকে চমকে দিতে এইভাবে চলে এলাম।
এখনো রাগ করে থাকবে? ”
এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেলে। মৃত্তিকা আর থাকতে পারে না। কেঁদে ফেলে।
-“এই বোকা মেয়ে কাঁদছো কেনো? ” কান্না টা আরো বাড়তে থাকে.. আস্তে আস্তে শান্ত হয়।
-“আর কখনো এমন করবে না। (কান্না কান্না কন্ঠে) ”
-“আচ্ছা ”
-“হু! আমার সাথে কথা না বলে তো ঠিকই থাকতে পারো!কেমন দেখলে পেত্নী টাকে?
-“পেত্নীর মতো! ”
-“কিইইই? ”
-“শোন নাই কি বললাম? ”
-“আড়ি! ”
-“এই নাও শুরু হয়ে গেলো! ”
আবার ঝগড়া!…অনিকের যথা রীতি সরি বলা!
এইভাবেই চলতে থাকে কিউট প্রেম!