৩ নাম্বার গার্লফ্রেন্ড ১ নাম্বার বউ

৩ নাম্বার গার্লফ্রেন্ড ১ নাম্বার বউ

-ভালোবাসি!
-কাকে?
-তোকে॥
-তাই নাকি?
-হুম।
-সত্যি?
-হুম সত্যি সত্যি সত্যি।
-কতোটা ভালোবাসিস?
-অনেকটা।
-এতদিন কেন বলিসনি?
-ভয়ে।
-কিসের ভয়?
-হারানোর।
-যদি এখন হারিয়ে যাই?
-তাহলে আমিও হারিয়ে যাবো।আর কখনো ফিরে আসবোনা।

মেয়েটা আমার মুখ চেপে ধরল।ও কিছু একটা বলতে চাইছিলো কিন্তু পারলোনা!আমি চোখ মেলে দেখি মা আমার চোখে মুখে এক গ্লাস পানি ঢেলে দিয়ে বকাবকি করছে।

-কিরে?পানি দিলা কেন?(আমি)
-কপাল ভালো ঝারু দেইনি।উঠে দেখতো কে এসছে?(মা)
-কে এসছে?
-জানিনা।তবে একটা মেয়ে।

মা কথাটা বলেই রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল।বুঝলাম আমি স্বপ্নের মধ্য বিচরন করছিলাম!কিন্তু মেয়েটা কে?ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বেরোলাম।যা দেখলাম তাতে আমার পুরো শরীরটা কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে।অবনী এসেছে।সাথে একটা ব্যাগ।ওহ,বলাই হয়নি অবনী আমার ৩ নাম্বার গার্লফ্রেন্ড।পুরো ইতিহাস বলার সময় এখন নাই।

-এই যে ইডিয়েট!চোরের মতো কি দেখছ?এদিকে এসো।ব্যাগটা তোমার রুমে নিয়ে যাও আর আমার জন্য এক কাপ চা পাঠাও।চা খেয়ে ঘুমাবো।সারা রাত ঘুমাইনি,প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।(অবনী)
-তুমি,ব্যাগ এগুলো কি?(আমি)
-যা বলছি তাই করো।যাও নিয়ে যাও ব্যাগটা॥

আমি চুপ চাপ ব্যাগটা নিয়ে আমার রুমে চলে গেলাম।কি আজব মেয়েরে বাবা!ফান করে সেদিন বলছিলাম আমাকে বিয়ে করবা?আর আজ হুট করে চলে এলো?ভাবতে ভাবতে ব্রাশে পেষ্ট লাগাচ্ছি।হটাৎ করে একটা চিৎকার…

-আমাকে চা দেওয়ার মতো কেউ নেই বাড়িতে?(অবনী)
-এই যে মামনি!তুমি কে?তোমাকেতো ঠিক চিনলাম না!(মা)
-আপনি অর্নবের মা?
-হ্যা।কিন্তু আমিতো তোমার পরিচয় জানতে চাইলাম!
-মা,আমি আপনার পুত্রবধু।(মাকে প্রণাম করে)
-এটা কি বলছ?আমার ছেলে বিয়ে করল আর আমিই জানলাম না?
-না না।তেমন কিছুনা।আসলে এখনো পুরো বিয়েটা হয়নি।তবে এখন আপনি আমাদের বিয়েটা দিয়ে দিন।
-মানে কি?
-আসলে প্রথম যেদিন ক্যাম্পাসে ওকে দেখেছিলাম সেদিন শুভদৃষ্টিটা সেরে ফেলছি।তারপর সেদিন যখন ও আমার কলম নিয়ে পালাচ্ছিলো তখন পুরো ক্যাম্পাসটা ৭ বার ঘুরে ওকে ধরেছিলাম ওটাই সাত পাকে ঘোরা।বাকি রইলো সিদুর!ওটা আপনি ব্যাবস্তা করে দিন॥

আমি রুমের মধ্যে বসে বেশ ঘটা করে ব্রাশ করছিলাম আর ভাবছিলাম আজ বাড়ি ছাড়তেই হবে।কি ভুলে যে ওকে সেদিন বলেছিলাম বিয়ের কথা!

-মেয়েটা কিসব বলছে?(মা)
-আমি কিছু বুঝতে পারছিনা।(আমি)
-তুই ওকে চিনিস?
-হ্যা।ও আমাদের ক্যাম্পাসে পড়াশুনা করে।খুব ভালো ছাত্রী…
-চয়েজ আজে তোর।কিন্তু আগে কিছু বলিসনি কেন?কি সুন্দর চেহারা মেয়েটার!(আমার কথা শেষ না করেই মা এক নিঃশ্বাসে বলে দিল)

বুঝলাম মায়ের ওকে পছন্দ হয়েছে।কিন্তু আমিতো ওকে ভালোইবাসি না!আর ও যে মেয়ে ওকে বিয়ে করলে জীবনটা পুরাই বরবাদ।আমার বাকি দুটো গার্লফ্রেন্ড এর সাথে আর কখনোই কথা হবেনা।কথাটা ভাবতে ভাবতে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হলাম।এর পর ১ সপ্তাহ কেটে গেলো।

১ সপ্তাহ পরে…

আমাদের বিয়ে হলো।আমাদের বাড়িতে বসেই।কিন্তু আমার খুব ভয় করছে।বাঘিনীর সাথে বাসর ঘরে?বাপরে!ভয়ে আমার অবস্তা খুব খারাপ।তারপরেও ঢুকলাম বাসর ঘরে…

-এই যে মিষ্টার!এখানে আসেন।কিছু কথা আছে।(অবনী)
-কি কথা?(আমি)
-অথৈ আর আনিকার সাথে আর কখনো বলা যাবেনা।ওদেরকে আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।আর তোমার মাকে আমার খুব ভালো লেগেছে।প্রতিদিন আমাকে এক কাপ চা দিতে বলবা।খুব সুন্দর চা বানাতে পারে উনি।
-আর?(ভয়ে ভয়ে বললাম)
-আর,আমাকে খুব ভয় করে চলবা।তবে ভালোবাসা আর ভালো রাখার দায়িত্বটাও তোমার।
সেই থেকেই চলছে আমাদের দাম্পত্য জীবন,তাও অনেক সুখেই।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত