বৈশাখীর মেলাতে যাচ্ছে শাহিন।। হঠাৎ রাস্তার পাশের ফুল বাগানে দেখল সুন্দরী রূপবতী একটা মেয়ে, বকুল গাছের নিচে বসে মালা গাঁতছে,,বিস্ময়ে বিমুগ্ধ চোখে শুধু ছলছল করে তাকিয়ে রইলো।। কিন্তু তাও বেশিক্ষন নয়।।
অতি সুন্দরের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায় না।শাহিন মেলাতে গেয়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারলনা।শাহিন যেন কোন কিছু তেই মন বসাতে পারছে না।তাই সুন্দরিকে দেখার জন্য আবার ছুটে যায় গাছের নিছে।।গিয়ে দেখে গাছের নিচে মেয়েটি এখনো বসে রয়েছে।। সাথে যোগ হয়ছে আর একটি মেয়ে। মনে হয় মেয়েটির বান্ধাবী। শাহিন মেয়েটির বান্ধুবী কে চিনে।। বান্ধবী নাম হিমু।
পরে হিমুর থেকে খবর নিয়ে জানতে পারল যে মেয়েটির নাম সুমি।শাহিন হিমুদের বাসায় প্রায় যেতো।ইদানিং একটু বেশি বেশি যায়।কারন সুমি ও হিমুর বাসায় যেত।।দিন যত যায় শাহিন সুমির প্রতি দূর্বল হয়ে পরে।।কোন কিছুই যেন ভালো লাগেনা তার।।সুমি আপন করে পাওয়ার জন্য সে ব্যকুল হয়ে পরে। সুমির রূপের আগুনে হৃদয় পুড়াতে থাকে।মনে জাগে প্রেম। চোখে জাগে স্বপ্ন বুকের গভীরে জাগে অনেক আশা। শাহিন সুমিকে তার ভালোবাসার কথা জানাতে চায় কিন্তু কিছুতেই পারছে না।। এরি মধ্যে দুজন দুজনার সাথে আলাপ পরিচিত হয়। তাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়।। কিন্তু শাহিন এখনো বলতে পারছেনা তার ভালোবাসার কথা। আর থাকতে না পেরে শাহিন সুমিকে প্রশ্ন করলো…
শাহিন: সুমি তোমাকে একটি প্রশ্ন করি।আশা করি উওর পাবো?
সুমি: হ্যাঁ,করুন।
শাহিন: তুমি কি কাউকে ভালোবাস??
সুমি: হঠাৎ এই প্রশ্ন??
শাহিন: না এমনি।।
সুমি:আপনি কিছু বলতে চাইলে বলতে পারেন না হয় আমি চলে যাচ্ছি।।
শাহিন কিছুই বলতে পারল না।শুধু পাথরের মূর্তির মতো নিষ্পলক তাকিয়ে রইল।দুজনেরই মনের ভিতর এক অজানা কষ্টে ছটফটাতে শুরু হয়।কারন এরি ভিতর সুমিও শাহিনকে অনেকটা ভালোবেসেছে। সুমি মনে মনে ভাবে পাগলটা এতো ভয় পায় কেন আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক।।কিন্তু শাহিন ভয়ে বলতে পারছেনা।। একে অপর কে দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে পড়ে।সুমি আর পারছিলো তাই ভাবছে এইবার মনে হয় আমাকেই বলতে হবে।।
১ মাস পর,,,
সুমি আর থাকতে না পেরে হিমুদের বাড়ি তে এল।।সুমি,শাহিনের বাড়ি চেনে না।তাই বাধ্য হয়ে হিমুকে দিয়ে খবর পাঠালো।শাহিন খবর পেয়ে ছুটে আসলো।। শাহিন এলো,,,,দেখা দেখি হইলো।চোখের ইশারাতেই দুজনের কুশল বিনিময় হয়ে গেল। কেউ কিছু বলছে না শুধু চেয়ে আছে যেন বলার বাসা হারিয়ে ফেলেছে।। দুজনেই হিমুর বাড়িতে হিমুর পড়ার টেবিলে হেলান দিয়ে বসে পড়ল মুখোমুখি। মাথার রেশমী চুলগুলো এলোমেলো হাওয়াতে দুলতে লাগলো।।দেখতে খুব ভাল লাগছে।।শাহিন অপলক চোখে তাকিয়ে রইল।।কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না।।সুমির খুব লজ্জা লাগছিলো।। তাই সুমি বলে উঠলো…
সুমি: এমন করে কি দেখছেন?
শাহিন: তোমাকে।
সুমি: হি হি হি….. আমাকে দেখার কি হলো?
শাহিন: না বলছিলাম তোমার মায়াবী দু’ চোখে যেন যাদু আছে, হাসিতে যেন মুক্তা ঝড়ে।
সুমি: হাসতে হাসতে,,,, নিজেকে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারল না।অজানা শিহরণে শাহিন কে হাত আঁকড়ে ধড়ল।তার সাথেই শাহিন তার কপালে একটা মিষ্টি দিয়ে বলে উঠলো….
শাহিন:ভালোবাসি সুমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।।
সুমি:আমি তুমাকে অনেক ভালোবাসি।।
শাহিন:কখনো আমায় ছেড়ে যাবে নাতো।।
সুমি:কখনো না।।
শাহিন:তা হলে এই বার আমার পাওনাটা দাও।।
সুমি :কি??
শাহিন:আমি একটা মিষ্টি পাওনা আছি।।
সুমি:সখ কত।।পাবে না।।
শাহিন:কেন??
সুমি:এতো দিন আমায় কষ্ট দিলে তাই।।
শাহিন:আর কখনো আমার জান পাখিকে কষ্ট পেতে দিবো না এই বলে শাহিন সুমিকে শক্ত করে জড়িয়ে দরলো।। এই ভাবে কেটে গেলো অনেক দিন একদিন শাহিন বলল…
শাহিন :আমি মরে গেলে তুমি খুব কষ্ট পাবা তাই না?
সুমি :সুমির বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল।প্লিজ শাহিন এমন করে কথা বলো না।তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।
শাহিন : সুমির দুটি হাত ভালবাসার টানে মুঠো বন্দি করে ধরল।
সুমি :শাহিন তুমি কেন আমাকে এত ভালবাস?
শাহিন :জানি না সুমি।শুধু এইটুকু বুঝি আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালবাসা শুধু তোমাকেই ঘিরে।।
সুমি :শাহিন।
শাহিন :বলো।
সুমি :এতো ভালবাসা কী আমার কপালে সইবো?
শাহিন :কেন সইবে না সুমি? ।।।সুমির আর একটু গা ঘেঁসে বসল।।।
সুমি :তুমি পুরুষ, ছেলেরা দিনকে রাত করতে পারে।কিন্তু আমি মেয়ে, মেয়েদের জীবন তো কচু পাতার পানির মত।হালকা ছোঁয়া তে ঘলে যায়।।।সুমির চোখ থেকে অশ্রু ঝরে পড়ল।শাহিন পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে অশ্রু মুছে দিল।।।।
শাহিন :সুমি, তুমি ভেঙ্গে পড়ো না।আমি সারা জীবন শুধু তোমারি থাকবো।
সুমি :তবুও ভয় হয় ভবিষ্যতের কথা ভেবে।। তুমি কি ভাবো?
শাহিন :সত্যি সুমি, ভবিষ্যতের ভাবনা আমার নেই।আমি শুধু বর্তমানই বুঝি। ।।।সুমি শাহিনের একটা হাত ধরে।নদীর দিকে তাকালো,।।।
সুমি :দেখ শাহিন, এই নদীর ও একটা ঠিকানা আছে।নদী গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে সাগরের মোহনায়।। কিন্তু শাহিন আমরা কোথাই গিয়ে আশ্রয় নিব।।।
শাহিন :সুমিকে শক্ত করে জড়িয়ে দরে বলে আমরা একে অপরের বুকে আশ্রয় নিবো।।
(সুমি খুজে পায় তার উওর।তাই আর একটু শক্ত করে জড়িয়ে দরে লুকিয়ে থাকে বুকে মধ্যে) শুরু হলো আর একটা রোমান্টিক ভালবাসার কাহিনী।