ভালবাসার স্পর্শ

ভালবাসার স্পর্শ

-এই রিহি!
-কি!
-একটা কথা আজ বলতে না পারলে,মনেহয়না আর কখনো বলতে পারবো।
-কি কথা!
-I Love You[বলেই দিলাম এক ভৌ- দৌড়]

চিকুন-চাকুন ৩-৪ দিন রিহির সামনে গেলাম না। তারপর একদিন সামনে পরেই গেলাম। ভয়ে দৌড় দিবো কি দিবোনা ভাবতে ভাবতে বালিকা এসে কলার চেপে ধরলো।

-ওই এতো দিন কোথায় ছিলে?
-বাসায়।
-এই কদিন আমার পিছু নাওনি ক্যান!
-জ্ব…জ্বর আসছিলো।
-ক..কই দেখি,এখন ভালো আছো।[তাড়াহুড়া করে মাথায় হাত দিয়ে দেখলো]
-হুম,এখন একদম ঠিক আছি।
-আমার একটা কথা বলার ছিলো।
-কি!
-লজ্জা হয়। (মনে মনে দারুণ খুশি।শিওর জড়িয়ে ধরে কিস দিবে।)
-আচ্ছা চোখ বন্ধ করছি।[চোখ বুজে]
-I Love you Too.

(শুনে মনটাই ভেঙে গেলো।আমিই হয়তো একমাত্র ব্যক্তি,যার “I Love You Too”শুনে মন ভেঙে গেছে। তাও নিজেকে শান্তনা দিয়ে চোখ খুলে বালিকার দিকে তাকালাম। আফসুস বালিকা নাই। হয়তো দৌড় দিছে,নয়তো স্বপ্ন। পরেরদিন দাঁড়িয়ে আছি,বালিকার কোচিং ছুটির অপেক্ষায়। এমন সময় রিহির ছোটো বোন রিধি হাজির। আমায় দেখেই এগিয়ে এসে কথা বলতে লাগলো। কথা বলে বুঝতে বাকি রইলোনা ছোটো বালিকাও লাইন মারতে চাচ্ছে।{আমার আবার অনেক এক্সপ্রিয়েন্স}. কিছুক্ষণ পর রিহি বেড় হলো। আমায় দেখে এগিয়ে এসে হাই লেভেলের একটা ঝারি)

-ওই কাল আমাকে পেয়ে তোর মন ভরেনি। এখন আবার আমার ছোটো বোনের সাথে লাইন মারার চেষ্টা করছিস।(রিহি)
-আপু তুই এই ছেলেকে ভালবাসো! ইইইইই..দেখতে একটুও কিউট না।(রিধি)
-সেই নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা।আমারটা আমি বুঝে নিবো।(রিহি)
-তুই জনি ভাইয়ার সাথে প্রেম করিস না।তোর হয়ে নাহয় আ….(রিধি)
-ঠাসসস।এখান থেকে ভাগ এখন।আর কে বলছে আমি প্রেম করি!(রিহি)
-হাহ্,তোমাদের বিয়ে হবেনা।এটা আমার অভিশাপ। (রিধি)
-দেখাযাক,বাসায় গিয়ে বল আমার ফিরতে দেরী হবে।

বলেই বালিকা একটা রিক্সা ডাক দিয়ে রওনা হলো। দুই বোনের ঝগড়ার মাঝে পুরা অসহায় এক হভাগা আমি। কাল পর্যন্ত সিংগেল ছিলাম আর আজ দুই বালিকা আমায় পাওয়ার জন্য ঝগড়া করে। যাইহোক,পুরো রাস্তা ভাবতে ভাবতে কখন রিক্সায় থেমে গেছে নিজেও জানিনা।

-জনি নামো।
-এখানে ক্যানো[পকেট থেকে মানিব্যাগ বেড় করতে করতে]
-বিয়ে করবো।
-কিইইইই[হাত থেকে মানিব্যাগ পরে গেলো]
-হুম,তুমি তোমার ফ্রেন্ডের ফোন দাও। [ততোক্ষণে মানিব্যাগ উঠিয়ে রিক্সাওয়ালার বিদায় দেওয়া শেষ]
-আজ বিয়ে না করলে হয়না[ভয়ে ভয়ে]
-তুই ফোন দিবি কি না।
-দিচ্ছিতো,রাগো ক্যান।

অতঃপর ব্যাচের সবকটারে ফোন দিলাম। বিয়ের কথা শুনে হালায়রা ১০মিনিটে কাজি অফিসের সামনে হাজির। কালকের সিংগেল পুলা আজকে ম্যারিড। প্রেম বলতে পুরাই ফাকা। রিহি সাথে সাথে ফোন দিয়ে ওর বাসায় বিয়ের কথা জানিয়ে দিলো। আর আমার সাথে আমাদের বাসায় যাবার বায়না ধরলো। আফসুস না করার সাহস জুটলোনা। বাসায় এসে দরজার সামনে কলিংবেল চেপে চুপচাপ ভদ্র ছেলের মতন দাঁড়িয়ে আর রিহি আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে আছে। কিছুক্ষণ বাদে আম্মু এসে দরজা খুলে পুরাই হা…

-আম্মু তুমার বৌমা[দাঁত ৩২টা বেড় করে দিয়ে]
-ভেতরে আয়,তোর কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করিনি।

-আমার দোষ নে বলার আগেই রিহি হাতে আস্তে করে চিমটি কাটলো…”হুম আম্মু আমারি দোষ”অতঃপর আমাদের টিভির রুমে বসিয়ে আব্বুকে ফোন দিলো। সাথে রিহিকে বললো ওর বাসায় ফোন দিয়ে সবাইকে আসার জন্য বলতে। প্রায় সন্ধ্যা উভয়ের পরিবার সামনাসামনি কিছু কথা বলে ডিসিশন নিলো কাজি কে ডেকে আবারো বিয়ে পরানো হবে। যা হবার তাই হলো। একদিনে একি বালিকাকে দুবার বিয়ে করলাম। ছোট্ট আয়জনের মাঝে বাসঘরে গিয়ে পুরোই শক। পালিয়ে বিয়ে করে এত্ত সুন্দর বাসরঘর খুব কম লোকেরি জুটে।

-এই…
-হুম।
-আজ সারারাত গল্প করবো।
-আর কিছু করবা না!
-অন্য কিছু স্বপ্নেও ভাববা না।
-আচ্ছা,কোলে মাথা রাখি!
-আগে একটা পাপ্পি দাও।
-কোথায়!
-যেখানে ইচ্ছা।
[ঠোঁটে আর সাহস হলোনা,আলতো করে কপালে পাপ্পি দিলাম]
-এখম মাথা রাখি!
-হিহিহি,রাখো। [দুজনেই কিছুক্ষণ নিরব।রিহি আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।]
-এই জানো একটা মেয়ে সবচেয়ে বেশী খুশি কখন হয়
-কখন!
-যখন তাঁর ভালবাসার মানুষ অন্য কোথাও না ভেবে কপালে চুমু দেয়।
-একটা ছেলে কখন সবচেয়ে খুশি হয় জানো!
-নাহ্।

-তার ভালবাসার মানুষ যখন তাকে মিষ্টি শাসন করে।
-হিহিহি,ওই এই পর্যন্ত কয়টা প্রেম করছো!
-পাঁচ বছর তোমার পিছেই ঘুরলাম,আর প্রেম করবো কখন।
-ক্রাশ খাইছো কয়টা!
-তোমায় দেখার পর থেকে অন্য কাউকে ভালোই লাগেনা।
-তারমানে আগে লাগতো।
-আগে তো কারো দিকে তাকাতামি না।
-মানে এখন তাকাও।

[কেউ আমারে মাইরালা। অনেক কষ্টে বালিকাকে বুঝিয়ে একটু রোম্যান্স করতে সক্ষম হলাম] কিছু রাত..রাত নয়, স্মৃতিরি অংশ। কিছু প্রেম..প্রেম নয়, তোমার আমার গল্প। সেই তুমি..তুমি নও, ভালবাসার স্পর্শ।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত