ক্রাশ

ক্রাশ

পাশের ফ্ল্যাট এর ললনা দেখতে খু্ব সুন্দর। যদিও সে আমার সিনিয়ার। উনি ভার্সিটিতে পড়ালেখা করে আর আমি দশমশ্রেণিতে পড়ালেখা করি।মাত্র দুইদিন হয়েছে নিউ বাসায় আসছে।সেদিন সকালে ছাতা মাথা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভার্সিটিতে যাইতেছে, অামি পিছন থেকে চিৎকার দিয়ে বলি-

_এই যে শুনছেন?
ললনা যখন আমার দিকে তাকায় সাথে সাথে আমি ক্রাশ খাইয়। তার উপরে চশমিস উনি।
দেখতে অসাধারণ লাগতেছে।আমাকে কোকিল কণ্ঠে বলে-
_কিছু বলবে তুমি?
_জ্বি,
_কি বলে ফেলো তাড়াতাড়ি।

_মারবেন না তো?
_না,মারবো কেন?
_যদি রাগ করেন তাই?
_আচ্ছা বলো সমস্যা নাই।
_সত্যি বলতে কি আপনার উপরে আমি ক্রাশ খাইছে।
_কি?
_ক্রাশ,
_যাও দাঁত ব্রাশ করে আসো।
_কেন?
_ক্রাশ খেলে দাঁত ব্রাশ করতে হয় তুমি জানো না।
_না,আচ্ছা আমি কি আপনার ছাতার নিচে আসতে পারি?
_না।

এ বলে ললনা সেদিন চলে গেলো।পরেরদিন ললনা বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে আছে,আমি ললনা দেখে ছাদে যাই।ললনা আমাকে দেখে বলে-
_এ ছেলে তুমি এখানে কেন আসছো?
_এমা আমি না আসলে কে আসবে।
_মানে?

_আমি এ ফ্ল্যাটবাড়িতে ২ বছর যাবত আছি।
_ও আচ্ছা,সরি।
_সরি কেন?
_তোমাকে কালকে ছাতার নিচে আসতে দিয় নাই তাই।
_সেটা কোনো ব্যাপার না,আপনাকে কিন্তু আমার অসম্ভব ভালো লাগে।
_তাই নাকি?
_হ্যাঁ, এ দেখেন নিয়মিত আপনার উপরে ক্রাশ খেয়ে যাচ্ছি।
_হিহিহিহি, এ ছোট বয়সে ক্রাশ খাওয়া ভালো না পরে পেট ফুঁলে যাবে।
_না, ফুঁলবে না।
_আচ্ছা ঠিক আছে এখন যাই আমি।

ললনার উপর ক্রাশ খেয়েছি অথচ তার নাম পর্যন্ত আমি জানি না কি আজব।শুধু সকাল হওয়ার অপেক্ষায় বসে আছি। সকাল হলে ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করবো তাকে।সকাল হতে না হতে রিমঝিম বৃষ্টি শুরু হয়েছে।আমি ১০০%সিউর ললনা বৃষ্টিতে ভিজতেছে।দৌড় দিয়ে গেলাম ছাদে।আহা! কি রোমান্টিক মুহুর্ত ললনাকে বৃষ্টি ভিজা সকালে দেখে আবার ক্রাশ খেয়েছি।রিমঝিম বৃষ্টিতে আমার খুব ইচ্ছা তার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজতে।কিন্তু হ্যাঁ তার আগে নাম জানতে হবে,তাই রোমান্টিক ভাবে আমি বলি-

_এই যে আপনি কি শুনছেন আমার কথা?
_হ্যাঁ, এদিকে আসো।
দৌড় দিয়ে গেলাম ললনার কাছে, আজকে ললনার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজবো।কাছে গিয়ে বলি-
_আচ্ছা অাপনার নাম কি?
_ফাহিমা ইকবাল।
_ইকবাল কে?
_ও আমার স্বামী।ঢাকায় এ জব করে,আমাদের বিয়ে হয়েছে মাত্র একমাস হলো।আমি চট্রগ্রাম বাবার বাড়ি থাকি কারণ ভার্সিটিতে আসা যাওয়া করতে সুবিধা হয়।

ললনা যখন এ কথা বলে আমার চোখের পানির আর বৃষ্টির পানি মিশ্রিত হয়ে গেছে।আহা! কি রোমান্টিক একটা মুহুর্তে ইকবাইল্লা এসে সব সর্বনাশ করছে।ললনা আমার চোখে পানি দেখতেছে না, কি করে দেখবে?বৃষ্টিযে হচ্ছে।ললনা জিজ্ঞেস করে আমাকে-

_কি ভাবতেছো তুমি?
_না আন্টি কিছু না।
_আন্টি মানে কি?
_আন্টি মানে খালাম্মা।
_তোমার কাছে কি দেখতে আমাকে আন্টির বয়স মনে হচ্ছে নাকি।
_তা হচ্ছে না,তবে এখন থেকে আর যেন আপনার উপর ক্রাশ নাই খাইয়।তাই আমি আপনাকে আন্টি ডাকবো।
_যাও এখান থেকে বেয়াদ্দপ ছেলে।
_আচ্ছা আন্টি ঠিক আছে যাইতেছি।

কি সুন্দর ক্রাশ খাইলাম,যদিও ললনা আমার থেকে সিনিয়ার তারপরেও আমি ইচ্ছা করলে ঘরে সাজিয়ে রাখতে পারতাম।সাজিয়ে
রেখে প্রতিদিন ক্রাশ খাইতাম। আর সিনিয়ার ললনাকে পাগলের মতো ভালোবাসতাম।যা সর্বনাশ করছে ঐ ইকবাইল্লা।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত