মন চোর

মন চোর

শুনছেন! জ্বী বলুন! আপনাকে একটা কথা বলার ছিল? হুম বলেন! এখানে বলা যাবে না! তো কোথায় বলা যাবে শুনি! একটু নির্জন জায়গায় চলুন! আমি আপনার সাথে নির্জন জায়গায় যাব কেন? ঐ যে একটা কথা বলব! সেটা কি কথা! ওই খানে গেলেই বলব! আচ্ছা চলুন?

কথা হচ্ছিল মেঘা আর আকাশের মধ্যে! আকাশ অনার্স ৩য় বর্ষ! আর মেঘা অনার্স ১ম বর্ষ! আকাশ প্রথম দেখাতেই মেঘাকে ভালবেশে ফেলেছে! আর আজই তাকে প্রথম দেখেছে! আর উপরের কথা গুলো হল এখন তারা একটা নির্জন জায়গায়! চারিদিকে গাছ পালায় ভর্তি, কাশবন! জায়গাটা অপূর্ব সুন্দর! তারা এসেছে এক নদীর ধারে! যেখানে একদিয়ে চড় পরেছে! আর তাতে কাশবন! অসম্ভব সুন্দর জায়গাটা! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ! এমন জায়গায় আনার জন্য! এর পর থেকে মাঝে মাঝে আসব! একাই আসবেন নাকি আমাকেও সাথে নিবেন? সেটা ভেবে দেখব! এখন আপনার কথাটা বলুন? কোন কথা! যেটা বলার জন্য এখানে এনেছেন! আপনাকে এখানে আনার জন্য বলেছিলাম! তাহলে তো আপনাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়! একটা কথা বলব? হুম বলুন? তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে! আপনিকি আমাকে আগে কখনও দেখেছেন? না তাহলে কেমন করে বললেন আমাকে সুন্দর লাগছে? সুন্দর যে তাকে তো সুন্দর বলতেই হয়! না হলে যে সুন্দরের অপমান করা হয়? আর সেটা আগে দেখা হোক কিনবা প্রথম বার দেখা হোক?

আপনি তো বেশ কথা বলতে পারেন! কথা কে না বলতে পারে? হুম! আপনার নাম কি? আমি আকাশ! আপনি! মেঘা! অনেক সুন্দর নাম! আচ্ছা আজকে আসি! আচ্ছা আসুন! আর এখানে আসলে আমাকে নিয়ে আসিয়েন! আচ্ছা! তারপর আকাশ বাসায়! আকাশের ভাবনা জুরে শুধু মেঘা! শুধু মেঘা আর মেঘা! সেদিনটা সেই ভাবেই কাটল! পরের দিন আকাশ কলেজে! বন্ধুদের সাথে আড্ডায় ব্যাস্ত! হঠাতি মেঘার আগমন! নানা আকাশের কাছে না! কলেজে! তার মানে মেঘা এই কলেজে পড়ে! কিনে আকাশ কই হারাইলি! রনির ডাকে আকাশ ধ্যানচ্যুতো হলো হ্যাঁ বল? ভাবি কিন্তু সেই রকম! আমাদের পছন্দ হইছে! কে ভাবি? যাকে দেখে আপনার চোখ দাড়িয়ে গেল! দোস্ত ওর ইনফরমেশন আমাকে এনে দিতে পারবি! চিন্তা করিস না! বিকেলে সব পাবি!

তারপর আকাশের বিচ্যু বাহিনী মেয়ের সব তথ্য খুজতে বের হল?,বিকালে আকাশের কাছে ফোন ওর সব তথ্য পাইছি! বল? ভাবি আমাদের কলেজে ১ম বর্ষ! এখনও সিঙ্গেল! তবে অনেকে প্রোপোজ করছে কিন্তু সবাই রিযেক্ট! ভাবির বাবা একটা সরকারি অধিদপ্তরের কর্মকতা! ধন্যবাদ দোস্ত! এবার মিশন শুরু! পরের দিন আকাশ কলেজে যাচ্ছে? হঠাৎ করে মেঘার সাথে দেখা! এই মেঘা দাড়ান! হঠাৎ পিছু ডাক পেয়ে মেঘা দাড়াল! জ্বি বলুন? চিনতে পেরেছেন! হুম! আপনি সেদিন আমাকে ওতো সুন্দর একটা জায়গা উপহার দিলেন আপনাকে কি ভোলা যায়! তাহলে মনে আছে! হুম! এখন বলুন কি বলবেন! বলছি যেতে যেতে! হুম চলুন! তারপর কেমন আছেন? ভাল! আপনি? আছি তো ভাল! জানিনা আমার কি যে হল! আপনি তো দারুণ কথা বলতে পারেন?

আপনিও তো কম না! আপনাকে বলেছে! না বলতে হবে কেন! আমি তো দেখতেই পাচ্ছি! হুম! আপনাকে একটা কথা বলার ছিল! হুম বলেন! না মানে! আসলে ইয়ে মানে? কি না মানে ইয়ে মানে করছেন! কথাটা কি ভাবে বলি! হুম বুঝেছি! আপনি কি বলতে চাইছেন! ওমা মাইয়া দেখি আমার থেকেও ফাস্টকিন্তু আপনি যা চাইছেন তা সম্ভব নয়! না যা ভাবছিলাম ঠিক তা নয়! প্লান পাল্টাতে হবে!আমি ঠিক বুঝলাম না আপনার কথা! মানে! মানে হল আপনি যা ভাবছেন তা নয়! তাহলে আপনিই বলুন? বলছিলাম কি আমি একটা মেয়েকে লাইক করি! মানে বুঝতেছেন তো! আর ও আমাদের কলেজে ১ম বর্ষে পড়ে! আপনি যদি একটু আমার জন্য হুম বুঝেছি! তা নাম কি? পায়েল! কত দিন থেকে? এই তো কালকেই! আর কিছু জানো! সরি তুমি বলে ফেলাম! ইটস ওকে! will you be my friend? হুম! তাহলে ফোন নাম্বার দাও! হুম এই নাও! ধন্যবাদ! কলেজ এসে গেছে! এখন ক্লাসে যাও! হুম!

এভাবেই আকাশ আর মেঘার মধ্যে কথা হল! তার পর আকাশ গেল তার বিচ্যু বাহিনীর কাছে! ভাবির সাথে কিন্তু তোকে হেব্বি মানিয়েছে! আরে পাগলা না মানালে কি ভাবি বানাতাম! হুম একদম ঠিক! তা কত দূর এগোলি! এখন ফ্রেন্ড! ভাল! তারা তাড়ি পটাইয়া ফালা! হুম! তারপর আকাশ বাসায় ফিরে। তেমনি মেঘাও! হঠাৎ রাতে একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে! মেঘার কাছে? প্রথম বার ধরে না সে! কিন্তু যখন আবার ঐ নাম্বার থেকে কল আসে তখন ধরে কে বলছেন? যেই হইনা কেন! তোমার সাথে কি একটু কথা বলতে পারি! আজিব তো! আপনিকে যে আপনার সাথে কথা বলব! কথা বলতে হলে কি কিছু হওয়া লাগে! হুম লাগে! তাহলে কি হলে কথা বলবেন! আপনিকি পাগল! তোমার voice টা কিন্তু খুব সুন্দর! আমার সাথে ফাজলামি করতেছেন!

ওমা তোমার সাথে ফাজলামি করব কেন! আমার কথা গুলো কি তোমার কাছে ফাজলামি মনে হচ্ছে! হুম! আর আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেন! আপন মানুষের সাথে কথা বলব তো আপনি করে বলব কেন? আপনি কে বলুন তো! সেটা না হয় অজানাই রইল? আকাশ! চিনেছেন তা হলে ম্যাডাম! ওহ তুমি! আমি ভাবলাম কে নাকি কে ডিস্ট্রাব করছে! হুম! আমার কাজটা কত দূর হল! কই ওই নামে তো কেউ নেই! আরে আছে! আজ মনে হয় আসে নি! হুম তাও হতে পারে! ওকে বাই! বাই! এভাবেই কেটে গেল সেদিন! পরের দিন সকালে আকাশ ঘুম থেকে উঠে বাড়িতে কাউকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠল! মেঘা ওদের বাসায়! আকাশ কিছু না দেখার ভান করে ফ্রেশ হোতে চোলে গেল! আর এসে দেখে মেঘা আর নেই! তাহলে? সত্যিই কি মেঘা আসছিল নাকি ভ্রম! না মাকে বলতে হবে! পরে জানতে পারল ও আসলেই মেঘা! আকাশের বাবার কলিংয়ের মেয়ে!

তারপর আকাশ রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করল! অবশ্য কলেজের উদ্দেশ্য বললে ভূল হবে ওর প্রেমের উদ্দেশ্যে! গিয়ে মেঘাকে খুজতে লাগল! একটু পর মেঘা আসল! আজ এতো দেরি করলে! হুম একটু দেরি হয়ে গেল! আর তোমার দেরির জন্য কত কি হয়ে গেল তুমি জানো? কি আবার হল! আজ পায়েল এসেছিল! আমি ওকে প্রোপোজ করে ফেলেছি! কিন্তু ও বলল আমি নাকি ওর যোগ্য নই! ইত্যাদি ইত্যাদি না না কথা! আর ওর মত মেয়ে নাকি আমি পাব না! তারপর আমিও বলেদিয়েছি! যে আমি তোমার চেয়ে ভাল মেয়েকে জীবন সাথী করব! তাও আবার এক মাসের মধ্যে! ঠিক বলেছ! তবে আজকে তোমার কিন্তু প্রোপোজ করা ঠিক হয়নি! হুম জানি! কিন্তু ওকে যে বড় বড় কথা বলে আসলাম সেটার কি হবে! হুম এইটা চিন্তার বিষয়! কিছু একটা করো প্লিজ! হুম!

এভাবেই তাদের কলেজে কথা বলা শেষ হয়! যে যার বাসায়! রাতে খাওয়ার পর আকাশ মেঘাকে ফোন করে! কোন উপায় পেলে! না আমার মাথায় তো কিছু আসছে না! তুমি এমন একটা কাজ করলা! পেয়েছি! কি পেয়েছ? কালকে সকালে দেখা করতে পারবা! হুম! কিন্তু কেন? দেখা করলেই বলব! আর যে আইডিয়াটা মাথায় আসছে সেটাও বলব? তবে তুমিও ভাবতে থাক! ওকে! বাই বাই! পরের দিন,,, দুজনে যথা সময়ে পার্কে উপস্থিত! এখন বল! আমার মাথায় যে আইডিয়াটা আসছে! সেটা হল হুম কি! বলব! তুমি রাগ করবা না তো! না রাগ করব না? এই এক মাসে তো কোন ভাল মেয়ে পাব না! তাই তুমি যদি হতে আমার প্রেমিকা! কিহ্ আরে জাস্ট একটু অভিনয় করবে! সত্যি সত্যি তো আর না! আমি পারব না! প্লিজ! শুধু অভিনয় করবা! না!

প্লিজ, আকাশের এই রকম অনুরোধ আর ফেলতে পারলা না মেঘা! সেও হা বলে দিল! আর সাথে সাথে আকাশ করে বসল এক অমায়িক কাজ! মেঘার হাতের উপর আলতে করে চুমু একে দিল! আর মেঘা তো রাগে গজ গজ করতে করতে বলল এইটা কি হল? না মানে ইয়ে মানে! আমরা তো এখন… তাই আরকি! মানে কি! আমি কি তোমার সত্যি সত্যি নাকি! না হলেও! এই এক মাসের জন্য তো! তোমাকে তো ইচ্ছা করছে ! কি তুমিই দিবা! তুমি এত ফাজিল কেন? হুম! হুম আবার কি? আজকে বিকালে তোমার সাথে রিকশায় ঘুরব! আমার বয়ে গেছে তোমার সাথে ঘুরতে! সেটা দেখাই যাবে! আর তুমি এখন আমার গার্লফ্রেন্ড! কেন যে হ্যাঁ বলতে গেলাম! এখন ওনার সাথে রিকশা ভ্রমণ করতে হবে! আরে এখন না তো বিকালে! ওই হল! একি কথা! হুম! আর কি! বাসায় ফিরতে হবে! এখনি যাবা? হুম চল পৌঁছে দিয়ে আসি!

তারপর আকাশ মেঘা ওর বাসায় দিয়ে নিজের বাসায়! বিকালে দুজন একসাথে রিকশা ভ্রমণ করল! আরও ফুচকা খাওয়া, নদীর ধারে বসে মেঘার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকা! রাস্তার সবার সামনে চিৎকার করে বলা মেঘা I love You আর ওদিকে মেঘার আজকের বিকালটা যেন অন্য রকম ভাবে কাটাল! এত মজার বিকাল সে কখনও কাটায়নি! তার চেয়ে বড় কথা, আকাশ মাঝে মাঝে এত মজার মজার কথা বলে যে না হেসে থাকতে পারে না! আকাশের আজকের ওমন পাগলামি কেমন করে যেন সে সহ্য করেছে! এসব কথা ভাবতে ভাবতে মেঘা নিজের অজানতেই বলে ফেলে পাগল একটা! আর তখনি মেঘার মা কিরে মা কি হয়েছে! মনে মনে হাসতেছিস আবার কাকে পাগল বলছিস! এই রে সেরে ছে! এবার কি হবে! কই কিছু না তো মা! বলেই রুমের মধ্যে চলে আসল! কিছুক্ষণ পর আকাশ ফোন করল মেঘাকে! কি করছ! কিছু না! তুমি তোমার ভাবনায় বিভোর! তাই ! হুম! তাই আমার হৃদয়ে মিশে আছ তুমি!

দেখ আমি কিন্তু তোমার গার্লফ্রেন্ড না! কে বলেছে! তুমি এক মাসের জন্য আমার গার্লফ্রেন্ড! এই কথা শোনার সাথে সাথে মেঘা ফোন কেটে দেয়! আকাশ আর ফোন করে না! কিছুক্ষণ পর মেঘাকে একটা এস এম এস করে! তাকে রাস্তায় একটু দেখতে বলে! আর যখন মেঘা বের হয় তখন চিৎকার করে I love you মেঘা! এই কি হচ্ছে এসব! বাবা মা শুনলে একবারে আমি শেষ? কেউ শুনবে না! তুমি যাও তো এখান থেকে! আগে আমার উত্তর দাও! না দিব না! তাহলে যাব না! এই বাবা মনে হয়! মেঘার কাছে ওর বাবার কথা শুনে আকাশ দৌড়! আর ও দিকে মেঘা বলতেছে পাগল একটা! বলে ঘুমতো গেল! পর দিন ভোর বেলা? মেঘাকে এস এম এস পাঠাল আকাশ! শুভ সকাল! একটু জানালার দিকে দেখ!

মেঘা জানালার দিকে তাকাতেই অবাক! এক গুচ্ছ টাকটা সরিষা ফুল! আর নিচে একটি কার্ডে লেখা এই সরষে ফুলের মত হোক আজকের দিন! মেঘার আনন্দ যেন ধরে না! এমন ভাবে ওকে কেউ মরনিং উয়িশ করে নি! আর এভাবেই কেটে গেল কয়েকটা দিন! আর মেঘা দুর্বল হতে থাকল আকাশের প্রতি! আর এরি মাঝে এসে গেল মেঘার জন্মদিন! আকাশের চিন্তু মেঘাকে একটা বড় ধরনের গিফ্ট করতে হবে! আর তাই করার জন্য সে প্লান করল! আকাশ এখন বুঝতে পারে মেঘা ওর প্রতি দুর্বল! আর তাই রাত ১১টা ৪৫ এ আকাশ ওর বাইক নিয়ে মেঘাদের বাসার সামনে! মেঘাকে তারাতাড়ি আসতে বলল! মেঘাকে কোন কথা সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিল! মেঘাও কি নাকি হয়েছে ভেবে আসল! আর সাথে সাথে উঠে পড়? সময় কিন্তু একদম নেই! কেন কি হয়েছে! তারাতারি উঠো যেতে বলছি মেঘাও উঠে পরল! কোথায় যাচ্ছি আমরা! গেলেই দেখতে পাবা?

আকাশ একটা নির্জন রাস্তার উপর দিয়ে যাচ্ছে! আর এদিকে মেঘার টেনশন হচ্ছে? এক পর্যায়ে মেঘা ঘামতে শুরু করেছে? কিন্তু কিছুক্ষণ পর মেঘা সব চিন্তা আনন্দে পরিপূর্ণ হল! আকাশ মেঘার চোখ বন্ধ করে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে! এখন চোখ খোল! আকাশের কথা মেঘা চোখ খুলল! আর যা দেখল বিশ্বাস করতে পারছে না! Happy Birthday এ তো সেই জায়গা যেখানে আকাশ প্রথম ওকে নিয়ে এসেছিল! আর সেই জায়গায় হাজারো মোমবাতি জ্বলছে!ধন্যবাদ তোমাকে? এত সুন্দর একটা গিফ্ট করার জন্য! তারপর তারা কেক কেটে নৌকায় কিছুক্ষণ ভ্রমণ করল! তারপর মেঘাকে বাসায় দিয়ে আসল! আর মেঘা আকাশের প্রতি আরো বেশি দুর্বল হতে লাগল! এখন ওদের প্রতি রাতে কথা হয়! যেন কথা ফুরায়না!

আর মেঘাকে আরো দুর্বল করে তোলে আকাশের পাগলামি গুলো! কিন্তু মাঝে মাঝে মেঘার মনটা খারাপ হয়ে যায়! যখন মনে পরে আকাশের সাথে ওর শুধু অভিনয়! আকাশ যে পায়েলের! কিন্তু আশচর্যের বিষয় এটা যে আকাশ কখনও পায়েল কে দেখাইনি!৭ আর এভাবেই কেটে যায় সব কয়টা দিন! কিন্তু মেঘার কোন রিসপন্স পাচ্ছে না আকাশ! আকাশ মনে মনে ভাবছে মেঘা হয়তো শুধু বন্ধুই ভাবে! তাই কোন রিয়াক্ট নাই! এক মাস প্রায় শেষ! শেষ দিন আকাশ আর মেঘা এক সাথে মেঘা হুম বল! আজতো আমাদের শেষ দিন! হুম! বাচা গেল! তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি! আরে না! বন্ধুর জন্য এটুকু করতে পারব না! আচ্ছা চল আজকে শেষ বারের মত রিকশায় ঘুরি!

দুজনে রিকশায় ঘুরল ঠিকই! কিন্তু আজকে আকাশ অন্য দিনের মত নেই! কেমন জানি এক ব্যর্থতার ছাপ ওর মুখে! আর মেঘাও ওই রকম! তারপর সন্ধ্যায় দুজন দুজনের বাসায়! আকাশ ঘরে বসে কাদছে! হয়তো তা কেউ বুঝতে পারছেনা! আর কে বা পারবে! যার জন্য এসব করল সে বুঝল না! তোরপ থেকে আকাশ আর কলেজে যায় নি! মেঘা আকাশকে না দেখতে পেয়ে ওর বন্ধুদের কাছে যায়! তারপর ওর বন্ধুরা সব খুলে বলল! যে আকাশ মেঘাকে ভালবাসে! কিন্তু যেদিন প্রোপোজ করবে সেদিন তার আগে মেঘা না বলে দেয় জন্য এই প্লান করে! ইত্যাদি ইত্যাদি সব কথা মেঘাকে বলে! আর মেঘা ওদের সব কথা শুনে একদম আকাশদের বাসায় আন্টি আকাশ কোথায়! এই এক মাসের মধ্যে আকাশের পরিবারের সাথে ভাল একটা সম্পর্ক হয়েছে! আবার আকাশের বাবা আর মেঘার বাবা এক সাথে কাজ করে! ছাদে মা! কিন্তু কেন! ও একটা চোর! কি বলছ?

ও আপনি বুঝবেন না! বলেই ছাদের উদ্দেশ্যে গেল! ছাদে আকাশ গিটারে ব্যর্থতার সুর তুলছে! এই চোর মহাশয়! কারো মুখে চোর কথাটা শুনে আকাশ আকাশ পিছনে তাকালো! একি মেঘা তুমি! আর চোর কাকে বলছ? কাকে আবার যে চুরি করে এখানে ব্যর্থ সুর বাজাচ্ছে! কি বলছ যা তা! আমি কার কি চুরি করেছি! কার আবার আমার! তোমার আবার কি চুরি করেছি! ন্যাকা ষষ্ঠি কিছু যেন বোঝেনা! সত্যি কিছু বঝছি না! সব চেয়ে দামি জিনিসটা চুরি করে এখন অবুঝ সাজা হচ্ছে! আকাশ একটু আন্দাজ করতে পেরেছে! আসলে মেঘা? সব বলেছে তোমার বন্ধুরা! কি বলছে! এইটাই যে পায়েল নামে কেউ নেই! আর ওই সব করেছ আমার জন্য হুম! কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনা! কেন? তুমি এখনও আমাকে বল নি!

অতঃপর আকাশ হাটু গেরে বলতে শুরু করল তুমিই আমার পায়েল! তুমি হবে কি আমার কোলবালিসের শত্রু? আর কি আর কি বলব! হ্যাঁ ভালবাসি তোমাকে! প্রোপোজটাও করতে পারো না! হুম! হব! আমি ভালবাসি তোমায়! এই কয়েক দিনে তোমার অনুপুস্থিতি বুঝতে পেরেছি তুমি আমার কতটা জুড়ে আছ! কিন্তু তোমার পায়েলের কথা ভেবে কিছু বলিনি! আসো জরিয়ে ধরি! একটা চোরকে জরিয়ে ধরতে আমার বয়ে গেছে! আমি চোর! তা নয় তো কি! তুমি আমার হৃদয় মন সব চুরি করে নিয়েছ! বলেই আকাশকে জড়িয়ে ধরল! আমাকে ছেরে যাবা না তো! না কখনই না! ভালবাসিযে তোমায়! আমিও ভালবাসি! আর এভাবেই সূচনা হল নতুন একটা সম্পর্কের! চলতে থাকুক…

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত