মা মা ও মা আমাকে ডাকো নি কেন আমি এই চাকুরী নিয়েছি নাকি যে তোকে প্রতিদিন ডেকে দিতে হবে (মা) তুমি চাকুরী নেবে কেন ছেলেকে একটু ডেকে দেবে না অফিসে আজ মিটিং আছে আর তুমি আমি কি ডাকার লোক আনতে পারিস না হ্যাঁ হ্যাঁ নিয়ে আসবো সত্যিই নিয়ে আসবি কবে নিয়ে আসবি কি নিয়ে আসবো কেনো বউমা হে হে হে বউ না এর্লাম ঘড়ি নিয়ে আসবো আকাশ শোন বাবা মায়েরে কোন কথা না শুনে ফ্রেশ হতে চলে আসলাম। সারাদিন শুধু ওই একটাই কথা বিয়ে আর বিয়ে। ভাল লাগে না। ফ্রেশ হয়ে সকালে চা খেতে আসলাম। যদিও বা সকালের সময়টা প্রায় শেষ তবে এটা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে… চা টাতে একটা চুমুক দিতেই ওয়াক থু-থু-থু (আমি) কিন্তু কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। চায়ের মধ্যে তো চিনি নারে বাবা লবণ দিয়েছে। এখন প্রায় দিনই এমন হচ্ছে। আমার পিছনে বাড়ির সবাই যেভাবে লেগেছে তাতে মনে হয় দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
মা মা (আমি) কি হয়েছে ষাঁড়ের মত চিৎকার করছিস কেন (মা) কিহ্ আমি ষাঁড় তুমি মা হয়ে এই কথা বলতে পারলে হয়েছে হয়েছে কি জন্য চিৎকার করলি সেটা বল আমার চা বানিয়েছে কে কেন বাড়িতে কি চিনি নেই বলতে পরতে কালকে নিয়ে আসতাম কেন চিনি তো আছে তাহলে চায়ে লবণ কেন এখন থেকে এমনি হবে চিনি দেওয়ার লোক নিয়ে আয় (অনামিকা আমার ছোট বোন) ও তার মানে এইটা তোর কাজ হ্যাঁ আমার কাজ আমি আর তোর জন্য কাজ করতে পারবো না তা পারবি কেন পারবি তো জয়ের চা বানাতে দেখ দেখে শেখ। তোর ছোট হয়েও কেমন একজনকে জুটিয়ে ফেলেছে। আর তুই… (মা) হায় হায় বলে কি। মেয়ে প্রেম করে আর মায়ে আবার গর্ব করে বলে আমাকে। কি দিন কাল আসলো রে বাবা (মনে মনে) মা বাদ দাও তো ওর কথা। চলো আর আমরা ওর কোন কাজ করে দিব না। ওর কাজ ওর বউ করবে না হলে ও নিজে নিজে করুক (অনামিকা) যাহ্ বাবা।
কি জালে আটকে গেছিরে বাবা। আকাশের দিকে তাকিয়ে, বাবা তুমি উপর থেকে বেশ মজা নিচ্ছো নাও নাও। বাবা আমার একটা উপকার করো না একটা সুন্দর দেখে বিয়ে করার মত মেয়েকে পাঠাও। না হলে আমি শেষ। বাবা তুমি তো উপরে থাকো একটু দেখিয়ো। অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। আজ সব কিছুই যেন আমার বিপরীতে। কোন কিছুই পাচ্ছি না। আজ বস্ আমাকে আস্তো কাচায় খেয়ে ফেলবে। প্রায় ৪৫ মিনিট লেটে অফিসে পৌছালাম। সবাই ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু আমি স্বাভাবিক জানি এটাই হওয়ার ছিল। পিয়ন এসে বলে গেল যে বস্ ডেকেছে এদিকে আমার অবস্থা শেষ। শরীর দিয়ে যে পরিমাণ ঘাম বের হচ্ছে তাতে মনে হয় বঙ্গোপোসাগরের অর্ধেক ভরে যেতো। ভয়ে ভয়ে বসের রুমে গেলাম স্যার আসবো (আমি) হুম আসুন আসুন আপনার কথাই ভাবছিলাম (বস্) বাবা আজ এত সমাদর।
কারণটা কি কোথায় আমাকে খিস্তি করবে তা না সেখানে আমার অপেক্ষা (মনে মনে) আরে দাড়িয়ে আছেন কেন বসেন জ্বি আপনার আসতে এত দেরি কেন এই তো পয়ন্টে চলে এসেছে (মনে মনে) কি ব্যপার চুপ কেন বিয়ে আপনি বিয়ে করেছেন না না স্যার বিয়ে করিনী বিয়ের জন্য দেরি হলো মানে কি বাড়ি থেকে চাপ স্যার বিয়ে করে নিজের বউকে দিয়ে নিজের কাজ করাতে হবে আর তা না হলে আমার কাজ আমাকে করতে হবে। আর তাই তো দেরি হল কি করবো বলেন কিন্তু আজকে যে মিটিংয়ের কথা ছিল সেটা ভুলে গেছেন আসলে স্যার আজকে প্রথম হরতাল ছিল তো তাই তা বিয়ে করছেন না কেন তেমন কোন মেয়ে পাচ্ছি না কাউকে ভালবাসেন?? (আমি চুপ) আরে সমস্যা নেই বলে ফেলুন। লজ্জা নেই। আমিও একজনকে ভালবাসি হুম বাসি একজনকে ও ওয়াও তাহলে তাকে বিয়ে করে ফেলুন কিন্তু মেয়েটা জানেনা তাহলে জানান কিভাবে সে যে আমার থেকে অনেক দুরে নাম কি তার স্যার কিন্তু কাজ আরে রাখেন তো কাজ। আজকে এটাই কাজ মানে মানে পরে চাকরি বাচাতে চাইলে বলেন মেয়েটার নাম নুসরাত। দেখতে পরির মত।
বাচ্চা টাইপের কথা বলে মেয়েটা। প্রথম দেখেছিলাম মেয়েটাকে কলেজের পাশে। তারপর কোন এক ভাবে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কিন্তু এই বন্ধুত্বের মাঝে আমি ওকে ভালবাসতে শুরু করি। কিন্তু কখনো প্রকাশ করিনী। ও আমাকে ভালবাসতো কিনা সেটা যে আমি জানতাম না। আর এর মধ্যে একদিন জানালো যে ও স্কলারশীপ পেয়েছে। সেদিন ইচ্ছে করছিল যে ওকে সত্যি কথাটা বলে দেই। কিন্তু আমি পারিনি। কারণ সেদিন অন্যকেউ ওকে মনের কথা বলে দেয়। সেদিন শুধু আমি একটাই কা ওকে বলেছিলাম যদি মন কাঁদে তবে চলে এসো, চলো এসো এক ভরসায় এসেছিল হ্যাঁ এসেছিল। কিন্তু মনের কথা বলতে নয় ওর পাসর্পোট, ভিসা আর ওর প্লেনের টিকিট নিয়ে। শপিং করবে তার জন্য আমাকে ওর সাথে যেতে হবে তার পর তারপর ও চলে গেল। আমি অর্নাস শেষ করে আপনার এখানে জয়েন করলাম। এই তো এখন যদি তাকে পাও তাহলে কি মনের কথা বলতে পারবে তা কোন ভাবেই সম্ভব নয় স্যার আরে দেখি চেষ্টা করে নুসরাত এদিকে আয় নামটা শুনে কেমন জানি লাগছে।
মনটাও ছটপট করছে স্যার কি সত্যিই নুসরাতকে আমার সামনে আনবে… একটা মেয়ে আসছে সাদা সেলোয়ার কামিজ হৃদস্পনন্দন বেরেই চলেছে… মেয়েটা রুমে ঢুকছে আসি লজ্জায় অনেকটা চোখ সরিয়ে নিলাম। ইয়েস স্যার… (মেয়েটা) কি মিষ্টি কন্ঠ। নুসরাতের ও এমন মিষ্টি কন্ঠ… (মনে মনে) শোনেন এই ফাইলটা দুই দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। (বস্) মেয়েটার দিকে ধীরে ধীরে তাকাচ্ছি। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে আমার হৃদস্পনন্দন একবারে কমে গেছে। এটা সেই মেয়েটা নয়। যাকে আমি ভালবাসি। যেন হাফছেড়ে বাচলাম আরে আপনি এত ঘামছেন কেন ভাইয়া আসবো… (একটা মেয়ে) এটাতো নুসরাতের কন্ঠ। কিন্তু এতো বসের বোন মনে হয়… (মনে মনে) নুসরাত আয় আয় বসের মুখে নুসরাত নামটা শুনেও তেমন কোন কিছু অনুভব হলো না্। কারণ এ হলো বসের বোন। এখানে রটোর পটোর করলে চাকরীটা অনায়াসে হারাবো। তাই না দেখেই স্যার আমি তাহলে আসি… (আমি) এই শুনছেন… (বসের বোন) জ্বি বলুন… (মেয়েটার দিকে তাকিয়ে) একদম অবাক।
এই তো আমার নুসরাত । অনেক ইচ্ছে করছে বলতে আমি অনিক। কিন্তু বলার সাহস নেই আর আজ আমার। মন চাইছে বলতে ওকে কবে আসছো। কিন্তু মন চাইলে তো হবে নাআপনাকে কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে… (নুসরাত) যাক চিনতে পারেনি। না হলে যদি বস্ জানতে পারতো এই নুসরাতই সেই নুসরাত তবে আমি শেষ। (মনে মনে) কি বির বির করছেন না না কিছু না। হয়তো বা রাস্তায়না না রাস্তায় না ম্যাডাম আমার স্মৃতি শক্তিটা একটু খারাপ তো তাই আমি মনে করতে পারছি না। আপনি একটু মনে করে আমাকে বলবেন কেমন বলে চলে আসলাম। আর ওনারা দুজনেই অট্ট হাসিতে ফেটে পরছে। আমার হৃদয় ফেটে যাচ্ছে। এখন আবেগের সময় না। আবেগকে প্রশ্রয় দিলে আমার চলবে না। গোটা পরিবারটা আমার উপর। আর আমি এই চাকুরীটার উপর। যদি আবেগের বশবর্তী হয়ে চাকরীটা চলে যায় তাহলে সব শেষ। কিন্তু অদ্ভুত কথা এটাই যে মিটিং হওয়ার কথা কিন্তু মিটিং তো হলো না। দেরি করার জন্য কথাও শুনতে হল না।
অফিস শেষে বাসায় আসার পথে ফুলের দোকান থেকে একটা টক টকে গোলাপ নিলাম। নুসরাত দেখার পর কেন জানি ইচ্ছে হল। কলেজে পড়ার সময় প্রতিদিন ওর জন্য একটা গোলাপ নিয়ে যেতাম। তাই আজ ওকে দেখার পর কেন জানি সেই আবেগটাকে চেপে রাখতে পারলাম না। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে বিপদে পরলাম কি ভাইয়া কে দিল গোলাপ… (অনামিকা) কে আবার দেবে… (আমি) ভাবি আবার কে। আজকে বাসায় আসছিল। আমার পছন্দ হয়েছে সরতো বলেই চলে আসলাম রুমে। বার বার বিবেকের কাছে ধাক্কা খাচ্ছি। একদিকে প্রেম। আর এক দিকে পরিবার। কিন্তু আমি যাকে ভালবাসি। সে কি আমাকে ভালবাসে। না যদি বাসতো তাহলে আমাকে আজ ঠিকি চিনতে পারতো… মায়েরসাথে কথা বলতে হবে মা মাবল এত চিৎকার করছি কেন… (মা) মা এর্লাম ঘরি তো পেলাম না। তুমি একটা ব্যবস্থা করো না আমি কি ব্যবস্থা করবো তোর পছন্দ হবে না তোমার পছন্দই আমার পছন্দ মাস খানেক পর আজ বিয়ে করলাম মায়ের পছন্দ করা মেয়েকে।
আমি জানি আমার মায়ের পছন্দ কখনও খারাপ হতে পারেনা। তাই মেয়েটাকে আমি এখনও দেখিনী। আর দেখব বা কি করে মনের মধ্যে তো নুসরাতের ছবি বসে আছে। বারান্দায় দাড়িয়ে আছি… অনামিকা জোড় করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিল। সবার জীবনের নাকি সব চেয়ে মধুর রাত এটা। আমার ও ইচ্ছা ছিল নুসরাতকে নিয়ে এই রাতটা কাটানোর কিন্তু হয়ে ওঠেনি…ঘরে ঢুকলাম। বউ একটা সাড়ে তিন হাত ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। ওর কাছে যাওয়ার আগে আপনাকে আমি কোন দিন দেখিনী। আর আপনিও আমাকে দেখতে চাননি। হয়তো আগে দেখা হলে আজকে কথা গুলো বলতে হত না। আপনি আমার জীবন সঙ্গিনী হয়েছেন। তাই আমার অতিত সম্পের্কে আপনার জানা দরকার। কোন কিছু গোপন করবো না আমি… আমি একটা মেয়েকে ভালবাসতাম। নাম নুসরাত। কিন্তু কোন দিন বলতে পারিনী। তাই হয়তো এটা ভালবাসা বলা যায় না। কিন্তু তবুও আমার মন বলতো এটাই ভালবাসা। আর একসময় সে চলে যায় আমার জীবন থেকে।
আমি তখন ভেবেছি ওটা ভালবাসা ছিল না। কিন্তু কিছুদিন আগে আবার সেই মেয়েটাকে দেখলাম। কিন্তু সেদিন আর বলার কিছু ছিল না। করণ মেয়েটা আমার বসের বোন। তাই আবেগ যাতে আমাকে জড়িয়ে নিতে না পারে সেইজনই বিয়ে করা… আমি জানিনা আপনাকে সুখী রাখতে পারবো কিনা তবে আমার সর্বশ্য দিয়ে চেষ্টা করব (আমি) ঠাসসসসস একি আপনি আমাকে মারলেন কেনো… হ্যাঁ আমি ভুল করেছি,তাই বলে আমি আপনার স্বামী মনের কথা যদি মুখে না বলতে পারো তাহলে কেমন প্রেমিক তুমি। আর কেনো প্রেম করতে চাও… (নুসরাত) তু তু তুমি হ্যাঁ আমি ঠাসসসস আমাকে কেন মারলে মনের কথা যদি মুখ ফুটে বলতে হবে কেমন প্রেমিকা তুমি কি করে আমায় পাবে এই ভাবে পেয়েছি কিভাবে তোমাকেও আমি সেই কলেজ লাইফ থেকে ভালবাসি। কিন্তু তুমি বুঝতে না। আর এভাবেই চলে গেল।
আমি বিদেশে চলে গেলাম। কিন্তু যাওয়ার আগে তোমার কাছে এসে ছিলাম। কিন্তু তুমি বলতে পারোনি। তুমি যাতে হারিয়ে না যাও তাই আমি ভাইয়াকে বলে তোমার চাকরির ব্যবস্থা করে দেই। আর সেদিন নাটক করি তোমাকে না চেনার। তোমাকে দেখেই বুজেছি এখনো ভালবাসো আমাকে। আর ভাইয়াকে তো সব বলেই দিয়েছো। যেদিন তুমি তোমার মাকে বিয়ে করার কথা বলেছিলে সেদিন তোমার বলার আগে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। হুম বুঝলাম কি বুঝলে ভালবাসই যদি বলো না তুমি ভালবাসি না তুমি বলবে আগে ভালবাসি আমি বাসি ঠাসসসস ঠাসসসস ভালবাসি হেহেহে… লাইট অফ…
The end