কলেজ থেকে ফিরে রুমে শুয়ে আছি, ওমনি বাড়ি ওয়ালার পিচ্চি মেয়ে তুবার আগমন। সাহরিয়া আমার চকলেট কই। আনতে ভুলে গেছি বুড়ি। আবার বুড়ি বললা, যাও এক্ষুনি চকলেট নিয়ে আসো।
আসলে না আমার কাছে টাকা নাই সোনা পড়ে এনে দেই পিলিজ। ওকে, আচ্ছা খেয়েছ তুমি। শুধু মাথা নাড়ালাম, খাইনি বাবু এখন ও পড়ে খেয়ে নিব কেমন, এবার যাও লক্ষী সোনা আমার। ওকে দাঁড়াও আমি আসছি। কী এক ঝামেলা আবার আসবে আল্লাহ কী ঝামেলাই পড়ব আল্লাহ যানে। ও হ্যা যেই পিচ্চিটার সাথে কথা বল্লাম ওর নাম তুবা মাত্র পাঁচ বছর বয়স। আমাকে নাকি ভালবাসে আমি নাকি ওর বর হি হি। আসল কাহিনী শুনবেন তাহলে শুনুন। একটা থাকার জন্য বাসা খুঁজতেছি অনেক কদিন ধরে পাচ্ছিই না। তাই মনে দুঃখে একটা পার্কে বসে আছি আর ললিপপ খাচ্ছি। কই থেকে একটা পিচ্চি এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে গালে হাত দিয়ে আছে। অনেক কিউট দেখতে সাদা একটা জামা পড়ে আছে চুল গুলো ও অনেক বড়ো, এই বয়সের এমন একটা পিচ্চি আমি এর আগে দেখিনি।
আমি কিছু বলার আগেই পিচ্চি মেয়েটা বলল। ওই কীইইই দেখ এমন করে, তোমার নাম কী? আমি তো অবাক, হি হি আমার নাম সাহরিয়া, তোমার নাম কী বুড়ি। আমাকে বুড়ি বলবা না, আমাকে তুবা বলে ডাকবা ঠিকআছে । হুমমমমম ওকে। আচ্ছা তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। এইটুকু পিচ্চির মুখে বিয়ের কথা শুনে আমি তো অবাক। আচ্ছা কী হল বলো। না না আমি তো এখন ও পিচ্চি আমাকে কে বিয়ে করবে বলো। এর মধ্যে তুবার বাবা মা চলে আসল, আমার সাথে গল্প করতে দেখে তারা তো অবাক। কারণ তুবা নাকি অপরিচিত কারো সাথে কথা বলে না, কেউ গায়ে টাচ করলেই কেঁদে ফেলে। আর এই দিকে আমি তো ওর নাক ধরে ওর টান দিছি কয়বার। তুবার বাবার নাম রাফি, আর ওর মা এর নাম রত্না বেশ সুন্দর দেখতে দুইজন।
আচ্ছা তোমার নাম কী, (তুবার বাবা) বাবা ওর নাম সাহরিয়া, (তুবা) ছি ছি মা ওনি তোমার ভাইয়া হন, নাম ধরে বলা হয় না, সরি বলো। না না না আমি ওকে সাহরিয়া বলেই ডাকব। আচ্ছা বুড়ি আমাকে সাহরিয়া বলেই ডেকো কেমন। তোমাকে না বলছি বুড়ি বলবা না তুবা বলবা। আচ্ছা বাবা তুবাই বলল কেমন। আচ্ছা তুমি কই থাক, (তুবার মা) আসলে মানে ম্যাম এখন বাসা খুঁজতেছি পাচ্ছিই না। তার মানে এখন এমন রাস্তাই থাকো। (তুবার বাবা) না মানে স্যার এখন একটা ফ্রেন্ডের সাথে থাকি কিন্তুু কয়দিন আর এখন থাকব তাই বাসা খুঁজতেছি। আরে স্যার স্যার করছ কেন আমাকে আংকেল বলবা কেমন। আচ্ছা ওকে। তাহলে আমি এখন আসি আর একটা বাসা দেখতে যাব। বলে চলে আসছিলাম একটু দূরে যেতেই পিছন থেকে কোন পিচ্চির ডাক শুনতে পেলাম সাহরিয়া দাঁড়াও। পিছনে তাঁকিয়ে দেখি তুবা দৌড়ে আসছে। পিচ্চিটাকে কোলো নিলাম। কীইইই হয়েছে বুড়ি। আবার বললা বুড়ি। সরি কেমন, কীইইই হয়েছে বলো।
আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছ কেন। হায় হায় পিচ্চি বলে কীইইই। তা হলে কই যা বাবু। আমার সাথে যাবা। হি হি না সোনা আমি আমার বন্ধুর কাছে যাব। না তুমি আমার সাথে যাবে। ওকে কিন্তুু থাকব কই শুনি। আমার সাথে থাকবে। পিচ্চিটার কথা শুনে মনে হচ্ছে কত বয়স তার। কেবল ঠিকঠাক কথা বলতে শিখছে তাতেই খুব পাঁকা। সামনে দেখলাম রাফি ভাইয়া আর রত্না ভাবি আসছে। বাবা সাহরিয়াকে ও আমাদের সাথে নিয়ে চলো না হলে আমি কিন্তুু কেঁদে দিব। ও বাবা নিবা না বল। হুমমমমম মা নিব তো। আচ্ছা সাহরিয়া তুমি তো বাসা খুঁজছ আর আমাদের একটা রুম ফ্রি আছে, তোমার অসুবিধে না থাকলে থাকতে পার। ঠিকআছে ভাইয়া, কিন্তুু ভাড়াটা কেমন দিতে হবে। দূর বোকা ভাড়া দিতে হবে না, আমরা তো অবাক যে তুমি কেন তোমার সাথে এত্ত কথা বলছে।
তুমি শুধু আমার মেয়েটাক খুঁশি রাখবা কেমন। হুমমমমম ঠিকআছে। তাহলে আজকে থেকেই চলো। হুমমমমম চলেন। বাবা আমি সাহরিয়ার কোলে যাব। আমার কোলে এসে সোজা আমাকে একটা পাপ্পি দিল। ওই যানো না পাপ্পি দিলে পাপ্পি দিতে হয়। না বুড়ি আগে কেউ দেইনি তো তাই জানি না। হুমমমমম, এবার থেকে দিবা, আর আমাকে প্রতিদিন চকলেট এনে দিবা কেমন। হুমমমমম দিব। ওদের বাসাই চলে আসলাম অনেক সুন্দর বাসাটা। ওকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বললাম আমি একটু ফ্রেস হয়ে আসি কেমন। বলে ফ্রেস হতে চলে গেলাম। এসে দেখি পিচ্চিটা নেই। তাই ভাবলাম একটা ঘুম দিলে মন্দ হয় না, তাই ঘুমাই গেলাম। ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি পিচ্চিটা ও আমার বুকের উপরে শুয়ে আছে, একদম চুপচাপ।
অন্য বাচ্চা হলে বিরক্ত করত কিন্তুু এই তুবাটা কেমন আলাদা একদম বড়দের মতো। সাহরিয়া ঘুম ভাঙ্গছে। হুমমমমম তুবা সোনা তুমি কখন আসছ। একটু আগে। ডেকে দাও নাই কেন, তোমার যদি মাথা ব্যাথা করে তাই। হি হি এত্ত কিছু জানো বাবু। আচ্ছা আমি তোমার কে হই বলো। তুমি সাহরিয়া। না বাবু আমাকে ভাইয়া বলবা কেমন। না আমি তোমাকে ভালবাসি ভাইয়া বলব কেন। তুমি সাহরিয়া। খাইছেরে ওর বাপে শুনলে আমাকে আজকেই বাড়ি থেকে বেড় করে দিবে। এর মধ্যে ভাবির ডাক খাওয়ার জন্য ডাকছে। সবাই এক সাথে খাচ্ছি, আমি ও খাচ্ছি আর তুবাকে খাওয়াই দিচ্ছি। হঠাৎ পিচ্চি বলল, বাবা আমি সাহরিয়াকে বিয়ে করব। আমার মুখ থেকে পানি ছিটকে বেড় হয়ে গেল,কী বলে এই পিচ্চি মেয়ে।
ও বাবা বিয়ে দিবা না বলো। হুমমমমম মা দিব। তাহলে আমি সাহরিয়ার সাথে থাকব। আচ্ছা থেক। কী বিপদে ফ্যালাই দিলা আল্লাহ, কিতা করামআমি। প্রতিদিন রাতে পিচ্চিটা আমাকে জরাই ধরে ঘুমাই যাই। এমন করেই চলছিল দিন। একদিন বিকেলে ওর মা কে বলে শাড়ি পড়ে এসে আমাকে বলল বেড়াতে নিয়ে যেতে, কী আর করার গেলাম বেড়াতে নিয়ে। গিয়ে তো আরো বিপদ বলে কীইইই না, আমাকে ফুল দিয়ে ভালবাসি বলো। একটা গোলাপ নিলাম আর আস্তে বললাম ভালবাসি। ও বলে কী জানেন, এমন করে না হাঁটু গেড়ে বসে বলতে হবে। ও আল্লাহ এই মেয়ে তো আমাকে শেষ করে দিবে। কী আর করার ওমন করেই বললাম। এবার বলে চকলেট খাবে।
বাবু আমার কাছে টাকা নাই তো। ঠিকআছে এবার থেকে আমি আব্বুর কাছে থেকে টাকা এনে তোমাকে দিব। হুমমমমম। বলে পিচ্চিটাকে নিয়ে বাসাই আসলাম। ওর মার কাছে দিতে গেলাম ও বলল। জানো মা আজকে সাহরিয়া ও আমাকে ভালবাসি বলছে, এবার কিন্তুু বিয়ে দিবা। ভাবি আমাকে আরালে ডেকে বলল, জানো সাহরিয়া এই প্রথম আমরা তুবাকে এমন চঞ্চল দেখলাম। আগে আমাদের ছাড়া কারো কাছে থাকতো না, ওর কথাই তুমি কিছু মনে করো না, বাচ্চা মানুষ। দূর ভাবি কী যে বলেন না, আমি কী মনে করব। আর হ্যা টাকা লাগলে বল কিন্তুু আমাকে, কালকে তুবার জন্মদিন সব দায়িত্ব তোমার। কীইইই কালকে তুবার জন্মদিন। হুমমমমম, তাহলে ভাবি আমি এখন রুমে গেলাম, বলে চলে আসলাম কালকে কী দিব ভাবছি পিচ্চিটাকে, টাকা ও নাই। বলতে বলতে পিচ্চিটা চলে এসে আমার বুকে শুয়ে পড়ল। সোনা আমার থেকে কালকে কীইইই নিবা তোমার জন্মদিনে।
তুমি কীইইই দিবা বলো। বাবু আমার কাছে তো টাটা নাই দুইটাগোলাপ দিব কেমন। ওকে, আর দুইটা পাপ্পি দিবা কেমন। বলে ঘুমাই গেল অনেক লক্ষী একটা মেয়ে। পরের দিন রাত ৮টা বাজে আমি এখন ও বাসাই আসতে পারিনি, না যানি পিচ্চিটা কীইইই করছে। বাসাই আসতেই দেখি অনেক মানুষ ভিতরে গিয়ে দেখি পিচ্চিটা রেগে বসে আছে আমার জন্য নাকি কেক কাটেনি। রাগ করছ বুড়ি। কোন কথা নেই। আচ্ছা সরি, কান ধরছি, তোমার গিফট নিবা না, হুমমমমম দাও। পিচ্চিটারে দুইটা পাপ্পি আর গোলাম দিলাম।এই হল তুবা মানে আমার পিচ্চি বউ। আসছি বলে গেছে মনে এক্ষুনি আসবে আবার, কী কান্ড যে করে বসে।
ওই তো চলে আসছে, এই ধরো টাকা, আমার জন্য চকলেট আনবা আর এখন আমার পাপ্পি দাও। হি হি পিচ্চি বউ তো তুমি আমার তাই না বুড়ি।ওমনি আমাকে জরাই ধরছে। পিচ্চিটারে পাঠিয়ে দিলাম, ফ্রেস হয়ে রাসেলের ফোন পেলাম, আমাদের গ্রামে না ফুটবল খেলা আছে। তাই শুধু ভাবিকে বলে চলে আসলাম পিচ্চিটা তখন ছিল না। খেলা দেখে রাতে বাড়িতে গেলাম তোর বাঁদরামি আর যাবে না একবার বলে আসবি তো। দূর আব্বা বলে আসলে মজাটাই শেষ। হুমমমমম যা ঘুমা এখন।
ঘুমাই আছি হঠাৎ কান্নার শব্দ, লাফ দিয়ে উঠলাম, বাইরে এসে দেখি তুবা, ভাইয়া ভাবি। আরে ভাইয়া, ভাবি তোমরা হঠাৎ। কীইইই করব তোমার পিচ্চি বউটা তো কেঁদে কেঁদে শেষ। তুবারে কোলে নিয়ে বললাম কী হয়েছে বাবুটার। তুমি পঁচা, আমাকে ছেঁড়ে আসছ কেন, আমার কত কষ্ট হয়েছে। বাবা এই হলো আমার ভাইয়া ভাবি, আর এইটা তোমার পিচ্চি বউমা তুবা। পিচ্চিটা মনে হয় লজ্জা পেয়েছে। আমরা তো সবাই হেঁসে হেঁসে শেষ। দেখি কতদিন চলে পিচ্চিটার লগে পিরিত। হি হি হি হি।