বোকা মেয়েটার গল্প

বোকা মেয়েটার গল্প

দুস্ত চল ক্রিকেট খেলি [ইমরান]
– হুম চল, কিন্তু অই পাশের বাসায় বল গেলে কিন্তু আমি আর আনবো না [সিফাত]
– কেন কি হইছে অই বাসায় আগেতো যেতি
– আরে ভাই অই বাসায় একটা মেয়ে আসছে আর আমি যদি যায় আর আমার জি এফ যদি দেখে তাহলে আমি শেষ।
– আচ্ছা সমস্যা নাই আমি যাবো।
– তাহলে চল যায়।
– এইডা কি করলি প্রথম টাই অই বাসায় তাও আবার জানালার গ্লাস দুই টুকরো।
– দুস্ত সরি আমি গেলাম এই নে তোর ব্যাট।
– অই সিফাত আমারে নিয়া যা এইডা কি করলি।
.
এতক্ষণে ঝগড়াটে মেয়েটাও চলে এসেছে। দেখতে সুন্দরী ভালোই এখন দেখা যাক ঝগড়াটা কতদুর যানে।
.
– আমার গ্লাস ভাঙছে কে এখনি বলেন।
– দাঁড়ান আগে একটু হেসে নেই তার পর বলছি
– বলেন তাড়াতাড়ি কে ভাঙছে।
– আপনার গ্লাস মানে এটা তো জানালার গ্লাস।
– দেখো ফাজলামি করবানা।
– কি? একদম আপনি থেকে তুমিতে চলে আসলেন? আর আপনার গ্লাস অহ্ জানালার গ্লাস আমি ভাঙিনি কিন্তু ভাঙছে আমার বন্ধু।
– আচ্ছা আর কখনো এমন যেনো আর না হয়।
.
কথাটা বলে মেয়েটা চলে গেলো যাক বাবা বাঁচা গেলো,

মেয়েটা ঝগড়া একটুও পারে না দেখতে ভালোই বয়স টা একটু কম হলে ভালো হতো প্রেম করেত পারতাম।
.
সেদিন ইমরানের আর এক বারের জন্যও  মেয়েটার কথা মনে হলো না। কিন্তু সকাল বেলায় ঘটলো এক রহস্যময় কাহিনী।
.
– হ্যাঁলো ইমরান কি করছো ভার্সিটিতে আসবানা?
– কে আপনি? আমিতো আপনাকে চিনতে পারছিনা।
– ধুর সমস্যা নাই পরে চিনলেও হবে আগে আসো’ত আমি তোমার জন্য বসে থাকবো বাস স্টপে।
– আরে পাগল নাকি আগে আপনার নামটা বলেন।
– আচ্ছা সোনা এখন ফোনটা রাখো আমি রেডি হয়ে নিই।
– আরে আমার কথাটা শুনুন। টুত টুত টুত ধুর বাবা ফোনটা রেখে দিলো।
.
দৌড়ে সেদিন ইমরান বাস স্টপে গেলো কিন্তু সেখানে কোনো মেয়েকে দেখতে ফেলোনা।

অই মেয়েটার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো।

একটু পর থেকে মেয়েটার নাম্বারো বন্ধ ফোন যাচ্ছেনা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা ইমরান।
এখনি ভার্সিটির বাসো চলে আসবে। যদি না যায় তাহলে আর যেতে পারবে না।

এইতো এক টা মেয়ে এদিখেই আসছে দেখা যাক কি হয় একটু কাছে আসতেই ধুর এইটাতো অই পাশের বাসার মেয়েটা,

একেতো আমি কখনো চিনি না আর অই মেয়েটাওত্য আমাকে চিনেনা। এই মেটা হতে পারে না।
.
– আচ্ছা তুমি অই ছেলেটা না।[নিশি]
– হুম আপনেও কি ঢাকা ভার্সিটিতেও পড়েন? [ইমরান]
– হুম চলো বাস চলে এসেছে?
– যান আপনি আমি পরে আসতেছি।
– কারো জন্য অপেক্ষা করছো। আর করলেও লাভ নাই পরে বাস পাবে না।
– না কারো জন্য অপেক্ষা করবো কেনো?
– তাহলে চলে আসো আরে আসো’ত।
[এক রকম টেনেই নিয়ে গেলো ইমরানকে নিশি।]
.
ভার্সিটিতে ইমরানের কিছুই ভালো লাগছিলো না শুধু অই মেয়েটির কথা মনে পরছিলো।

হয়তো মেয়েটা ফাজলামি করেছে ইমরানের সাথে এই বলেই নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলো….. এমন সময় অই মেয়েটার ফোন,

তোমি কত স্বার্থপর একটা মাত্র বাসের জন্য আমাকে ফেলে চলে গেলে আর আমি তোমার জন্য আমার জীবনটাও দিতে প্রস্তুত।

ইমরানকে কিছু বলতে না দিয়েই ফোনটা কেটে দিলো।
.
ইমরান মেয়েটার চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলো তাই সে বাসায় চলে আসলো। বাসায় আসতে না আসতেই ফোন অই মেয়েটার।

অই তোমার কি সরির খারাপ চলে আসলা কেনো। একটু বারান্দায় আসবা তোমাকে অনেক দেখতে ইচ্ছা করতাছে প্লিজ আসোনা।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো।ইমরান তাড়াতাড়ি বারান্দায় আসলো কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলোনা।

হঠাৎ রাস্তাই দুইটা মেয়ে তাকিয়ে আছে উপর দিখে তাই ইমরান দৌড়ে চলে আসলো নিছে কিন্তু ইমরান আসার আগেই মেয়ে দুইটা চলে গেলো।
আজকেও মেয়েটাকে দেখা হলো না। আসলে মেয়েটা চাচ্ছেটা কি?
রাতে মেয়েটা আবার ফোন দিলো।
.
– আচ্ছা বলেন তো আপনি কে? আর আমাকে এমনে বিরক্ত করছেন কেনো? [ইমরান]
– আমি নিশি তোমায় অনেক ভালোবাসি।
– কতটা যে ভালোবাসেন তাতো বুঝেছি।
– কি বুঝেছ।
– যদি সত্যি ভালোবাসেন তাহলে সামনে আসেন এভাবে দূর থেকে বিরক্ত করার মানে কি?
– আমি সত্যি কিছু কথা বললবো বিশ্বাস করবে তো।
– হ্যাঁ বলেন ।
– আমি নিশি তোমার ভার্সিটিতে পড়ি, আর সেখানেই তোমাকে দেখছি আর ভালোবেসে ফেলেছি।
– এতোই যদি ভালোবাসেন তাহলে সামনে আসেন না কেনো?
.
– সামনে আসতে ভয় হয় যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি।
– আর এভাবে যে হারাবেন না তার কি নিশ্চয়তা আছে। আর দেখা হলে হারাবেনি বা কেনো।
– দেখো আমি তোমার চেয়ে তিন বছরের সিনিয়র আর তাই সামনে আসতে ভয় হয় যদি তোমি আমাকে ভালোনাবাসো।
– আচ্ছা কালকে ভার্সিটিতে আসেন কথা আছে।
– আচ্ছা আসবো।
.
ইমরান প্রতিদিনের মতো ব্রাশ হাতে করে আজও ছাদে চলে গেলো।

ইমরান ছাদে দাঁড়িয়ে পাশের ছাদে পিচ্ছি একটা ছেলেকে বই পড়তে দেখে অবাক হলো এতো সকালে বই পড়ছে।
.
– হাই ব্রো তুমি এই বাসার নতুন ভাড়াটে না?
– হুম ব্রো তুমি কে।
– আমি এই বাসার বাড়িওয়ালা। এতো সকালে কি করছো।
– আপুর ডাইরি চুরি করে নিয়ে এসে পড়ছি।
– আমাকে দিবা পড়তে।
.
– তাহলে তো ব্রো তোমাকে এই ছাদে আসতে হবে।
– এক মিনিট আসতেছি। দুই [ছাদ পাশাপাশি থাকায় ইমরান চলে গেলো পাশের ছাদে।]
.
ডাইরিটা হাতে নিতেই ইমরানের চোখ পড়লো নামের দিখে লেখা নিশি হাসান। আস্তে করে বিতরে চোখ বোলাতেই দেখে লিখা,

আমি নিশি এখানে আমার জীবনের প্রতিদিনের করা সব কাজ লিখা আছে।
সেদিন ছিলো আমার জীবনের সব চেয়ে খুশির দিন। আমি তখন অনার্স ৩য় বর্ষে উঠেছি এমন সময় আমাদের ভার্সিটিতে ভর্তি হলো ইমরান হাসান।
আমি প্রথম দেখায় তার প্রেমে পরে যায়। কিন্তু সে আমার তিন বছরের জুনিয়ে এটা ভেবে লজ্জা আর ভয়ে কিছুই বলতে পারিনি।
.
সেদিন থেকেই আমি তার পিছুপিছু ঘুরতাম। থাকে বলতে চাইতাম আমি তোমায় ভালোবাসি কিন্তু বলতে পারিনি।

অবশেষে ইমরানের বন্ধুদের কাছ থেকে ইমরানের নাম্বার আর বাসার ঠিকানা নিয়ে এসে এখানে উঠেছি।

কিন্তু আজো তাকে বলতে পারিনি তার সামনে গিয়ে। তবে ইমরান বলেছে কাল তার সামনে যেতে কি করে যাবো সেটাই ভাবছি।
.
– আচ্ছা ব্রো আমি এই ডাইরিটা আজকের জন্য নেই?
– আচ্ছা কিন্তু কালকে ঠিক এই সময় দিয়ে যাবে?
– আচ্ছা।
.
ভার্সিটি যাবার পর নিশি ফোন দিলো
.
– কই তোমি আসবেনা ভার্সিটিতে?
– না আমিতো আজকে আসতে আপরবো না।
– তাহলে কেনো বলেছিলে।
– এমনি বলছিলাম।
– জানতাম তুমি এমন টাই করবে।ভাল্লাগেনা এত্তসব কাহিনী।
আরে বাবা রগ না করে পিছনে থাকিয়ে দেখো একবার।
মানে কি তুমি আমাকে চিনো।
তাকাও না হাঠুতে ব্যথা হয়ে যাচ্ছে।
.
নিশি পিছনে থাকাতেই দেখে ইমরান এক হাতে তার সেই ডাইরিটা আর এক হাতে গোলাপ নিয়ে বসে আছে।

নিশি ডাইরিটা দেখেই বুঝতে আর সমস্যা হলোনা কি করে চিনেছে থাকে।
নিশি এতো ভালোবাস দেখে সেদিন খুশিতে কাঁদতে কাঁদতে ঝরিয়ে দরলো ইমরান কে।
– এই পাগলি কাঁদছো কেনো।
– তোমায় পাবার খুশিতে।
– আরে ব্যাথা পাচ্ছিতো ছাড়ো।
– না ছাড়বোনা।
– তাহলে আরেকটু ঝুরে দাও তো।
– যা দুষ্ট কোথাকার।
– চলো বিয়ে করে ফেলি?
– এখনি বিয়ে?
হুম এখনি…..চলো।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত