প্রতিদিনের মত ছেলেটি আজও অপেক্ষা করছে মেয়েটির জন্য, ছেলেটি ভাবে আজ না হয় কাল ও ঠিকই রাজি হবে, আমি ওর পিছু ছারব না কারণ (আমি তো ওরে খুব ভালবাসি) দেখি কতদিন এভাবে আমাকে এড়িয়ে চলতে পারে!! একদিন ওর অভিমানের বাঁধ ভাঙবেই!! আর আমার কাছে এঁসে বলবে, অনেক ফিরিয়ে দিছি তোমাকে আর ফিরিয়ে দিব না,, আমিও তোমাকে খুব ভালবাসি!! তোমার সাথেই বাকিটা জীবন কাটাতে চাই!! মেয়েটি পড়ালেখা করে কলেজ এ ১ম বর্ষে পড়ে আর ছেলেটি কলেজে পড়ে ছেলেটি ২য় বর্ষে!! মেয়েটির নাম তামান্না আর ছেলেটির নাম নীল ! রিমা আমি সত্যি তোমাকে খু্ব ভালোবাসি (রিমাকে পথে দাঁড় করিয়ে নীল বলেই ফেলল) জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি রিমা তোমাকে! হ্যাঁ। পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি ভালোবাসি। পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি ভালোবাসা পাবে আল্লাহ্।
আপনি আল্লাহকে ভালোবাসেন। তাহলে আল্লাহই আপনার জন্য আমার মনে ভালোবাসা তৈরি করে দিবে! রিমা তুমি তোমার ইচ্ছামত আমাকে সাঁজিয়ে নাও, তুমি যা বলবে আমি সব শুনতে রাজি শুধু প্লিজ একটুকু ভালবাসবে আমায়!! শুনেন পৃথিবীতে আপনাকে আল্লাহ সৃস্টি করেছে। নিশ্চই আপনার জন্য একজন মেয়েও তৈরি করেছেন। আর সেই মেয়েকে আপনার খুঁজতে হবে না। আল্লাহর কাছে খোঁজার দায়িত্ব দিন! সেই খুঁজে দিবে আপনার জন্য তৈরিকৃত মেয়ে। আর আমি যদি আমি সেই মেয়ে না হই কখনও আমাকে পাবেন না। আর যদি সেই মেয়ে আমি হই পৃথিবীর কোন বাঁধা আমাকে আপনার থেকে আলাদা রাখতে পারবে না! সবাইতো বিয়ের আগেই ভালোবাসে সবাই যদি টয়লেট খায় আপনি খাবেন? প্লিজ তুমি আমাকে ভালোবাস। তাহলে আমি ভাল হয়ে যাব। তাছারা ইসলামিক নিয়মে আমাকে ভালোবাসবে!শোনেন ভালোবাসা মানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা নয়, পার্কে ঘোরাঘুরি নয়, মোবাইলে কথা, মেসেজ করা নয়। ভালোবাসা হল দুটি মনের একটি আশা।আপনাকে ভালোবাসতে পারি তবে আপনার সিগারেট খাওয়া বাদ দিতে হবে।
তারপর আসবেন ওকে! এরপর থেকে ছেলেটি আস্তআস্তে সিগারেট খাওয়া পরিত্যাগ করল। তারপর আবার একদিন মেয়েটির সামনে গেল। বলল আমি সিগারেট পরিত্যাগ করেছি। এবার ভালোবাসতে হবে! সবে মাত্র শর্ত একটা গেছে। ২য় শর্ত হল ২০-দিন নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে। ওকে?? তারপর কিন্তু ভালোবাসতে হবে হ্যাঁ বাসব। তবে যেকোন এক ওয়াক্ত ছেড়ে দিলে আবার নতুন করে ২০-দিন শুরু হবে ওকে?? ঠিক আছে!! আপনার কানে কি?? হেডফোন” এসব ফালতু গান শুনবেন না, এতে ঈমান নষ্ট হয়, এখন থেকে ইমলামিক গান শুনবেন নীল চুপ কি শুনবেন না?? হ্যাঁ শুনবো!! তারপর থেকে নীল প্রতিদিন নামাজ পড়া শুরু করে দেয় ১২-দিন পড়ার পর ১৩-তম দিনে ক্রিকেট খেলার কারনে আসরের নামাজ পড়তে পারল না।আবার নতুন করে ২০-দিন পড়তে শুরু করে আর ইমলামিক সঙ্গীত শুনতে থাকে! তার নেই তুলনা, তার সমকেহ নেই”তার লাগি হোউ দিওয়ানা, তার নামে গাও গান!! বলো আল্লাহ মহান, পাবে অগণিত তার অনুদান!!
তারে ভূলে যেও না ওরে অবুঝ মোনা, নিশি রাত কেঁদে কেঁদে তারে জাপনা, তার নেই তুলনা, তার সমকেহ নেই, তার লাগি হোউ দিওয়ানা, তারে ভাবো নিরালায়, ডাকো তারে সিঁজদায়, তার মত বন্ধু আর কেহ নাই!! তারে কেনো খোঁজো না?? কেনো তারে বুঝো না?? তারে পেলে সবই পাবে তা কি যানো না?? তার নেই তুলনা, তার সমকেহ নাই, তার লাগি হোউ দিওয়ানা, তার নামে গাও গান,, বলো আল্লাহ মহান, পাবে অগণিত তার অনুদান!! এভাবে ইসলামিক সঙ্গীত শুনতে থাকে আর নিয়মিত ২০ দিন নামায পড়ে নীল রিমা সামনে গেল!! আমি ২০-দিন নিয়মিত নামাজ পড়েছি ইসলামিক সঙ্গীতও শুনেছি!! হুম, এখন থেকে আমার সামনে আসবে না। কথাটা শুনে নীল খুবই অবাক হয়, অথচ নীল ভাবছিল এখন থেকে হয়তো রিমা তাকে ভালবাসবে!! নীল মুখ কালে করে বলল কেন আসব না???? আমি তোমাকে ভালোবাসি তাই। এটা কেমন ভালবাসা?? ভালোবাসলে আসব না কেন??? হুম। আমাকে ভালোবেসে কি করবেন? আমি তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করব।
তবে বিয়েটা কার হাতে? কেন? আল্লাহর হাতে তবে আল্লাহকে ভালবাসুন এবং তাকে বলুন যেন আপনার সাথে আমার বিয়ের সব ব্যবস্থা করে দেন!!! তবে তোমার নম্বরটা দাও। আমি আর আসব না! ফেসবুক আইডি নিন। মাঝে মাঝে মনে পারলে মেসেজ দিয়েন। তবে কখনও নম্বর ও ফটো চাইতে পারবেন না ওকে! নীল নিরুপায় হয়ে চলে গেল। যার জন্য এতো পরিবর্তন। সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিছে , নামায পড়েছে প্রতিদিন।। এরপর ছেলেটি টার্গেট নিল। যে ভাবে হোক রিমাকে বিয়ে করতে হবে। আল্লাহর ইবাদত করা শুরু করে দিল। নামায পড়া শুরু করে দিল। সব সময় আল্লাহর কাছে বলত আল্লাহ্ রিমাকে আমার করে দিন। “কয়েকদিন পর নীল রিমাকে ছেড়ে আল্লাহর ভালবাসা পাবার জন্য উৎফুল্ল হয়ে গেল!
এভাবে ৫-বছর পর নীলের পরিবার থেকে বিয়ের কথা চলছিল নীলকে জিজ্ঞেস করে তার মা-বাবা, আব্বু তোমার কোনো মেয়ে পছন্দ করা আছে?? নীল রিমার কথা বলে দেয়! নীলের মা-বাবা রিমার মা-বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় নীল তখন নফল নামায পড়ে দোয়া করতে থাকে হে আল্লাহ আমি জানতাম রিমাকে পাবার একটা পথ তুমি বের করে দিবেই তোমার দরবারে অশেষ শুকরিয়া জানায়, হে আল্লাহ বিয়েতে যেনো রিমার মা-বাবা সহমত হয়!! নীলের মা-বাবা রিমার মা-বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তাদের বাড়ি যায় আর বলে” আপনাদের মেয়েকে আমরা দেখতে চাই না কারণ আমরা আপনাদের ফ্যামিলি সম্পর্কে এ বাড়ির মেয়ে সম্পর্কে জেনেই আচ্ছি, আমাদের আর কোনো ছেলে মেয়ে নেই, আমরা চাই আমাদের জন্য একটা মেয়ে বউ মা নয়” আমাদের ছেলে অনার্স পাস করে এখন জব করছে ছেলেটা খুব ভালো পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে আপনেরা খোঁজ নিয়ে দেখতে পাড়েন!!রিমার বাবা নীলের একটা ছবি দেখতে চাই!!নীলের বাবা ফোন বের করে নীলের ছবি দেখাই!! ছবি দেখে রিমার বাবা বলে উঠে “মাশাআল্লাহ” ছেলের মুখ ভর্তী লম্বা দাড়ি আছে!! যে ছেলে যুবক বয়সে লম্বা দাঁড়ি রাখে আর যাই হোক সে খারাপ হতে পারে নাহ”” আর আপনেরা বউ মা নয় মেয়ে চান কথাটা শুনে আমার খুব ভালো লাগছে মনটা একদম ভরে গেছে আর যাই হোক আমার মেয়ে আপনাদের কাছে আল্লাহর রহমতে ভালভাবেই থাকবে!! আমরা রাজি আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে!! নীলের বাবা বলে উঠে “আলহামদুলিল্লাহ”
এই তো কিছুদিন পর বিয়ে হয়ে গেল এবং দুজনে নতুন প্রেম করা শুরু করে দিল!! এ প্রেমে নেই কোনো বারণ, স্বামী-স্ত্রীর মধুর ভালবাসা!! দুজনে খুব দুষ্টামি করে একে অপরের প্রতি অনেক বেশি বিশ্বাস আর অশেষ ভালবাসা!! দুজনে এক সাথে এক প্লেটে করে খাবার খাবে,, রিমা বেশ দুষ্টামি করে নীলের সাথে কেনই বা করবে না স্বামীর সাথে দুষ্টামি করতে নেই তো কোনো বারণ, রিমা মাথায় নিজে কখনই তেল নিত না নীলকে দিয়েই মাথায় তেল নিয়ে নিত!!নীল চুলে তেল দিয়ে দিয়ার মাঝে রিমার চুলের ঘ্রাণ নেই চুল গুলোর সাথে দুষ্টামি করে!! রিমা মিষ্টি করে হাঁসে বলে অসভ্য কি হচ্ছে এটা??নীল তখন জড়িয়ে ধরে বলে আমি অসভ্য তাই না?? কি করব তোমার চুলের ঘ্রাণ আমায় নোশার মধ্য ফেলে দেয়!! হিহিহি দুষ্টু!! নীল তখন রিমাকে জড়িয়ে ধরে বলে এই তুমি শুধু আমার জন্য, বিধাতা তোমাকে আমার করেছে তোমার সাথে দুষ্টামি করার জন্য, তোমাকে খুব ভালবাসার জন্য”! তোমার পাশে সর্বদা থাকার জন্য!! নীল ঘুম পাগল ছেলে অফিস বাদ দিয়ে যদি বলা যায় সারাদিন ঘুমাতে হবে মনে হয় নীল সেটা পারবে রিমা প্রতিদিন ফজরের আযানের পরে রিমা ঘুমের বারোটা বাজায় দেয়!! এই উঠো প্রথম ডাকে নীলের কোনো সাড়া নেই এই আযান দিছে উঠো সরো তো ঘুমতে দাও!!
শুনো নামায না পড়লে সকালে ভাত পাবে না, না খেয়ে অফিসে যেতে হবে!! আচ্ছা আমি রাজি, খাবারের চেয়ে আমার ঘুম বড়!! আচ্ছা ঘুমাও!! নীল ঘুমিয়ে পড়ে রিমা বলে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা, ছোট একটা কাগজ মুরিয়ে কানের মধ্য দিয়ে একটু নাড়া দিতেই নীল লাফায় উঠে!! এই এটা কি হলো?? কি হলো মানে সকালের শুরুটাই গুনাহ দিয়ে শুরু করবা আমি থাকে পারবে না যাও অযু করে নামায পড়ে ঘরে ফিরবে!! নীল রিমাকে কাছে টেনে চুমু দিয়ে বলে এই না হলে মিষ্টি বউ!! হয়েছে থাক বউ আদর পড়ে করবেন আগে যান নামায পড়ে আছেন!! নীল অযু করে চলে যায় নামায পড়তে!! সত্যিই বলতে আযানের সময়ই নীল ঘুম ভাঙে তারপর ঘুমের ভান ধরে থাকে যে রিমা তাকে ডেকে দিবে, আর সে সহজে উঠবে না তারপর রিমার পাগলামী করে যেমনে হোক উঠাবে!! এসব খুঁনসুটি খুব ভালো লাগে আহাদের!!
বৃষ্টি নামলে রিমার মাথা ঠিক থাকে না ভিজতে হবেই এতে সর্দি জ্বর হলে হবে, একা ভিজে না সাথে করে নীলকেও নিয়ে যাবে!! নীল বলে আমার জ্বর আসবে তো!! হিহিহি খুব ভালো হবে!! তাই না?? হ্যাঁ, জ্বর আসলে তুমি অফিস থেকে ছুটি পাবে! তাছারা আমি তোমাকে বেশি সেবা করার সুযোগ পাব আর জনো তো অসুস্থ স্বামীর সেবা করা কতটা সওয়াবের কাজ হিহিহি! নীল বলে উঠে হায় আল্লাহ এটা কি মেয়েরে?? স্বামীকে ইচ্ছা করে অসুস্থ করে, সেবা করে সওয়াব কামাবে!! নীলের কথা শুনে হিহিহি করে হাঁসে রিমা আর নীল সে হাঁসিটা এক ধিয়ানে দেখে থাকে!!
সত্যিই বৃষ্টিতে ভিজে মাঝে মধ্য জ্বর চলে আসতো নীলের, আর রিমা খুব সেবা করতো নীলের!!নীল আবার ছোটবেলা থেকে বৃষ্টিতে ভিজতো কম তাই বৃষ্টির পানি শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে পারতো না!! এমন দুবার হবার পর রিমা বৃষ্টিতে আর ভিজতে বলত না নীলকে, তাতে কি বৃষ্টি নামলে নীল উল্টা রিমাকে কোলে করে নিয়ে ছাদে চলে যায় আর দুজনে বৃষ্টিতে ভিজতো নীল বলতো বৃষ্টির পানি আল্লাহর দেয়া নেয়ামত আর এই নেয়ামতের পানিতে তোমার সাথে ভিজতে অনেক অনেক ভালো লাগে!! রিমা জড়িয়ে ধরে নীলকে আর বলে আসল কথা এটা না আমি জানি আসল কথাটা হলো আমি বৃষ্টিতে ভিজতে ভালবাসি আর আমার দুষ্টু বরটা সেটা পূর্ণ করে দেয় তাতে তার যা হবে হোক!! নীল রিমার কপালে চুমু একে বলে আমার মিষ্টি বউটা!! এরপর একে অপরকে জড়িয়ে ধরে গভীর ভালবাসায়!!