সকাল ৭ টা ১৫ মিনিট বাস ছেরে দিছে নিরব দৌরাচ্ছে বাসের পিছে পিছে, মামা দারাও মামা দাড়াও, বাসের হেলপার নিরব কে দেখতে পেয়ে, বাস দাড় করালো?-কি মিয়া হুস থাকে না? বাস কয়টায়? সরি মামা, ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেছে, তাই আরকি, (ইদানিং কালে বাসের হেল্পার গুলো এমন হয়েছে, প্যাসেঞ্জার এর উপর রাগ দেখায় কিছু বলাও যায় না, কিছু বললে সিট পাওয়া যাবে না, যদিও পাওয়া যায় তবেও ভাঙা সিট, আবার ভাড়া নিয়ে সমস্যা করবে, তবে এখন হেলপার আমার কিছুই করতে পারবে না কারন, আমি টিকেট কেটেছি A4 ) বাসে উঠে বসলাস, কাধের গিটার টা পাশের সিটে রেখে গান শুনতে লাগলাম।
পাশের ছিটে কেউ না থাকা একটা ভাগ্যের ব্যপার, মানে দুটো ছিটই আমার, আজকে আমার ভাগ্যটা সকাল থেকেই ভালো, বেশ কয়েকটা খুশির খবর জানতে পেরেছি, তার মধ্যে একটা হলো আমার বিয়ের খবর, এটা সবার কাছে হতাশার হলেও আমার জন্য সুখবর, চাকরি পাওয়ার পর থেকে একটা বউ এর খুব প্রয়োজন বোধ করছি, সেটা এবার সাকসেস হবে, ভাবতে ভাবতে ঘুমে চোখ জুরে আসছে, বাসে উঠলে, কিছু মানুষের ঘুম পায়, আমার ও বেতিক্রম নয়, কেবল একটু একটু ঘুমে চোখ জুরে এসেছে, ওই মিয়া উঠেন, উঠেন তো,একটা টিকিট কাইটা দুইটা সিট দখল করছেন? আপনারে নিয়া আর পারি না, একটু সুযোগ পেলেই মাথায় উইটা বসেন! সরি, সরি মামা বুঝতে পারি নি, বসেন আপামনি, বলেই একটা মাইয়ারে পাশে বসিয়ে দিল, আসলে পাশে সুন্দরী মাইয়া থাকলে, হেলপারও ভাব ধরতে চায়, আমারে মেয়েটার সামনে ধমকাইয়া সে মহাখুশি, মনে হচ্ছে সে এভারেষ্ট জয় করে ফেলেছে, মেয়েটার মুখেও রহস্যর হাসি, কারন সে আমাকে গালি শোনাতে পেরেছে।
আমি কিছু বলার না পেয়ে চুপচাপ ব্যগ গুছিয়ে, আমার ছিটে সোজা হয়ে বসলাম।মন চাচ্ছে হেলপার টা কে ইচ্ছা মত থাপ্পরাই, কিন্তু সেটা করলাম না। কিছুক্ষণ পড় ভাইয়া ওই সিট টা আমাকে দেওয়া যাবে? আসলে আমি জানালার কাছে ছারা বসতে পারি না। আমি মনে মনে একটু হাসলাম এখনি সময় এসেছে প্রতিশোধ নেওয়ার। একটু বজ্র কন্ঠে বললাম, না দেওয়া যাবে না। টিকিট ও আমার সিটও আমার। কোন জোর চলবে না। -জানালার কাছে না বসলে আমার বমি চাপে?একটু যদি কষ্ট করে? তো আমি কি করবো! বমি করতে মন চাইলে করুন, আমাকে বলছেন কেন আজব?? বমি কিন্তু আপনার গায়ে করব। তখন বুঝবেন ঠ্যালা??? শুনুন কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করবেন না তো। আর এসব আজগুবি বাহানা করে লাভ হবে না। একটা রোমান্টিক মুডে আছি, প্লিজ মুড টা নষ্ট করবেন না।
বলেই ফেসবুকে লগিং করলাম, কিন্তু মেয়েটা কিছুতেই শান্ত হলো না, একটুপর আচ্ছা আপনার ফেসবুক আইডির নাম টা কি জানতে পারি? না, দেখুন, আপনে যতই বাহানা করুন না কেন এই সিট আমি ছারবো না।প্লিজ ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন না। আচ্ছা আপনি কি মানুষ? না এলিয়েন!! কেন? পাশে একটা সুন্দরী মেয়ে বসেছে,আপনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছে, আর আপনি বারবার আমার উপর রেগে যাচ্ছেন? আপনি সুন্দরী???? অবশ্যই, সবাই বলে, পেত্নির মত দেখতে?? আয়নায় দেখেন। বলেই ব্যাগ থেকে একটা আয়না বের করে তার হাতে দিলাম, মেয়েটা এবার প্রচন্ড রেগে গেছে তার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে, কি ভেবেছে মেয়েটা, ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলে সিট কেরে নিবে? এতো সোজা?? বাস চলছে, আমি তাকিয়ে আছি জানালা দিয়ে,দেখার মত কিছুই নেই, এই রাস্তা প্রায় মুখন্ত হয়ে গেছে,ট্রেন হলে কথা ছিল, গ্রাম গন্জের ভিতর দিয়ে যেত,কিন্তু বাস চলে শহরের ভিতর দিয়ে, তারপরও তাকিয়ে আছি, মেয়েটা বিরক্ত হচ্ছে, আমার ভালো লাগছে, বারবার উকি দিয়ে বাইরের পরিবেশ দেখার চেষ্টা করছে, প্রকৃতি মানুষকে কত রূপ দিয়েছে, হাসলে দাত বের হবে, কাদলে চোখ দিয়ে অশ্রু বের হবে, আর রাগলে মুখটা লাল হবে, এখন মেয়েটার মুখটা লাল বর্ন ধারন করেছে, তার মানে মেয়েটা রেগে আছে।
মেয়েটা এবার আরেক ফন্দি এটেছে, আমার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, আচ্ছা, আপনার নাম কি?? জ্বি আমার নাম নিরব, আমার নাম নিলা, ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ি, আমার আম্মা এক ছেলেকে দেখেছে, আমার সঙ্গে নাকি বিয়ে দিবে , কিন্তু আমি তো বিয়ে করব না, তাই ছেলেটা একটু উত্তমমাধ্যাম দিয়ে বিদায় করব, সে জন্য বাসায় যাচ্ছি। তার কথায় আমি হতবাগ হয়ে বললাম, আপনি ছেলেটা কে মারবেন? অবশ্যই মারবো, এর আগে কি হয়েছিল জানেন? একটা ঢোক গিলে বললাম, কি হয়েছিল? আমাকে দেখতে এসেই, আমাকে নাকি তাদের পছন্দ হয়ে গেছে, অবশ্য সেদিন আমি মেকাপ করেছিলাম না, কারন আমার বিয়েতে মত ছিল না। মেকাপ বিহিন একটা মেয়েকে দেখতে কেমন লাগে বলেন, অবশ্য আমাকে মেকাপ ছারাও অনেক সুন্দর লাগে, আর মেকাপ করলে তো একদম পরির মত লাগে , তারপর কি হল। ? (এই মেয়ে যে একটু বেশি কথা বলে সে টা তার কথাতে বুঝতে পারছি, সোজা করে না বলে ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলছে) তারপর আমাদের দুজন কে পাঠানো হলো, এক রুমে আলাদা কথা বলার জন্য, ছেলেটা একটু ভিতু প্রকৃতির ছিল, আমার পিছে, আসতে তার শার্ট টা ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। রুমে ঢুকে আমি দরজা বন্ধ করে দিলাম।
ছেলেটার ভয় এখন উচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে, কাপা কাপা গলায় বলল, আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে, আমি ছেলেটা গালে একটা ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিয়ে বল্লাম, মেকাপ ছারা কাউকে সুন্দর লাগে নাকি? হাবলু। ছেলেটা চর খেয়ে একদম হতভম্ব হয়ে গেছে, কথা বলতে পারছে না, শুধু তাকিয়ে আছে,, আমি আবার বললাম,শুনুন এখন গিয়ে বলবেন আপনি আমাকে বিয়ে করবেন না, আর যদি না বলেন, আমার তিন টা বয়ফেন্ড তাদের কে দিয়ে ধোলাই খাওয়াবো। বুঝতে পেরেছেন?? ছেলেটা কথা বলল না, মাথা ঝাকিয়ে বলল ঠিক আছে। এরপর বিয়েটা ক্যন্সেল হয়ে যায়। আমি তো মহা খুশি, কিন্তু ৩ মাস নাই যেতে মা আবার ছেলে দেখেছে। ভাবতেছি এবার যে ছেলে কে দেখেছে তাকে রাস্তায় ধরেই ধোলাই দেব। বুদ্ধিটা কেমন বলুন? আমি মেয়েটার কথায় একটু ভিতু হয়ে গেলাম, কি মেয়েরে বাবা ছেলেকে পিটায়? কি সাংঘার্তিক??? বললাম, খুবই ভালো বুদ্ধি, আপনার কি সত্তি সত্তি ৩ টা বয়ফেন্ড আছে? আরে না, আমি কখনো প্রেম নামক বস্তুর উপর পরি নাই। ও ভালো বলে, বলেই জানালার দিকে তাকালাম, এই মেয়ের সঙ্গে বেশি কথা বলা যাবে না, সাংঘার্তিক মেয়ে বলে কথা।
একটু পর নিরব এই নিরব?? আমি মেয়েটার দিকে ঘুরে তাকালাম, তার আমি সিনিয়র সেটা জেনেও নাম ধরে ডাকছে, মনে হচ্ছিল ঠাটিয়ে একটা থাপ্পর মারি, কিন্তু মারতে পারলাম না, কারন মেয়েটা খুব জেনজারাস। উল্টো ফল হতে পারে। -জ্বি বলুন? বাদামওলাকে দেখিয়ে বলল, একে ২০ টা টাকা দিন তো, আমার কাছে খুচরো নেই। আমার মনে দয়া হলো তাই দিয়ে দিলাম,বেচারি খেতে মন চাচ্ছে, কিন্তু খেতে পারবে না তা কি হয়।,, নিলাঃ আচ্ছা আপনে খাবেন? (মনে মনে বল্লাম টাকা আমার আর আমাকেই বলে খাবেন?) জ্বি দেন। বাদাম খেতে খেতে ঝালমুরি ওয়ালা এলো, সে বাদাম থুয়ে আবার ঝালমুরি খেল টাকা আমি দিলাম, এর পর থেকে যে হকারই আসে তার কাছে থেকেই, এটা ওটা কিনতে লাগলো, এমনকি শসা ওয়ালা এলে শসাও খেয়েছে কচকচ শব্দ করে, আর বিল দিতে হচ্ছে আমার। এতোক্ষনে বিরক্তির চরম সীমায় উঠে গেছে, ২৩৫ টাকা অলরেডি পকেট থেকে বের হয়ে গেছে, তাই উপায় না পেয়ে তাকে বললাম, আপনে বরং জানালার কাছে বসুন, বাইরের দমকা হওয়া আমার একদম ভালো লাগে না। আমার কথায় নিলা, মুচকি হাসি দিল, কারন সেও ধরতে পেরেছে, কিসের জন্য তাকে জানালার পাশে বসতে বলেছি।
নিলা, সিট চেন্জ করতে বের হলো না, আমার উপর দিয়েই পার হতে লাগলো এমন সময় বাস টা একটু ধুক করে ঝাকি খেল, নিলা পড়ে গেল আমার গায়ের উপর!! এতো জোরেই পরলো মনে হচ্ছে পায়ের সব হারগুলো মনে হয় শেষ, তার উপর আবার নিলার গায়ের পারফিউম এর কড়া গন্ধ ভুরভুর করে নাকে ঢুকছে মনে হচ্ছে ভেতর থেকে সব কিছু বের হয়ে আসছে, নিলা তারাতারি করে সরে গেল, আমি নাক চেপে ধরে মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিচ্ছি, এতে ব্যথা কিছু কমে ছোট বেলায় বল লাগলে আমরা এভাবে নিশ্বাস নিতাম। নিলাঃ খুব জোরে লেগেছে? আমিঃএতো মোটা মানুষ এভাবে পার হলেন কেন?? বাসের মধ্যেই নিলা চেচিয়ে বলল, কি আমি মোটা? আমি তার কথায় হকচকিয়ে গেলাম, ব্যাথা লেগেছে আমার আর তাকে একটু মোটা বলেছি, তাই এ রকম রিয়াক্ট করছে?? নিলাঃ শুনুন আমি মোটা না, এটা স্মাট বডি, বুঝেছেন?? আমি মাথা ঝাকিয়ে বল্লাম হুম বুঝেছি। নিলা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে, আর আমি নাক ধরে, নিশ্বাস নিচ্ছি, একটু পর ঘুমিয়ে গেলাম।
৩ ঘন্টা পর এই উঠুন উঠুন বলে গা নারা দিচ্ছে, নিলা আমি চোখ মেললাম, এক জোরা হরিনী চোখ তাকিয়ে আছে আমার দিকে, আমিও তাকিয়ে রইলাম? সেই মায়াভরা চোখের দিক থেকে দৃষ্টি ফেরানোর শক্তি আমার নেই। চোখের পলক পরছে না। মনে হচ্ছে জমন জনম পার হয়ে যাবে, সেই নয়নের দিকে তাকিয়ে, তবুও আমার পলক পরবে না। নিলাঃ ওই মিয়া এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?(এমন ভাবে কথাটা বলল নিলা, যে খুব জোরে চমকে উঠলাম।) কই কই নাতো, বলে সামনের দিকে তাকালাম। আমার এমন আচারনে নিলা হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে, আমি আরচোখে তার দিকে তাকালাম, তার হাসি দেখে ২য় বারের মত ধাক্কা খেলাম, কি সুন্দর হাসি? হেলপারের ডাকে ঘোর কাটলো, পাবনা নামেন পাবনা নামেন?? আমি ব্যগ আর গিটার টা নিয়ে নেমে এলাম, পিছে পিছে নিলাও এলো, নিলাঃ এখানে একটু দাড়ান, বলেই এই দোকান থেকে টাকা নিয়ে এলো, এই নিন আপনার ২৩৫ টাকা। না না লাগবে না, আর আপনার সঙ্গে তো আমিও খেয়েছি। তাতে সমস্যা নাই, রেখে দিন বলে, হাতে টাকা গুজে দিয়ে চলে গেল, আমিও চলে এলাম। দুইদিন পর আজকে মেয়ে দেখতে যাচ্ছি, মনের মধ্যে লাড্ডু ফুটছে, চোখ বন্ধ করলেই, কেমন যেন একটা শিরশিরে অনুভৃতি হচ্ছে।
মেয়ের বাসায় বসে আছি, হরেক রকমের খাওয়া আয়োজন করা হয়েছে, ছেলেপক্ষ বলে কথা, কিন্তু দুঃখ এক যায়গায়, আমি খেতে পারছি না, বাবা আগে থেকেই বলে দিয়েছে, ওই বাসায় গিয়ে খাই খাই করবি না। মান সম্মানের ব্যাপার। ঘোমটে পরানো একটা মেয়েকে নিয়ে আসা হলো, বাবা বললেন, মা মনি একটু ঘোমটা তোলো তো? মেয়েটা ঘোমটা তুলল, আমি তো দেখে আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্হা, এ তো নিলা। মেয়েটা মেকাপ করেছে, সত্তি সত্তি পরির মত লাগছে। কিন্তু মেয়েটা তো বিয়ে করবে না। সেটা আমি জানি আর আমি ও করব না, গুন্ডি পাইপের একটা মেয়ে। বাবাঃ মাশআল্লাহ, মেয়ে তো আমাদের আগে থেকেই পছন্দ। এখন ওদের একটু মতামত দরকার ঠিক বলেছেন বেয়ান সাহেব, ওরা একটু আলাদা কথা বলুক। নিলা সামনে হাটছে, আমি তার পিছন পিছন হাটছি, আমি জানি এ বিয়ে হবে না। তাই একটু খারাপ লাগছে। নিলার রুমে ঢুকলাম, আমিঃ আপনে কোন টেনশন করবেন না, আমি এ বিয়ে করব না।
নিলাঃ কেন বিয়ে করবেন না? আমি দেখতে খারাপ? মুর্খ, আপনার যোগ্য নই? বলেই আমার দিকে এগিয়ে আসছে নিলা,, না আমি সেটা বলি নি। তাহলে বিয়ে করবেন না কেন? না মানে, আপনি তো বলেছিলেন, এখন আপনে বিয়ে করবেন না সে জন্য?(গলা প্রচন্ড শুকে গেছে একটু পানি খাওয়া দরকার) নিলাঃ এখন গিয়ে বলবেন, আপনার মেয়ে পছন্দ হয়েছে, এবং আপনি বিয়েতে রাজি। ঠিক আছে? আচ্ছা বলেই, ঝরের গতিতে বের হয়ে আসলাম, নিলা খিলখিল করে হাসছে, হয়তো ভেবে নিয়ছে, আমি খুব ভয় পেয়েছি, অবশ্য একটু ভয় পেয়েছি, গিয়ে বাবাকে বললাম আমার মেয়ে পছন্দ, হবু শশুর মসাই বললেন, আলহামদুলিল্লা বেয়ান সাহেব মিষ্টি মুখ করেন।
বাবা মিষ্টি খেতে খেতে বললেন, আপনাদের আপত্তি না থাকলে, আজকেই আমরা বিয়ে পরাতে চাই, নিলার বাবাঃ এতো তারাতারি কেন? বাবাঃপরশুদিন নিরবের অফিস শুরু ৪ দিনের ছুটি শেষ সে জন্য আর কি? আচ্ছা দাড়ান কথা বলে দেখি, বলেই শশুর মসাই ভেতরে গেল, কিছুক্ষণ পর বেয়ান মশাই আমরা রাজি, কাজি ডাকার ব্যবস্হা করুন? আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল, নিলা কে নিয়ে বাসায় চলে এলাম, এসে দেখি বিরাট কান্ড ছোট বোন গুলো মিলে বাসর ঘর সাজিয়ে বসে আছে। নিলাকে নিয়ে কি হইচই শুরু হয়ে গেছে, মিষ্টি খাওয়ানো শরবত খাওয়ানো, ছবি ওঠা ইত্যাদি ইত্যাদি। রাত ১২:০০টা আমি রুমে ঢুকলাম বুকের মধ্যে ধুকধুক করছে, কি জানি কি হবে।
ঢুকতেই, নিলা এসে সালাম করল, মনে মনে ভাবলাম বৌ কি ভালো হয় গেল? একটু পর বজ্রকন্ঠে বৌ বলল, নিরব ছাদে চলো,,, আমি মাথা নেরে বললাম, ঠিক আছে চলুন নিলা মিটমিট করে হাসছে, নিলাঃ আচ্ছা তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছ? আমিঃ আরে না না, ভয় পাবো কেন?-তাহলে যা বলছি সেটাই করছো, আবার আপনি আপনি করে কথা বলছো, -কি বলবো ঠিক ভেবে পেলাম না তাই চুপ কর আছি, নিলাঃ তুমি হয়ত অবাক হয়েছ, হঠাৎ কেন বিয়েতে রাজি হয়ে গেলাম? শুনো, সেদিন বাসায় আসার পর মা এসে ছবি দিয়ে বলল, এই ছেলের সাথা তোর বিয়ে! আমি অনিচ্ছা সত্তেও ছবি টা দেখলাম। দেখেই চমকে উঠলাম, কারন ছবি টা ছিল তোমার, সারারাত ঘুম হলো না, চিন্তা করতে লাগলাম কি করব?বিয়ে করব নাকি করব না??
মাঝরাতে হঠাৎ মনে হলো, আমি তোমাকেই বিয়ে করব। ঠিক তখন তোমার জন্য মনের মধ্যে ভালোলাগা তৈরি হল, বাসের মধ্যে ঘটে যাওয়া ছোট্ট ছোট্ট অনুভৃতি গুলো দোলা দিতে শুরু করল, আমার চোখে তোমার হারিয়ে যাওয়া, আমার হাসি,তোমার আরচোখে লুকিয়ে দেখা, ভালোবাসবে আমায় আমায়? কথা দিচ্ছি কোন দিন তোমার কথার অবাধ্য হব না, মন প্রান উজার করে ভালোবেসে যাবো, তবে হ্যা, যদি আমি বাদে অন্য মেয়ের দিকে তাকাও তবে চোখ উপরে ফেলবো? -আমি বাম হাত দিয়ে নিলা কে বুকে জরিয়ে নিলাম, সত্তি আমাকে এভাবে আমাকে ভালোবাসবে? হুম সত্তি।
তবে শুনে রাখ, এ ভালোবাসা কখনো শেষ হবে না, যতদিন বেচে থাকবো ততদিন থাকবে এ ভালোবাসা!! নিলা এবার আমাকে জ্বরিয়ে ধরল খুব শক্ত করে। এবার মনে হয় পৃথিবীর সেরা ভাগ্যবানের মধ্যে আমি পরে গেছি, তা না হলে, আমার মত *সাইকোর* কপালে এতো ভালোবাসা আসবে কি করে???
সমাপ্ত