রিংংংংংং রিংংংংংংং রিংংংং
আমি ::- দিলি তো আমার সকালের ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে,,,,,, এ মটুর বাচ্চা মটু এতো সকালে ফোন দিলি ক্যান???????
ওপাশ থেকে ::- দোস্ত আমি এইমাত্র দেখলাম রিয়া ওর ভাইকে নিয়ে স্কুলের দিকে গেছে।
আমি ::- কি বললি??? (আমি কথা না বাড়িয়ে ফোন কেটে দিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম রিয়ার উদ্দেশ্যে)
((((((পরিচয়টা দিয়ে নেই,, আমি রাজ। আমার বাড়িতে মা, বাবা আর আমি। একটু আগে ফোনে যে কথা বলল সে আমার বন্ধু রাজু,, রাজু খুব মোটা তাই আমরা সবাই ওকে মটু বলে ডাকি।
আর রিয়া নামে যে মেয়েটা, সে আমার কলিজা,, আমার একমাত্র ভালোবাসা,,, আমি রিয়াকে অনেকবার আমার ভালোবাসার কথা বলতে গেছি কিন্তু বলতে পারিনা, ওর সামনে কেমন যেন হয়েযাই))))) আমি দৌড়ে স্কুলের দিকে যাচ্ছি, দেখি রিয়া এদিকে আসছে,, রিয়ার ভাই প্লে ওয়ানে পড়ে, রিয়া ওর ভাইকে স্কুলে রেখে বাড়ি ফিরছে,,,, আমি রিয়ার সামনে গেলে কেমন যেন হয়ে যাই,, রিয়া সব বুঝেও না বোঝার ভান করে।
আমি ::- রিয়া এদিকে কোথায় গিয়েছিলে???
রিয়া ::- ভাইকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। আপনি কিছু বলবেন?? নাহলে সরেন,, আমার বাড়িতে অনেক কাজ আছে।
আমি ::- হ্যা কিছু বলার ছিলো,,,
রিয়া ::- তাহলে বলেন। তাড়াতাড়ি বলেন আমার সময় নেই।।।।
আমি ::- না,,,,,মানে,,, কিছুনা।
রিয়া ::- তাহলে আমি গেলাম।
আমি ::- এইযে রিয়া,,,, শোনো?????
রিয়া ::- হ্যা বলেন??????
আমি ::- না,,,, তেমন কিছু না,,, তুমি যাও।।
রিয়া ::- উফফফ,,,,,,,, শুধুশুধু আমার সময় নষ্ট করলেন,,,,(রেগে রেগে বলল)
রিয়া চলে গেলো।
আমি ::- ওহ্ ভগবান আমাকে একটু সাহস দেও যেন আমার ভালোবাসার কথাটা ওকে বলতে পারি(আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললাম) বন্ধুরা আমার কত্তো সুযোগ করে দিয়েছে তাও আমি বলতে পারিনি,, ধুর আমার দিয়ে কিচ্ছু হবেনা(মনে মনে বললাম)
রিয়ার বাড়ি আর আমার বাড়ি পাশাপাশি,,, রিয়া প্রায় আমাদের বড়ি এসে মায়ের সাথে গল্প করে। রিয়ার ফ্যামিলির সাথে আমাদের ফ্যামিলির খুব ভালো সম্পর্ক,, রিয়া প্রতিদিন বিকালে ওদের ছাদে বসে বই পড়ে, আমিও ওকে দেখার জন্য আমাদের ছাদে বসে থাকি। রিয়া বেশ বুঝতে পারে যে আমি ওকে লাইন মারি,,, আমি ওকে দুই বছর ধরে প্রোপোজ করবো করবো কিন্তু করতে পারিনা। একদিন সকালে ঘুমিয়ে আছি,, স্বপ্নে দেখছি রিয়া এসে আমার কান ধরে টানছে আর উঠতে বলছে,,,, আমি ঘুম ভেঙে থমকে গেলাম,,,, এটা স্বপ্ন না এটা সত্যি,,,,,,
রিয়া ::- কখন থেকে ডাকছি উঠছেননা কেন?? আপনার মা ডাকছে,, তাড়াতাড়ি আসেন।
আমি ::- রিয়া একটু দাড়াও
রিয়া ::- কি,,,, কিছু বলবেন??
আমি ::- হ্যা, না,,,,, মানে তেমন কিছু না,, তুমি যাও আমি আসছি। রিয়া মাথা নেড়ে চলে গেলো। আমি ফ্রেস হয়ে কিছুক্ষন পরে গেলাম,,,,
মা ::- রাজ, আয় তোর জন্যই বসে আছি।
আমি ::- কেন মা???? আর এখানে এতো বেনারসি শাড়ি কেন????
মা ::- এর মধ্যে তুই একটা পছন্দ করে দে তো?????
আমি ::- তোমরা থাকতে আমি পছন্দ করবো কেন??? আর বিয়েটা আবার কার?? এ শাড়ি পরবে কে???
মা ::- এ শাড়ি আমার রিয়া মামনির জন্য, সামনে শুক্রবার রিয়ার বিয়ে, আর মাত্র সাতদিন বাকি তাড়াতাড়ি একটা পছন্দ করে দে বাড়িতে অনেক কাজ।
ময়ের কথাটা শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।। আমার চারিদিকে সব যেন অন্ধকার দেখছি।
আমি কোনো কথা না বলে আমার ঘরে চলে এলাম,,,, আমার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেলো। আমি ঐদিন রাতে সারারাত কেঁদেছি আর মনকে বুঝিয়েছি,, এসব তো আমার জন্যই হয়েছে,,,, আমি যদি রিয়াকে আমার ভালোবাসার কথাটা বলতাম তাহলে আজকে এরকমটা হতো না। আমি তারপর দিন আর রিয়ার পিছু নিলামনা, সারাদিন চায়ের দোকানে বসে ছিলাম,, বন্ধুদের সাথে আড্ডাও দিলাম না। কিছুতেই মনকে বোঝাতে পারছি না,,, কিছু ভালো লাগছেনা,,, এভাবে বিয়ের দিন উপস্থিত হলো। আজকে আমার ভালোবাসা রিয়ার বিয়ে হয়ে যাবে।। আমি ঠিক করলাম আজকে সারাদিন ঘর থেকে কোথাও যাবোনা, সারাদিন ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে থাকবো। সন্ধার সময় মা এসে আমায় ডাকছে,,,,
মা ::- এই রাজ,,,, রাজ,, দরজা খোল,,,,,, ওদিকে রিয়ার আজকে বিয়ে আর তুই এখানে দরজা বন্ধ করে বসে আছিস????? কোথায় বিয়েবাড়িতে যাবি তা না।
আমি ::- আমর ভালো লাগছেনা মা,, তুমি যাও,,,,
মা ::- তুই আগে দরজা খোল। তোর সাথে কথা আছে। আমি উঠে গিয়ে দরজাটা খুললাম,,,, মায়ের হতে দেখলাম বরের ধূতি-পাঞ্জাবি
মা ::- এইনে এগুলো তাড়াতাড়ি পরে নে,,,,,
আমি ::- এসব বরের পোশাক আমি পরবো কেন???? আমার বিয়ে নাকি??? (ধমক দিয়ে বললাম)
মা ::- কোনো কথা না,,, যা বলছি তাই কর,, ৫ মিনিটের মধ্যে এগুলো পরে রেডি হয়ে নে,,,, বাধ্য হয়ে পরতে হলো।।
মা আমায় সাথে করে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। বিয়েবাড়িতে সব লোকজন আমার দিকে বারবার কেমন করে তাকাচ্ছে,, আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা,, রিয়াদের বাড়ির গেটের সামনে যেতেই দেখি রিয়ার মা হাতে বরণডালা নিয়ে দাড়িয়ে আছে সাথে আরো কয়েকটা মহিলা। গেটের সামনে যেতেই আমাকে বরণ করলো,,,, আমার মনে কেমন যেন খটকা লাগছে,,, আমায় বরন করছে কেন?? বিয়েটা কি তাহলে আমার সাথে হচ্ছে,,, না না তা কি করে হয়??? কিছু বুঝতে পারছিনা। সব গুলিয়ে যাচ্ছে।এরপর কয়েকটা ছেলে এসে আমায় পাজা করে তুলে সরাসরি বিয়ের পিড়িতে নিয়ে গেলো,, যেখানে রিয়া বসে আছে তার পাশেই আমায় বসিয়ে দিলো। তাহলে আমার সত্যি রিয়ার সাথে বিয়ে হচ্ছে,,, আমার এখন এতো আনন্দ হচ্ছে যে বলে বোঝানো যাবেনা।,,, বিয়েটা হয়েগেলো। ফুলসয্যার রাতে আমি ঘরে ঢুকতেই রিয়া আমায় ধমক দিয়ে বলল,,,,
রিয়া ::- এইযে ভীতুর ডিম এদিকে এসো??
আমি রিয়ে পাশে যেতেই ও বলল,,
রিয়া ::- আমায় ভালোবাসতে তা কখনো বলোনি কেন??
আমি ::- আসলে,,,, আমি,,,,, মানে,,, ইয়ে,,,,,,, মানে (ভয়ে জুড়িয়ে জুড়িয়ে বলছি)
রিয়া ::- থাক আর মানে মানে করতে হবেনা তুমি একটা ভীতুর ডিম,, এই দুইবছর ধরে আমাকে ভালোবাসো কিন্তু একবারও বলতে সাহস পাওনি,, তোমায় কত সুযোগ দিয়েছি যেন তোমার ভালোবাসার কথাটা আমায় বলতে পারো, কিন্তু তুমি বলতে পারলেনা। আমিও তোমায় ভালোবাসি তাই বাড়িতে সবকিছু বলে তোমায় বিয়ে করে নিলাম, এখন আমায় “আই লাভ ইউ” বলো।
আমি ::- এখনই বলতে হবে????
রিয়া ::- হ্যা এখনই বলতে হবে।।। আগে বলো, এই বলে রিয়া উঠে এসে আমার বুকে কিল মারতে লাগলো,,,আমি অমনি রিয়াকে বুকে জড়িয়ে নিলাম আর বললাম “আই লাভ ইউ”
রিয় ::- হয়নি আবার বলো,
আমি ::- “আই লাভ ইউ রিয়া” তারপর থেকে শুরু হলো আমাদের প্রেম আর সুখের সংসার।