বিয়ে

বিয়ে

কাল রাত বারোটা পর্যন্ত পরীর সাথে ঝগড়া করছি, ঝগড়ার বিষয় টা ও ছিলো মেয়ে, আমি নাকি মেয়েদের পিছনে ঘুরঘুর করি, একটু ভাব জমলেই লুলামি শুরু করি। আর ক্লাসে সুন্দরী রত্না মেডাম আসলে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকি।

পরীক্ষার হলে গিয়ে খাতা নিয়ে বসে আছি, কাল একটুকরো জন্য বই টা ও ধরিনি। কিরে এভাবে বসে আছিস কেন (পরী) তো কি করবো কি করবি মানে লিখছিস না কেন? (পরী) ইচ্ছা নাই লিখার না লিখলে যে ফেল করবি তা মনে আছে (পরী) জানি ইচ্ছে করেই ফেল করবো ও বুঝছি এখন তো আমাকে ভালো লাগেনা, ফেল করবি, নতুন ক্লাস পাবি, নতুন মেয়েদের সাথে আড্ডা দিবি, নতুন মেয়ে পটাবি কি শুরু করলা এখানে ও আমার খাতা থেকে দেখে দেখে লেখ। কিছু বললে প্যাচাল পারবে, তাই লিখতে শুরু করলাম। আমি আলভী, বিবিএ সেকেন্ড ইয়ার, আর পরী হলো আমার ক্লাসমেট বান্ধবী + গার্লফ্রেন্ড। আমরা একসাথে একিই ডিপার্টমেন্টে লেখা পড়া করি। বাসা এবং বাড়ি দুজনের ভিন্ন জায়গায়। পরীক্ষা শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম, পিছন থেকে আলভী বলে কে যেন ডেকে উঠলো।

তাকিয়ে দেখি পরী সামনে এসে চলো ফুসকা খাবো (পরী) টাকা নাই আমার কাছে জনমের ফকির (পরী) তা তো জেনে আবার বলো কেন, তবে আজ যেহেতু দেখাইছো, খাওয়াবো, চলো ঐদিক টায় ফুসকার দোকানে গিয়ে বসলাম, মামা একপ্লেট ফুসকা দেন তো একপ্লেট কেন, তুমি খাবেনা (পরী) আমি এসব অখাদ্য খাইনা। অমনি দুলাভাইইইইই বলে পিছন থেকে পরীর এক ঝাক বান্ধবী এসে ঘিরে ধরলো হাই দুলাভাই কেমন আছেন (শ্রেয়া) আজ কিন্তু ট্রিট দিতে হবে (অতসী) শুধু ফুসকা নেক্সট টাইম বড় করে পার্টি দিবেন (মানসী) পার্টি কি রে আমি তো ভাবছিলাম দুলাভাই আমাদের বনভোজনে নিয়ে যাবেন (ইতিয়া) শেষ হইছে তোদের কথা, এবার বল আমি তোদের দুলাভাই কিভাবে হলাম।

সে কি আপনি মিথ্যা বলতেছেন, আপনারা না বিয়ে করলেন, পরী বললো (অতসী) বিয়ে তা ও আমরা কাল ফাস্টইয়ারের ইরা এসেছিলো আপনার খোজ করতে, তখন ই তো পরী বললো আপনারা বিয়ে করে ফেলেছেন, আজ নাকি পার্টি দিবেন, তাই আমাদের দাওয়াত দিলো (ইতিয়া) পরী আমরা বিয়ে কবে করলাম এসবের মানে কি, আর ইরা আমার কাজিন। কি তুমি আমাকে বিয়ে করবানা, দাড়াও আমি এখনি গাড়ির নিছে ঝাপ দিবো? (পরী) করবোনা তা তো বলিনি , সময় হোক করবো, কিন্তু তুমি যে বললা ইরা কে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি, এখন ইরান যদি বাড়িতে বলে দেয় আমার কি অবস্থা হবে ভেবে দেখেছো? কি আর হবে, বিয়ে পড়িয়ে দিবে হিহিহি (মানসী) বজ্জাতের দল তোরা থাক, গেলাম আমি, ঐ কই যাস, এখন ফুসকা খাইয়ে যা, না হলে কাল ক্যাম্পাসে রটিয়ে দিবো, তোরা বিয়ে করেছিস যে? (শ্রেয়া) কি আর করা, হারামিদের খাইয়ে পকেটে বারোটা বাজিয়ে পরীকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম, দুজনের বাসা একই দিকে, পরীর থেকে আমার বাসা আরও দুরে।

রিকশায় বসে আছি পাশে পরী বসে আছে, দুজনে চুপ, অন্য সময় হলে কত্তো ফাজলামি করতাম, কখনো পরী কাঁদে মাথা রাখতো, কখনো একহাত দিয়ে জড়িয়ে রাখতো, আর হাত টা ধরে রাখা তো নিত্য দিনের অভ্যাস। পরীর নিরবতা দেখে আমিই বলে উঠলাম পরী সরি আমি, সবার সামনে এভাবে বলাটা উচিত হয়নি, রাগ করোনা প্লিজ। কই রাগ তো করিনি, তুমি কেন সরি বলতেছো, সরি তো আমিই, না জেনে ওকে এভাবে বলাটা ঠিক হয়নি (পরী) তাহলে আজ হাত ধরছো না যে? বলা দেরি, ধরতে দেরি নেই, আজ আমাকে অবাক করে দিয়ে, হাত কিস করে বসলো! এবার রিক্সা থেকে নেমে গেলাম, দুজনে হাঁটা শুরু করলাম, দুজনের হাত দুটো মুঠোবন্ধী, হঠাৎ আকাশ গর্জন দিয়ে উঠলো, বিজলী চমকানোর সাথে সাথে পরী আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে দরলো, আমি মৃদু হেসে গুনগুন করে গান ধরলাম “এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো তুমি বলতো, যদি পৃথিবী টা স্বপ্নের দেশ হয়, তবে কেমন হতো তুমি বলতো “। দুজনে ভিজে একাকার পরীর বাসা আসতেই দোড়ে চলে গেলো, আমাকে ছাতা টা দিয়ে।

রাতে খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে আছি, পরী ফোন করলো কেমন আছো মাইই ডিয়ার (পরী) (পরীর মাইই ডিয়ার শুনে বুঝলাম, এখন ওর কাছে যেতে হবে, যদি কখনো রাতে আমার সাথে হাটার ইচ্ছে করে, ফোন দিয়ে আমাকে এভাবে বলে) ভালোনা জানু, কি যে জ্বর বলে বুঝাতে পারবো, উফফফফফফফফ একটু আসতে পারবা জান? ওই শয়তান রাখ তোর জান, এক্ষুনি আমার বাসার নিচে আয়, আমি যে অসুস্থ জানি তো, আসার জন্য বলবো বলে বুঝে গেছিস তাই জ্বর বলতেছিস, ২০মিনিটের মধ্যে বাসার নিচে আয়, আর হ্যাঁ আইসক্রিম আনতে ভুলবিনা (পরী) একটু ও দয়া হয়না, এই নিরীহ ছেলেটার ওপর? তুই নিরীহ হাসালি আমাকে, এখন বল আসবি কিনা, নাকি শাওয়ার নিবো, আর বুঝতেই পারছিস শাওয়ার নিলে আমার কি হয়। ব্লাকমেইল করার কি দরকার, আসতেছি তো এইতো গুড বয়, আইলাভইউ, উম্মাআআআআআআ কি আর করবো, যদি শাওয়ার নেয় তো জ্বর সর্দি কাশি সব একসাথে আনবে, সবার আগে আমাকে জালিয়ে মারবে, তাই বাদ্য হয়ে যেতে হচ্ছে, পাগলী টার কষ্ট আমার সহ্য হয়না ভালোবাসি তো। বাহিরে এসে দেখি কত সুন্দর জোৎস্না, রাস্তার পানি গুলো চাঁদের আলোতে চিকচিক করছে, বাঁশবাগানে জোনাক পোঁকা গুলো ঝিকিমিকি করতেছে, ভালোই হয়েছে পরীর সাথে আজ এই মুহুর্ত গুলো উপভোগ করতে পারবো।

পরী বাসার নিচে দাড়িয়ে কল দিলাম, কল টা কেটে দিলো, বুঝতে পারলাম আসতেছে, মনে হয় বেলকনি থেকে আমার আসার পথে তাকিয়ে ছিলো, তিনমিনিট পরে দেখি একটা সাদা পরী আমার দিকে দোড়ে আসতেছে, আমি ভাবলাম রাতের পরী হবে তাই আমি ও দিলাম দোড়, একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়লাম। ওই শয়তান দোড়াচ্ছিস কেন? (আমি চুপ) কিরে কথা বলিস না কেন (এবার আস্তে আস্তে পরীর সামনে আসলাম, এসে দেখি এটা তো আমার গার্লফ্রেন্ড পরী) তুমি সাদা ড্রেস কেন পরিধান করেছো, জানো ভয় পেয়ে গেছিলাম। ভিতু একটা, আমার আইসক্রিম দাও। (পরী) এই নাও পরীর দিকে তাকিয়ে দেখি চাঁদের মতো সুন্দর লাগতেছে, রুপকথার পরীর মতো, নাম, চেহারা, ড্রেস, সবকিছুতেই সুন্দর। কি দেখছো এভাবে (পরী) তোমাকে আমাকে দেখার কি আছে (পরী) খুব সুন্দর লাগতেছে আজ তোমায় পাম দেওয়া হচ্ছে (পরী) সত্যিই বলতেছি, কি সুন্দর পূর্ণিমা রাত, তার সাথে তোমার মতো সুন্দরী আমার পাশে, কি সৌভাগ্য আমার। কখনো বলবেনা তো আমি পুরনো হয়ে গেছি (পরী) এই সব অদ্ভুত কথা কই পাও তুমি, বরং তুমি আমার কাছে প্রতিদিন নতুন ভাবে উপস্থাপিত হও যা বলে বুঝাতে পারবো না তোমাকে।

হয়েছে আর বলতে হবেনা, চলো জারুল গাছটার তলে বসি একটু (পরী) এইসময় জারুল গাছের নিছে ভুত থাকে, তার চেয়ে তোমার হাত দুটো দাও ধরে হাঁটি কিছুক্ষণ। ভুত না, হাত ধরে হাঁটার ইচ্ছে আছে তোমার তাই বসবে না বললেই পারো (পরী) মনের ভাষা আর ইচ্ছে টা যখন বুঝে গেছো বসার দরকার কি আছে, চলো আজ এই শহরের নিয়নের আলো হলুদ ল্যাম্পোস্টের আলো ধরে হারিয়ে যাই কিসব অদ্ভুত কথা বার্তা বলো বুঝিনা বুঝতে হবেনা চলো সেদিন অনেক রাত অব্দি অনেক দুর হেঁটেছি, দুজনে চটপটি ফুসকা খেয়েছি, আবার রিক্সা করে বাসায় চলে আসি। এভাবে আমাদের দিন গুলো অতিবাহিত হচ্ছে। ভার্সিটিতে শহীদ মিনারে বসে আছি, সাথে আছে আমার কাজিন ইরা, দুজনে খুনসুটি করতেছি, ছোটবেলায় কত্তো মারামারি করতাম, ইরান আমাকে দেখিয়ে কখনো পুরো জিনিস খেতে পারতো না,  আমার প্রিয় ছিলো ক্রিকেট খেলা আর ইরার ছিলো কাটুন। একদিন আমাকে বাংলাদেশ শ্রীলংকার ম্যাচ না দেওয়ার জন্য ইরার চুল চিড়ে ফেলেছিলাম।

সময়ের ব্যবধানে আজ সব অতীত। এসব নিয়ে দুজনে হাসাহাসি করতেছি। আর তখনিই পরী এসে ইরান কে বললো আমার সাথে নাকি জুরুরী কথা আছে,আমাকে টেনে টেনে ক্যাম্পাসের দক্ষিণ দিকে কদমগাছটির নিচে নিয়ে আসলো ওই তোরে না বলছি মেয়েদের সাথে হেসে হেসে কথা বলবিনা (পরী) পরী ইরা আমার কাজিন তো কি হয়েছে, কাজিন আর ফাজিন হোক, নিষেধ করছিলাম কিনা, আর ও তোর ঘা ঘেঁষে বসলো কেন, দুরে বসতে পারিসনি? (পরী) পরী ও আমার কাজিন সো বসতেই পারে, তুমি ও তো বসো আমি ও এক হলাম, আমি তোর ঘা ঘেঁষে কেন তোর কোলে বসার ও অধিকার আছে (পরী) এ বলে কান্না শুরু করে দিলো আরে কান্না করতেছো কেন তুই বুঝিস না, তোর পাশে কাউকে আমি সহ্য করতে পারিনা (পরী) সরি জান, আর এমন হবেনা ইটস ওকে, এখন আমাকে বাদাম এনে চিলে খাওয়াই দিবি (পরী) বিনিময়ে কিন্তু কিছু লাগবে আমার না না কিছু দিতে পারবোনা, তোর দুষ্টামি বুঝে গেছি, যা হবে বিয়ের পর হবে। এবলে দোড়ে চলে গেলো এই শুনো বাদাম খাবেনা না এখন না এনে রাখিও পরে খাবো।

ক্লাস না করে বাসার দিকে রওনা দিলাম, গোসল করে শুয়ে আছি, মোবাইল টা বেজে উঠলো হাতে নিয়ে দেখি বাড়ি থেকে আম্মু কল দিয়েছে আসসালামু আলাইকুম আম্মু কেমন আছেন ভালো আছি বাবা, তুই একটু বাড়িতে আসবি তোর আব্বুর শরীর টা ভালোনা, আজ বেশী অসুস্থ হয়ে গিয়েছে, তুই আসবি হাসপাতালে নিতে হবে, আমি মহিলা মানুষ একা কি করবো বল (আম্মু) আচ্ছা আম্মু তুমি মামাকে ফোন করে হাসপাতালে নিয়ে যাও আমি আসতেছি। ফোনটা রেখে গায়ের জামাটা নিয়ে রওনা দিলাম, মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি চার্জ ১০% আছে, রাতে মোবাইল টা বন্ধ হয়ে গেলো, সকালে বাড়িতে পৌছালাম, বাড়িতে এসে দেখি আপু বাড়িতে, আম্মুকে দেখলাম স্বাভাবিক আছে, কিছু মাথায় ডুকছেনা, আম্মুকে তো হাসপাতালে থাকার কথা, সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বললো আব্বুর রুমে যেতাম।

আব্বুর রুমে ডুকে তো আরও অবাক, আব্বু চা খাইতেছে সালাম দিয়ে বললাম আব্বু এখন কেমন আছেন আমি কি অসুস্থ ছিলাম নাকি ভালোই তো আছি আম্মু বললো যে তুমি ও হ্যাঁ এটা বলতে আমি বলেছি, শোন তোর পরশু বিয়ে প্রস্তুতি নেয় যা আব্বু মানে কি, আমাকে না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেললে, আমি এ বিয়ে করবোনা তুই করবি তোর বাপে করবে বিয়ে মা শুনছো আব্বু আবার বিয়ে করবে, আমি নতুন মা পাবো, তোমার সতিন আসবে তোর মজাগিরি রাখ, আর হ্যা শোন যদি পালানোর চেষ্টা করছিস তো আমার মরা মুখ দেখবি উফফফফফফফফ আব্বু বিয়ে তোকে করতে হবে আমি আর কিছু শুনছিনা, আশা করি তুমি বিয়েটা করে নিবে, আর হ্যা পাত্রী আমাদের দেখা আছে, তোমাকে আর দেখতে হবেনা, বিয়েরদিন রাতে দেখিও।

তোমরা যা ইচ্ছা করো আমি পালাবোনা আম্মুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম এটা কেন করলে আম্মু আমাকে না জানিয়ে তোমরা এটা কেন করেছো তোর আব্বু করেছে আমি কিছু জানিনা আম্মু আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি, আর আমার পড়াশোনা ও শেষ হয়নি, সবচেয়ে বড় কথা মেয়েটা আমার বিয়ের কথা শুনলে আত্মহত্যা করবে? পড়াশোনা বিয়ের পরে ও করতে পারবি বৌ কিভাবে চালাইবো আমাদের টাকা কম নাকি তোকে অত কিছু চিন্তা করতে হবেনা। বুঝছি এদের কোন কিছু বলে লাভভ হবেনা, কিন্তু বিয়েটা আটকানো দরকার, এদিকে মেয়ের সম্পর্কে কিছুই তো জানিনা, কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। সময় আছে আজকের রাতটা। পরীকে পাচ্ছিনা নাম্বারটা ও বন্ধ। উফফফ আমি পাগল হয়ে যাবো।

রুম থেকে বের হতে দেখলাম ইরাকে এই ইরান শোন, তুইই বাড়িতে কেন, কলেজ থেকে কবে আসলি আরে ভাইয়া তুই বাড়িতে হঠাৎ, আমি তো ভাইয়ার সাথে আসলাম রাতের ট্রেনে। বলিস না আব্বু বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, আম্মু ফোন দিয়ে মিথ্যা বলে আমাকে আনিয়েছে, এখন আম্মুর কাছ থেকে পাত্রীর কোন সন্ধান নিতে পারিস নাকি, আমি এই বিয়ে করবোনা।না বাপু আমি পারবোনা, জেঠুকে আমি ভয় পাই বিয়ে টা আটকানোর চেষ্টা করনা একটু, জানিস তো আমি পরীকে ভালবাসি তো আমি কি করবো কি করবি মানে আমাকে হেল্প করবি না করবোনা, যা ভাগ, ওইদিন পরীর সাথে সব শুনেছি আমি, আমাকে সহ্য করতে পারেনা, এখন এসব বলিস না প্লিজ, হেল্প করনা না আমি কিছু করবোনা, বাই কাউকে কিছু না বলে রুমে বসে আছি, জানিনা চিনিনা, অচেনা মেয়ে একটার সাথে কাল বিয়ে হয়ে যাবে, না জানি দেখতে কেমন, চালচলন কেমন হবে, বিয়ে করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই, পরীকে যদি পেতাম তাহলে উপায় বের হতো তাও না, মোবাইইল বন্ধ করে রেখেছে।

রাত দুইটার দিকে পরীর নাম্বারে কল গেলো, দুবার পর ই রিসিভ করলো জান কি হয়েছে মোবাইল বন্ধ কেন? ইচ্ছে করে রেখেছি, আর শুনো আমাকে ভুলে যাও, আমার কাল বিয়ে (পরী) আমার কি হবে তাহলে জানিনা ভালো থেকো বাই এই বলে ফোন কেটে দিলো, আবার ফোন অফ, শেষ পর্যন্ত যাকে ভালোবাসলাম সে ও দুরে সরে গেলো। রাত পোহালেই বিয়ে, ঘড়ির কাটা টিকটিক করে এগিয়ে চলছে, বিয়ের ক্ষণ ও এগিয়ে আসতেছে। দুপুর হতেই দুলার বেসে একটা প্রাইভেটকারে করে এগিয়ে চলছি, কোথায় চলছি তা নিজে ও জানিনা। গাড়ি দেখি একটি ক্লাবের সামনে এসে দাড় করালো, তারমানে বিয়ে ক্লাবে হবে।মানুষ জন বেশী না, মেয়ের ভাই নাকি বিদেশে তাই পরে অনুষ্ঠান করবে, লোকমুখে শুনতেছি। কাজি এসে বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। বিয়ে পড়ানো শেষে মোনাজাত করা হলো। মেয়ে ও নাকি কবুল বলেছে। বিয়ে শেষ বৌ নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম। বৌ কে নিয়ে সবার মাতামাতি আনন্দের শেষ নেই। বৌ নাকি অনেক সুন্দর।

এদিকে আমার মন টা জলে পুড়ে চারখার হয়ে যাচ্ছে। কেউ আমার মনের কথা বুঝার চেষ্টা করলোনা। কে না কে, কার সাথে আমার জীবন টা জড়িয়ে দিলো। এখন রাত বারোটা, বাসরঘর অভিযানে দাড়িয়ে, ঘরে ডুকার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা আমার নেই। তারপর ও বাবার কথা রাখতে যাচ্ছি।না হলে নিজেকে শেষ করে দিবে, আমার বিয়ে আর বাজি টা হলো আমার শ্রদ্ধাবাজন আব্বা। ঘাটের দিকে এগিয়ে আসতেইই বালিকা বুধু নেমে সালাম করতে আসলো। আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম আমার সামনে আসবেন না, আর কিছু কথা বলবো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন জ্বি বলুন (আস্তে করে) হয়তো কথাগুলো শোনার পর আপনার খারাপ লাগবে, কোনো মেয়ে বাসর রাতে এটা আশা করবেনা।

তারপর ও বলতে বাদ্য হচ্ছি আমি কি আমি একজন কে ভালোবাসি, আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারবোনা কি তুই আমাকে রেখে অন্য কাউকে ভালোবাসিস (গোমটা নামিয়ে কোমরে কাপড় বেধে) পরী তুমি এখানে, কি করে এলে আমার বৌ কই আমি ই তোর বৌ, আমাকে রেখে অন্য মেয়েকে ভালোবাসিস এই কি বলতেছো তুমি, আস্তে করে কথা বলো সবাই শুনতে পাবে, তোমাকে বিয়ে করেছি আমি হুম সাহেব আমি ই তোমার বৌ, আর এসব আমি আর ইরা করেছি। তোমার মনে আছে আমি তিনদিন বাড়িতে ছিলাম না, কলেজে ও যায়নি, তখন ইরাকে নিয়ে তোমাদের বাড়িতে আসি, তারপর তোমার আব্বু আমার শ্বশুর ফোন করে আমার আব্বুকে আসতে বলে। তারপর সবকিছু ঠিকঠাক হয়, তবে তোমাকে জানাতে নিষেধ করেছিলাম, শকড করবো বলে। তবেরে পাগলী দাড়াও। বৌ কে কোলে নিয়ে বিচানার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ইতিহাস গড়ার পথে, আপনারা ও অন্য দিকে ফিরেন এবার।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত