– এই তোমাকে বললাম না ফোন দিবে না, আবার কেন দিলে?
– আমি আমার বউকে ফোন দিলাম।তাতে সমস্যা কি?
– সমস্যা অনেক।এখন তোমার সাথে আমার ঝগড়া চলছে।তাই তুমি ফোনও দিবে না।
– দিবো দিবো হাজার বার দিবো।
– দিও।
– তুমি ফোন ধরো কেন?না ধরলেই হয়।
– ওনি হাজারবার ফোন দিতেই থাকবে।আর আমি ধরবো না।
– তার মানে তুমি আমাকে মিস করো।
– একদমই করি না।
– সে আমি জানি।শুনো না একটু বারান্দায় আসো।
– কেন?
– আরে আসো না।
– তুমি রাস্তায় কি করছো?এই বৃষ্টির মধ্যে।
– তোমাকে নিতে এলাম।সাহস করে বাসায় যেতে পারছি না।তুমি তো দরজা ই খুলবে না।
– তুমি কি ভেবেছো।আমি যাবো।কখনোই যাবো না।তুমি ফিরে যাও।
– না না গিন্নী তা কিন্তু হবে না।আজ আমি তোমাকে নিয়েই যাবো।
– আমি তো যাবো না।সবসময় আমার উপর রাগ দেখানো হয়।য়াও যাও একা থাকো আমাকে ছাড়া।দেখি কেমন করে পারো।
– আমি তো থাকতে পারি না।তাই তো এমন বৃষ্টির দিনে তোমাকে নিতে চলে এলাম।
– রাগ দেখানোর সময় এসব ভালোবাসা মনে থাকে না।যাবো না বলেছি যখন যাবোই না।
– আমি কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজবো।মরে যাবো তোমার সামনে।
– এই শুনো বৃষ্টিতে ভিজলে কেউ মরে না।সামান্য জ্বর সর্দি হবে।
– আমি মরবো।সবাই দেখবে।আর বলবে আহারে কি ভালো স্বামী, সে তাঁর বউকে এত ভালোবাসে যার জন্যে মরেই গেলো।ইতিহাসে আমার নাম লিখা থাকবে।
– উফ্ কি শুরু করলে।ফোন টা রেখে সোজা বাসায় ফিরে যাও।
– ফোন আমি রাখবো।তবে বাসায় একা ফিরবো না।তুমি না গেলে সারারাত এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো।
– এই আমি ফোন রাখলাম।
– আচ্ছা রাখো।আমি কিন্তু এখানেই আছি।
কি পাগল একটা।এভাবে এমন করে কেউ?রাগ করবে ঝগড়া করবে অথচ আমাকে ছাড়া একদিনই থাকতে পারবে না।আমিও তো পারি না।মন খারাপ হয় খুব।তবে ওকে ছাড়া আমার শূন্য লাগে।বাহিরে খুব বৃষ্টি। পাগল টাতো ভিজবে।না না এভাবে বসে থাকা উচিত হবে না।যাই নিয়ে আসি।
– কি ব্যপার?
– তুমি এলে।
– আসলাম তো।বৃষ্টিতে ভিজতেছো কেন?
– মরে যাবো তো তাই।
– একদম বাজে কথা বলবে না।তুমি জানো না এসব শুনলে আমার খুব রাগ হয়।
– জানি তো।
– তাহলে বলো কেন?
– আর বলবো না।যদি তুমি বাসায় ফিরে চলো।
– সে দেখা যাবে। এখন তুমি বাসার ভিতরে চলো।অনেক ভিজে গেছো।জ্বর আসবে নয়ত।জ্বর এলে তো সে আমারই বিপদ।আর মা ও বকা দিবে এভাবে দেখলে।
– আমার বউটা আমাকে খুব ভালোবাসে আমি জানি তো।
– আর ন্যাকামো করতে হবে না।
– সরি।আর কখনো রাগ করবো না।
– এটা অনেকবার বলা হয়।মনে থাকলেই হয়।
– মনে থাকবে।এটা তো আমাদের মধুর ভালোবাসা।রাগ হবে, ঝগড়া হবে, ভালোবাসা হবে।আর এভাবেই সারাজীবন দু’জনে একসাথে থাকবো।
– এবার চলো বাসার ভিতর।
– হ্যাঁ চলো।
পাগলটাকে নিয়ে বাসার ভিতরে যাচ্ছি। শাড়ীর আঁচল দিয়ে ওর মাথাটা ঢেকে দিলাম।অনেকটা ভিজে গেছে। সবসময় পাগলটা এমন পাগলামো করে।একটা দিনও আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না।আর আমিও না।যতই ঝগড়া করি না কেন।এটাই আমাদের মধুর ভালেবাসা।