বান্দর পোলা

বান্দর পোলা

না না  এই পৃথিবীতে থাকাটা  পুরাই অসম্ভব হয়ে যাইতেছে। মনডাই চায় এই খান থেইকা টুপুস করে চাঁন্দের দেশে চলে যাই। হায় হায় বলিস কীইইইইই আর এই সকাল সকাল কলেজে এসেই আবার তোর কী হলো (পান্থ)।

 আর বলিস নারে ভাই পৃথিবীটা  আর পৃথিবী নাই পুরাই উল্টা পাল্টা হয়ে গেছে। কেনো সব কিছুই তো ঠিক ঠাক আছে.. তুই কী আবার উল্টা পাল্টা কিছু দেখছিস নাকি। হুমমমম সে কতা আর বলিস না। হারামি কী হইছে কইবি তো নাকি। তাইলে শোন দুইদিন আগে আমার একার এক্সাম ছিলো সকল মাইয়া গো মাঝখানে পোলা আমি একা কী অসহায় লাগতেছিলো জানিস, মনে হইতেছিলো দৌঁড়াই চলে আসি বাট কী করমু এক্সামটা তো দেওয়া লাগবে নাকি।

আচ্ছা তার আগে বল তোর একার এক্সাম মানে, ঠিক বুঝলাম না, আর সকল মাইয়া আসলো কই থেকে। তাইলে শোন প্রথম থেকেই বলি সকল পোলাগো মধ্যে বসেই প্রতিদিন এক্সাম দিতেছিলাম। তবে কথাই নাই বান্দররে একটু সুযোগ দিলে নাকি মাথাই চড়ে ঠিক সেই দশা হইছিলো আমার, কীসের কী এক্সাম দিতাম সবাই রে জ্বালিয়ে মারতাম, এর খাতা ধরে টান, ওর মাথাই কলমের হেড মারতাম। এই সব কিছুর জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, প্রিন্সিপাল আমারে পরের দিন সকল মাইয়ার মাঝখানে বসাই দিছে। হুমমমমমম তুই যেমন বান্দর এটা তো একদম ঠিক কাজ হইছে। আরে সালা আমি কী মাইয়াগো মাঝখানে বসার জন্য এই সব দুঃখের কথা বলতেছি নাকি। তাইলে।

যখন মেয়েদের মাঝখানে আমারে কান ধরে নিয়ে গিয়ে বসাইলো। তখন তো সেই খুশি হইছি, তার উপর আবার নীলা আপু আমার পাশেই বসে আছিলো। তবে দুঃখ লাগছিলো এক জায়গাতেই। কোন জায়গাতে, নীলা আপু তোর দিকে তাঁকাই নাই সে জন্য। চুপপপপপপ হারামজাদা এমন একটা কিউট বেবি তাঁর পাশে বসে আছে সে কী না তাঁকিয়ে থাকতে পারবো। তাইলেতো তোর দুঃখ লাগার কথা না। আরে সালা যখন হাতে প্রশ্নপত্র পাই, সেটা দেখে দুঃখ লাগছিলো, কারণ সেদিন ছিলো ম্যাথ এক্সাম, আর আমার সাইটে সব বড় আপুরা বসে ছিলো। আমার উপর কী এই নির্যাতনটা করা ঠিক হইছে ক। আর আসল কথা তো এখন ও বলিই নাই।

আসল কথা আবার কী। যখন এক্সাম শেষ করে বাসাই আসছিলাম পুরা রাস্তাই আমিই মাত্র একটা পোলা ছিলাম আর বাদবাঁকি সব মাইয়া, সবাই আমারে একলা পাইয়া কী খারাপ খারাপ কথা কইছিলো, বলে কী না আসো বাবু পাপ্পি দেই, আমার সাথে যাবা চকলো খাওয়াবো। কেউ কেউ বলছিলো পোলাডারে পাইলে সারাদিন জরাই ধরে থাকতাম। আরো মেলা কথা তুই বল এই সব শোনার আগে আমার মরণ হইলো না ক্যান ক্যান ক্যান। তবে হ্যা এক মাত্র নীলা আপুই সবার থেকে ভালো ছিলো কিচ্ছু বলে নাই, সবাইরে এই সব বলতে নিষেধ করছিলো জানিস। তাই তো আমি তারে এত্ত ভালোবাসি হি হি হি। রাখ তোর হাঁসি হারামজাদা এই সব ফালতু কথা বলার জন্য আমাকে এই সাত সকালে কলেজে  আসতে বলছিলি হুমমমমমম। ওই তো নীলা আপু পান্থ থাক তুই আমি গেলাম। হি হি হ্যালো আপু। ঐ এমন দাঁত কেলাও ক্যান।

এমনি চকলেট খাবা। সাহরিয়া মাইর খাবা কিন্তুু। আরে আমি সত্যি সত্যি চকলেট আনছি সেদিনের ঐ মেয়ে গুলার মতো আমি না হুমমমম। তাই না তুমি কেমন সেটা তো আমি জানি তবে সেদিন তোমার খুব ভালো মতো শিক্ষা হইছে সেটা তোমার মুখ দেখেই বুচ্ছিলাম। আমি কী সিনেমার নায়ক যে এত্ত গুলা হাতির মতো মাইয়া গো লগে পারমু। হইছে চুপ করো এবার আর নিজের ক্লাসে যাও। ঠিক আছে আর এই চকলেট টা ধরো। কীসের চকলেট । ঐ যে সেদিন আমাকে এত্ত গুলা মেয়ের হাত থেকে বাঁচাইলা তাই। ওকে এবার যাও। হুমমমমমম তুমি নায়ক আর আমি নাইয়া থুক্কু আমি নায়ক আর তুমি নাইয়া হি হি হি। হারামি সাহরিয়া তোরে তো আজকে মেরেই ফেলমু। পারবা না হি হি দৌঁড় দিছি। ক্লাস শেষে একটু দূরে দেখতেছি নীলা আপু একটা পোলার সাথে কথা বলতেছে। দৌঁড়ে গিয়ে তাঁদের মধ্যে হান্দাই গেছি। আরে ভাই এমন আঠালো ক্যান আপনি দেখছেন তো মেয়েটা আপনার সাথে প্রেম করবে না তবু এত জোর করছেন মনে। সাহরিয়া দেখ ভালো হচ্ছে না কিন্তুু।

বাবু তুমি কোন টেনশন নিও না আমি থাকতে কিছুতেই এই হাতিরে তোমার কাছে আসতে দিমু না। দাঁড়াও একটু। এই যে ভাই কানে কী কিছুই শুনতেছেন না, ভালো করে শোনেন। আমি নীলা আপুর লাভার। ওহহহহহ থুক্কু নীলা আপু আমার  বউ আর আমি তার একমাত্র জামাই বুঝলেন এবার ফুটেন দেখি। সাহরিয়া হারামি এটা আমার আংকেল। কীইইইইই। হুমমমমমম। সরি কাক্কু হি হি হি তবে আমরা কিন্তুু বর বউ।। বলেই দৌড়। রাত্রে শুয়ে শুয়ে কার্টুন দেখছি এমন সময় ফোনটা ভূমিকম্প এর মতো কেঁপে উঠলো। স্কিনের দিকে তাঁকাইতেই দেখি নীলা আপু। হ্যালো নীলা আপু।

 ঐ এটা আমার নাম্বার কেমনে চিনলা সত্যি করে বলবা। না মানে এদিন তোমার ফোন থেকে চুরি করে নিছিলাম হি হি হি। তবে ভয়ে ভয়ে ফোন দেই নাই  তুমি আবার যেমন একটা ডাকাত।  চুপপপপপপ শয়তান। আচ্ছা এবার এটা বলোতো আমার নাম্বার কই পাইছি। কই আবার সরা কলেজে তো নিজের নাম্বার লিখে রাখতো আর নিচে লেখছো কল মি। আরে আমি লিখি নাই ঐ সালা পান্থ লিখছে হুমমমমমম। একটা ভালো খবর আছে তাই তোমারে ফোন দিছি আসলে তুমিই আমার কাজটা সহজ করে দিছো। কী কাজ। কালকে আমার বিয়ে খেতে এসো কেমন। কীইইইইই কিন্তুুু কেমনে কী। নিজেই তো আজকে আমার আংকেল রে রাগাই দিছো আর আংকেল এসে আব্বুরে সব বলে দিছে আর আব্বু তাঁর বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলছে। কীইইইইই এত তাঁড়াতাড়ি ৪জি এর ও তো মনে হয় না এত্ত ম্প্রিড।

ঠিক সময়ে এসো কেমন রাখছি। তোমার ঐ কাকুর না মাথার সব চুলে আগুন লাগাই দিয়ে টাক বানামু। সালা হারামি। দূর এত চিন্তা ভালো লাগে না। কালকে সকালের গুষ্ঠির পিন্ডি। আজকে রাতেই এর একটা ব্যাবস্থা করা লাগবে। ব্যাগপত্র গুছাই ফেলছি আমার কাছে মাত্র সাত হাজার টাকা আছে। এটা দিয়ে তো হবে না। হ্যালো আব্বা তাঁড়াতাড়ি হাজার বিশ টাকা পাঠাই দাও। কেনো। পাঠাইলে তোমারি মঙ্গল। নীলা আপুরে নিয়া পালাই যামু। আর জানোই তো নীলা আপুর বাপের কত্ত টাকা। সুযোগ একবারি আসে টাকা দিলা তো ভালো নাইলে তাঁর বাপ যখন মানবে তোমারে একটা কানা কড়ি ও দিমু না হুমমমমম। এমন রাগ করিস ক্যান বাবা আমরাই তো বাপ পোলা তাই না। আচ্ছা তুই যা আমি টাকা তোর নাম্বারে দিতেছি।

ওকে পারলে আরো কিছু দিও। টাকার মামলা সমাধান। এবার নীলা আপুরে পটানো লাগবে। ব্যাগপত্র নিয়ে সোঁজা তাঁদের বাসার সামনে। এখন কী করমু। ওহহহহহহহ হ্যা ফোন দেই। হ্যালো নীলা আপু নিচে আসো তাঁড়াতাড়ি।  কেনো কীইইইইই হইছে। আরে আসো না আগে। ওকে। একটু পরে ঐ এত্ত রাতে কী হইছে হুমমমম। আর ব্যাগ নিয়ে কই যাও। আই লাভ হউ চলো না পালাই যাই আমার বাপের ফুল সাপোর্ট আছে। তোমার আর ভিতরে যাওয়া লাগবে না। চলো না তোমার বিয়ে হয়ে গেলে আমি মরেই যামু চলো না পিলিজ। কোন কথা নাই। ওহহহহহহ আপু নীলা ওহহহহ নীলা ক্যা নীলা কথা কও না কেনো। ঠাসসসসসসসসসসসসস আরে মারলা ক্যান।

 বান্দরের মতো চ্যাঁচাও ক্যান। তাই বলে মারবা। হুমমমমমম আর কালকে আমার বিয়ে না আমার বড় আপুর বিয়ে আর আমি তো ভালোবাসি না, এবার যা ফুট।। এটাই যদি হইবো ফোন দিয়ে বলার কী ছিলো হুমমম। এমনি বলছি। কইলেই হইলো মগের মল্লুক নাকি। হুমমমম তাই কী করবি শুনি। কী আর করমু আমি আর অন্য আট দশটা পোলার মতো না যে মইরা যামু বা জোর করমু। নিজের রুমে যামু আর আব্বার টাকা আব্বারে ফেরত দিমু। থাকো তুমি দূর খালি এই সব ক্যান আমার সাথেই হওয়া লাগবে। রুমে এসে শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি নীলা আপু তো গেলো নিধি আপুরে ট্রাই মারতে হবে। এর মধ্যেই আব্বার ফোন। কীরে টাকা ফেরত দিলি ক্যান। এমনি ভালো করে রাখো আবার যখন লাগবে তখন দিও এবার ফোনটা ও রাখো। দুইদিন পরে কলেজে গিয়ে নিধি আপুরে খুঁজতেছি। ওমনি সামনে নীলা আপু চলে আসলো।

ঐ সামনে থেকে সরো। কেনো। মেলা কাজ আছে। কী কাজ শুনি। নিধি আপুরে খুঁজতেছি। মাত্র দুইদিন হলো আমারে প্রপোজ করলি এর মধ্যেই। তুমি তো না কইরা দিছো আর আমি আবুল না যে ঘ্যান ঘ্যান করমু। সাহরিয়া আই লাভ ইউ। সেদিনের থাপ্পড় এর কথা এখন ও মনে আছে সামনে থেকে যাও। তোমার সাথে আর আমি নাই। সত্যি রে ভালোবাসি এই যে দেখ ব্যাগ নিয়ে আসছি.. চল পালাই যামু। বাট কেনো। সেদিন রাতে আব্বু তোমার সাথে  কথা বলতে দেখে ফেলছে,, আর বিয়ে ঠিক করে ফেলছে। তোমার বাপ এমন ক্যান একটুতেই বিয়া ঠিক করে ফেলে। আর আমার বিশ্বাস হইতেছে না। আগে এক মিনিট ধরে পাপ্পি দাও। তাঁর পরে পালামু। ওকে কাছে আসো। হুমমমমম। উমমমমমমমমমমমমম্মা। থামো হয় নাই এই গালে চর দিছিলা এই গালে দাও।  ওকে।

উমমমমমমমমমমমমমমম্মমমমমমাা। থামো থামো বিশ্বাস হইছে গালটা তো খয়ে ফেলাইবা।। এক মিনিট থামো একটা ফোন করে আসছি। হ্যালো আব্বা টাকা গুলা আবার পাঠাই দাও এবার সত্যি সত্যি পালাইতেছি… হি হি হি।।।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত