” রাতে নাকি তোমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়েছে। বললে না তো?”
সকাল বেলা খাবার টেবিলে বসতেই বাবা কথাটা বলল। হুমম গত রাতে আমার ৬ষ্ট সেমিস্টারের রেজাল্ট বের হয়েছে। কিন্তু রেজাল্ট এমন আহামরি হয় নি যে সবাইকে বলবো।
— কি হলো বললে না তো রেজাল্টের কি অবস্থা?
বাবা আবার বলে উঠলো। খাবারের আগেই যেন পেট এখন ভরা ভরা মনে হচ্ছে।
— বাবা ৩.২১ পেয়েছি।
কিছুক্ষণের জন্য নিরবতা পালিত চলছে। এটাই স্বাভাবিক কারন আমার গত প্রথম তিন সেমিস্টারের রেজাল্টই ৩.৫০ এর উপর ছিল।
— বাহ্ বেশ তো। তা লেখাপড়া শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার নাকি লেভার হওয়ার চিন্তা করছো।
— (এখানে চুপ থাকাই ভাল)
— দিন দিন মানুষের উন্নতি হয় আর তোমার তো দেখছি অতি উন্নতি হয়ে চলেছে। রেজাল্ট এমন হওয়ার কারনটা কি?
— বাবা সরি আগামীতে ভাল করবো।
বাবা আর কিছুই বলল না। খাওয়া শেষ করে উঠে চলে গেল। আমি চুপচাপ খেয়েই রুমে চলে আসলাম। রুমে আসতেই নীলার ফোন আসলো। কপালটা ভাল যে বাবার সামনে থাকা কালীন ফোনটা দেয় নি। আপাতত কথা বলার ইচ্ছা করছে না তাই ফোনটা কেটেঁ দিলাম কিন্তু নীলা আবার ফোন দিলো।
— ফোন কেটে দেওয়ার পরও ফোন দিচ্ছো কেন?
— আমার বাবুটা কি আমার উপর রাগে করে আছে নাকি সোনা।
— ন্যাকামী বন্ধ করো তো। এই বাবু সোনা ডাকতে ডাকতে সত্যি কারের বাবু সোনা বানাই ফেলছো। এখন তো মনে হচ্ছে জানুয়ারি মাসে শিশু শ্রেনীতে আমার ভর্তি হতে হবে।
— কি সব বলছো বাবু?
— আর একটা বার বাবু ডাকলে কিন্তু নিজের বাবুর নাম ভুলিয়ে দিবো।
ধ্যাত রাগ দেখিয়ে ফোনটাই কেটে দিলাম। নীলা দেখতে হেব্বি কিউট তাই রিলেশন করলাম কিন্তু এতই নেকা যে আমাকে বাবু ডাকতে ডাকতে সত্যিকারের বাবু বানিয়ে ফেলেছে। ৪র্থ সেমিস্টারে ও আমাকে প্রপোজ করে। আর আমিও কখনো রিলেশন করি নি তাই প্রপোজ একসেপ্ট করি।যে দিন থেকে রিলেশনে গেলাম ওই দিন থেকে আমার ঘড়ির কাটা উল্টা ঘুরতে শুরু করলো। এই মেয়ে কিছু পারে আর না পারে, দূরে থেকেও দেখে দেখে লেখতে পারে। নীলা ব্রিলিয়েন্ট না হলেও ওর চোখ দুইটা হেব্বি ব্রিলিয়েন্ট। আমরা তো একই ক্লাসের স্টুডেন্টস।
দুই দিন মোবাইল অফ করে রাখলাম আর কলেজেও যাই নি। সারা দিন ঘর বন্ধি হয়ে কাটিয়েছি। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং যারা সহজ বলে তাদের একটা বার “প্রোগ্রাম এন্ড সি” & “ডিজাইন অব স্ট্রাকচার-২” এই দুইটা বই পড়তে দেওয়া উচিত। তাহলে সব পাকনামী কথা বের হয়ে যাবে।
গত দুইদিন পর কলেজে পা দিতেই খেলাম একটা ধাক্কা। অবশ্য ইচ্ছা করে নয় তবে কোন একজন পিছন থেকে দৌড়ে যাচ্ছিল তাই ধাক্কা দিয়ে গেল। তাকিয়ে দেখলাম ছোট ব্যাচের কোন মেয়ে।
— ওই মেয়ে দাড়াও।
–( মেয়েটি পিছনে ফিরলো)
— ধাক্কা দিয়ে গেল কিন্তু সরি বললে না।
— আসলে আমার ল্যাব ক্লাসে লেট হয়ে যাচ্ছে। আমি ক্লাস শেষ করে এসে আপনাকে সরি বলে যেতাম।
— কিহহ্?
আমি মেয়ের কথায় পুরো শকড আর মেয়ে সেই দৌড়ে চলে গেল। এই প্রথম কোন মেয়ে কলেজে আমার সাথে এমন করলো। ভাবলাম মেয়েটার পিছু নেই কিন্তু মেয়েটার দৌড়ের গতি আমার চিন্তার গতির থেকে ফাস্ট তাই আর মেয়েটাকে পেলাম না। আমি আমার ক্লাসে গেলাম। “ওয়াটার এন্ড রিসোর্স ” সাবজেক্টের ক্লাস চলছে। আমি পিছনের দরজা দিয়ে চুপচাপ গিয়ে বসলাম। ক্লাসে মনোযোগ দেওয়ার আগে নীলা কে খুজঁতে লাগলাম। আমি তো ভাবলাম মেয়েটা হয়ত দুই দিনে অনেক কষ্ট পেয়েছে কিন্তু আপাতত নীলা ৩য় সারির একটা চেয়ারে বসে ক্লাসের ভাল একজন ছাত্র তুষারের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। সত্যি কথা বলতে এটা দেখে কষ্ট কেন যেন হয় নি। কোন এক বড় ভাই বলছে, যদি তোমাকে কেউ ভালবাসে আর সে যদি হারিয়ে যায় তাহলে তোমার অনেক কষ্ট হবে কিন্তু যদি তোমার সাথে কেউ প্রেমের নাটক করে আর প্রয়োজন শেষ ওর নাটক শেষ করে চলে যায় তাহলে মনে করো তুমি মুক্ত বিহঙ্গে সুখ পাবে। আমিও হয়ত মনে সুখ পাচ্ছি তবে বেচারা তুষারের জন্য কষ্ট হচ্ছে। কারণ, ওরেও কয়েকদিন পর বাবু ডাকতে ডাকতে একদম বাবু বানিয়ে ছাড়বে।
ক্লাসটা শেষ করে আমি কলেজটা শুধু শুধু ঘুরতেছি ওই ধাক্কা মেয়েকে খুজঁতেছি কারন ওর থেকে আমি একটা সরি পাওনা আছি। এটা যে নিতে হবে।
কিন্তু কোথাও খুজেই পাচ্ছি।
এভাবে কয়েকটা দিন চলে গেল। একদিন কলেজের লাইব্রেরীতে বসে বই পড়ছিলাম। প্রায় ২ ঘন্টা হলো পড়ছি। হঠাৎ পাশের সিটের একটা মেয়ে বলে উঠলো…
— আচ্ছা আপনাকে দেখে কলেজের বড় ব্যাচের স্টুডেন্ট লাগছে। আমাকে কি এই রচনামূলক প্রশ্নটা বুঝিয়ে দিতে পারবেন।
— হুমম
বইটার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলেও ওই মেয়ের মুখের দিকে তাকে মনে পড়লো আরে এটাই তো সেই মেয়ে। আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ ওকে ওর সমস্যা বুঝিয়ে দিলাম। তারপর আবার নিজের পড়ায় মনোযোগ দিলাম। মেয়েটা লাইব্রেরী থেকে বের হলে না হয় কথা বলবো।
পড়ার মাঝে দিয়ে কখন যে সময় চলে গেল খেয়ালই ছিল না। এমন কি পাশে থেকে মেয়েটাও চলে গেল এটাও বুঝতে পারি নি। ধ্যাত মেয়েটার নাম তো জানা হলো না। তবে মেয়েটা অতিরিক্ত পড়ে। এত বই পড়ে কি হবে বুঝি না।
রাতে ছাদে বসে গিটার বাজাচ্ছিলাম তখনই মেয়েটার কথা মাথায় আসলো। অচেনা অজানা একটা মেয়ে তবু ওর প্রতি আমার এত কৌতুহল কেন? ওই মেয়েকে এত জানতে মন চায় কেন? কেনই বা মনে পড়ছে ওর কথা।
আচ্ছা ওই মেয়ে তো সম্ভবতো আমাকে “জিওট্যাকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং” বই থেকে প্রশ্ন বুঝিয়ে দিতে বলে ছিল। আর ওই বইটা তো সিভিল ডিপার্টমেন্টের থার্ড সেমিস্টারের বই। তাহলে কি মেয়েটা সিভিল ডিপার্টমেন্টের থার্ড সেমিস্টারের স্টুডেন্ট। ইয়াহু কত্তো ব্রিলিয়েন্ট আমি, একটু মাথা খাটিয়েই বের করে নিলাম। কালকেই ওর ক্লাসে গিয়ে ওর নামটা জেনে আসবো।
সিভিলের প্রতিটা ব্যাচের স্টুডেন্টই আমাদের ৭ম সেমিস্টারের স্টুডেন্টদের চিনে। কারন, আপাতত আমরাই কলেজের বড় ভাই। আমি কলেজে এসেই প্রথম নোটিশ বোর্ড থেকে সিভিলের থার্ড সেমিস্টারের রুটিন টা নিলাম। এরপর সময় অনুযায়ী বুঝলাম ওরা এখন ২য় তলার ৫নং রুমে আছে। আমিও চুপচাপ ওই রুমের সামনে চলে গেলাম আর অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ক্লাস শেষ হয়।
প্রায় ২০ মিনিট ক্লাস শেষে ওদের ক্লাস শেষ হলো। ক্লাস টিচার চলে যাওয়ার পর ওরাও বের হচ্ছে। কারন, এখন নিচ তলায় ওদের ল্যাব ক্লাস। সবাই বের হওয়ার মাঝে ওই মেয়েটাকে চোখে পড়লো। মেয়েটা পিছনে ছিল তবে একা তাই ডাক দিলাম…
— এই যে সাদা লালের থ্রি-পিছের ধাক্কা মেয়ে।
মেয়েটা একদম দাড়িয়ে গেল। তারপর আমার দিকে ফিরে তাকালো।
— আমাকে বলছেন।
— তুমি ছাড়া আর কেউ তো আমাকে ধাক্কা দেয় নি।
— ও তো আমাকে ডাকলেন কেন?
— সরি আর ধন্যবাদ আপনার থেকে পাই। নিতে আসলাম।
— হায়রে, আমি তো বলছি ক্লাস শেষে আপনাকে দিবো।
— ও এখন তো ক্লাস শেষ হলোই।
— ধ্যাত এই ক্লাস নয় তো, এই সেমিস্টারের সব ক্লাস শেষ হওয়ার কথা বলছি। এখন যদি সরি বা ধন্যবাদ নিয়ে কথা বলি তাহলে আমাদের বন্ধুত্ব হবে আর এরপর প্রেম। তারপর বিয়ে আর এরপর বাচ্চা?
— ওই থামো। তুমি মেয়ে নাকি রেল গাড়ি। আমি আসলাম কিসের কথা বলতে আর তুমি কি কথাকে কই নিয়ে গেলে?
— হুহ?
— আচ্ছা তুমি বুঝি সাইন্সের স্টুডেন্ট থেকে ডিপ্লোমাতে আসছো।
— হুমম কিন্তু কিভাবে বুঝলেন?
— আপনার কথা শুনে কারন সাইন্সের স্টুডেন্ট একটু মেন্টাল।
— কি বললেন?
— এত রাগ দেখানোর কিছু হয় নি। সাইন্সের স্টুডেন্ট বেশি ঘুম কাতুরেও হয় আর সেই টাইপের অগোছালো।
— ওই এভাবে আপনি সাইন্সকে নিয়ে কিছু বলতে পারেন না।
— পারি একশ বার পারি কারন আমিও সাইন্সের স্টুডেন্ট ছিলাম ওকে।
— ইশশ আমার ল্যাব ক্লাস, লেট হয়ে গেল।
— হুমম যাও কিন্তু নামটা তো বলে যাও।
— যেভাবে আমি কিসে পড়ি জেনে নিলেন। সেইভাবে নামটাও জেনে নেন। তবে নিজের পড়াশোনার ফাকিঁ না দিয়ে।
— হা হা পাগলী।
দৌড়াতে দৌড়াতে কথা গুলো বলে গেল। আমি আর লেট না করে অফিস রুমে গেলাম আর সিভিলের থার্ড সেমিস্টারের খাতা বের করলাম। যেহেতু আমি সিভিলেরই স্টুডেন্ট তাই কোন সমস্যা হয় নি। নামের সাথে নাম্বার ফ্রি, এই বছরের গার্লফ্রেন্ড আর বাপে মানলে স্ত্রী।
রাতে পড়ার টেবিলে বসে মেডাম অনুর কথা মনে পড়ছে। কারন ওর নাম অনু। তাই ফোনটা দিয়েই দিলাম।
— হ্যালো কে বলছেন?( মনে হচ্ছে ওর পড়ায় বিরক্ত করলাম)
— বাব্বা কত পড়তে পারো বলো তো?
— কে বলছেন সেটা বলেন?প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, উল্টা প্রশ্ন করতে নেই।
— যাকে আজ বললে পারলে নামটা জেনে নিতে। আমি তো নামের সাথে নাম্বারও নিয়ে নিলাম।
— বাহ্ তো এটা কি ফোন দেওয়ার টাইম।
— তাহলে কখন ফোন দিবো বলে দাও।
— আপনিই বলেন কখন ফোন দিতে চান?
— সকালে দেই ৭টায়। ওই সময় আমি ঘুম থেকে উঠবো।
— না আমি সাড়ে ৫টায় ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসি। কথা বললে সমস্যা?
— ও আচ্ছা, ৯ টা থেকে ২টার ভিতর তো অনু তুমি কলেজেই থাকবে তখন তো আবার তোমার ক্লাস আছে।তাহলে দুপুর ৩ টায় দেই।
— না তখন আমি ঘুমাবো।
— তাহলে বিকালে দেই।
— তখন পড়তে বসবো।
— তাহলে রাতে দেই।
— এই যে পড়তাছি।
— তাহলে কখন ফোন দিবো?
— আপনিই বলেন কখন দিতে চান।
— না থাক, তুমি পড়ো আমি ঘুমাই।
— রাজ সাহেব একটু পড়াশোনায় সিরিয়াস হোন নয়ত আর এত সকাল সকাল না ঘুমিয়ে ঠিক সাড়ে ১১ টায় ঘুমিয়ে পইরেন।এখন রাখি
–ওয়েট, তুমি আমার নাম জানলে কেমন করে?
— হা হা বাই।
এক প্রকার রহস্য রেখেই ফোনটা কেটে দিলো। আজব একটা মেয়ে। ওরে জানতে গেলে হয়ত ওর অজানার মাঝেই আমি হারিয়ে যাবে। না এখন একটু পড়তে বসি। অনু তো বললই পড়ার জন্য সিরিয়াস হতে।
সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই নিজেকে পড়ার টেবিলে আবিষ্কার করলাম। মানে আমি পড়তে পড়তে একদম ঘুমিয়ে পড়েছি। এরপর কলেজে গিয়ে নিয়মিত ক্লাস আর অনুর পাশে বসে লাইব্রেরী তে বই পড়া চলছে। যদি মাঝে মাঝে ওর দিকেই তাকিয়ে থাকি তবুও অনু বুঝে না। আজব পাবলিক।
দেখতে দেখতে কয়েকটা মাস কেটে গেল। আর আমাদের বিদায় অনুষ্ঠানও চলে আসলো। ৮ম সেমিস্টারে তো ইন্টার্নির জন্য কলেজ থেকে চলে যাবো তাই বিদায় অনুষ্ঠান এবারই। কলেজটাকে কত সুন্দর করে ছোটরা সাজিয়েছে। আমাদের ব্যাচের সবাই সাদা রংয়ের টি-শার্ট পড়লাম।এবং প্রতিটা টি-শার্টে নিজেদের স্বাক্ষর করলাম। কত আনন্দ কিন্তু ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে। সবাই রং মাখামাখির পর আমি সবার থেকে একটু আলাদা হয়ে এসে দাড়ালাম। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এসে গালে রং লাগিয়ে দিলো। পিছনে ফিরে দেখি অনু। তবে ওরে আজ বেশ লাগছে, এই প্রথম কলেজ ড্রেস বাদে শাড়ীতে দেখলাম তো।
— রাজ সাহেবের বুঝি মন খারাপ।
— জানি না তবে ৪ বছর যাদের সাথে কাটালাম তাদের আর দেখবো না এটা ভেবে কষ্ট হচ্ছে।
— এটা কিন্তু বাস্তবতা। সবাইকে মানতে হবে।
— হুমম
–আচ্ছা তা রাজ সাহেব আপনার ৭ম সেমিস্টারের পরীক্ষা প্রস্তুতি কেমন?
— চলে একরকম।
— কি বলেন এইসব? জানেন না এই সেমিস্টারের থেকে ২৫% নাম্বার যোগ হবে।
— হুম
— শুধু হুমম আপনি এমন বাজে লেখাপড়া করলে আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে? আপনাকে কম করে হলেও ৩.৮০ এর উপর রাখতে হবে।
— আমাদের ভবিষ্যৎ মানে??
— বুদ্ধু আপনি তো দেখছি অযথাই ৭ম সেমিস্টারে চলে আসছেন। একটু মাথা খাটালেই বুঝে যাবেন।
অনু আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেল। অনেকটা রহস্য নিয়ে “আমাদের” শব্দ টা বলে গেল। হায়রে মনু, আমি এত ভালবাসা রাখমু কোথায়?
আমি আর একা একা না থেকে সবার সাথে মাস্তিতে যোগ দিলাম। সবাই সবাইকে রং মাখালাম। এক পর্যায় নীলাকেও বন্ধু হিসেবে মাখাতেই হলো। আজ খবর পাইছি নীলার নাকি তুষারের সাথেও ব্রেকআপ হইছে। মেয়েটার যে আরো কতজনের সাথে রিলেশন হবে। সে নিজেও হয়ত জানে না।
এর মাঝে ৭ম সেমিস্টার শেষ হলো। এখন বন্ধুরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গায় ইন্টার্নী করার জন্য এপ্লিকেশন করেছে। ৭ম সেমিস্টার গত সেমিস্টারের থেকে খুব ভাল গেছে। ভাল একটা রেজাল্টেরও আশা করা যায়। তবে পরীক্ষার মাঝে অনু আমাকে নিজে থেকেই ফোন দিয়ে বকবক করতো আর বলতো ” এত পড়াশোনা করলে মাথা নষ্ট হবে, তাই মাঝে মাঝে একটু আমার সাথে কথা বলবে তবে কথা বলা শেষ করে আবার পড়তে বসবে ”
অনু আমার গার্লফ্রেন্ড কি নয় জানি না তবে এমন কেউ গার্লফ্রেন্ড হলেও লাইফ সেটেল। তবে ভয় একটা প্রপোজ করলে আবার যদি মেনে না নেয়?
(সমাপ্ত)