প্রতি শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়াটা যেন একটা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে! যদিও বিবাহিত কিন্তু বউ আছে বলে তো আর বন্ধুদের সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা। বিপদে-আপদে বন্ধু আর সুখে-দুঃখে বউ।বন্ধু হচ্ছে উত্তপ্ত সূর্যের মতো যার পাশে সাতরঙা রংধনু বিস্তার করলেও বুঝা যায়না শুধুমাত্র সচ্ছল স্থির মিঠা পানিতেই তার প্রতিবিম্ব দেখা যায়।আর ভালোবাসা হচ্ছে একশো মিটার পুকুরের এপারওপার হাততালি দিয়ে কানপেতে শুনার মতো যা দেখা যায় না অথচ শব্দের উৎস কিন্তু পুরো পুকুর জুড়ে অনুভব করা যায়। যাই হোক এসব আলোচনার দরকার নাই আমাদের।
সেদিন শুক্রবারে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ঠিক তখনই নিরুর ফোন। মেয়েটাকে বিয়ে করেছি আজ পাঁচ বছর ছুঁইছুঁই। আমাদের তিন বছরের একটা মেয়ে আছে নামটা নয়নতারা হলেও আদর করে নয়ন ডাকা হয়। নিরুর ভালো নামটা নিরুপমা আরোহী ফ্লোরা। ভালোবেসে নিরু বলেই ডাকি।
ফোন রিসিভ করেঃ
– হুম নিরু বলো।
-আমি নয়নকে নিয়ে রেডি হয়ে গেছি তোমার সাথে নদীর পাড়ে কাশবন ঘুরতে যাবো। শরৎ এর কাশবন অনেক মনকাড়া।
-আরে আমি আজকে পারবোনা। তুমি জানোনা আমি সপ্তাহে একদিনই ছুটি পাই আর এদিন আমি বিকেলবেলা আড্ডা দেই?
– কখনওই তো আমাকে নিয়ে বের হও না।
-আশ্চর্য তো।
-তোমার আসা লাগবেনা। আমিও বের হবো না আর।তুমি থাকো তোমার বন্ধুদের নিয়ে সিগারেট আড্ডায়।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো।বুঝলাম মেয়েটা এখন অনেক কান্না করবে। মেয়েটাকে কষ্ট পেতে দেখলে আমারও মনটা ঠিক থাকেনা। কিন্তু ভালোবাসার ফুলঝুরি ছড়াতে একটু আধটু কষ্ট না দিলেও ভালোলাগেনা!
-দোস্ত তোরা থাক আমার একটা কাজ পড়ে গেছে।
-ভাবী ফোন করেছিল বুঝি?
-হ্যা রে বন্ধু।আমি যাই।
-ওকে যা।
নদীর পাড়ে এসে ফোন দিলাম নিরুকে কাশফুল দেখতে এসো বলে।
কিছুক্ষণ পরে ও নয়নকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এলো আর মুচকি মুচকি হাসতেছিল। মেয়েটা এমন কেন! ওর ইচ্চাগুলাতে সাঁয় দিলেই যেন খুশিতে আত্মহারা। দুজন দুপাশে আর নয়নকে মাঝখানে নিয়ে অনেক সময় ঘুরেছি।
-একটা ইচ্ছে ছিল।
-কি?
-তুমি আমাকে আজ নিজ হাতে নূপুর পরিয়ে দিবে।যেটা তোমাকে বিয়ের পরেই বলেছিলাম।
-পারবোনা।
– আমার খুব ইচ্ছে হয় সেদিন তুমি নূপুর পড়িয়ে দিবে আর আমি তোমার দেয়া শাড়ী পরে,চোখে কাজল আর কালো টিপ লাগিয়ে নূপুরের নিক্কণ ধ্বনির সাথে তোমার কাছে আসবো তোমার ভালোবাসা দুহাতে নিতে!
-তার দরকার নেই।
-কখনওই তো ভালোবেসে কিছু চাইলেও কিনে দাও নি। কিছু চাইলেই ওই একটা জিনিসই পারো, পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে দিয়ে বলো যা লাগে নিয়ে না যেটা ইচ্ছে কিনে নাও। কিন্তু আমার যে তা চাই না। আমি চাই তোমার সাথে গিয়ে তোমার পছন্দমত কিনতে। কিন্তু কখনওই আমার সাথে শপিংয়ে যাওনি!
-আরে আশ্চর্য তো। তুমি তোমার পছন্দমত সব পরবে এখানে আবার আমার পছন্দ করার কি আছে!
-আচ্ছা সরি।
-হুম।
সেদিনের মতো বাড়ি চলে আসলাম। বিয়ের পর মেয়েটা আমার কাছে অনেক আবদারই করেছে কোন আবদারটা প্রত্যক্ষভাবে রাখতে পেরেছি তা মনে পড়ছেনা। কিন্তু ওর কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখিনি আমি,পরোক্ষভাবে ওর অজান্তে সবগুলো ইচ্ছেই পূরণ করা হয়েছে আমার।
-এই শুনোনা!
-কি বল!
-কবিতা শুনাবে একটা?
-না!
-কেন?
-বিয়ের পাঁচবছর হতে চললো তাও এতো ভালোবাসা কোথা থেকে আসে!
-এমন কেন তুমি? আমার কোনো ইচ্ছে আর ভালোবাসার দাম নেই বুঝি তোমার কাছে? বউ হিসেবে তোমার কাছে পুরাতন হয়ে যেতে পারি কিন্তু ভালোবাসাতো পুরাতন হওয়ার নয়!
-হুম। আমার ইচ্ছে নাই অফিসের কিছু এসাইনমেন্ট বাকি আছে ওগুলা কমপ্লিট করতে হবে।
বলেই টেবিলে গিয়ে কলম নিয়ে বসলাম।
-হ্যা ওইটাই পারবে। কবিতা শুনাতে বললেই গিয়ে টেবিলে বসে যাও! শুক্রবারেও তোমার ঘরে বসে অফিসের কাজ করা লাগে!
আর কোনো উত্তর দিলাম না ওকে।
যদিও জানি বরটাকে ঘিরে মেয়েটার শত আবদার রয়েছে। মাঝে মাঝে মেয়েটা হয়তো ভাবে পৃথিবীর সবচাইতে খারাপ স্বামী আমি!
তার পরদিন নিরু আমাকে হঠাৎ ফোন দিয়ে বললো তুমি আজ চলে আসো আমার ভালো লাগছেনা। মনটা কেমন খারাপ লাগছে।
-ধুর এটা কোনো কথা হলো! মন খারাপ লাগলেই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আসা যায় নাকি!
– আমার মনটা কেমন যেন কু-ডাকছে!
-এসব কুসংস্কারমূলক কথা আমার কাছে বলবে না। যত্তসব আজাইরা প্যাঁচাল! ফোন রাখো!
কিছুক্ষণ পর পাশের অফিসের দ্বিতীয় তলায় আগুন লেগে যায় দমকল বাহিনী এসে আগুন নেভানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে ততক্ষণে আশেপাশের সব অফিস সেদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে। আমাদেরও ছুটি হয়ে গেছে। বাড়ি ফিরতে যাবো ঠিক তখনই আবার নিরুর ফোন।
এতো কোলাহলে ফোন ধরলে কেউ কারোর কথা বুঝতে পারবোনা বলেই ফোন ধরিনি।সরাসরি বাড়ি চলে যাওয়াই ভালো। ঘন্টাখানেকের মধ্যে বাড়ি পৌঁছালে নিরু আমাকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলো।
-আরে পাগলি কাঁদছো কেন?
-ফোন ধরো নাই কেন? আমি টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট দেখে তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম। যায়গাটা তো তোমার ওইদিকেই। ভাবলাম আবার তোমার অফিসে নাকি! তুমিও তো দ্বিতীয় তলায়!
-না। আমার পাশের ভবনে। আর একটু কোলাহল ছিলো তো তাই ফোন ধরতে পারিনি।
-আমি আগেই বলেছিলাম। এই জন্য আমার মনটা কু-ডাকছিল তুমিতো আমার কোনো কথাই শুনোনা! না কোনো আবদার রাখো!
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি অপলক! মেয়েরা স্বামী-সন্তানের বিপদের আগমনী বার্তা আগে থেকে বুঝার শক্তি কোথায় পেলো! আমিও মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে আছি। না!এই মেয়েটাকে ছাড়া আমার কিছুতেই চলবেনা।
দিন তিনেক পর!
-তোমার সাথে ওই মেয়েটা কে ছিলো?
-বউ!
-বউ মানে! হায়হায়রে আমার কপাল পুড়লরে! এই জন্যই বলি তুমি আমার আবদার রাখোনা কেন! তোমার আরও একটা বউ আছে! এই জন্যই আমাকে ভালোবাসোনা।আমি কাজল পরতে চাইলে নিষেধ করো, শাড়ী আনোনা, শপিংয়ে নিয়ে যাওনা, নূপুর পড়িয়ে দাওনা।
-আরে শুনবেতো পুরোটা!
-কি শুনার বাকি আছে হুম? এখন সিনেমার মতো ডায়লগ শুরু করে দাও! বলো যে মেয়েটা বিপদে পড়ছিল, কোথাও যাওয়ার উপায় ছিলনা ওর! তাই না? আমি জানি!
সব জানি!
ঠাস করে চড় লাগিয়ে দিলাম!
-এটাই ছিল একমাত্র উপায় তোমার বকবক থামানোর জন্য! পুরোটা বলতেই তো দিলেনা! আজাইরা উল্টাপাল্টা বকবক করছিলে!
মেয়েটা ঠোঁট উল্টিয়ে একদম বাচ্চাদের মতো করে কাঁদছে। ঠিক যেমনটা পাপা নয়নকে কোলে না নিলে কাঁদে!
-আরে আমি বলেছি বউ! কার বউ এটা বলেছি কি? ওটা আমার বন্ধুর বউ।
– হায় হায়রে! বন্ধুর বউকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে বেড়ানো! না জানি হায় আর কি কি করেছে!
-আরে আমি উনাকে উনাদের বাসায় পোঁছে দিতেছিলাম!
-ওরে আমার মানব দরদিরে! ক্যান উনি কি উনার বাসা চিনেনা?
-চিনে কিন্তু উনি একটু মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন তো তাই।
-তারমানে একটা পাগলের সাথে তুমি…
-চুপকরো! আমি তোমায় বলেছি উনি পাগল? বলেছি একটু মানসিক আঘাত পেয়েছে! কি জন্য পেয়েছে তা না জেনেই আবোলতাবোল বলতে শুরু করেছো! এই জন্যই বলি মেয়েরা বুঝে কম চিল্লায় বেশি!
-কি আমি বুঝি কম? তোমাকে আমি একার করে চাই বলেই আমি বুঝি কম তাই না? করবোনা তোমার ঘর। তুমি থাকো তোমার বুঝাপড়া নিয়ে! আমি আজকেই চলে যাবো আমার বাপের বাড়ি। শুধু নয়নকে তুমি দেখে রেখো!
-হুম রাখবো। আর বাপের বাড়ি যাচ্ছো যাও। এবার তো একেবারে চলে যাচ্ছ তাই বলছি বড় লেদারটায় করে তোমার সব জামাকাপড় নিয়ে যেও! আর ওখানে গিয়ে ন্যাকামি করে আমার নামে বিচার দিবেনা বলে রাখলাম। সেদিন পাশের ভবনে আগুন লাগছিল সেখানে রাফসান নামে আমার একটা বন্ধু জব করে আর ওইদিন ওর বাঁহাতের সিনায় একটু পুড়ে যায়। আজ তাই উনাকে নিয়ে বন্ধুর জন্য খাবার আনতে উনাদের বাড়িতে দিয়ে আসতে গেছিলাম, উনি বাসা থেকে খাবার নিয়ে আবার হসপিটালে আসবে,উনার মা রান্না করে রাখছিল। আর এই জন্য তাকে মানসিক অবসাদগ্রস্ত বলেছিলাম। স্বামীর জন্য বেচারি একটু মেন্টালি সিক হয়ে পরেছিল তো তাই।
-আমাকে আর বুঝানো লাগবেনা। আমি আজ চলেই যাবো! আর হুহ! তোমার মত খচ্চরের নামে বিচার দিতে আমার বয়েই গেছে!
তারপর রুমে মোবাইল রেখে বারান্দায় এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে নিকোটিনের চার ইঞ্চি লম্বা সরু দেহটায় সুখটান দিলাম! আকাশের চাঁদটা দূর পরবাসে চলে গেছে, তারাও ছন্দহারা! বন্ধুটাও শেষ অব্দি চলে গেলে আমার ঘরে প্রকৃতির আলো কোথায় পাবো! নয়নটাও যে অন্ধকার ভয় পায়! যদিও জানি আমার সাথে ও অভিমান করে বেশিক্ষণ থাকতে পারেনা। ঘন্টাখানেক বসে থাকার পর আরও একটা নিকোটিনের কাঠিতে আগুন ধরাতে ধরাতে ভাবছি মেয়েটা কি সত্যিই চলে গেলো! থাকলে একবার হলেও বারান্দায় আসতো! এতো অভিমান! মেয়েটাকে ছাড়া যে আমার চলবেনা! প্রয়োজন হলে রাতেই এই সুবাদে চলে যাবো শশুর বাড়ি! অনেকদিন হলো জামাই আদর থেকে দূরে আছি! একদিকে ভালোই হইছে! হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন এসে সিগারেটটা হাত থেকে নিয়ে ফেলে দিলো!
-তোমাকে কতবার বলেছি এসব অখাদ্য-কুখাদ্য না খেতে? কলিজাটা না জ্বালিয়ে এই আমি শাড়ির আঁচল ফেললাম এখানে আগুন দিয়ে জ্বালাইয়া দাও!
ওর হাতে আমার মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানো।
একবার ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম! বাহ! দারুণ সেজেছে! তারমানে মহারানী এতোক্ষণ সেজেছিল বলেই আসেনি এইদিকে! কালো শাড়ী, কাজল, কালো টিপ, রঙ-বেরঙ্গের কাঁচের চুড়ি, রূপার মাঝে কালো পাথর বসানো নূপুর! হাতে একটা কালো ডায়েরি! আহা বউ আমার যেন পরী!
তবুও রাগিয়ে দেয়ার জন্য ভাব নিয়ে বললাম ছিঃ! বাবার বাড়ি চলে যাবে সে না হয় ভালো কথা! তাই বলে কেউ এতো বিশ্রী ভাবে সাজে! একদম পিশাচসিদ্ধ পিশাচিনীর মতো লাগছে!
কালো পেত্নী একটা!
তারপর ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো পেত্নীর মতো দেখালে এগুলা কার জন্য কিনেছিলে? এতোটা ভালোবাসো কিন্তু মুখে বলোনা কেন? আমি বড় লেদারটা থেকে এগুলা পেয়েছি। আগেতো ওটা খুলে দেখাই হয়নি! আজকেও দেখা না হলে তো জানতেই পারতাম না আমার বরটা আমায় কতটা ভালোবাসে! তোমার হাতে নূপুর পড়তে চেয়েছিলাম প্রতি মাসে এক জোড়া করে নূপুর এনে রেখেছো। কাজল পড়তে চেয়েছিলাম নিষেধ করেছো অথচ ওখানে পনেরোটি কাজলের কৌটো পেয়েছি,তোমার পছন্দের কাঁচের চুড়ি চেয়েছিলাম দাওনি কিন্তু ওখানে দুই ডজন কাঁচের চুড়ি পেয়েছি! তোমার পছন্দের শাড়ী পরতে চেয়েছিলাম কখনওই শপিং করাতে নিয়ে যাওনি অথচ কালো,গোলাপি,ব্লু কালারে শাড়ী রেখেছিলে এক ডজন তার মধ্যে হাফ ডজন কালো শাড়ী দেখে বুঝলাম এই রঙ তোমার ভালোলাগা। কবিতা শুনতে চেয়েছিলাম কিন্তু এসাইনমেন্টের বাহানায় ডায়েরী নিয়ে বসতে আর আমার জন্য কবিতা লিখতে অথচ আমি বুঝতেই পারিনি। প্রত্যেক কবিতার প্রথমে কার জন্য লিখতে তুমি আমার কবিতার ছন্দ নিরু?আর এসবের কিছুই আমি জানতে পারিনি আগে! ভালোবেসে গোলাপ আবদার করেছিলাম আনোনি অথচ ওখানে শত শত শুকনো গোলাপের পাপড়ি! এতোই যখন ভালোবাসো মুখে বলোনি কেন আগে?
-বয়েই গেছে তোমাকে ভালোবাসতে। মহাপুরুষরা বলে গেছে অন্যের বউকে ভালোবাসা ভালো। আপনার বউকে যত ভালোবাসবেন তত সন্দেহ করবে। অন্যের বউ করবেনা!
-কোন মহাপুরুষ বলেছে?
-আমিতো জানিনা!
-তাকে পাইলে আমি ঝাঁটাপেটা করে দিতাম।
-আচ্ছা তুমি বাপের বাড়ি যাবেনা?
-না!
-কেন?
-আমি তোকে একা রেখে যাই আর তুই বাসায় বসে মেয়েদের সাথে টাংকি মারছ সেটা হচ্ছে না!
-ওমাগো তুই করে! আহা! ভাব নেওয়ার আর যায়গা পেলোনা! আমাকে ছেড়ে একা থাকতে পারবেনা সেটা না বলে ভাব নিচ্ছে।
-কেন! তুমি বুঝি নাও না! আবদারগুলো যে পরোক্ষভাবে পূরণ করতে আর আমি জানতেই পারিনি। আচ্ছা তোমার দেওয়া সব সারপ্রাইজ গিফটগুলো কালো কেন?
-চাঁদ কি নীল আকাশে সুন্দর?
-না! কালো আকাশে!
-ওগো রমণী, চাঁদের মতো তুমি, বুঝেনিতো কেহ কবে, চাঁদের পাশে দাঁড়ালে তুমি, স্বয়ং চাঁদেরও হিংসে হবে!
-হইছে আর কবিতা বলতে হবেনা। কাল এক যায়গায় যাবো ডিনারের ইনভাইটেশনে!
-আহা! কতদিন শশুর বাড়ি যাই না,জামাই আদর পাইনা!
-আহা! শখ কত! সেটা হচ্ছেনা!
-তাহলে!
-রুমে মোবাইল রেখে এসেছিলে, তখন তোমার বন্ধু রাফসানের বউ মানে সামিরা ভাবি ফোন দিয়েছিল!
– কি বললো?
-ভাবী নাকি! কাল ভাইয়াকে নিয়ে আমাদের বাসায় ডিনার করতেই হবে কিন্তু। নয়ন,হাসিব ভাই আর আপনার জন্য আমরা অপেক্ষা করবো। জানেন সেদিন ভাই আমাকে বাড়ি পৌঁছানোর কালে সারাক্ষণ রিক্সায় শুধু আপনার আর নয়নের গল্পই করেছে! কাল রাফসান ভাইকে হসপিটাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসবে। তিনি অনেকটা সুস্থ তাই তারা আমাদের বলেছে কাল ডিনারে যেতে!
-আমার বয়েই গেছে তোমার গল্প করতে।
-সেতো বুঝতেই পারছি।
-হুহ!চাইছিলাম শশুরবাড়ি যাবো কিন্তু যেতে হচ্ছে বন্ধুর বাড়ি!
-আগামী মাসে যাবো আমরা। ওখানে গেলেতো আর সবার সামনে তোমার সাথে প্রেম করা জায়েজ নাই!
-এই জন্যই বলি। বউ আমার, তাহার বাপের বাড়ি আমাকে নিয়ে যেতে এতো কিপ্টেমি করে কেন!
-যা ফাজিল।
-আহা লক্ষ্মী বউ আমার!