অজান্তে বিয়ে

অজান্তে বিয়ে

অফিসে বসে কাজ করছিলাম। হঠাত্‍ ফোনটা বেজে উঠল ।হাতে নিয়ে দেখি মায়ের ফোন। ফোন রিসিভ করতেই মা বলল তুই কালকের ভিতর তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেনো ?? মা বলল বাড়িতে আয় তারপর বলছি ।বলে ফোন কেটে দিলো। আমি মহা চিন্তায় পড়লাম হঠাত্‍ কি হলো যে এতো তারাতারি বাড়ি আসতে বললো!! মাথায় কিছু ঢুকছে না ।অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুম দিলাম।

সকালে উঠে বাড়িতে যাওয়ার জন্যে রেডি হয়ে গেলাম । বাড়ি পৌছে দেখি সবাই রেডি হয়ে আছে। আমি কিছুই বুঝতেছি না।রুমে এসে বসতে না বসতেই ছোট বোনটা এসে বললো ভাইয়া তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নে, আমি বললাম কেনো? তখন ই ওর কথা শুনে আমার মাথায় বাজ পড়লো !! বাবা মা নাকি আমার বিয়ে দিতে চাইছেন আর তারই প্রস্তুতি হিসেবে আজ মেয়ে দেখতে যাওয়া। আমি ওর কথা শুনে সরাসরি বাবার রুমে চলে গেলাম ।বাবাকে যেয়ে বলতেই তিনি বললেন বিয়ের বয়স তো পার হয়ে যাচ্ছে !! কবে বিয়ে করবা!! আমি কিছুতেই এখন বিয়ে করতে পারব না বলে বাবাকে বলে দিলাম। কিন্তু বাবার চোখ রাঙ্গানি দেখে মাথায় আর কিছু আসলো না। কোন কথা না বলে রুমে চলে আসলাম। আর বোনটা দেখি আমার অবস্থা দেখে মুচকি মুচকি হাসতেছে। আমার তো রাগে শরীর জলতেছে !

রেডি হয়ে চলে গেলাম মেয়ে দেখতে। মেয়ের বাড়ির সামনে যেয়ে আমার তো চক্ষু চড়কগাছ !! এটা কার বাড়ি নিয়ে আসলো !! এটা তো ঈশিকা দের বাড়ি । আমি তো মহা চিন্তায় পড়ে গেলাম। বাবা মা এ বিষয়ে কিভাবে জানলো !! আমি তো কাউকে বলি নাই। তখন ই আমার চোখ আমার বোনের দিকে গেলো। তাকিয়ে দেখি ও হাসতেছে। আমার তো বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা ওরই কাজ। তবে রাগ উঠলেও বোনের প্রতি ভালোবাসা আরো বেড়ে গেলো ।

ঈশিকা, হুম একসময় ছিলো আমার স্বপ্নকন্যা ।অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম ওকে নিয়ে। মেয়েটাকে আমি দেখেছিলাম আমি যখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ি । তখন ও পড়ত ইন্টারমিডিয়েট এ। ওকে আমার ভালোবাসার কথা বলবো বলে আমি একদিন ঠিক করি।কিন্তু যেয়ে শুনি এক ছেলে ওরে প্রপোজ করছে তার কারণে ওই ছেলেকে সেই অপমান করেছে আর আচ্ছা করে মেরেছে।আমি এটা শুনে আর প্রপোজ করি নি। ওখান থেকে দ্রুত কেটে পড়ি। তারপর থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখলেও কোনদিন সামনে যায় নি। আস্তে আস্তে পড়া শেষ করে বেরিয়ে আসি ।

তারপর একটা চাকুরী পেয়ে যায়। তার দুবছরের ভিতরে বাবা মার এই সিদ্ধান্ত। আমি ঈশিকার কিছু ছবি সংগ্রহ করে আমার ল্যাপটপে রেখেছিলাম। আর ওকে নিয়ে লেখা একটা ডায়েরী ছিলো। তা থেকেই বোনটা জেনেছে ওর সম্পর্কে। আর আজ এখানে,সরাসরি ওদের বাড়ি বিয়ের জন্য আসা। ওদের বাড়িতে যেয়ে সবকিছু কথা শেষে সবাই যখন রাজি তখন ই বলে বসলো আলাদা কথা বলবে। আমার তো ওর কথা শুনে জান চমকিয়ে উঠলো। আবার কি বলে !!

ওর সাথে ওর রুমে আসতেই আমাকে বললো ,আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। আমি তো ওর কথা শুনে হতাশ !!আমি বললাম কেনো?? ও বললো,আপনি আমাকে কতদিন ধরে পছন্দ করেন? আমি তো ওর কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম।এই মেয়ে একথা কেমনে জানলো? আমি ওর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি !! ও আমার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরে বললো আপনার বোন এসব কথা আমাকে বলেছে আর ওই সব ব্যবস্থা করেছে । আমি মনে মনে খুশি হলেও প্রকাশ করলাম না।আমি বললাম চার বছর ধরে তোমাকে পছন্দ করি ।এবার আমাকে বললো আচ্ছা বুঝলাম । তারপর ও আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না । আমি বললাম কেনো? আপনি আমাকে প্রপোজ করেন নি তাই ও বললো । আমি শুনে একটু হাসি দিয়ে হাটু গেড়ে বললাম কন্যা তুমি কি আমার সারাজীবনের সঙ্গী হবে? ওর অনুমতি পেয়ে ওকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলাম।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত