:-ওই চয়ন হইছে তোর?(মৌ)
:-নারে বোন..আমি আজ কলেজ যাবোনা তুই যা
:-কেন যাবিনা?
:-ওরে বোন যেখানে ভুতের ভয় সেখানেই রাত হয়।ইমু আমারে প্রেম নিবেদন করেছে।আর থ্রেট দিছে হ্যা উত্তর দেওয়ার জন্য।
:-হ্যা তো রাজি হয়ে যা..প্রেম কর
:-ওই তুই জানিসনা ও কত রাগি আর বদমেজাজী?ওর সাথে প্রেম করলে আমি নিজের ইচ্ছাতে কথাও বলার
স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলবো
:-ওই সব বাদ দিয়ে কলেজ চল
:-বললাম না যাবোনা..তুই যা
:-তা বললে তো হচ্ছেনা..তুই ভালো করেই জানিস আমি একা একা কলেজ যেতে পারিনা।
:-তোকে আজ একাই যেতে হবে।আমি আজ কলেজ যাবোনা
:-ভালো ভাবে বললাম শুনলিনা..এখন যদি না নিয়ে যাস।তাহলে তুই যা বলছিস সব রেকর্ড ইমুকে শোনাবো
:-কি তুই এইসব রেকর্ড করেছিস?
:-হুম..কয়েদিন ব্লাকমেইল করা যাবে।তাইনা?
:-ওরে বোন তুই আমাকে যমের কাছে নিয়েই যাবি?
:-এটাও রেকর্ড হয়ে গেছে
:-বোন আমার রেকর্ডগুলো ডিলিট কর..তোকে আমি কলেজ নিয়ে যাচ্ছি
:-এইতো লক্ষী ভাই আমার
:-থাক আর পাম মারা লাগবেনা
অতঃপর মৌকে নিয়ে কলেজে আসলাম..ওহ পরিচয়টা দিই..আমি চয়ন।আর মৌ আমার বোন।আমরা জমজ।দুজনেই অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি..আর ইমু হচ্ছে আমাদের দুজনের বেষ্ট ফ্রেন্ড।
ইমুও আমাদের সাথেই পড়ে..মৌ আমাকে ইমুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।কলেজ শুরু হওয়ার এক মাস পরে গেছিলাম মৌয়ের সাথে।গিয়ে সবেমাত্র দাড়িয়েছি
:-এই মৌ এই চেংড়াটা কে?(ইমু)
:-আরে এইটা আমার ভাই
:-ওহ..তোমার নাম কি ছোট ভাই?
:-ওই ওর নাম চয়ন।আর আমরা জমজ
:-কিইইই?তোরা জমজ?
:-হুম
এভাবেই আমাদের পরিচয়।কলেজে এসে এইসব ভাবছিলাম
:-ওই চয়ন(ইমু চেচিয়ে বলল)
:-কে?(লাফ মেরে)
:-আমি..আমার উত্তর কই?
:-দোস্ত প্রেম না করলে হয়না?
:-কেনো প্রেম করবিনা?আচ্ছা তাহলে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো তোর বাড়িতে?
:-না..হঠাৎ আমার সাথে তোর প্রেম করার শখ হলো কেনো?
:-হঠাৎ তোকে আমি অন্যরকম ফিল করছি তাই।ওই উত্তর দে
:-আমি তোর প্রেম করতে পারবোনা
:-কেনো?আমি কি দেখতে খারাপ?
:-না..কিন্তু তুই যে রাগী।খুব ভয় লাগে
:-আরে আমাদের রিলেশন হলে তখন আর রাগ দেখাবোনা প্রমিস
:-ঠিকতো?
:-একদম..এবার রাজি?
:-হুম..
:-উম্মা..শোনো বাবু এখন থেকে তুমি করে বলবা।ঠিক আছে?
:-হুম..
এভাবেই শুরু হলো আমার আর ইমুর সম্পর্ক..বেশ ভালোই চলছিলো।কিন্তু হঠাৎ একদিন বিপত্তি ঘটলো..রাতে ইমুর সাথে ঝগড়া করেছিলাম।পরেরদিন দেখি ইমু ওর বাবাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে হাজির..আমি চোখ ডলতে ডলতে বাইরে আসলাম।
সাথে সাথেই আমার মা আমাকে ডাকলো..
:-চয়ন এদিকে আয়
:-হ্যা মা..বলো
:-তুই কাল ইমুর সাথে ঝগড়া করেছিস?তুই বকা দিয়েছিস বলে মেয়েটা সারারাত কত কেদেছে?এত সুন্দর লক্ষী মেয়েকে কেউ বকা দেয়
:-আহা কত লক্ষী মেয়েটা(ইমুর মুখ টেনে বললাম)
:-ধ্যাত কি করছো?লাগছে আমার(ইমু)
:-ওই ফাজিল থাম..শুনলাম তোরা নাকি একে অপরকে ভালোবাসি?
:-হ্যা ঐ আরকি..
:-তাহলে মেয়েটাকে বৌমা করে আনি?
:-কি বলো?এই বয়সে বিয়ে?আমি এসবের মধ্যে নেই
:-ভ্যাএএ ভ্যাএএ..দেখেছো পাপা আমি পুরানো হয়ে গেছি বলে..এখন আমার সাথে ঝগড়া করে।আর আমাকে বিয়ে করবেনা বলছে
:-বাবা তুমি প্লিজ রাজি হয়ে যাও..মেয়েটা তোমাকে খুব ভালোবাসে।তুমি ফিরিয়ে দিলে ও খুব কষ্ট পাবে(ইমুর বাবা আমার হাত ধরে বললো)
:-আরে আংকেল এমন করে বলছেন কেনো?
:-বিয়াইমশাই চয়ন কি বলবে?আমি ইমুকে আমার বৌমা বানাবো..আর সেটা ৫দিনের ভেতর।আপনি বিয়ের আয়োজন করুন
:-ঠিক আছে বিয়াইন
অতঃপর ইমু আর ওর বাবা চলে গেলো..যাওয়ার সময় ইমু আমাকে চোখ টিপি দিয়ে চলে গেলো..
সবশেষে আমি রুমে যাচ্ছিলাম তখন মৌ আমার পথ আটকে দাড়ালো..
:-৫০০ টাকা দে..
:-টাকা দিয়ে তোর কাজ কি?
:-কি বলিস?তোর বিয়ের দাওয়াত দিতে হবেনা সবাইকে?
:-একটা থাপ্পর মারবো..তোকে কে দাওয়াত দিতে বলছে?
:-দাড়া মাকে বলছি তুই আমাকে থাপ্পর মারবি
:-না রে বোন..এই নে ১০০০টাকা।তুই রেখে দেকে।কাউকে দাওয়াত করার দরকার নেই
:-আচ্ছা..তাহলে বিকালে আমাকে একটু মার্কেট নিয়ে যাবি।শপিং করবো।
:-টাকাতো তোকে দিয়েই দিয়েছি..তুই একাই শপিং করে আসিস
:-রেকর্ডগুলো কিন্তু এখনো আছে
:-রক্ষে কর বোন..তোকে মার্কেটে নিয়ে যাবো
:-ঠিক আছে..মনে থাকে যেনো
:-হুম থাকবে
প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর আমার আর মৌয়ের জন্য ১০০০ টাকা দেয় আমার কাছে..দুজনের ৫০০ টাকা করে।আজ পুরোটাই মৌকে দিয়ে দিলাম..এখন আমি ফকির
যাহোক কিভাবে যে ৫দিন কেটে গেলো বুঝতে পারলাম না..
আজকে আমার আর ইমুর বিয়ে হইছে..এখন বাসর ঘরে ঢোকার পালা।কিন্তু আমি খুব ভয় পাচ্ছি..তবুও ভয়কে জয় করে বাসর ঘরের দরজা ফাকা করতেই দেখি ইমু হাতে লাঠি নিয়ে বসে আছে..
আমি এক দৌড়ে ডাইনিং রুমে চলে আসলাম..
:-কিরে ঘরে গিয়ে আবার এখানে আসলি কেনো?(মা)
:-জল খেতে
:-ওহ..এই নে জল।খেয়ে নিজের রুমে যা।অনেক রাত হলো
:-আচ্ছা
অতঃপর জলপান করে একবুক সাহস নিয়ে নিজের রুমে ঢুকলাম..ঢোকার সাথে সাথে ইমু দরজা বন্ধ করে আমার সামনে দাড়ালো..
:-বাবু তোমার হাতে লাঠি কেনো?
:-তোকে পেটানোর জন্য
:-এসব কি বলো বাবু..আজকে এসব করতে হয়না।
:-তাই?তা আজকে কি করতে হয় শুনি?
:-এইতো স্বামী স্ত্রী মিলে রোমান্স করতে হয়
:-দাড়া তোর রোমান্স বের করছি(বলেই লাঠি দিয়ে একটা বাড়ি দিলো)
:-আউচচচ
:-কষ্ট হচ্ছে তাইনা?আমারো কালকে কষ্ট হচ্ছিলো।তুই যখন আমার সাথে ঝগড়া করেছিলি
:-বাবু আমি বুঝতে পারিনি..প্লিজ মাফ করে দাও
:-কোনো মাফ নেই..আমিও কষ্ট পেয়েছি তুই সেজন্য শাস্তি পাবি
:-লক্ষিটি এমন করেনা..আমিনা তোমার বর..তুমি কি চাও তোমার বর কষ্ট পাক।
:-এত ভালোবাসা কাল কোথায় ছিলো?আগে বল ব্রেকাপ বলছিলি কেনো?
:-ওইটাতো রাগের মাথায় বলেছিলাম..আর কখনো বলবোনা
:-তুই কি ভাবছিস বললে তোকে আস্ত রাখবো?এখন থেকে আমি যা বলবো তাই করবি
:-হুম..তবে আজ আমি যা বলবো তাই হবে
:-মানে?
:-এখন একটু আদর করবো তোমাকে
:-খবরদার কাছে আসবিনা বলছি
:-উহু..কোনো কথা শুনছিনা আজ
:-খুব সাহস হয়েছে দেখছি
:-হুম..
অতঃপর দুজনে হারিয়ে গেলাম ভালোবাসার অতলে..